Ajker Patrika

শান্তি ও নিরাপত্তার কফিনে আরেকটি পেরেক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক
আপডেট : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১২: ৩২
শান্তি ও নিরাপত্তার কফিনে আরেকটি পেরেক

২০২০ সালের প্রথম থেকেই প্রায় অচেনা এবং অদৃশ্য এক শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছে বিশ্ব। মহামারি করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে এ লড়াইয়ে অনেকবারই পরাজয়ের আভাস পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু দমে যায়নি বিশ্ব। নানা পদক্ষেপের পরও মারা গেছে লাখ লাখ মানুষ। গত বছর জয়ের বার্তা পেলেও ওমিক্রন নামক ধরন ফের হুমকি দিতে থাকে। তবুও এখন অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে পরিস্থিতি। কিন্তু এরই মধ্যে ইউরোপে শুরু হয়েছে অস্ত্রের ঝলকানি।

নিষেধাজ্ঞা-হুমকি-কূটনীতিক আলোচনা—সব ব্যর্থ করে দিয়ে ইউরোপে যুদ্ধের দামামা ফুঁকে দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। গত বৃহস্পতিবার তাঁর নির্দেশে প্রতিবেশী ইউক্রেনে হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী। গত কয়েক দিনে ইউক্রেনের একের পর এক শহরে ঢুকে পড়ছে রাশিয়ার সেনারা। অনেকটা অসহায় প্রতিরোধ করে যাচ্ছে ইউক্রেন। গতকাল রোববারও এ লড়াই ছিল।

বৃষ্টির মতো পড়ছে একেকটা ক্ষেপণাস্ত্র। একের পর এক ঢুকে পড়েছে ট্যাংক। মৃত্যু ও ধ্বংসের এ খেলা বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তার কফিনে আরেকটি পেরেক যেন। কেননা হামলায় প্রাণ হারাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষের। আহত মানুষের তালিকা ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে।

ভয়াবহ এ মর্মান্তিক চিত্রের কারণ এবং দোষ কোথায়, তা নিয়ে অনেক বিতর্ক থাকতে পারে। কিন্তু সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক কলামে সাংবাদিক ক্লিফ বুডল বলেন, আপনি যে ব্যাখ্যাই দিন না কেন, ইউক্রেনের এসব হত্যাকাণ্ডকে অবশ্যই নৈতিক ক্ষোভের তীব্র অনুভূতি নিয়ে দেখা উচিত। এ ক্ষেত্রে এটি একটি মানবিক ‘ট্র্যাজেডি’ এবং স্পষ্টতই ‘ভুল’।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্ধকার দিনগুলোতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে চলছিল জাতিসংঘের ‘মহৎ’ পরিকল্পনা। বিশ্বব্যাপী সংঘাতের ভয়াবহতার পুনরাবৃত্তি হওয়া প্রতিরোধ করতেই এ ঐতিহাসিক সনদ। কিন্তু এ সনদ ইউক্রেনে প্রায় অকার্যকর। রুখতে পারছে না ভয়াবহতা। অথচ জাতিসংঘের অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য হলো, ‘আগ্রাসন দমন’ নিশ্চিত করা। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতেরও (আইসিসি) এখন বসে বসে দেখা ছাড়া করার তেমন কিছুই নেই। কিন্তু এমন তো কথা ছিল না।

দুঃখজনকভাবে বিশ্বকে যুদ্ধ থেকে মুক্তি দিতে তেমনভাবে সফল হয়নি জাতিসংঘ। এ-সংক্রান্ত সনদটি স্বাক্ষরিত হওয়ার পরেও অনেক দ্বন্দ্ব হয়েছে। ঝরেছে কত রক্ত। জাতিসংঘ ফাঁকা বুলি আওড়ানো ছাড়া কিছুই করতে পারেনি। ইউক্রেন সংকট সমাধানের সম্ভাবনাও ক্ষীণ। কেননা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য রাশিয়া বর্তমানে সংস্থাটির প্রধান দায়িত্বে আছে। আরও হাস্যকর ব্যাপার হচ্ছে, নিজেদের এ আক্রমণের প্রতিক্রিয়া বিবেচনা করার জন্য ডাকা একটি জরুরি বৈঠকের সভাপতিত্ব করেছে দেশটি।

এ সময় আক্রমণের নিন্দা করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের একটি প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে তারা। ১১ সদস্য তাদের বিপক্ষে ভোট দিলেও তিনজন বিরত ছিলেন। এ তিন দেশের মধ্যে রয়েছে চীন। ক্লিফ বুডল মনে করেন, একমাত্র চীনই চাইলে রাশিয়াকে থামাতে পারে। তবে সি চিন পিং চাইবেন কি না, সে আরেক রহস্য।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত