Ajker Patrika

খালের মুখে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ, পানিপ্রবাহ বন্ধ

নলডাঙ্গা (নাটোর) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০২১, ১৫: ১৭
খালের মুখে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ, পানিপ্রবাহ বন্ধ

নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার মাধনগর ইউনিয়নের ভূমি কার্যালয়ের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ছোট একটি খাল। আয়তনে ছোট হলেও পার্শ্ববর্তী গ্রামের পানিনিষ্কাশনে খালটির ভূমিকা বেশ বড়। অথচ সেই খালের মুখে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করছেন স্থানীয় এক প্রভাবশালী। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এলাকার পানিনিষ্কাশন। বর্ষায় জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগে পড়ে সাধারণ মানুষ। এ অবস্থায় খালের মুখ উন্মুক্ত করার দাবিতে গত শনিবার মানববন্ধন করেছেন গ্রামবাসী।

স্থানীয় লোকজন জানান, খালটি মিশেছে হালতি বিলের অন্য একটি বড় খালের সঙ্গে। বিভিন্ন সময় দখল হতে হতে ছোট এ খাল আরও ছোট হয়ে বর্তমানে দুই একরে গিয়ে ঠেকেছে। খালের উত্তর পাশ আগেই দখল হয়ে গিয়েছিল। সেখানে মাটি ভরাট করে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠায় পানিপ্রবাহ অনেক আগেই বন্ধ হয়ে গেছে। এবার পূর্ব পাশে নলডাঙ্গা-মাধনগর সড়কের নিচের দিকে বাঁধ দিয়ে খালের পানিপ্রবাহ বন্ধ করে মাছ চাষ করছেন স্থানীয় প্রভাবশালী আজিজুল ইসলাম।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘মাধনগর ভূমি কার্যালয়ের তহশিলদার খালটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কেয়ারটেকার হিসেবে আমাকে নিয়োগ দিয়েছেন। আমি এ খালে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করি।’

আজিজুল ইসলামের মাছ চাষের উদ্যোগে তাঁকে লাভবান করলেও ভোগান্তির শিকার গ্রামের শতাধিক পরিবার। তাঁরা জানান, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে পশ্চিম মাধনগর গ্রাম প্লাবিত হয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়ায় অনেককে বর্ষার সময় অন্যত্র আশ্রয় নিতে হয়।

খালটি দখলমুক্ত করে দুই পাড়ের বাঁধ অপসারণের দাবিতে গতকাল শনিবার মানববন্ধন করেছেন গ্রামবাসী। মানববন্ধন শেষে পশ্চিম মাধনগর গ্রামের দুলাল সরদার অভিযোগ করে বলেন, প্রায় ৭-৮ বিঘা এলাকাজুড়ে খালটির পানিপ্রবাহ বন্ধ করে মাছ চাষ করার অনুমতি দিয়েছেন তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও মাধনগর ভূমি অফিস।

মাধনগর ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) এম এ তাহের বলেন, জলমহাল নীতিমালায় খালটি ভোগদখল করবে মাধনগর ইউনিয়ন ভূমি অফিস। তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নির্দেশে খালটি রক্ষণাবেক্ষণ ও মাছ চাষ করার জন্য স্থানীয় আজিজুল ইসলামকে নিয়োগ দেওয়া হয়। অনেক আগে থেকে এভাবে চলে আসছে। তবে চাষকৃত মাছ বিক্রির টাকা কোথায় যায় প্রশ্নে তিনি বলেন, ভূমি অফিসের মাটিকাটা ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজে টাকাগুলো ব্যয় হয়।

নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুখময় সরকার বলেন, মাধনগর ভূমি কার্যালয়ের পাশের জলমহালটি জেলা প্রশাসকের অধীনে। তাই এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ভালো বলতে পারবেন।

নাটোর জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ মোবাইল ফোনে বলেন, ‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি নলডাঙ্গার ইউএনওকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলে দিচ্ছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত