চিররঞ্জন সরকার

প্রতিদিনই বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে সর্বস্তরের মানুষ। এর মধ্যে বাড়ানো হলো জ্বালানি তেলের দাম। এতে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। ডিজেল ও কেরোসিন লিটারে ৩৪ টাকা বাড়িয়ে ৮০ থেকে ১১৪ টাকা, অকটেন লিটারে ৪৬ টাকা বাড়িয়ে ৮৯ থেকে ১৩৫ টাকা, পেট্রল লিটারে ৪৪ টাকা বাড়িয়ে ৮৬ থেকে ১৩০ টাকা করা হয়েছে। ৫ আগস্ট রাত থেকে নতুন এই মূল্য কার্যকর করা হয়েছে।
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই তেলের পাম্পগুলোতে তেল কেনার জন্য হুড়োহুড়ি-মারামারি শুরু হয়ে যায়। আগের কেনা দামে পরের দিন বিক্রি করলে বেশি লাভ পাওয়া যাবে—এই আশায় অনেকে পাম্প বন্ধ করে দেন। অনেকে আবার ২০০ টাকা লিটারে জ্বালানি তেল বিক্রি করেন। ওদিকে দেশের কোনো কোনো এলাকার পরিবহনমালিকেরা অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন চালানো বন্ধের ঘোষণা দেন। ফলে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রতিক্রিয়ায় একটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তেলের দাম বাড়ানো হলে পরিবহন বন্ধ করে দেওয়াটা অবশ্য পরিবহন ব্যবসায়ীদের পুরোনো নীতি। তাঁরা কোনো রকম পূর্বঘোষণা ছাড়াই ধর্মঘটে যান। এরপর দর-কষাকষি করে তাঁদের লাভ ঠিক রেখে একটা নির্দিষ্ট অঙ্কে ভাড়া বাড়িয়ে আবার পরিবহন চালানো শুরু করেন। এর আগে তেলের দাম ২৩ শতাংশ বাড়ানোর প্রতিক্রিয়ায় পরিবহন ভাড়া বেড়েছিল প্রায় ২৭ শতাংশ। এবার তেলের দাম বেড়েছে প্রায় ৪৭ শতাংশ। কাজেই ভাড়া কী পরিমাণ বাড়বে, তা সহজেই অনুমেয়।
জ্বালানি তেলের দাম যে বাড়বে, তা কয়েক দিন ধরেই শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু এতটা বাড়বে, তা কল্পনা করা যায়নি। দাম বাড়ানোর ব্যাপারে সরকারি ঘোষণায় বলা হয়েছে, ‘বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের ঊর্ধ্বগতির কারণে পার্শ্ববর্তী দেশসহ বিভিন্ন দেশ নিয়মিত তেলের মূল্য সমন্বয় করে থাকে। ভারত ২২ মে থেকে কলকাতায় ডিজেলের মূল্য প্রতি লিটার ৯২.৭৬ রুপি এবং পেট্রল লিটারপ্রতি ১০৬.০৩ রুপি নির্ধারণ করেছে, যা এখনো বিদ্যমান আছে। এই মূল্য বাংলাদেশি টাকায় যথাক্রমে ১১৪.০৯ টাকা এবং ১৩০.৪২ টাকা। (১ রুপি সমান গড় ১.২৩ টাকা)। অর্থাৎ বাংলাদেশে কলকাতার তুলনায় ডিজেলের মূল্য লিটারপ্রতি ৩৪.০৯ এবং পেট্রল লিটারপ্রতি ৪৪.৪২ টাকা কমে বিক্রয় হচ্ছিল। মূল্য কম থাকায় তেল পাচার হওয়ার আশঙ্কা থেকেও জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়া সময়ের দাবি।’
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন গত ছয় মাসে (ফেব্রুয়ারি ২২ থেকে জুলাই ২০২২ পর্যন্ত) জ্বালানি তেল বিক্রি করে (সব পণ্য) ৮০১৪.৫১ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক তেলের বাজার পরিস্থিতির কারণে বিপিসির আমদানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে যৌক্তিক মূল্য সমন্বয় অপরিহার্য হয়ে পড়েছে বলেও সরকারি ঘোষণায় বলা হয়েছে।
এবারের তেলের মূল্যবৃদ্ধি অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। জ্বালানি তেলের দাম এক লাফে কখনো লিটারে ৩৪-৪৬ টাকা বাড়েনি। এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে পরিবহন, কৃষি ও উৎপাদিত পণ্যের ব্যয় বাড়বে। প্রভাব পড়বে বিদ্যুতের দামেও। যার ফলে সবকিছুর মূল্যবৃদ্ধি পাবে। সব মিলিয়ে ভীষণ রকম চাপ বাড়বে সাধারণ মানুষের ওপর।
কথা হলো, জ্বালানি তেলের দাম কেন এতটা বাড়ানো হলো? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জ্বালানি তেল খাতে সরকারের ভর্তুকি একবারে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার পদক্ষেপ এটি। সরকার অর্থনৈতিক দিক দিয়ে চাপে পড়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ৪৫০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ নেওয়ার চেষ্টা করছে। আইএমএফের ঋণের শর্তের মধ্যে অন্যতম হলো জ্বালানি খাতে ভর্তুকি প্রত্যাহার। জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে সেই শর্ত পূরণ করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ানোর জন্য নতুন এক ‘পদ্ধতি’ প্রয়োগ করা হচ্ছে। নতুন এই পদ্ধতি অনুযায়ী, ধরে ধরে সুনির্দিষ্ট পণ্যের দাম বাড়ানোর দরকার হচ্ছে না। কৌশলে মাত্র একটা জিনিসের দাম বাড়িয়ে দেন, ব্যস, কেল্লা ফতে। তাতে শুধু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য-সেবা নয়, সব ধরনের জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়! এ অনেকটা কান ধরে টান মারার মতো। কান টানুন, মাথা-চোখ, নাক-মুখ, কপাল এমনিতেই কাছে আসবে!
এই ‘কৌশলগত পণ্য’টির নাম হলো জ্বালানি তেল। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ান, বিদ্যুতের দাম বেড়ে যাবে। পরিবহন ভাড়া বেড়ে যাবে। অন্য সব জিনিসের দামও বেড়ে যাবে। বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর ব্যাপারটা নিয়ে সংসদে আলোচনা হয় না। এটা করে মন্ত্রণালয় ও তথাকথিত রেগুলেটরি এজেন্সি। ফলে নির্বাচিত হোক আর অনির্বাচিত হোক—জাতীয় সংসদের সঙ্গে এই দাম বাড়ানোর কোনো সম্পর্ক নেই। এর জন্য জাতীয় সংসদের কাছ থেকে কোনো অনুমতি নেওয়ারও প্রয়োজন হয় না। জাতীয় সংসদে আলোচনাও হয় না। অথচ কাগজে-কলমে আমাদের দেশে সংসদীয় রাজনীতি বহাল আছে!
আন্তর্জাতিক বাজারের দোহাই দিয়ে যখন জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হলো, তখন আন্তর্জাতিক বাজারে কিন্তু জ্বালানির দাম ক্রমেই কমছে। বেশ কিছুদিন বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেলে ১১০ থেকে ১১৫ ডলারের মধ্যে ওঠানামা করছিল। মাস দুয়েক আগে দুই ধরনের তেলের দামই বেড়ে প্রতি ব্যারেল প্রায় ১২৫ ডলারে উঠেছিল। এখন তা কমে ৯০ ডলারে নেমে এসেছে। তেলের দাম আরও কমবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। কেননা, ওপেক ও যুক্তরাষ্ট্র তাদের উৎপাদন বাড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম যখন কমছে, ঠিক তখন জ্বালানি তেলের দাম কেন এতটা বাড়ানো হলো?
আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে গত বছরের অক্টোবরে। এর আগের সাত-আট বছর তেলের দাম ছিল অনেক কম। তখন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) কম দামে তেল কিনে দেশের ভোক্তাদের কাছে বেশি দামে বিক্রি করে মুনাফা করেছে ৪৩ হাজার কোটি টাকার বেশি। এই টাকা কোথায় গেল? এখন কেন রাতারাতি ভর্তুকি শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা হলো? বলা হচ্ছে, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলে তেলের দাম সমন্বয় করা হবে। কিন্তু সত্যিই কি তাই হয়? গত আট বছরে সরকার মাত্র একবার দাম কমিয়েছিল, তা-ও অতিসামান্য, মাত্র ৩ টাকা প্রতি লিটারে। কিন্তু দাম বাড়তে শুরু করার এক মাসের মধ্যেই বিপিসির দেওয়া প্রস্তাব মেনে ডিজেল ও কেরোসিন তেলের দাম বাড়িয়ে দেয় লিটারে ১৫ টাকা; অর্থাৎ এক লাফে বাড়ে ২৩ শতাংশ। আর এবার বাড়ানো হলো ৪৭ শতাংশ।
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো মানেই জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়া। করোনায় নাকাল দেশবাসীর কাছে এ মূল্যবৃদ্ধি এক বড় আঘাত। মানুষ যখন একটু একটু করে গত দুই বছরের অর্থনৈতিক ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে, তখন এই মূল্যবৃদ্ধি বজ্রাঘাতের শামিল। তেলের দাম বাড়ানোর ব্যাপারে অর্থনীতিবিদদেরও সমর্থন ছিল না। তাঁরা গত কয়েক বছরে যে বিপুল পরিমাণ মুনাফা হয়েছে, সেই টাকা থেকে ভর্তুকি দেওয়ার প্রস্তাব করেছিলেন। কিন্তু সরকার সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা না করে ভেবেছে কেবল বিপিসির কথা, পরিবহন খাতের প্রভাবশালী মালিকদের কথা। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ পাওয়ার শর্ত পূরণ। কিন্তু এতে করে যে গরিব মধ্যবিত্তরা চিড়েচ্যাপ্টা হয়ে যাবে, এ ব্যাপারে কোনো হুঁশ আছে বলে মনে হয় না!
সরকার ছলেবলেকৌশলে আমাদের আয়ের ওপর ‘গোপন-হামলা’ চালাচ্ছে। আমাদের পরিশ্রমের টাকা নানা কায়দায় হাতিয়ে নিচ্ছে। প্রত্যক্ষ করের পরিবর্তে পরোক্ষ করের বোঝা তো আছেই, এর সঙ্গে যোগ হয়েছে তেল এবং সিলিন্ডার গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি। বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণা অচিরেই আসবে বলেও আশঙ্কা রয়েছে। কথা হলো, আমরা কি সবকিছু অকাতরে মেনে নেব? নাকি একটু নড়েচড়ে বসব, একটু প্রতিবাদী হব? পিঠ যে দেয়ালে ঠেকে গেছে, আর কত?
লেখক: চিররঞ্জন সরকার, গবেষক ও কলামিস্ট

প্রতিদিনই বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে সর্বস্তরের মানুষ। এর মধ্যে বাড়ানো হলো জ্বালানি তেলের দাম। এতে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। ডিজেল ও কেরোসিন লিটারে ৩৪ টাকা বাড়িয়ে ৮০ থেকে ১১৪ টাকা, অকটেন লিটারে ৪৬ টাকা বাড়িয়ে ৮৯ থেকে ১৩৫ টাকা, পেট্রল লিটারে ৪৪ টাকা বাড়িয়ে ৮৬ থেকে ১৩০ টাকা করা হয়েছে। ৫ আগস্ট রাত থেকে নতুন এই মূল্য কার্যকর করা হয়েছে।
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই তেলের পাম্পগুলোতে তেল কেনার জন্য হুড়োহুড়ি-মারামারি শুরু হয়ে যায়। আগের কেনা দামে পরের দিন বিক্রি করলে বেশি লাভ পাওয়া যাবে—এই আশায় অনেকে পাম্প বন্ধ করে দেন। অনেকে আবার ২০০ টাকা লিটারে জ্বালানি তেল বিক্রি করেন। ওদিকে দেশের কোনো কোনো এলাকার পরিবহনমালিকেরা অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন চালানো বন্ধের ঘোষণা দেন। ফলে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রতিক্রিয়ায় একটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তেলের দাম বাড়ানো হলে পরিবহন বন্ধ করে দেওয়াটা অবশ্য পরিবহন ব্যবসায়ীদের পুরোনো নীতি। তাঁরা কোনো রকম পূর্বঘোষণা ছাড়াই ধর্মঘটে যান। এরপর দর-কষাকষি করে তাঁদের লাভ ঠিক রেখে একটা নির্দিষ্ট অঙ্কে ভাড়া বাড়িয়ে আবার পরিবহন চালানো শুরু করেন। এর আগে তেলের দাম ২৩ শতাংশ বাড়ানোর প্রতিক্রিয়ায় পরিবহন ভাড়া বেড়েছিল প্রায় ২৭ শতাংশ। এবার তেলের দাম বেড়েছে প্রায় ৪৭ শতাংশ। কাজেই ভাড়া কী পরিমাণ বাড়বে, তা সহজেই অনুমেয়।
জ্বালানি তেলের দাম যে বাড়বে, তা কয়েক দিন ধরেই শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু এতটা বাড়বে, তা কল্পনা করা যায়নি। দাম বাড়ানোর ব্যাপারে সরকারি ঘোষণায় বলা হয়েছে, ‘বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের ঊর্ধ্বগতির কারণে পার্শ্ববর্তী দেশসহ বিভিন্ন দেশ নিয়মিত তেলের মূল্য সমন্বয় করে থাকে। ভারত ২২ মে থেকে কলকাতায় ডিজেলের মূল্য প্রতি লিটার ৯২.৭৬ রুপি এবং পেট্রল লিটারপ্রতি ১০৬.০৩ রুপি নির্ধারণ করেছে, যা এখনো বিদ্যমান আছে। এই মূল্য বাংলাদেশি টাকায় যথাক্রমে ১১৪.০৯ টাকা এবং ১৩০.৪২ টাকা। (১ রুপি সমান গড় ১.২৩ টাকা)। অর্থাৎ বাংলাদেশে কলকাতার তুলনায় ডিজেলের মূল্য লিটারপ্রতি ৩৪.০৯ এবং পেট্রল লিটারপ্রতি ৪৪.৪২ টাকা কমে বিক্রয় হচ্ছিল। মূল্য কম থাকায় তেল পাচার হওয়ার আশঙ্কা থেকেও জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়া সময়ের দাবি।’
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন গত ছয় মাসে (ফেব্রুয়ারি ২২ থেকে জুলাই ২০২২ পর্যন্ত) জ্বালানি তেল বিক্রি করে (সব পণ্য) ৮০১৪.৫১ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক তেলের বাজার পরিস্থিতির কারণে বিপিসির আমদানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে যৌক্তিক মূল্য সমন্বয় অপরিহার্য হয়ে পড়েছে বলেও সরকারি ঘোষণায় বলা হয়েছে।
এবারের তেলের মূল্যবৃদ্ধি অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। জ্বালানি তেলের দাম এক লাফে কখনো লিটারে ৩৪-৪৬ টাকা বাড়েনি। এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে পরিবহন, কৃষি ও উৎপাদিত পণ্যের ব্যয় বাড়বে। প্রভাব পড়বে বিদ্যুতের দামেও। যার ফলে সবকিছুর মূল্যবৃদ্ধি পাবে। সব মিলিয়ে ভীষণ রকম চাপ বাড়বে সাধারণ মানুষের ওপর।
কথা হলো, জ্বালানি তেলের দাম কেন এতটা বাড়ানো হলো? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জ্বালানি তেল খাতে সরকারের ভর্তুকি একবারে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার পদক্ষেপ এটি। সরকার অর্থনৈতিক দিক দিয়ে চাপে পড়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ৪৫০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ নেওয়ার চেষ্টা করছে। আইএমএফের ঋণের শর্তের মধ্যে অন্যতম হলো জ্বালানি খাতে ভর্তুকি প্রত্যাহার। জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে সেই শর্ত পূরণ করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ানোর জন্য নতুন এক ‘পদ্ধতি’ প্রয়োগ করা হচ্ছে। নতুন এই পদ্ধতি অনুযায়ী, ধরে ধরে সুনির্দিষ্ট পণ্যের দাম বাড়ানোর দরকার হচ্ছে না। কৌশলে মাত্র একটা জিনিসের দাম বাড়িয়ে দেন, ব্যস, কেল্লা ফতে। তাতে শুধু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য-সেবা নয়, সব ধরনের জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়! এ অনেকটা কান ধরে টান মারার মতো। কান টানুন, মাথা-চোখ, নাক-মুখ, কপাল এমনিতেই কাছে আসবে!
এই ‘কৌশলগত পণ্য’টির নাম হলো জ্বালানি তেল। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ান, বিদ্যুতের দাম বেড়ে যাবে। পরিবহন ভাড়া বেড়ে যাবে। অন্য সব জিনিসের দামও বেড়ে যাবে। বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর ব্যাপারটা নিয়ে সংসদে আলোচনা হয় না। এটা করে মন্ত্রণালয় ও তথাকথিত রেগুলেটরি এজেন্সি। ফলে নির্বাচিত হোক আর অনির্বাচিত হোক—জাতীয় সংসদের সঙ্গে এই দাম বাড়ানোর কোনো সম্পর্ক নেই। এর জন্য জাতীয় সংসদের কাছ থেকে কোনো অনুমতি নেওয়ারও প্রয়োজন হয় না। জাতীয় সংসদে আলোচনাও হয় না। অথচ কাগজে-কলমে আমাদের দেশে সংসদীয় রাজনীতি বহাল আছে!
আন্তর্জাতিক বাজারের দোহাই দিয়ে যখন জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হলো, তখন আন্তর্জাতিক বাজারে কিন্তু জ্বালানির দাম ক্রমেই কমছে। বেশ কিছুদিন বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেলে ১১০ থেকে ১১৫ ডলারের মধ্যে ওঠানামা করছিল। মাস দুয়েক আগে দুই ধরনের তেলের দামই বেড়ে প্রতি ব্যারেল প্রায় ১২৫ ডলারে উঠেছিল। এখন তা কমে ৯০ ডলারে নেমে এসেছে। তেলের দাম আরও কমবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। কেননা, ওপেক ও যুক্তরাষ্ট্র তাদের উৎপাদন বাড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম যখন কমছে, ঠিক তখন জ্বালানি তেলের দাম কেন এতটা বাড়ানো হলো?
আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে গত বছরের অক্টোবরে। এর আগের সাত-আট বছর তেলের দাম ছিল অনেক কম। তখন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) কম দামে তেল কিনে দেশের ভোক্তাদের কাছে বেশি দামে বিক্রি করে মুনাফা করেছে ৪৩ হাজার কোটি টাকার বেশি। এই টাকা কোথায় গেল? এখন কেন রাতারাতি ভর্তুকি শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা হলো? বলা হচ্ছে, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলে তেলের দাম সমন্বয় করা হবে। কিন্তু সত্যিই কি তাই হয়? গত আট বছরে সরকার মাত্র একবার দাম কমিয়েছিল, তা-ও অতিসামান্য, মাত্র ৩ টাকা প্রতি লিটারে। কিন্তু দাম বাড়তে শুরু করার এক মাসের মধ্যেই বিপিসির দেওয়া প্রস্তাব মেনে ডিজেল ও কেরোসিন তেলের দাম বাড়িয়ে দেয় লিটারে ১৫ টাকা; অর্থাৎ এক লাফে বাড়ে ২৩ শতাংশ। আর এবার বাড়ানো হলো ৪৭ শতাংশ।
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো মানেই জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়া। করোনায় নাকাল দেশবাসীর কাছে এ মূল্যবৃদ্ধি এক বড় আঘাত। মানুষ যখন একটু একটু করে গত দুই বছরের অর্থনৈতিক ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে, তখন এই মূল্যবৃদ্ধি বজ্রাঘাতের শামিল। তেলের দাম বাড়ানোর ব্যাপারে অর্থনীতিবিদদেরও সমর্থন ছিল না। তাঁরা গত কয়েক বছরে যে বিপুল পরিমাণ মুনাফা হয়েছে, সেই টাকা থেকে ভর্তুকি দেওয়ার প্রস্তাব করেছিলেন। কিন্তু সরকার সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা না করে ভেবেছে কেবল বিপিসির কথা, পরিবহন খাতের প্রভাবশালী মালিকদের কথা। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ পাওয়ার শর্ত পূরণ। কিন্তু এতে করে যে গরিব মধ্যবিত্তরা চিড়েচ্যাপ্টা হয়ে যাবে, এ ব্যাপারে কোনো হুঁশ আছে বলে মনে হয় না!
সরকার ছলেবলেকৌশলে আমাদের আয়ের ওপর ‘গোপন-হামলা’ চালাচ্ছে। আমাদের পরিশ্রমের টাকা নানা কায়দায় হাতিয়ে নিচ্ছে। প্রত্যক্ষ করের পরিবর্তে পরোক্ষ করের বোঝা তো আছেই, এর সঙ্গে যোগ হয়েছে তেল এবং সিলিন্ডার গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি। বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণা অচিরেই আসবে বলেও আশঙ্কা রয়েছে। কথা হলো, আমরা কি সবকিছু অকাতরে মেনে নেব? নাকি একটু নড়েচড়ে বসব, একটু প্রতিবাদী হব? পিঠ যে দেয়ালে ঠেকে গেছে, আর কত?
লেখক: চিররঞ্জন সরকার, গবেষক ও কলামিস্ট
চিররঞ্জন সরকার

প্রতিদিনই বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে সর্বস্তরের মানুষ। এর মধ্যে বাড়ানো হলো জ্বালানি তেলের দাম। এতে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। ডিজেল ও কেরোসিন লিটারে ৩৪ টাকা বাড়িয়ে ৮০ থেকে ১১৪ টাকা, অকটেন লিটারে ৪৬ টাকা বাড়িয়ে ৮৯ থেকে ১৩৫ টাকা, পেট্রল লিটারে ৪৪ টাকা বাড়িয়ে ৮৬ থেকে ১৩০ টাকা করা হয়েছে। ৫ আগস্ট রাত থেকে নতুন এই মূল্য কার্যকর করা হয়েছে।
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই তেলের পাম্পগুলোতে তেল কেনার জন্য হুড়োহুড়ি-মারামারি শুরু হয়ে যায়। আগের কেনা দামে পরের দিন বিক্রি করলে বেশি লাভ পাওয়া যাবে—এই আশায় অনেকে পাম্প বন্ধ করে দেন। অনেকে আবার ২০০ টাকা লিটারে জ্বালানি তেল বিক্রি করেন। ওদিকে দেশের কোনো কোনো এলাকার পরিবহনমালিকেরা অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন চালানো বন্ধের ঘোষণা দেন। ফলে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রতিক্রিয়ায় একটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তেলের দাম বাড়ানো হলে পরিবহন বন্ধ করে দেওয়াটা অবশ্য পরিবহন ব্যবসায়ীদের পুরোনো নীতি। তাঁরা কোনো রকম পূর্বঘোষণা ছাড়াই ধর্মঘটে যান। এরপর দর-কষাকষি করে তাঁদের লাভ ঠিক রেখে একটা নির্দিষ্ট অঙ্কে ভাড়া বাড়িয়ে আবার পরিবহন চালানো শুরু করেন। এর আগে তেলের দাম ২৩ শতাংশ বাড়ানোর প্রতিক্রিয়ায় পরিবহন ভাড়া বেড়েছিল প্রায় ২৭ শতাংশ। এবার তেলের দাম বেড়েছে প্রায় ৪৭ শতাংশ। কাজেই ভাড়া কী পরিমাণ বাড়বে, তা সহজেই অনুমেয়।
জ্বালানি তেলের দাম যে বাড়বে, তা কয়েক দিন ধরেই শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু এতটা বাড়বে, তা কল্পনা করা যায়নি। দাম বাড়ানোর ব্যাপারে সরকারি ঘোষণায় বলা হয়েছে, ‘বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের ঊর্ধ্বগতির কারণে পার্শ্ববর্তী দেশসহ বিভিন্ন দেশ নিয়মিত তেলের মূল্য সমন্বয় করে থাকে। ভারত ২২ মে থেকে কলকাতায় ডিজেলের মূল্য প্রতি লিটার ৯২.৭৬ রুপি এবং পেট্রল লিটারপ্রতি ১০৬.০৩ রুপি নির্ধারণ করেছে, যা এখনো বিদ্যমান আছে। এই মূল্য বাংলাদেশি টাকায় যথাক্রমে ১১৪.০৯ টাকা এবং ১৩০.৪২ টাকা। (১ রুপি সমান গড় ১.২৩ টাকা)। অর্থাৎ বাংলাদেশে কলকাতার তুলনায় ডিজেলের মূল্য লিটারপ্রতি ৩৪.০৯ এবং পেট্রল লিটারপ্রতি ৪৪.৪২ টাকা কমে বিক্রয় হচ্ছিল। মূল্য কম থাকায় তেল পাচার হওয়ার আশঙ্কা থেকেও জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়া সময়ের দাবি।’
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন গত ছয় মাসে (ফেব্রুয়ারি ২২ থেকে জুলাই ২০২২ পর্যন্ত) জ্বালানি তেল বিক্রি করে (সব পণ্য) ৮০১৪.৫১ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক তেলের বাজার পরিস্থিতির কারণে বিপিসির আমদানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে যৌক্তিক মূল্য সমন্বয় অপরিহার্য হয়ে পড়েছে বলেও সরকারি ঘোষণায় বলা হয়েছে।
এবারের তেলের মূল্যবৃদ্ধি অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। জ্বালানি তেলের দাম এক লাফে কখনো লিটারে ৩৪-৪৬ টাকা বাড়েনি। এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে পরিবহন, কৃষি ও উৎপাদিত পণ্যের ব্যয় বাড়বে। প্রভাব পড়বে বিদ্যুতের দামেও। যার ফলে সবকিছুর মূল্যবৃদ্ধি পাবে। সব মিলিয়ে ভীষণ রকম চাপ বাড়বে সাধারণ মানুষের ওপর।
কথা হলো, জ্বালানি তেলের দাম কেন এতটা বাড়ানো হলো? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জ্বালানি তেল খাতে সরকারের ভর্তুকি একবারে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার পদক্ষেপ এটি। সরকার অর্থনৈতিক দিক দিয়ে চাপে পড়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ৪৫০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ নেওয়ার চেষ্টা করছে। আইএমএফের ঋণের শর্তের মধ্যে অন্যতম হলো জ্বালানি খাতে ভর্তুকি প্রত্যাহার। জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে সেই শর্ত পূরণ করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ানোর জন্য নতুন এক ‘পদ্ধতি’ প্রয়োগ করা হচ্ছে। নতুন এই পদ্ধতি অনুযায়ী, ধরে ধরে সুনির্দিষ্ট পণ্যের দাম বাড়ানোর দরকার হচ্ছে না। কৌশলে মাত্র একটা জিনিসের দাম বাড়িয়ে দেন, ব্যস, কেল্লা ফতে। তাতে শুধু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য-সেবা নয়, সব ধরনের জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়! এ অনেকটা কান ধরে টান মারার মতো। কান টানুন, মাথা-চোখ, নাক-মুখ, কপাল এমনিতেই কাছে আসবে!
এই ‘কৌশলগত পণ্য’টির নাম হলো জ্বালানি তেল। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ান, বিদ্যুতের দাম বেড়ে যাবে। পরিবহন ভাড়া বেড়ে যাবে। অন্য সব জিনিসের দামও বেড়ে যাবে। বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর ব্যাপারটা নিয়ে সংসদে আলোচনা হয় না। এটা করে মন্ত্রণালয় ও তথাকথিত রেগুলেটরি এজেন্সি। ফলে নির্বাচিত হোক আর অনির্বাচিত হোক—জাতীয় সংসদের সঙ্গে এই দাম বাড়ানোর কোনো সম্পর্ক নেই। এর জন্য জাতীয় সংসদের কাছ থেকে কোনো অনুমতি নেওয়ারও প্রয়োজন হয় না। জাতীয় সংসদে আলোচনাও হয় না। অথচ কাগজে-কলমে আমাদের দেশে সংসদীয় রাজনীতি বহাল আছে!
আন্তর্জাতিক বাজারের দোহাই দিয়ে যখন জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হলো, তখন আন্তর্জাতিক বাজারে কিন্তু জ্বালানির দাম ক্রমেই কমছে। বেশ কিছুদিন বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেলে ১১০ থেকে ১১৫ ডলারের মধ্যে ওঠানামা করছিল। মাস দুয়েক আগে দুই ধরনের তেলের দামই বেড়ে প্রতি ব্যারেল প্রায় ১২৫ ডলারে উঠেছিল। এখন তা কমে ৯০ ডলারে নেমে এসেছে। তেলের দাম আরও কমবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। কেননা, ওপেক ও যুক্তরাষ্ট্র তাদের উৎপাদন বাড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম যখন কমছে, ঠিক তখন জ্বালানি তেলের দাম কেন এতটা বাড়ানো হলো?
আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে গত বছরের অক্টোবরে। এর আগের সাত-আট বছর তেলের দাম ছিল অনেক কম। তখন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) কম দামে তেল কিনে দেশের ভোক্তাদের কাছে বেশি দামে বিক্রি করে মুনাফা করেছে ৪৩ হাজার কোটি টাকার বেশি। এই টাকা কোথায় গেল? এখন কেন রাতারাতি ভর্তুকি শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা হলো? বলা হচ্ছে, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলে তেলের দাম সমন্বয় করা হবে। কিন্তু সত্যিই কি তাই হয়? গত আট বছরে সরকার মাত্র একবার দাম কমিয়েছিল, তা-ও অতিসামান্য, মাত্র ৩ টাকা প্রতি লিটারে। কিন্তু দাম বাড়তে শুরু করার এক মাসের মধ্যেই বিপিসির দেওয়া প্রস্তাব মেনে ডিজেল ও কেরোসিন তেলের দাম বাড়িয়ে দেয় লিটারে ১৫ টাকা; অর্থাৎ এক লাফে বাড়ে ২৩ শতাংশ। আর এবার বাড়ানো হলো ৪৭ শতাংশ।
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো মানেই জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়া। করোনায় নাকাল দেশবাসীর কাছে এ মূল্যবৃদ্ধি এক বড় আঘাত। মানুষ যখন একটু একটু করে গত দুই বছরের অর্থনৈতিক ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে, তখন এই মূল্যবৃদ্ধি বজ্রাঘাতের শামিল। তেলের দাম বাড়ানোর ব্যাপারে অর্থনীতিবিদদেরও সমর্থন ছিল না। তাঁরা গত কয়েক বছরে যে বিপুল পরিমাণ মুনাফা হয়েছে, সেই টাকা থেকে ভর্তুকি দেওয়ার প্রস্তাব করেছিলেন। কিন্তু সরকার সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা না করে ভেবেছে কেবল বিপিসির কথা, পরিবহন খাতের প্রভাবশালী মালিকদের কথা। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ পাওয়ার শর্ত পূরণ। কিন্তু এতে করে যে গরিব মধ্যবিত্তরা চিড়েচ্যাপ্টা হয়ে যাবে, এ ব্যাপারে কোনো হুঁশ আছে বলে মনে হয় না!
সরকার ছলেবলেকৌশলে আমাদের আয়ের ওপর ‘গোপন-হামলা’ চালাচ্ছে। আমাদের পরিশ্রমের টাকা নানা কায়দায় হাতিয়ে নিচ্ছে। প্রত্যক্ষ করের পরিবর্তে পরোক্ষ করের বোঝা তো আছেই, এর সঙ্গে যোগ হয়েছে তেল এবং সিলিন্ডার গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি। বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণা অচিরেই আসবে বলেও আশঙ্কা রয়েছে। কথা হলো, আমরা কি সবকিছু অকাতরে মেনে নেব? নাকি একটু নড়েচড়ে বসব, একটু প্রতিবাদী হব? পিঠ যে দেয়ালে ঠেকে গেছে, আর কত?
লেখক: চিররঞ্জন সরকার, গবেষক ও কলামিস্ট

প্রতিদিনই বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে সর্বস্তরের মানুষ। এর মধ্যে বাড়ানো হলো জ্বালানি তেলের দাম। এতে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। ডিজেল ও কেরোসিন লিটারে ৩৪ টাকা বাড়িয়ে ৮০ থেকে ১১৪ টাকা, অকটেন লিটারে ৪৬ টাকা বাড়িয়ে ৮৯ থেকে ১৩৫ টাকা, পেট্রল লিটারে ৪৪ টাকা বাড়িয়ে ৮৬ থেকে ১৩০ টাকা করা হয়েছে। ৫ আগস্ট রাত থেকে নতুন এই মূল্য কার্যকর করা হয়েছে।
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই তেলের পাম্পগুলোতে তেল কেনার জন্য হুড়োহুড়ি-মারামারি শুরু হয়ে যায়। আগের কেনা দামে পরের দিন বিক্রি করলে বেশি লাভ পাওয়া যাবে—এই আশায় অনেকে পাম্প বন্ধ করে দেন। অনেকে আবার ২০০ টাকা লিটারে জ্বালানি তেল বিক্রি করেন। ওদিকে দেশের কোনো কোনো এলাকার পরিবহনমালিকেরা অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন চালানো বন্ধের ঘোষণা দেন। ফলে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রতিক্রিয়ায় একটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তেলের দাম বাড়ানো হলে পরিবহন বন্ধ করে দেওয়াটা অবশ্য পরিবহন ব্যবসায়ীদের পুরোনো নীতি। তাঁরা কোনো রকম পূর্বঘোষণা ছাড়াই ধর্মঘটে যান। এরপর দর-কষাকষি করে তাঁদের লাভ ঠিক রেখে একটা নির্দিষ্ট অঙ্কে ভাড়া বাড়িয়ে আবার পরিবহন চালানো শুরু করেন। এর আগে তেলের দাম ২৩ শতাংশ বাড়ানোর প্রতিক্রিয়ায় পরিবহন ভাড়া বেড়েছিল প্রায় ২৭ শতাংশ। এবার তেলের দাম বেড়েছে প্রায় ৪৭ শতাংশ। কাজেই ভাড়া কী পরিমাণ বাড়বে, তা সহজেই অনুমেয়।
জ্বালানি তেলের দাম যে বাড়বে, তা কয়েক দিন ধরেই শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু এতটা বাড়বে, তা কল্পনা করা যায়নি। দাম বাড়ানোর ব্যাপারে সরকারি ঘোষণায় বলা হয়েছে, ‘বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের ঊর্ধ্বগতির কারণে পার্শ্ববর্তী দেশসহ বিভিন্ন দেশ নিয়মিত তেলের মূল্য সমন্বয় করে থাকে। ভারত ২২ মে থেকে কলকাতায় ডিজেলের মূল্য প্রতি লিটার ৯২.৭৬ রুপি এবং পেট্রল লিটারপ্রতি ১০৬.০৩ রুপি নির্ধারণ করেছে, যা এখনো বিদ্যমান আছে। এই মূল্য বাংলাদেশি টাকায় যথাক্রমে ১১৪.০৯ টাকা এবং ১৩০.৪২ টাকা। (১ রুপি সমান গড় ১.২৩ টাকা)। অর্থাৎ বাংলাদেশে কলকাতার তুলনায় ডিজেলের মূল্য লিটারপ্রতি ৩৪.০৯ এবং পেট্রল লিটারপ্রতি ৪৪.৪২ টাকা কমে বিক্রয় হচ্ছিল। মূল্য কম থাকায় তেল পাচার হওয়ার আশঙ্কা থেকেও জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়া সময়ের দাবি।’
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন গত ছয় মাসে (ফেব্রুয়ারি ২২ থেকে জুলাই ২০২২ পর্যন্ত) জ্বালানি তেল বিক্রি করে (সব পণ্য) ৮০১৪.৫১ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক তেলের বাজার পরিস্থিতির কারণে বিপিসির আমদানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে যৌক্তিক মূল্য সমন্বয় অপরিহার্য হয়ে পড়েছে বলেও সরকারি ঘোষণায় বলা হয়েছে।
এবারের তেলের মূল্যবৃদ্ধি অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। জ্বালানি তেলের দাম এক লাফে কখনো লিটারে ৩৪-৪৬ টাকা বাড়েনি। এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে পরিবহন, কৃষি ও উৎপাদিত পণ্যের ব্যয় বাড়বে। প্রভাব পড়বে বিদ্যুতের দামেও। যার ফলে সবকিছুর মূল্যবৃদ্ধি পাবে। সব মিলিয়ে ভীষণ রকম চাপ বাড়বে সাধারণ মানুষের ওপর।
কথা হলো, জ্বালানি তেলের দাম কেন এতটা বাড়ানো হলো? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জ্বালানি তেল খাতে সরকারের ভর্তুকি একবারে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার পদক্ষেপ এটি। সরকার অর্থনৈতিক দিক দিয়ে চাপে পড়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ৪৫০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ নেওয়ার চেষ্টা করছে। আইএমএফের ঋণের শর্তের মধ্যে অন্যতম হলো জ্বালানি খাতে ভর্তুকি প্রত্যাহার। জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে সেই শর্ত পূরণ করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ানোর জন্য নতুন এক ‘পদ্ধতি’ প্রয়োগ করা হচ্ছে। নতুন এই পদ্ধতি অনুযায়ী, ধরে ধরে সুনির্দিষ্ট পণ্যের দাম বাড়ানোর দরকার হচ্ছে না। কৌশলে মাত্র একটা জিনিসের দাম বাড়িয়ে দেন, ব্যস, কেল্লা ফতে। তাতে শুধু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য-সেবা নয়, সব ধরনের জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়! এ অনেকটা কান ধরে টান মারার মতো। কান টানুন, মাথা-চোখ, নাক-মুখ, কপাল এমনিতেই কাছে আসবে!
এই ‘কৌশলগত পণ্য’টির নাম হলো জ্বালানি তেল। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ান, বিদ্যুতের দাম বেড়ে যাবে। পরিবহন ভাড়া বেড়ে যাবে। অন্য সব জিনিসের দামও বেড়ে যাবে। বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর ব্যাপারটা নিয়ে সংসদে আলোচনা হয় না। এটা করে মন্ত্রণালয় ও তথাকথিত রেগুলেটরি এজেন্সি। ফলে নির্বাচিত হোক আর অনির্বাচিত হোক—জাতীয় সংসদের সঙ্গে এই দাম বাড়ানোর কোনো সম্পর্ক নেই। এর জন্য জাতীয় সংসদের কাছ থেকে কোনো অনুমতি নেওয়ারও প্রয়োজন হয় না। জাতীয় সংসদে আলোচনাও হয় না। অথচ কাগজে-কলমে আমাদের দেশে সংসদীয় রাজনীতি বহাল আছে!
আন্তর্জাতিক বাজারের দোহাই দিয়ে যখন জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হলো, তখন আন্তর্জাতিক বাজারে কিন্তু জ্বালানির দাম ক্রমেই কমছে। বেশ কিছুদিন বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেলে ১১০ থেকে ১১৫ ডলারের মধ্যে ওঠানামা করছিল। মাস দুয়েক আগে দুই ধরনের তেলের দামই বেড়ে প্রতি ব্যারেল প্রায় ১২৫ ডলারে উঠেছিল। এখন তা কমে ৯০ ডলারে নেমে এসেছে। তেলের দাম আরও কমবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। কেননা, ওপেক ও যুক্তরাষ্ট্র তাদের উৎপাদন বাড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম যখন কমছে, ঠিক তখন জ্বালানি তেলের দাম কেন এতটা বাড়ানো হলো?
আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে গত বছরের অক্টোবরে। এর আগের সাত-আট বছর তেলের দাম ছিল অনেক কম। তখন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) কম দামে তেল কিনে দেশের ভোক্তাদের কাছে বেশি দামে বিক্রি করে মুনাফা করেছে ৪৩ হাজার কোটি টাকার বেশি। এই টাকা কোথায় গেল? এখন কেন রাতারাতি ভর্তুকি শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা হলো? বলা হচ্ছে, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলে তেলের দাম সমন্বয় করা হবে। কিন্তু সত্যিই কি তাই হয়? গত আট বছরে সরকার মাত্র একবার দাম কমিয়েছিল, তা-ও অতিসামান্য, মাত্র ৩ টাকা প্রতি লিটারে। কিন্তু দাম বাড়তে শুরু করার এক মাসের মধ্যেই বিপিসির দেওয়া প্রস্তাব মেনে ডিজেল ও কেরোসিন তেলের দাম বাড়িয়ে দেয় লিটারে ১৫ টাকা; অর্থাৎ এক লাফে বাড়ে ২৩ শতাংশ। আর এবার বাড়ানো হলো ৪৭ শতাংশ।
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো মানেই জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়া। করোনায় নাকাল দেশবাসীর কাছে এ মূল্যবৃদ্ধি এক বড় আঘাত। মানুষ যখন একটু একটু করে গত দুই বছরের অর্থনৈতিক ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে, তখন এই মূল্যবৃদ্ধি বজ্রাঘাতের শামিল। তেলের দাম বাড়ানোর ব্যাপারে অর্থনীতিবিদদেরও সমর্থন ছিল না। তাঁরা গত কয়েক বছরে যে বিপুল পরিমাণ মুনাফা হয়েছে, সেই টাকা থেকে ভর্তুকি দেওয়ার প্রস্তাব করেছিলেন। কিন্তু সরকার সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা না করে ভেবেছে কেবল বিপিসির কথা, পরিবহন খাতের প্রভাবশালী মালিকদের কথা। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ পাওয়ার শর্ত পূরণ। কিন্তু এতে করে যে গরিব মধ্যবিত্তরা চিড়েচ্যাপ্টা হয়ে যাবে, এ ব্যাপারে কোনো হুঁশ আছে বলে মনে হয় না!
সরকার ছলেবলেকৌশলে আমাদের আয়ের ওপর ‘গোপন-হামলা’ চালাচ্ছে। আমাদের পরিশ্রমের টাকা নানা কায়দায় হাতিয়ে নিচ্ছে। প্রত্যক্ষ করের পরিবর্তে পরোক্ষ করের বোঝা তো আছেই, এর সঙ্গে যোগ হয়েছে তেল এবং সিলিন্ডার গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি। বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণা অচিরেই আসবে বলেও আশঙ্কা রয়েছে। কথা হলো, আমরা কি সবকিছু অকাতরে মেনে নেব? নাকি একটু নড়েচড়ে বসব, একটু প্রতিবাদী হব? পিঠ যে দেয়ালে ঠেকে গেছে, আর কত?
লেখক: চিররঞ্জন সরকার, গবেষক ও কলামিস্ট

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

প্রতিদিনই বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে সর্বস্তরের মানুষ। এর মধ্যে বাড়ানো হলো জ্বালানি তেলের দাম। এতে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। ডিজেল ও কেরোসিন লিটারে ৩৪ টাকা বাড়িয়ে ৮০ থেকে ১১৪ টাকা, অকটেন লিটারে ৪৬ টাকা বাড়িয়ে ৮৯ থেকে ১৩৫ টাকা, পেট্রল লিটারে ৪৪ টাকা বাড়িয়ে ৮৬ থেকে
০৭ আগস্ট ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

প্রতিদিনই বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে সর্বস্তরের মানুষ। এর মধ্যে বাড়ানো হলো জ্বালানি তেলের দাম। এতে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। ডিজেল ও কেরোসিন লিটারে ৩৪ টাকা বাড়িয়ে ৮০ থেকে ১১৪ টাকা, অকটেন লিটারে ৪৬ টাকা বাড়িয়ে ৮৯ থেকে ১৩৫ টাকা, পেট্রল লিটারে ৪৪ টাকা বাড়িয়ে ৮৬ থেকে
০৭ আগস্ট ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

প্রতিদিনই বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে সর্বস্তরের মানুষ। এর মধ্যে বাড়ানো হলো জ্বালানি তেলের দাম। এতে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। ডিজেল ও কেরোসিন লিটারে ৩৪ টাকা বাড়িয়ে ৮০ থেকে ১১৪ টাকা, অকটেন লিটারে ৪৬ টাকা বাড়িয়ে ৮৯ থেকে ১৩৫ টাকা, পেট্রল লিটারে ৪৪ টাকা বাড়িয়ে ৮৬ থেকে
০৭ আগস্ট ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

প্রতিদিনই বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে সর্বস্তরের মানুষ। এর মধ্যে বাড়ানো হলো জ্বালানি তেলের দাম। এতে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। ডিজেল ও কেরোসিন লিটারে ৩৪ টাকা বাড়িয়ে ৮০ থেকে ১১৪ টাকা, অকটেন লিটারে ৪৬ টাকা বাড়িয়ে ৮৯ থেকে ১৩৫ টাকা, পেট্রল লিটারে ৪৪ টাকা বাড়িয়ে ৮৬ থেকে
০৭ আগস্ট ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫