Ajker Patrika

যত্রতত্র শিল্পকারখানা, কমছে আবাদি জমি

জসিম উদ্দিন, নীলফামারী
Thumbnail image

নীলফামারীতে যত্রতত্র অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠছে ক্ষুদ্র, মাঝারি ও ভারী শিল্পকারখানা। সৈয়দপুরে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) শিল্পনগরীতে জায়গা না থাকায় বিভিন্ন উপজেলায় কৃষিজমিতে গড়ে উঠছে এসব কারখানা। এতে কমে আসছে আবাদি জমি।

এদিকে বগুড়া-রংপুর-সৈয়দপুর গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ প্রায় সম্পন্ন। আগামী জুনে উত্তরাঞ্চলের মানুষ গ্যাস পাচ্ছে—পেট্রোবাংলার এমন ঘোষণার পর দেশের শিল্প উদ্যোক্তারা এ অঞ্চলে জমি কিনে গড়ে তুলছেন শিল্পকারখানা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্রমতে, কৃষিনির্ভর সম্ভাবনাময় জেলা নীলফামারীতে মোট আবাদি জমির পরিমাণ ১ লাখ ২৪ হাজার ৯২২ হেক্টর। এখানকার অধিকাংশ জমি তিন ফসলি। রয়েছে ৫৫০ হেক্টরের চার ফসলি জমিও। বর্তমানে এসব কৃষিজমিতে কারখানা গড়া হচ্ছে। জেলার সৈয়দপুরে শিল্পকারখানা ও আবাসন গড়ে ওঠায় গত পাঁচ বছরে ২০০ হেক্টর আবাদি জমি কমেছে বলে কৃষি বিভাগের পরিসংখ্যানে জানা গেছে।

বিসিকের তথ্যমতে, নীলফামারীকে শিল্পকারখানায় সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে ১৯৯০ সালে সৈয়দপুরে ১১ একর জমি নিয়ে বিসিক শিল্পনগরী গড়ে তোলা হয়। এটি প্রতিষ্ঠার ১০ বছরের মধ্যেই ৯২টি প্লটের সবগুলোতে শিল্পকারখানা গড়ে ওঠে। পরবর্তী সময় নতুন নতুন শিল্প উদ্যোক্তারা এগিয়ে এলেও সেখানে তাঁরা কোনো জায়গায় পাননি। ফলে জেলার বিভিন্ন আবাদি ও অনাবাদি জমিতে গড়ে তুলছেন শিল্পপ্রতিষ্ঠান।

নীলফামারী চেম্বার অব কমার্সের সহসভাপতি রাজ কুমার পোদ্দার আজকের পত্রিকাকে বলেন, সৈয়দপুর বিসিক শিল্পনগরীর প্লট সম্প্রসারণ করা না হলেও জেলার শিল্প উন্নয়ন থেমে নেই। বিভিন্ন উপজেলায় অপরিকল্পিতভাবে ফসলি জমিতে কারখানা গড়ে উঠছে।বিসিকে প্লট বরাদ্দ পেলে উদ্যোক্তারা অনেক সাশ্রয়ে কারখানা গড়ে তুলতে পারতেন। বাইরে অতিরিক্ত দামে জমি কিনে যাতায়াত ব্যবস্থা ও বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করতে অনেক পুঁজি খোয়াতে হয়।

এ বিষয়ে বিসিকের উপব্যবস্থাপক হুসনে আরা খাতুন বলেন, সৈয়দপুর বিসিক শিল্পনগরীর আশপাশে কোনো জায়গা না থাকায় তা সম্প্রসারণ করা সম্ভব নয়। তবে কৃষিজমির যাতে ক্ষতি না হয়, সে জন্য জেলা সদরে দ্রুত নতুন একটি নগরী স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সে মোতাবেক সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ইতিমধ্যে জায়গা মনোনীত করে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।

জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, বগুড়া থেকে পাইপলাইনে নীলফামারীতে গ্যাস আসছে। তাই এখানে উদ্যোক্তাদের সমাগম বাড়ছে। ইতিমধ্যে আবাদি জমিতে শিল্পকারখানা গড়ে উঠেছে, যা উদ্বেগজনক। তবে শিল্পনগরী স্থাপন হলে কৃষিজমিগুলো রক্ষা পাবে। সে লক্ষ্যে জেলা প্রশাসন কাজ করছে।

উল্লেখ্য, নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডের বাইরে জেলায় প্রায় তিন হাজারের বেশি শিল্পকারখানা রয়েছে। এসব কারখানায় লক্ষাধিক মানুষ কাজ করছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত