জাহীদ রেজা নূর

আজকের পত্রিকা: ১৯৭১ সালেই গঠিত হয়েছিল বাংলাদেশ বিমানবাহিনী। যুদ্ধের মাঠে তারা কৃতিত্বও দেখিয়েছিল। কিন্তু সেই ইতিহাস আমাদের অনেকেরই জানা নেই। এ ব্যাপারে আপনি যদি একটু আলোকপাত করেন।
ক্যাপ্টেন শাহাব উদ্দীন আহমেদ: যখনকার কথা বলছি, তখনো বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়নি। আমরা চট্টগ্রামের এমপি এম আর সিদ্দিকী এবং জেনারেল ওসমানীকে পেয়ে আলাপ করলাম। বললাম যে আমরা ছোটখাটো এমন প্লেন সংগ্রহ করতে যাচ্ছি, যেগুলো বাংলাদেশের পানিতেও নামতে পারে এবং ছোট ছোট মাঠেও নামতে পারে। এটা ভারতকে কোনো সমস্যার মুখোমুখি করবে না। এম আর সিদ্দিকী আর এম এ জি ওসমানী বললেন, আমরা তোমাদের বিএসএফের প্রধানের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিতে পারি। বিএসএফপ্রধান বললেন, এটা তাঁর ক্ষমতার বাইরে। কথা বলতে হবে দিল্লির সঙ্গে। একসময় দিল্লি থেকে আমাদের ডাকা হলো। আমি, আলমগীর সাত্তার এবং আরও একজন সেখানে গেলাম। এটা ছিল জুন মাসের ১২ তারিখ। আমরা আগরতলা থেকে রওনা হয়ে ১২ তারিখ রাত ১০টায় দিল্লিতে পৌঁছালাম। পরদিন ভারত সরকারের বিভিন্ন বিভাগের সচিব, প্রতিরক্ষা বিভাগের লোক, এয়ারফোর্সের লোকদের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হলো। তাঁরা আমাদের জিজ্ঞেস করলেন, তোমাদের পরিকল্পনাটা কী?
আমরা বললাম, আমাদের ছোট ছোট প্লেন দরকার, যেগুলো আমরা বাংলাদেশ থেকেই অপারেট করব। কারণ, এই অপারেশনগুলো যেন ভারত সরকারের বিপরীতে কোনো প্রশ্ন না তুলতে পারে। কূটনৈতিকভাবে ভারত যেন অপদস্থ না হয়, সেটা নিশ্চিত করা হবে।তাঁরা আমাদের প্রস্তাব প্রস্তাব গ্রহণ করলেন। কিন্তু জানালেন, প্রস্তাবটা আসতে হবে বাংলাদেশ সরকারের মাধ্যমে।
আজকের পত্রিকা: তখন আপনারা কী করলেন?
ক্যাপ্টেন শাহাব উদ্দীন আহমেদ: তাঁরা আমাদের কলকাতায় পাঠিয়ে দিলেন। সেখানে আমরা দেখা করলাম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ এবং ডেপুটি চিফ অব স্টাফ গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ কে খন্দকারের সঙ্গে। তাঁদের আমরা আমাদের পরিকল্পনার কথা জানালাম। ভারত সরকার আমাদের ছোট ছোট প্লেন দেবে, তাতে ভারত সরকারের কোনো অসুবিধা হবে না এবং মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে বাঙালিরাই সেগুলো চালাবে। আমরা বাংলাদেশের ভেতর থেকেই তা চালাব। তাজউদ্দীন আহমদ ও এ কে খন্দকার রাজি হলেন এবং তাঁদের আপ্রাণ চেষ্টায় আমাদের এয়ার ফোর্স গঠিত হলো পরে। সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি আমাদের সবাইকে কলকাতায় থাকতে বলা হলো। এখান থেকে আমাদের কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, সেটা আমরা জানতাম না। আমাদের ভারতীয় একটি প্লেনে উঠিয়ে দেওয়া হলো। সে প্লেনটি বাংলাদেশের সীমান্ত অতিক্রম না করেই বাংলাদেশের পাশ দিয়ে যেতে লাগল। সিলেট সীমান্তের পাশে একটা এয়ারফিল্ড ছিল, সেখানেই প্লেনটি অবতরণ করল। তখন রাত হয়ে গেছে। পরদিন সকালে আবার টেক অফ করল। ক্যাপ্টেন আকরাম, ক্যাপ্টেন শরফুদ্দিন তাঁরা ছিলেন আগরতলায়। তাঁদের এরই মধ্যে নিয়ে যাওয়া হয়েছে নাগাল্যান্ডের ডিমাপুরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার এক এয়ার ফিল্ডে। কেন ডিমাপুর? উদ্দেশ্য ছিল, বাংলাদেশ বিমানবাহিনী যে গঠিত হয়েছে, সেই সংবাদটা পাকিস্তানিরা যেন না পায়। পরদিন সকাল ১০টার দিকে আমরা ডিমাপুর পৌঁছালাম। সেখানে অন্য পাইলটদের সঙ্গে আমাদের দেখা হলো।
২৮ সেপ্টেম্বর এ কে খন্দকার কলকাতা থেকে সেখানে এলেন। ভারতের এয়ার চিফও এলেন তাঁর সঙ্গে। তাঁরা বাংলাদেশ বিমানবাহিনী উদ্বোধন করলেন। এই শুরু হলো আমাদের যাত্রা। আমাদের বহরে তিনটা প্লেন ছিল। কোনোটাই যুদ্ধ উড়োজাহাজ ছিল না।
আমাদের নয়জনের মধ্যে তিনজন ছিলেন পাকিস্তান এয়ার ফোর্সের। বাকি ছয়জনই বেসামরিক বৈমানিক। ডিসি ১০ বিমানের জন্য নির্বাচিত হয়েছিলেন আবদুল খালেক, আবদুস সাত্তার আর আব্দুল মুকীত। অটার বিমানের জন্য আকরাম, শরফুদ্দিন এবং শামসুল আলম। হেলিকপ্টারের জন্য সুলতান মাহমুদ, বদরুল আলম ও আমি। আমাকে অবশ্য প্রথমে ডাকোটার জন্য নির্বাচন করা হয়েছিল। কিন্তু হেলিকপ্টারে লোকস্বল্পতার জন্য আমাকে সেখানে দেওয়া হয়। এই বিমানগুলোকে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রস্তাব অনুযায়ী ভারতীয়রা বোমারু বিমানে পরিণত করে।
আজকের পত্রিকা: কবে থেকে আপনারা অপারেশনে গেলেন?
ক্যাপ্টেন শাহাব উদ্দীন আহমেদ: ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত প্রশিক্ষণ চলল। ভারতীয় ইস্টার্ন কমান্ডের অধিনায়ক ছিলেন গ্রুপ ক্যাপ্টেন চন্দন সিং। তিনি এলেন প্রথম সপ্তাহে। ভারতীয় ইন্সট্রাক্টরদের জিজ্ঞেস করলেন, তাদের প্রশিক্ষণ শেষ হতে কত দিন লাগবে? ইন্সট্রাক্টররা বললেন, নিদেন পক্ষে ছয় মাস। তিনি গম্ভীর হয়ে গেলেন, তারপর বললেন, ১৫ দিনের মধ্যে তাদের সুপ্রশিক্ষিত হিসেবে দেখতে চাই; অর্থাৎ অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে যেন প্রশিক্ষণ শেষ হয়।
নাগাল্যান্ডের প্রশিক্ষণে জায়গাটির চারদিকে পাহাড়-জঙ্গল। পাহাড়ের মাথায় আমরা প্যারাস্যুট সেট করতাম। তারপর আমরা রকেট অপারেশন করতাম—কীভাবে পাকিস্তানি টার্গেটে রকেট অ্যাটাক করব, সেটা শিখে নিচ্ছিলাম।
আমরা অপারেশনে গেলাম ৩ ডিসেম্বর রাত ১২টা ১ মিনিটে। হেলিকপ্টারটি আক্রমণ করে ঢাকার অদূরে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইলে তেলের ডিপো। এই অভিযানে অংশ নেন স্কোয়াড্রন লিডার সুলতান মাহমুদ ও ফ্লাইং অফিসার বদরুল আলম। অটার আক্রমণ করে চট্টগ্রামের ইস্টার্ন রিফাইনারির তেলের ডিপো। এই অভিযানে ছিলেন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট শামসুল আলম আর ক্যাপ্টেন আকরাম আহমেদ। দুটো অভিযানই সফল হয়। আমরা যে তেলের ডিপো উড়িয়ে দিলাম, তার ফলে পাকিস্তানি বিমানবাহিনী এরপর ৪৮ ঘণ্টার বেশি আর ফ্লাই করতে পারেনি।
আজকের পত্রিকা: আপনার অভিযান নিয়ে বলুন।
ক্যাপ্টেন শাহাব উদ্দীন আহমেদ: স্বাধীন হলো বাংলাদেশ আকাশসীমা। তখন আমাদের পরের অপারেশন শুরু হলো। কৈলাশহরে বেস করলাম ৫ ডিসেম্বর। ৬ ডিসেম্বর সকাল থেকে আমি আর সুলতান মাহমুদ হেলিকপ্টার অপারেশন শুরু করলাম। ৬ তারিখ বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে হেলিকপ্টার নিয়ে আমরা রওনা হলাম সিলেটের পথে। এবার আমার সঙ্গে ছিলেন ভারতের একজন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট সি এম সিমলার এবং গ্রুপ ক্যাপ্টেন চন্দন সিং। তিনি আমাদের সঙ্গে যাচ্ছিলেন দেখার জন্য। সিলেটে যেখানে ফোকারগুলো রাখা হতো, আমরা ঠিক করলাম সেখানে ল্যান্ড করব। তখন বাঙ্কার থেকে আমাদের ওপর ফায়ারিং শুরু হয়েছিল। রাডারে যেন ধরে না পড়ে এ জন্য ২০০-২৫০ ফিটের ওপর দিয়ে আমরা উড়তাম না। সেটা ছিল পাহাড়ি অঞ্চল, ভয়ানক বিপজ্জনক জায়গা। প্রতিটি মুহূর্তে ছিল মৃত্যুর ঝুঁকি। ওদের গুলির প্রত্যুত্তরে আমরা রকেট অ্যাটাক করলাম, তাদের যথেষ্ট ক্ষতি সাধন করে ফিরে এলাম। লেফটেন্যান্ট জেনারেল কৃষ্ণরাওকে সে কথা জানালাম।
এরপর আমাদের বেস পরিবর্তিত হয়ে আগরতলায় চলে গেল। তখন এদিকে আমাদের আর প্রয়োজন ছিল না। ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ঢাকার পূর্বাঞ্চল আক্রমণ করলাম। ৯ ডিসেম্বর মেঘনা নদীর পূর্বাঞ্চল আমাদের কন্ট্রোলে চলে আসে। ১০ ডিসেম্বর ভারতীয় বাহিনীর পরিকল্পনা হলো তারা হেলিকপ্টারে করে সৈন্যদের নামাবে নরসিংদীর দক্ষিণে রায়পুরা বলে একটা জায়গায়।
আমাদের দায়িত্ব দেওয়া হলো আমরা ওদের পাকিস্তানের আক্রমণ থেকে রক্ষা করব। ১১ ডিসেম্বর শুনলাম, হেলিকপ্টার প্রতিহত করার জন্য নরসিংদী থেকে পাকিস্তানিদের একটি বিরাট কনভয় এদিকে আসছে। আমি আর বদরুল আলম কনভয়টিকে অ্যাটাক করি। ১৪টি রকেট দিয়ে। এরপর আর পাকিস্তানের প্রতিরোধ রইল না।
আজকের পত্রিকা: ১৬ ডিসেম্বরের সেই অসাধারণ সময়টিতে আপনি কোথায় ছিলেন?
ক্যাপ্টেন শাহাব উদ্দীন আহমেদ: আমরা ঢাকায় এসে পৌঁছানোর ঠিক দুই মিনিট আগে আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান হয়ে গেছে। আমরা তেজগাঁও বিমানবন্দরে এসে পৌঁছেছিলাম। সেখানে পাকিস্তানি সৈন্যরা ছিল। কিন্তু তারা আত্মসমর্পণ করেছে বলে আমাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েনি। একটু পর সেখানে জেনারেল অরোরা এলেন জেনারেল নিয়াজিকে নিয়ে। সেটা আমরা দেখলাম। তারপর চলে গেলাম কলকাতায়। ফিরলাম পরদিন।
আজকের পত্রিকা: সেই প্লেন তিনটি কোথায়?
ক্যাপ্টেন শাহাব উদ্দীন আহমেদ: স্বাধীনতার পরে ফ্লাই করতে গিয়ে প্লেন দুটোই ক্রাশ করেছিল। পরে একই রকম দুটো প্লেন ভারত আমাদের উপহার দিয়েছে। বিমানবাহিনীর জাদুঘরে তা রাখা আছে।
আজকের পত্রিকা: বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা হয়েছিল?
ক্যাপ্টেন শাহাব উদ্দীন আহমেদ: বঙ্গবন্ধু ফিরলেন ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি। আমার আর সুলতান মাহমুদের দায়িত্ব ছিল বঙ্গবন্ধুকে বাংলাদেশের ধ্বংসযজ্ঞ দেখানোর। পাকিস্তানিরা যে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে, আমরা তা দেখানোর জন্য হেলিকপ্টারে করে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছি। যেখানে যেখানে আক্রমণ হয়েছে, যেখানে যেখানে সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেছে, সেখানে গিয়ে বঙ্গবন্ধু হেলিকপ্টারে বসে চোখের পানি সংবরণ করতে পারেননি। আমরা যে হেলিকপ্টারে যুদ্ধ করেছি, সেটা নিয়েই বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেশ দেখতে বের হতাম। ছোট্ট শেখ রাসেল থাকত আমাদের সঙ্গে।
আজকের পত্রিকা: সে সময়টির কথা মনে হলে কেমন লাগে?
ক্যাপ্টেন শাহাব উদ্দীন আহমেদ: আমার মনে হয়, আমরা আমাদের কাজটা করার চেষ্টা করেছি। যতটুকুই পারি নিজের দেশের জন্য কিছু করার জন্য মরিয়া ছিলাম। যারা স্বাধীন একটা দেশ পেয়েছে, তারা ঠিক করুক, তারা দেশের জন্য কী করবে।
আজকের পত্রিকা: আপনাকে ধন্যবাদ।
ক্যাপ্টেন শাহাব উদ্দীন আহমেদ: আজকের পত্রিকাকেও ধন্যবাদ।

আজকের পত্রিকা: ১৯৭১ সালেই গঠিত হয়েছিল বাংলাদেশ বিমানবাহিনী। যুদ্ধের মাঠে তারা কৃতিত্বও দেখিয়েছিল। কিন্তু সেই ইতিহাস আমাদের অনেকেরই জানা নেই। এ ব্যাপারে আপনি যদি একটু আলোকপাত করেন।
ক্যাপ্টেন শাহাব উদ্দীন আহমেদ: যখনকার কথা বলছি, তখনো বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়নি। আমরা চট্টগ্রামের এমপি এম আর সিদ্দিকী এবং জেনারেল ওসমানীকে পেয়ে আলাপ করলাম। বললাম যে আমরা ছোটখাটো এমন প্লেন সংগ্রহ করতে যাচ্ছি, যেগুলো বাংলাদেশের পানিতেও নামতে পারে এবং ছোট ছোট মাঠেও নামতে পারে। এটা ভারতকে কোনো সমস্যার মুখোমুখি করবে না। এম আর সিদ্দিকী আর এম এ জি ওসমানী বললেন, আমরা তোমাদের বিএসএফের প্রধানের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিতে পারি। বিএসএফপ্রধান বললেন, এটা তাঁর ক্ষমতার বাইরে। কথা বলতে হবে দিল্লির সঙ্গে। একসময় দিল্লি থেকে আমাদের ডাকা হলো। আমি, আলমগীর সাত্তার এবং আরও একজন সেখানে গেলাম। এটা ছিল জুন মাসের ১২ তারিখ। আমরা আগরতলা থেকে রওনা হয়ে ১২ তারিখ রাত ১০টায় দিল্লিতে পৌঁছালাম। পরদিন ভারত সরকারের বিভিন্ন বিভাগের সচিব, প্রতিরক্ষা বিভাগের লোক, এয়ারফোর্সের লোকদের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হলো। তাঁরা আমাদের জিজ্ঞেস করলেন, তোমাদের পরিকল্পনাটা কী?
আমরা বললাম, আমাদের ছোট ছোট প্লেন দরকার, যেগুলো আমরা বাংলাদেশ থেকেই অপারেট করব। কারণ, এই অপারেশনগুলো যেন ভারত সরকারের বিপরীতে কোনো প্রশ্ন না তুলতে পারে। কূটনৈতিকভাবে ভারত যেন অপদস্থ না হয়, সেটা নিশ্চিত করা হবে।তাঁরা আমাদের প্রস্তাব প্রস্তাব গ্রহণ করলেন। কিন্তু জানালেন, প্রস্তাবটা আসতে হবে বাংলাদেশ সরকারের মাধ্যমে।
আজকের পত্রিকা: তখন আপনারা কী করলেন?
ক্যাপ্টেন শাহাব উদ্দীন আহমেদ: তাঁরা আমাদের কলকাতায় পাঠিয়ে দিলেন। সেখানে আমরা দেখা করলাম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ এবং ডেপুটি চিফ অব স্টাফ গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ কে খন্দকারের সঙ্গে। তাঁদের আমরা আমাদের পরিকল্পনার কথা জানালাম। ভারত সরকার আমাদের ছোট ছোট প্লেন দেবে, তাতে ভারত সরকারের কোনো অসুবিধা হবে না এবং মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে বাঙালিরাই সেগুলো চালাবে। আমরা বাংলাদেশের ভেতর থেকেই তা চালাব। তাজউদ্দীন আহমদ ও এ কে খন্দকার রাজি হলেন এবং তাঁদের আপ্রাণ চেষ্টায় আমাদের এয়ার ফোর্স গঠিত হলো পরে। সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি আমাদের সবাইকে কলকাতায় থাকতে বলা হলো। এখান থেকে আমাদের কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, সেটা আমরা জানতাম না। আমাদের ভারতীয় একটি প্লেনে উঠিয়ে দেওয়া হলো। সে প্লেনটি বাংলাদেশের সীমান্ত অতিক্রম না করেই বাংলাদেশের পাশ দিয়ে যেতে লাগল। সিলেট সীমান্তের পাশে একটা এয়ারফিল্ড ছিল, সেখানেই প্লেনটি অবতরণ করল। তখন রাত হয়ে গেছে। পরদিন সকালে আবার টেক অফ করল। ক্যাপ্টেন আকরাম, ক্যাপ্টেন শরফুদ্দিন তাঁরা ছিলেন আগরতলায়। তাঁদের এরই মধ্যে নিয়ে যাওয়া হয়েছে নাগাল্যান্ডের ডিমাপুরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার এক এয়ার ফিল্ডে। কেন ডিমাপুর? উদ্দেশ্য ছিল, বাংলাদেশ বিমানবাহিনী যে গঠিত হয়েছে, সেই সংবাদটা পাকিস্তানিরা যেন না পায়। পরদিন সকাল ১০টার দিকে আমরা ডিমাপুর পৌঁছালাম। সেখানে অন্য পাইলটদের সঙ্গে আমাদের দেখা হলো।
২৮ সেপ্টেম্বর এ কে খন্দকার কলকাতা থেকে সেখানে এলেন। ভারতের এয়ার চিফও এলেন তাঁর সঙ্গে। তাঁরা বাংলাদেশ বিমানবাহিনী উদ্বোধন করলেন। এই শুরু হলো আমাদের যাত্রা। আমাদের বহরে তিনটা প্লেন ছিল। কোনোটাই যুদ্ধ উড়োজাহাজ ছিল না।
আমাদের নয়জনের মধ্যে তিনজন ছিলেন পাকিস্তান এয়ার ফোর্সের। বাকি ছয়জনই বেসামরিক বৈমানিক। ডিসি ১০ বিমানের জন্য নির্বাচিত হয়েছিলেন আবদুল খালেক, আবদুস সাত্তার আর আব্দুল মুকীত। অটার বিমানের জন্য আকরাম, শরফুদ্দিন এবং শামসুল আলম। হেলিকপ্টারের জন্য সুলতান মাহমুদ, বদরুল আলম ও আমি। আমাকে অবশ্য প্রথমে ডাকোটার জন্য নির্বাচন করা হয়েছিল। কিন্তু হেলিকপ্টারে লোকস্বল্পতার জন্য আমাকে সেখানে দেওয়া হয়। এই বিমানগুলোকে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রস্তাব অনুযায়ী ভারতীয়রা বোমারু বিমানে পরিণত করে।
আজকের পত্রিকা: কবে থেকে আপনারা অপারেশনে গেলেন?
ক্যাপ্টেন শাহাব উদ্দীন আহমেদ: ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত প্রশিক্ষণ চলল। ভারতীয় ইস্টার্ন কমান্ডের অধিনায়ক ছিলেন গ্রুপ ক্যাপ্টেন চন্দন সিং। তিনি এলেন প্রথম সপ্তাহে। ভারতীয় ইন্সট্রাক্টরদের জিজ্ঞেস করলেন, তাদের প্রশিক্ষণ শেষ হতে কত দিন লাগবে? ইন্সট্রাক্টররা বললেন, নিদেন পক্ষে ছয় মাস। তিনি গম্ভীর হয়ে গেলেন, তারপর বললেন, ১৫ দিনের মধ্যে তাদের সুপ্রশিক্ষিত হিসেবে দেখতে চাই; অর্থাৎ অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে যেন প্রশিক্ষণ শেষ হয়।
নাগাল্যান্ডের প্রশিক্ষণে জায়গাটির চারদিকে পাহাড়-জঙ্গল। পাহাড়ের মাথায় আমরা প্যারাস্যুট সেট করতাম। তারপর আমরা রকেট অপারেশন করতাম—কীভাবে পাকিস্তানি টার্গেটে রকেট অ্যাটাক করব, সেটা শিখে নিচ্ছিলাম।
আমরা অপারেশনে গেলাম ৩ ডিসেম্বর রাত ১২টা ১ মিনিটে। হেলিকপ্টারটি আক্রমণ করে ঢাকার অদূরে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইলে তেলের ডিপো। এই অভিযানে অংশ নেন স্কোয়াড্রন লিডার সুলতান মাহমুদ ও ফ্লাইং অফিসার বদরুল আলম। অটার আক্রমণ করে চট্টগ্রামের ইস্টার্ন রিফাইনারির তেলের ডিপো। এই অভিযানে ছিলেন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট শামসুল আলম আর ক্যাপ্টেন আকরাম আহমেদ। দুটো অভিযানই সফল হয়। আমরা যে তেলের ডিপো উড়িয়ে দিলাম, তার ফলে পাকিস্তানি বিমানবাহিনী এরপর ৪৮ ঘণ্টার বেশি আর ফ্লাই করতে পারেনি।
আজকের পত্রিকা: আপনার অভিযান নিয়ে বলুন।
ক্যাপ্টেন শাহাব উদ্দীন আহমেদ: স্বাধীন হলো বাংলাদেশ আকাশসীমা। তখন আমাদের পরের অপারেশন শুরু হলো। কৈলাশহরে বেস করলাম ৫ ডিসেম্বর। ৬ ডিসেম্বর সকাল থেকে আমি আর সুলতান মাহমুদ হেলিকপ্টার অপারেশন শুরু করলাম। ৬ তারিখ বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে হেলিকপ্টার নিয়ে আমরা রওনা হলাম সিলেটের পথে। এবার আমার সঙ্গে ছিলেন ভারতের একজন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট সি এম সিমলার এবং গ্রুপ ক্যাপ্টেন চন্দন সিং। তিনি আমাদের সঙ্গে যাচ্ছিলেন দেখার জন্য। সিলেটে যেখানে ফোকারগুলো রাখা হতো, আমরা ঠিক করলাম সেখানে ল্যান্ড করব। তখন বাঙ্কার থেকে আমাদের ওপর ফায়ারিং শুরু হয়েছিল। রাডারে যেন ধরে না পড়ে এ জন্য ২০০-২৫০ ফিটের ওপর দিয়ে আমরা উড়তাম না। সেটা ছিল পাহাড়ি অঞ্চল, ভয়ানক বিপজ্জনক জায়গা। প্রতিটি মুহূর্তে ছিল মৃত্যুর ঝুঁকি। ওদের গুলির প্রত্যুত্তরে আমরা রকেট অ্যাটাক করলাম, তাদের যথেষ্ট ক্ষতি সাধন করে ফিরে এলাম। লেফটেন্যান্ট জেনারেল কৃষ্ণরাওকে সে কথা জানালাম।
এরপর আমাদের বেস পরিবর্তিত হয়ে আগরতলায় চলে গেল। তখন এদিকে আমাদের আর প্রয়োজন ছিল না। ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ঢাকার পূর্বাঞ্চল আক্রমণ করলাম। ৯ ডিসেম্বর মেঘনা নদীর পূর্বাঞ্চল আমাদের কন্ট্রোলে চলে আসে। ১০ ডিসেম্বর ভারতীয় বাহিনীর পরিকল্পনা হলো তারা হেলিকপ্টারে করে সৈন্যদের নামাবে নরসিংদীর দক্ষিণে রায়পুরা বলে একটা জায়গায়।
আমাদের দায়িত্ব দেওয়া হলো আমরা ওদের পাকিস্তানের আক্রমণ থেকে রক্ষা করব। ১১ ডিসেম্বর শুনলাম, হেলিকপ্টার প্রতিহত করার জন্য নরসিংদী থেকে পাকিস্তানিদের একটি বিরাট কনভয় এদিকে আসছে। আমি আর বদরুল আলম কনভয়টিকে অ্যাটাক করি। ১৪টি রকেট দিয়ে। এরপর আর পাকিস্তানের প্রতিরোধ রইল না।
আজকের পত্রিকা: ১৬ ডিসেম্বরের সেই অসাধারণ সময়টিতে আপনি কোথায় ছিলেন?
ক্যাপ্টেন শাহাব উদ্দীন আহমেদ: আমরা ঢাকায় এসে পৌঁছানোর ঠিক দুই মিনিট আগে আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান হয়ে গেছে। আমরা তেজগাঁও বিমানবন্দরে এসে পৌঁছেছিলাম। সেখানে পাকিস্তানি সৈন্যরা ছিল। কিন্তু তারা আত্মসমর্পণ করেছে বলে আমাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েনি। একটু পর সেখানে জেনারেল অরোরা এলেন জেনারেল নিয়াজিকে নিয়ে। সেটা আমরা দেখলাম। তারপর চলে গেলাম কলকাতায়। ফিরলাম পরদিন।
আজকের পত্রিকা: সেই প্লেন তিনটি কোথায়?
ক্যাপ্টেন শাহাব উদ্দীন আহমেদ: স্বাধীনতার পরে ফ্লাই করতে গিয়ে প্লেন দুটোই ক্রাশ করেছিল। পরে একই রকম দুটো প্লেন ভারত আমাদের উপহার দিয়েছে। বিমানবাহিনীর জাদুঘরে তা রাখা আছে।
আজকের পত্রিকা: বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা হয়েছিল?
ক্যাপ্টেন শাহাব উদ্দীন আহমেদ: বঙ্গবন্ধু ফিরলেন ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি। আমার আর সুলতান মাহমুদের দায়িত্ব ছিল বঙ্গবন্ধুকে বাংলাদেশের ধ্বংসযজ্ঞ দেখানোর। পাকিস্তানিরা যে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে, আমরা তা দেখানোর জন্য হেলিকপ্টারে করে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছি। যেখানে যেখানে আক্রমণ হয়েছে, যেখানে যেখানে সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেছে, সেখানে গিয়ে বঙ্গবন্ধু হেলিকপ্টারে বসে চোখের পানি সংবরণ করতে পারেননি। আমরা যে হেলিকপ্টারে যুদ্ধ করেছি, সেটা নিয়েই বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেশ দেখতে বের হতাম। ছোট্ট শেখ রাসেল থাকত আমাদের সঙ্গে।
আজকের পত্রিকা: সে সময়টির কথা মনে হলে কেমন লাগে?
ক্যাপ্টেন শাহাব উদ্দীন আহমেদ: আমার মনে হয়, আমরা আমাদের কাজটা করার চেষ্টা করেছি। যতটুকুই পারি নিজের দেশের জন্য কিছু করার জন্য মরিয়া ছিলাম। যারা স্বাধীন একটা দেশ পেয়েছে, তারা ঠিক করুক, তারা দেশের জন্য কী করবে।
আজকের পত্রিকা: আপনাকে ধন্যবাদ।
ক্যাপ্টেন শাহাব উদ্দীন আহমেদ: আজকের পত্রিকাকেও ধন্যবাদ।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৮ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

১৯৭১ সালেই গঠিত হয়েছিল বাংলাদেশ বিমানবাহিনী। যুদ্ধের মাঠে তারা কৃতিত্বও দেখিয়েছিল। কিন্তু সেই ইতিহাস আমাদের অনেকেরই জানা নেই। এ ব্যাপারে আপনি যদি একটু আলোকপাত করেন
২৬ মার্চ ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

১৯৭১ সালেই গঠিত হয়েছিল বাংলাদেশ বিমানবাহিনী। যুদ্ধের মাঠে তারা কৃতিত্বও দেখিয়েছিল। কিন্তু সেই ইতিহাস আমাদের অনেকেরই জানা নেই। এ ব্যাপারে আপনি যদি একটু আলোকপাত করেন
২৬ মার্চ ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৮ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

১৯৭১ সালেই গঠিত হয়েছিল বাংলাদেশ বিমানবাহিনী। যুদ্ধের মাঠে তারা কৃতিত্বও দেখিয়েছিল। কিন্তু সেই ইতিহাস আমাদের অনেকেরই জানা নেই। এ ব্যাপারে আপনি যদি একটু আলোকপাত করেন
২৬ মার্চ ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৮ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

১৯৭১ সালেই গঠিত হয়েছিল বাংলাদেশ বিমানবাহিনী। যুদ্ধের মাঠে তারা কৃতিত্বও দেখিয়েছিল। কিন্তু সেই ইতিহাস আমাদের অনেকেরই জানা নেই। এ ব্যাপারে আপনি যদি একটু আলোকপাত করেন
২৬ মার্চ ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৮ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫