Ajker Patrika

রাজনীতির মাঠ সরগরম

রেজা করিম ও তানিম আহমেদ, ঢাকা
রাজনীতির মাঠ সরগরম

গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে টানা চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় যেতে মরিয়া আওয়ামী লীগ। সেই লক্ষ্যে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে নির্বাচনে আনার চেষ্টাসহ মাঠেও কড়া দৃষ্টি রেখেছে দলটি, ‍নিয়েছে নানা কৌশল। কম যাচ্ছে না তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপিও। সরকারের পতন ঘটিয়ে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবি আদায়ে মাঠ দখলের জোর চেষ্টা চালাচ্ছে তারা।

প্রধান দুই দলের দ্বৈরথের মাঝে ক্ষমতাসীনদের গৃহপালিত বিরোধী দল হিসেবে পরিচিত জাতীয় পার্টির (জাপা) কর্মকাণ্ড রহস্যাবৃত। ভোট ও মাঠের লাভালাভের হিসাব কষছে অন্য দলগুলোও। এমন পরিস্থিতিকে রাজনীতির বসন্তকালের আগমনী বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। তাঁদের বিবেচনায় এমন অবস্থা চূড়ান্ত একটা পরিস্থিতি সৃষ্টির সম্ভাবনাকেই ইঙ্গিত করছে।

দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও বিশিষ্টজনদের সঙ্গে দফায় দফায় সংলাপ করে ১৪ সেপ্টেম্বর আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী, ২০২৩ সালের শেষে অথবা ২০২৪ সালের শুরুতেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা। এ জন্য জোরেশোরে প্রস্তুতি নিচ্ছে সংস্থাটি। এর আগে দেড় শ আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গ্রহণের কথা জানিয়েছে। এর অংশ হিসেবে ১৯ সেপ্টেম্বর ২ লাখ নতুন ইভিএম কেনার প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে সংস্থাটি।

ইসির প্রস্তুতির সঙ্গে সমান তালে পাল্লা দিয়ে আগামী নির্বাচনে জয়ী হতে দল গোছানোর পাশাপাশি নানা কৌশল নিচ্ছে আওয়ামী লীগ। আগামী নির্বাচন কঠিন হবে মেনে মাঠেও সতর্ক দৃষ্টি রেখেছে দলটি। দলের নেতারা বলছেন, প্রার্থিতা চূড়ান্ত করতে এরই মধ্যে কাজ শুরু হয়েছে। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার পাশাপাশি দলীয় নেতাদের মাধ্যমে বর্তমান সংসদ সদস্য এবং মনোনয়নপ্রত্যাশীদের আমলনামা যাচাই-বাছাই চলছে। এমপিদের মধ্যে যাঁদের বিরুদ্ধে সন্দেহাতীতভাবে অভিযোগ প্রমাণিত হবে, তাঁদের বাদ দিয়ে সৎ, যোগ্য, জনপ্রিয় ও দক্ষ প্রার্থীদের মনোনয়ন দেওয়া হবে।

আওয়ামী লীগের সূত্র বলছে, আগের দুটি নির্বাচন (২০১৪ ও ২০১৮) নানাভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ায় এবার একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের তাগিদ রয়েছে। এই তাগিদ থেকে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে নির্বাচনে আনার চেষ্টা চলছে। এরই মধ্যে বিএনপির একটি অংশ ক্ষমতাসীন দলের লোকজনের সঙ্গে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে গোপনে বৈঠক করেছে বলেও দাবি সূত্রটির। আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে বিএনপি প্রস্তুতি নিতে শুরু করছে বলে জানান আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান। আর তাই আওয়ামী লীগ আসনভিত্তিক জরিপের কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে কতগুলো আসনে আওয়ামী লীগের ভালো অবস্থা, কতগুলোতে খারাপ ও কতগুলো আসনে ফিফটি-ফিফটি চান্স, তা চিহ্নিত করা হচ্ছে। পাশাপাশি খারাপ অবস্থা কীভাবে ভালো করা সম্ভব, সেই উদ্যোগও নেওয়া হবে।’

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে জানা গেছে, বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে ক্ষুদ্র পরিসরে মাঠে থাকার সুযোগ দিয়ে তাদের ভোটে আনার চেষ্টা চলছে। তবে মাঠ দখলের চেষ্টা করলে সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে তা প্রতিহত করারও পরিকল্পনা আছে।

শাসক দলের এমন ভাবনা থাকলেও নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে নিজেদের অবস্থান এখনো বদলায়নি বিএনপি। দলটির পক্ষ থেকে জোর দিয়ে বলা হচ্ছে, এই সরকারের অধীনে কোনোভাবেই নির্বাচনে অংশ নেবে না তারা। তাদের দাবি বর্তমান সরকারকে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। নিরপেক্ষ ওই সরকার যে নির্বাচন কমিশন করবে, সেই কমিশন নির্বাচন অনুষ্ঠান করবে, সেখানে তারা অংশ নেবে।

এসব দাবি আদায়ে বর্তমান সরকারের পতনের বিকল্প কিছু নেই মেনে বিএনপি আন্দোলন করছে। বিএনপির নীতিনির্ধারকেরা বলেছেন, এই আন্দোলনের সঙ্গে সমমনাদের সমর্থনও রয়েছে। বিএনপির চলমান আন্দোলনে ভীত হয়ে কর্মসূচিতে হামলা করা হচ্ছে, মামলা দিয়ে নেতা-কর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে। বিএনপির মাঠ দখলের সম্ভাবনা জোরালো হওয়ায় এখন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নানা ধরনের বিভ্রান্তিমূলক কথা ছড়ানো হচ্ছে। এর অংশ হিসেবেই বলা হচ্ছে, শেষ পর্যন্ত বিএনপি নির্বাচনে আসবে।

গত বুধবার মুন্সিগঞ্জে বিএনপির কর্মসূচিকে ঘিরে সৃষ্ট সংঘর্ষের উদাহরণ দিয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘একটা থানার কর্মসূচিতেই যারা ভয় পাচ্ছে, তারা এমন কথা বলবেই। ওবায়দুল কাদেররা বিএনপির আন্দোলন নিয়ে অনেক রসিকতা করেছেন। এখন সামান্য রিহার্সেলেই তাঁদের হাত-পা কাঁপছে। যে কারণে বিএনপির আন্দোলন নিয়ে ওনারা বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছেন।’

আগামী দিনের রাজনৈতিক রূপরেখা প্রণয়নেও কাজ করছে বিএনপি। গত বছর দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করার মধ্য দিয়ে এই কাজ শুরু হয়। এরপর সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রথমে অনানুষ্ঠানিক এবং পরে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করে দলটি। দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সবার মতামতের ভিত্তিতে চূড়ান্ত আন্দোলনের রূপরেখা প্রকাশ করা হবে।

এদিকে দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত মিত্র জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে বিএনপির চলমান সম্পর্ক নিয়েও নানা প্রশ্ন উঠেছে। জামায়াতকে নিয়ে বিএনপির সমমনাদের অনেকে অস্বস্তিতে রয়েছে। এমন বাস্তবতায় বিএনপির জামায়াতকে নিয়ে ভাবনা প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘জামায়াত তো বলেনি যে তারা এই সরকারের অধীনে নির্বাচন করবে। তারা বলেছে, যুগপৎ আন্দোলন করবে। তার মানে সরকারের বিরুদ্ধেই তো তাদের অবস্থান। সেই অবস্থানকে অস্বীকার করার উপায় নেই। আর এটা অনেকটাই নিশ্চিত যে যারা জামায়াতকে অপছন্দ করে, তারা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আদৌ আন্দোলন করবে কি না—এ ব্যাপারে সন্দেহ আছে। কারণ পাণ্ডিত্য আর বাস্তবায়ন এক নয়।’

রহস্যে ঘেরা জাতীয় পার্টি
আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মুখোমুখি অবস্থানের মাঝে রহস্যময় ভূমিকায় রয়েছে জাতীয় পার্টি (জাপা)। দলটি মাঠে না থেকেও অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং সরকারের সমালোচনা করে আলোচনায় রয়েছে। আগামী নির্বাচনকে ঘিরে জাপা চেয়ারম্যান বলেছেন, তাঁরা কোনো জোটে নেই। তবে ভবিষ্যতে জোটে যাবেন কি না, সেটা না বলে বিষয়টা ঝুলিয়ে রেখেছেন।

দলের সূত্র বলছে, জাতীয় পার্টি ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার সামর্থ্য নেই। কারও না কারও ভরসায় বরাবরের মতো নির্বাচনী বৈতরণি পার হওয়ার ইচ্ছা। সে কারণে জোটে যাওয়া না-যাওয়ার বিষয়টি ইচ্ছা করেই পরিষ্কার করা হচ্ছে না।

দলটির কেন্দ্রীয় এক নেতা নাম গোপন রাখার শর্তে বলেন, নির্বাচনের ঠিক আগে আগে জাপা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। দলের বর্তমান কোন্দল ও অস্থিরতা আলোচনায় থাকার কৌশল কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হতে পারে...তবে এ বিষয়ে আর বেশি কিছু বলতে চাই না।’

সম্প্রতি জাপার চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদের অনুসারীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে। দুটি পক্ষই দলে নিজেদের আধিপত্য ও প্রভাব বিস্তারে চেষ্টা করে যাচ্ছে বলে দৃশ্যমান হচ্ছে। দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও অস্থিরতার বিষয়কে পাত্তা দিচ্ছেন না জাপার মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। তিনি বলেন, ‘একটা দলে এ রকম ঘটনা অস্বাভাবিক কিছু নয়। এগুলো (কোন্দল ও অস্থিরতা) নিয়ে আমাদের কোনো মাথাব্যথা নেই।’

চুন্নুর দাবি রওশন এরশাদ পার্টির বিরুদ্ধে স্বেচ্ছায় কিছু করছেন না। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বনানীতে জাপা চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই দাবি করে বলেন, রওশন এরশাদের যে চিঠি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, সেই চিঠি তাঁরা আমলেই নিচ্ছেন না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন মামদানি

পদত্যাগ করে ভোটে দাঁড়াবেন অ্যাটর্নি জেনারেল

বাংলা ভাষার সঙ্গে জোহরান মামদানির ঘরের সম্পর্ক, যোগসূত্র মা মীরা নায়ার

জোট নয়, নির্বাচনী সমঝোতা করবে জামায়াত—জানালেন আমির

আজকের রাশিফল: অফিসে মিষ্টি কথায় মন গলবে বসের, প্রেমের ঝগড়ায় চ্যাটজিপিটিতে ভরসা নয়

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

বাসস, ঢাকা  
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।

আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।

এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।

গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।

পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্‌ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।

মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।

মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন মামদানি

পদত্যাগ করে ভোটে দাঁড়াবেন অ্যাটর্নি জেনারেল

বাংলা ভাষার সঙ্গে জোহরান মামদানির ঘরের সম্পর্ক, যোগসূত্র মা মীরা নায়ার

জোট নয়, নির্বাচনী সমঝোতা করবে জামায়াত—জানালেন আমির

আজকের রাশিফল: অফিসে মিষ্টি কথায় মন গলবে বসের, প্রেমের ঝগড়ায় চ্যাটজিপিটিতে ভরসা নয়

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

  • এবার ভারতের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার।
  • গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলে পল্লিগুলোতে ব্যস্ততা।
মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে বুধবার রাতে। এর আগে দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন জেলেরা। অনেকে দেখে নেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না। কেউ আবার জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করেন। ছবিটি কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের খুরেরমুখ এলাকার। ছবি: আজকের পত্রিকা
মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে বুধবার রাতে। এর আগে দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন জেলেরা। অনেকে দেখে নেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না। কেউ আবার জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করেন। ছবিটি কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের খুরেরমুখ এলাকার। ছবি: আজকের পত্রিকা

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।

মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।

বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’

জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’

নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’

সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’

পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।

কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।

একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।

কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।

[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন মামদানি

পদত্যাগ করে ভোটে দাঁড়াবেন অ্যাটর্নি জেনারেল

বাংলা ভাষার সঙ্গে জোহরান মামদানির ঘরের সম্পর্ক, যোগসূত্র মা মীরা নায়ার

জোট নয়, নির্বাচনী সমঝোতা করবে জামায়াত—জানালেন আমির

আজকের রাশিফল: অফিসে মিষ্টি কথায় মন গলবে বসের, প্রেমের ঝগড়ায় চ্যাটজিপিটিতে ভরসা নয়

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

  • ক্রয়াদেশের চালান নিয়ে বাড়ছে দুশ্চিন্তা
  • সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা
  • আজ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ডেকেছে জরুরি বৈঠক
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২০ মে ২০২৫, ০২: ৪৪
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।

ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।

গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।

বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।

জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’

বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।

এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।

স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।

সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।

আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।

এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন মামদানি

পদত্যাগ করে ভোটে দাঁড়াবেন অ্যাটর্নি জেনারেল

বাংলা ভাষার সঙ্গে জোহরান মামদানির ঘরের সম্পর্ক, যোগসূত্র মা মীরা নায়ার

জোট নয়, নির্বাচনী সমঝোতা করবে জামায়াত—জানালেন আমির

আজকের রাশিফল: অফিসে মিষ্টি কথায় মন গলবে বসের, প্রেমের ঝগড়ায় চ্যাটজিপিটিতে ভরসা নয়

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।

১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।

গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।

সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?

১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।

ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন মামদানি

পদত্যাগ করে ভোটে দাঁড়াবেন অ্যাটর্নি জেনারেল

বাংলা ভাষার সঙ্গে জোহরান মামদানির ঘরের সম্পর্ক, যোগসূত্র মা মীরা নায়ার

জোট নয়, নির্বাচনী সমঝোতা করবে জামায়াত—জানালেন আমির

আজকের রাশিফল: অফিসে মিষ্টি কথায় মন গলবে বসের, প্রেমের ঝগড়ায় চ্যাটজিপিটিতে ভরসা নয়

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত