আল-আমিন রাজু, ঢাকা
শরীরে বেশ ক্লান্তি ভর করেছে। দিনের শেষে তো সূর্যেরও তেজ কমে আসে। আলো-আঁধারির গোধূলি সেই কথাই যেন জানান দিচ্ছে। অথচ সন্ধ্যায় তেজ বেড়েছে কোতোয়ালি থানার, থানার ভেতরে থাকা কামরাঙা গাছের। সন্ধ্যায় সেই গাছের ডালে শত শত চড়ুই পাখি। ভাবতে ভালো লাগছে, বেলা শেষে কী সুন্দর জমজমাট আসরে মেতেছে এরা। থানায় এসে কী আর এগুলোতে মন ভরে! হঠাৎ হট্টগোলে ধ্যান ভাঙল।
৯ জানুয়ারি, সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা। এক যুবক থানায় এসেছেন। সদরঘাট থেকে তাঁর মোবাইল হারিয়েছে বলে সাধারণ ডায়েরি করবেন। কর্তব্যরত এক পুলিশের পরামর্শে হারিয়ে গেছে লিখে জিডি সেরে ফেলেন। এর মধ্যেই দুই কিশোরকে নিয়ে হাজির হন এএসআই মাহফুজ। হট্টগোলটা ওইদিক থেকেই আসছিল। কথা বলে জানা গেল, এই কিশোরেরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে টিকটক করছিল। কটূক্তি করছিল তাদের পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া নারীদের। ওই কিশোরের সঙ্গে থাকা দামি একটি আইফোন জব্দ করে স্বজনদের খবর দেওয়া হয়েছে। স্বজনেরা এলে আবার এই দিকে আসা যাবে। এই ফাঁকে কামরাঙা গাছের পাখিদের দিকে মন টানছিল। পাখি দেখতে গিয়ে এবার তো সোজা চোখ পড়ল থানার হাজতে আটক ষাটোর্ধ্ব এক ব্যক্তির দিকে। পুরোনো একটি মামলায় তিনি আটক হয়েছেন বলেই জানাল পুলিশের এক এসআই।
এদিকে দুই কিশোরের কয়েকজন স্বজন থানায় এলেন। ততক্ষণে চারদিকে অন্ধকার নেমে গেছে। না-জানি এই কিশোরদের জীবনটা কত অন্ধকারে! স্বজনদের কাছ থেকে মুচলেকাসহ নাম ঠিকানা রেখে কিশোরদের ছেড়ে দেওয়া হলো। কর্তব্যরত অফিসার কিশোরদের সোজা সাপটা বলে দিলেন, ‘এরপর যদি এমন কিছু করো, তবে অবশ্যই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
কোতোয়ালি থানা সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ১৮ নভেম্বর থেকে চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত ১০২ কিশোর আটক হওয়ার তথ্য রয়েছে। রয়েছে মুচলেকাসহ নাম-ঠিকানা। পরিসংখ্যান দেখে, পুরান ঢাকার অস্থির পরিবেশের কথাই মাথায় এল। এখানে কত কত মানুষের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, বসতি। প্রতিদিন কত কত লোক আসে। ব্যবসা-বাণিজ্যে জমজমাট পরিবেশ। যা কিছুটা খারাপ করে ফেলেছে কিশোর অপরাধীরা। সন্ধ্যার পর থানায় যত ব্যস্ততা এদের নিয়েই।
থানার কর্মকর্তারা জানান, কিশোর অপরাধীদের তালিকা করা হচ্ছে। পুরো এলাকার অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করতে এটা করা হবে। ছিনতাই, ইভটিজিং ও রাস্তাঘাটে টিকটক করে সাধারণ পথচারীদের বিরক্ত করাসহ নানা অপরাধে কিশোরদের আটক করা হয়। এরপর কাউন্সেলিং করে সংশোধন করতে সুযোগও দেওয়া হচ্ছে। তবে রেখে দেওয়া হচ্ছে ছবি, নাম-ঠিকানা। এভাবেই শতাধিক কিশোরের তালিকা তৈরি হয়েছে।
দুপুরের দিকে থানায় তেমন চাপ ছিল না। দু-একজন নাগরিক থানায় এসেছিলেন প্রয়োজনীয় সেবা নিতে। তারা তখনই ফিরে গেছেন। থানায় কেউ এলে মূল ফটকে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে সতর্ক করে দিচ্ছিলেন। মাস্ক ছাড়া কাউকেই ঢুকতে দেননি। পুরো থানার পরিবেশ ঝকঝকে, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। রাতের অন্ধকারেও যেন চিকচিক করছিল দেয়াল। থানার সামনে পুলিশের কয়েকটি গাড়ি ও আটক করা কয়েকটি মোটরসাইকেল, একটি ট্রাক ও গোটা পাঁচেক সিএনজি ছাড়া তেমন কিছু চোখে পড়েনি।
থানার বাইরে চলে আসার সময় হয়েছে। টং দোকানে বসে চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে দুপুরের কিছু ঘটনা মনে পড়ে গেল। বেলা তিনটার দিকে বড় দুটি ব্যাগ ও তিন শিশুকে নিয়ে থানায় হাজির এক নারী। দুই ঘণ্টা ধরে একবার এখানে আবার ওখানে ফোনে কথা বলছিলেন তিনি। চেহারায় বিষণ্নতার ছাপ স্পষ্ট। নাসিমা নামের এই নারী আজকের প্রতিকাকে বলেন, ‘শরীয়তপুর থেকে স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা দিতে এসেছি। আমার স্বামী পুরান ঢাকায় মুরগির ব্যবসা করেন। গত সাত মাস ধরে আমাদের কারো তেমন খোঁজ খবর নেন না। এমনকি ফোনেও যোগাযোগ করেন না। পুলিশকে কাবিননামা দেখিয়ে এসবই জানালাম।’
ওই নারীর অভিযোগ, তাঁর স্বামী বিয়ে ছাড়াই আরেক নারীকে নিয়ে পুরান ঢাকায় থাকছেন। অথচ বাড়িতে দেড় লাখ টাকার মতো ঋণ। পাওনাদারেরা রোজ বাড়িতে এসে ওই নারীকেই টাকার জন্য নানা বাজে কথা বলে যান।
কোতোয়ালি থানার সার্বিক বিষয়ে ওসি মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমার থানায় সেবা নিতে এসে কেউ হয়রানির শিকার হন না। কোনো ধরনের অবৈধ লেনদেন হয় না। আমি থানায় থাকলে অপরাধীরা আতঙ্কে থাকেন। আমার চোখে অপরাধী শুধু অপরাধীই, তার আর কোনো পরিচয় আমি দেখি না। কোনো ছাড় নেই।’
শরীরে বেশ ক্লান্তি ভর করেছে। দিনের শেষে তো সূর্যেরও তেজ কমে আসে। আলো-আঁধারির গোধূলি সেই কথাই যেন জানান দিচ্ছে। অথচ সন্ধ্যায় তেজ বেড়েছে কোতোয়ালি থানার, থানার ভেতরে থাকা কামরাঙা গাছের। সন্ধ্যায় সেই গাছের ডালে শত শত চড়ুই পাখি। ভাবতে ভালো লাগছে, বেলা শেষে কী সুন্দর জমজমাট আসরে মেতেছে এরা। থানায় এসে কী আর এগুলোতে মন ভরে! হঠাৎ হট্টগোলে ধ্যান ভাঙল।
৯ জানুয়ারি, সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা। এক যুবক থানায় এসেছেন। সদরঘাট থেকে তাঁর মোবাইল হারিয়েছে বলে সাধারণ ডায়েরি করবেন। কর্তব্যরত এক পুলিশের পরামর্শে হারিয়ে গেছে লিখে জিডি সেরে ফেলেন। এর মধ্যেই দুই কিশোরকে নিয়ে হাজির হন এএসআই মাহফুজ। হট্টগোলটা ওইদিক থেকেই আসছিল। কথা বলে জানা গেল, এই কিশোরেরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে টিকটক করছিল। কটূক্তি করছিল তাদের পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া নারীদের। ওই কিশোরের সঙ্গে থাকা দামি একটি আইফোন জব্দ করে স্বজনদের খবর দেওয়া হয়েছে। স্বজনেরা এলে আবার এই দিকে আসা যাবে। এই ফাঁকে কামরাঙা গাছের পাখিদের দিকে মন টানছিল। পাখি দেখতে গিয়ে এবার তো সোজা চোখ পড়ল থানার হাজতে আটক ষাটোর্ধ্ব এক ব্যক্তির দিকে। পুরোনো একটি মামলায় তিনি আটক হয়েছেন বলেই জানাল পুলিশের এক এসআই।
এদিকে দুই কিশোরের কয়েকজন স্বজন থানায় এলেন। ততক্ষণে চারদিকে অন্ধকার নেমে গেছে। না-জানি এই কিশোরদের জীবনটা কত অন্ধকারে! স্বজনদের কাছ থেকে মুচলেকাসহ নাম ঠিকানা রেখে কিশোরদের ছেড়ে দেওয়া হলো। কর্তব্যরত অফিসার কিশোরদের সোজা সাপটা বলে দিলেন, ‘এরপর যদি এমন কিছু করো, তবে অবশ্যই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
কোতোয়ালি থানা সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ১৮ নভেম্বর থেকে চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত ১০২ কিশোর আটক হওয়ার তথ্য রয়েছে। রয়েছে মুচলেকাসহ নাম-ঠিকানা। পরিসংখ্যান দেখে, পুরান ঢাকার অস্থির পরিবেশের কথাই মাথায় এল। এখানে কত কত মানুষের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, বসতি। প্রতিদিন কত কত লোক আসে। ব্যবসা-বাণিজ্যে জমজমাট পরিবেশ। যা কিছুটা খারাপ করে ফেলেছে কিশোর অপরাধীরা। সন্ধ্যার পর থানায় যত ব্যস্ততা এদের নিয়েই।
থানার কর্মকর্তারা জানান, কিশোর অপরাধীদের তালিকা করা হচ্ছে। পুরো এলাকার অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করতে এটা করা হবে। ছিনতাই, ইভটিজিং ও রাস্তাঘাটে টিকটক করে সাধারণ পথচারীদের বিরক্ত করাসহ নানা অপরাধে কিশোরদের আটক করা হয়। এরপর কাউন্সেলিং করে সংশোধন করতে সুযোগও দেওয়া হচ্ছে। তবে রেখে দেওয়া হচ্ছে ছবি, নাম-ঠিকানা। এভাবেই শতাধিক কিশোরের তালিকা তৈরি হয়েছে।
দুপুরের দিকে থানায় তেমন চাপ ছিল না। দু-একজন নাগরিক থানায় এসেছিলেন প্রয়োজনীয় সেবা নিতে। তারা তখনই ফিরে গেছেন। থানায় কেউ এলে মূল ফটকে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে সতর্ক করে দিচ্ছিলেন। মাস্ক ছাড়া কাউকেই ঢুকতে দেননি। পুরো থানার পরিবেশ ঝকঝকে, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। রাতের অন্ধকারেও যেন চিকচিক করছিল দেয়াল। থানার সামনে পুলিশের কয়েকটি গাড়ি ও আটক করা কয়েকটি মোটরসাইকেল, একটি ট্রাক ও গোটা পাঁচেক সিএনজি ছাড়া তেমন কিছু চোখে পড়েনি।
থানার বাইরে চলে আসার সময় হয়েছে। টং দোকানে বসে চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে দুপুরের কিছু ঘটনা মনে পড়ে গেল। বেলা তিনটার দিকে বড় দুটি ব্যাগ ও তিন শিশুকে নিয়ে থানায় হাজির এক নারী। দুই ঘণ্টা ধরে একবার এখানে আবার ওখানে ফোনে কথা বলছিলেন তিনি। চেহারায় বিষণ্নতার ছাপ স্পষ্ট। নাসিমা নামের এই নারী আজকের প্রতিকাকে বলেন, ‘শরীয়তপুর থেকে স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা দিতে এসেছি। আমার স্বামী পুরান ঢাকায় মুরগির ব্যবসা করেন। গত সাত মাস ধরে আমাদের কারো তেমন খোঁজ খবর নেন না। এমনকি ফোনেও যোগাযোগ করেন না। পুলিশকে কাবিননামা দেখিয়ে এসবই জানালাম।’
ওই নারীর অভিযোগ, তাঁর স্বামী বিয়ে ছাড়াই আরেক নারীকে নিয়ে পুরান ঢাকায় থাকছেন। অথচ বাড়িতে দেড় লাখ টাকার মতো ঋণ। পাওনাদারেরা রোজ বাড়িতে এসে ওই নারীকেই টাকার জন্য নানা বাজে কথা বলে যান।
কোতোয়ালি থানার সার্বিক বিষয়ে ওসি মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমার থানায় সেবা নিতে এসে কেউ হয়রানির শিকার হন না। কোনো ধরনের অবৈধ লেনদেন হয় না। আমি থানায় থাকলে অপরাধীরা আতঙ্কে থাকেন। আমার চোখে অপরাধী শুধু অপরাধীই, তার আর কোনো পরিচয় আমি দেখি না। কোনো ছাড় নেই।’
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ দিন আগেআধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫পাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
০৮ মে ২০২৫ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে দুই চিরবৈরী প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই চড়ছিল। তা তুঙ্গে উঠল এবার পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা দিয়ে। পাশাপাশি সীমান্তেও দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে...
০৮ মে ২০২৫