Ajker Patrika

সবেধন নীলমণি চিকিৎসক

ফরিদখান মিন্টু, শরণখোলা (বাগেরহাট)
আপডেট : ১৫ অক্টোবর ২০২১, ১৫: ৪৮
সবেধন নীলমণি চিকিৎসক

বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার ৫০ শয্যাবিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চারজন এমবিবিএস চিকিৎসক রয়েছেন। বর্তমানে তাঁদের তিনজনই পারিবারিক সমস্যা ও অসুস্থতাজনিত কারণে ছুটিতে রয়েছেন। একমাত্র উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ছাড়া তিন দিন ধরে কোনো এমবিবিএস চিকিৎসক নেই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে।

দুজন উপসহকারী কমিউনিটি চিকিৎসক দেখছেন রোগী। এ অবস্থায় পার্শ্ববর্তী মোরেলগঞ্জ উপজেলা থেকে গত বুধবার একজন চিকিৎসক ধার করে আনা হয়েছে। এতে বিঘ্নিত হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ডা. নাদিয়া নওরিন পারিবারিক সমস্যার কারণে ৯ অক্টোবর থেকে ছুটিতে রয়েছেন। ডা. প্রিয় গোপাল বিশ্বাসের বাবা অসুস্থ থাকায় তিনি ১০ অক্টোবর ছুটি নিয়ে বাড়ি গেছেন। এ ছাড়া আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. এস এম ফয়সাল আহমেদ ১১ অক্টোবর থেকে জ্বর ও অন্যান্য শারীরিক অসুস্থতায় বাসায় অবস্থান করছেন। এ পরিস্থিতিতে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার মতো কোনো ডাক্তার নেই হাসপাতালটিতে।

গত বুধবার দুপুরে শরণখোলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, জরুরি ও বহির্বিভাগে রোগীর ভিড়। মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে আসা ডা. রাফসান হোসাইন নতুন ভবনের ২৬ নম্বর কক্ষে রোগী দেখছেন। পাশের ২৭ নম্বর কক্ষে রোগী দেখছেন উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্রের উপসহকারী কমিউনিটি চিকিৎসক মল্লিক আরাফাত। দুই কক্ষের সামনে রোগীদের দীর্ঘ লাইন দেখা যায়।

জরুরি বিভাগের দায়িত্বে রয়েছেন উপসহকারী কমিউনিটি চিকিৎসক বিশ্বজিত মজুমদার। মারামারি, দুর্ঘটনায় আহত ও অন্যান্য মিলিয়ে সেখানে রোগীতে ঠাসা। একা এত রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন বলে জানান জরুরি বিভাগের এই চিকিৎসক।

উপজেলার গোলবুনিয়া গ্রামের আবুল কালাম আজাদ বুধবার সকাল ১০টায় রক্তচাপ পরীক্ষা করাতে হাসপাতালে এসেছেন। কিন্তু প্রায় এক ঘণ্টা অপেক্ষা করেও রক্তচাপ পরীক্ষা করাতে না পেরে চলে যান।

উপজেলা দক্ষিণ রাজাপুর গ্রাম থেকে মো. মনির হোসেন বুধবার সকাল ৯টায় তাঁর ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুনের (১১) টনসিলের সমস্যা নিয়ে এসেছেন। তিন ঘণ্টা অপেক্ষার পর চিকিৎসককে দেখানোর সুযোগ পান। এভাবে অসংখ্য নারী-পুরুষ, শিশু রোগীকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, বিভিন্ন সমস্যায় তিনজন চিকিৎসক ছুটিতে রয়েছেন। রোগীর প্রচণ্ড চাপ। এ অবস্থায় প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনের ফাঁকে তিনি নিজে গিয়েও বহির্বিভাগে রোগী দেখছেন। বিষয়টি সিভিল সার্জনকে জানানোর পর আপাতত মোরেলগঞ্জ থেকে একজন চিকিৎসক পাঠিয়েছেন। এ ছাড়া রামপাল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে গোলাম মোকদারি খান নামের একজন চিকিৎসক এখানে ডেপুটেশনে পাঠানোর কথা।

সিভিল সার্জন ডা. জালাল উদ্দিন বলেন, শরণখোলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সমস্যার বিষয়টি তিনি জানেন। ইতিমধ্যে একজন চিকিৎসক সেখানে পদায়ন করা হয়েছে। যাঁরা ছুটিতে রয়েছেন, তাঁদের দ্রুত ফিরে আসার জন্য বলা হয়েছে। চলমান এই সংকট সমাধানের চেষ্টা চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত