Ajker Patrika

চিকিৎসক সংকটে সেবা ব্যাহত

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২১, ১৫: ৪১
চিকিৎসক সংকটে সেবা ব্যাহত

নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হয়েছে ২০১৯ সালে। কিন্তু ১০০ শয্যার জনবল কাঠামো অনুযায়ী চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হয়নি। আগের ৫০ শয্যার জনবল কাঠামো অনুযায়ী যতজন চিকিৎসক থাকার কথা, সেটিও নেই। ৪৩ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও কর্মরত আছেন মাত্র ১৮ জন। চিকিৎসক সংকটে সেবা ব্যাহত হচ্ছে। এ ছাড়া শয্যা সংকটে রোগীদের মেঝেতে রাখা হয়।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, নেত্রকোনা জেলার প্রায় ২৫ লাখ মানুষ ছাড়াও পাশের সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা ও মধ্যনগর উপজেলার অনেক মানুষ নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। রোগীর চাপ বেশি থাকায় হাসপাতালটি ৫০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে ৪৩টি পদের অনুমোদন দেওয়া হয়। কিন্তু মাত্র ১৮ জন চিকিৎসক রয়েছেন। শূন্য রয়েছে ২৫টি পদ।

হাসপাতালের পরিসংখ্যান বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন গড়ে ৪০০ থেকে ৪৫০ রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। অন্তর্বিভাগে আগের রোগী ছাড়াও গত শনিবার থেকে রোববার দুপুর পর্যন্ত ১১১ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। সব মিলিয়ে রোগী আছেন ১৫০ জন। জরুরি বিভাগে গড়ে প্রতিদিন ৩০০ জনের মতো রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। বহির্বিভাগে রয়েছে মাত্র দুই থেকে তিনজন চিকিৎসক।

গতকাল সরেজমিনে দেখা গেছে, বহির্বিভাগে রোগীদের প্রচণ্ড ভিড়। হাসপাতালের বারান্দায় অনেক রোগী দাঁড়িয়ে আছেন। এমনকি বহির্বিভাগের বাইরের মেঝেতে রোগীরা শুয়ে রয়েছেন।

বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা সদর উপজেলার নুরেজা বেগম বলেন, টিকিট কেটে দীর্ঘসময় ধরে অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখনো চিকিৎসকের সাক্ষাৎ পাননি।

রৌহা গ্রামের আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘হাসপাতালে সিট না থাকায় রোববার রাত থেকে মেঝেতে শুয়ে আছি।’

হাসপাতালে ভর্তি সোহেল মিয়া, আব্দুল জলিল ও আয়েশা বেগমের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হাসপাতালের অন্তবিভাগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা দিনে একবারের বেশি রোগী দেখতে আসেন না। বিশেষ করে হাসপাতালে সরকার নির্ধারিত দায়িত্ব পালনের সময়ের পরে ও সরকারি ছুটির দিনে গুরুতর অসুস্থ রোগীকে নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়। তখন জরুরি বিভাগের চিকিৎসা কর্মকর্তাকে নিয়ে টানাটানি করে ওয়ার্ডে আনতে হয়। পর্যাপ্ত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে জটিল রোগে আক্রান্ত ভর্তি রোগীদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর হতে হয়। এ ছাড়া হাসপাতালটিতে দুই বছর ধরে রেডিওলজিস্ট না থাকায় আল্ট্রাসনোগ্রাম করতে রোগীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অকেজো অবস্থায় পড়ে থাকায় আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিনটিও নষ্ট হচ্ছে। এ সুযোগে আশপাশের ক্লিনিকগুলো বেশি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

চিকিৎসক সংকটের বিষয়টি নিশ্চিত করে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবু সাঈদ বলেন, ‘আমরা সমস্যা সমাধানে প্রতিনিয়তই সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আপডেট পাঠাচ্ছি। তবে যাঁরা কর্মরত আছেন, তাঁরা আন্তরিকভাবে রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।’

এ বিষয়ে সিভিল সার্জন সেলিম মিয়া বলেন, ‘আমাদের চিকিৎসক ও রেডিওলজিস্ট সংকট রয়েছে। এ বিষয়ে আমরা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছি। কিন্তু এখনো শূন্য পদগুলোতে লোকবল নিয়োগ হয়নি। আশা করছি, দ্রুতই এ সমস্যার সমাধান হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত