রাশেদ নিজাম ও আজিজুল হক, বেনাপোল (যশোর) থেকে
বেনাপোল রেলস্টেশনে বেনাপোল এক্সপ্রেস থামতেই হুড়োহুড়ি শুরু। কারণ, এই ট্রেনের বেশির ভাগ মানুষের গন্তব্য স্টেশন থেকে এক কিলোমিটারের কিছু বেশি দূরে বেনাপোল স্থলবন্দর চেকপোস্ট। বাইরে ইজিবাইকচালকদের হাঁকডাক সব বন্দরকেন্দ্রিক। যাত্রীদেরও আগে যাওয়ার তাড়া। কেউ একা, কেউ দল বেঁধে আবার কেউ অসুস্থ স্বজনকে নিয়ে যাচ্ছেন। স্টেশনের সামনে চায়ের দোকান, হোটেল দেখে বোঝার উপায় নেই, প্রতিদিন প্রায় সাত হাজার মানুষ এই পথ দিয়ে ভারতে যাতায়াত করেন। তবে মফস্বলের ছাপ স্পষ্ট।
২০১৩ সালের আগস্টে উদ্বোধন করা হয় বেনাপোল আন্তর্জাতিক যাত্রী টার্মিনাল। ব্যবহার শুরু হয় ২০১৭ সালের ২ জুন। যাত্রীদের বসার জায়গা, টয়লেট, ক্যানটিন, বাসের টিকিট সুবিধা একসঙ্গে থাকার কথা। টার্মিনালে পৌঁছার আগে দেখা যায়, কড়া রোদে ঠায় দাঁড়িয়ে ভারতগামী বাংলাদেশিরা। টার্মিনাল থেকে মানুষের সারি পৌঁছেছে প্রায় এক কিলোমিটার দূরের সীমান্তবর্তী গ্রাম সাদিপুর রোডে।
এখানে ইমিগ্রেশন শুরু হয় সকাল সাড়ে ছয়টায়। তাই ট্রেন-বাসে যে যেভাবেই আসেন, সকাল সকাল লাইনে দাঁড়ান দ্রুত ওপারে যাওয়ার আশায়। জানা যায়, আগের দিনও এ পথ দিয়ে ভারতে গেছেন ৩ হাজার ৪৯৮ জন, আর ফিরেছেন ৩ হাজার ১৮৬ জন। ইমিগ্রেশন পুলিশের তথ্যমতে, গড়ে প্রতিদিন সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার মানুষ ভারতে যান বেনাপোল বন্দর দিয়ে। ফেরতও আসেন প্রায় সমসংখ্যক। সব মিলিয়ে সাত হাজারের বেশি মানুষের যাতায়াত। অথচ টার্মিনালে মাত্র ৩৯টি চেয়ার যাত্রীদের বসার জন্য। অপরিচ্ছন্ন টয়লেট, নেই ক্যানটিন সুবিধা।
ভারতে ভ্রমণের জন্য জনপ্রতি দিতে হয় ৫০ টাকা যাত্রী সুবিধা ফি। সে হিসাবে বেনাপোলে প্রতিদিন গড়ে ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা শুধু সুবিধা ফি দেন বাংলাদেশি যাত্রীরা। ২০১৭ সাল থেকে প্রায় ৩০ কোটি টাকা মিলেছে সুবিধা ফি বাবদ।
যাত্রীদের সুবিধা যেমনই হোক, বন্দর কর্তৃপক্ষ নিজেদের সুবিধার জন্য টার্মিনালে কনফারেন্স কক্ষ, প্রশাসনিক কার্যালয় স্থাপন করে জায়গা দখল করে রেখেছে।
যাত্রীদের সুবিধা কম থাকার বিষয়টি স্বীকার করে বেনাপোল স্থলবন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মনিরুল ইসলাম জানান, বিশ্রাম নেওয়ার স্থানসহ সার্বিক সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর জন্য নতুন জায়গা অধিগ্রহণ করার প্রক্রিয়া চলছে। টার্মিনালের পেছনের দিকে আরও বড় জায়গা নেওয়া হবে।
কর্তৃপক্ষের এত কক্ষ কেন জানতে চাইলে বন্দর পরিচালক মো. মনিরুজ্জামানের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি। পরিচালককে কয়েক দফা ফোন করে এবং এসএমএস পাঠিয়েও সাড়া মেলেনি।
ভোগান্তি ওপারে, এপারে হয়রানি
খুলনার হাজী মুহসীন রোডের বাসিন্দা ডা. কেপি রায় ৮ ডিসেম্বর সীমান্ত পার হন। কিন্তু ভারতের অংশে ইমিগ্রেশন শেষ করতে সময় লাগে প্রায় সাড়ে আট ঘণ্টা। গত শনিবার তিনি বেনাপোলে ফিরেছেন। ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, ‘যাওয়ার সময় এখানে কোনো ঝামেলা হয় না। কিন্তু পার হয়ে অন্তত ৫০০ মানুষ দাঁড়িয়ে থাকেন শূন্য রেখায়। ওপারে ভোগান্তির শেষ নেই। ভারতের ইমিগ্রেশনে অন্তত ২০টা বুথ থাকলেও কাজ হয় মাত্র ৪টায়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়।’
যশোরের বেসপাড়ার সমর চ্যাটার্জি এগিয়ে এসে বললেন, ‘পাঁচ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে ভারত থেকে এলাম। শুরুতেই ব্যাগ স্ক্যান করল বিজিবি, তারপর ইমিগ্রেশন করে কাস্টমসের স্ক্যানিং। বেরোনোর পথেই আবার ব্যাগ খুলে সব ওলটপালট করে চেক করল বিজিবি। দুবার স্ক্যান করার পরে টার্মিনালের গেটেই আবার চেক কেন?’
তাঁর কথার সত্যতা মিলল টার্মিনালের গেটে। বিজিবির সদস্যরা ব্যাগ খুলে সবার জিনিসপত্র উল্টেপাল্টে দেখছিলেন। কিছু না পেয়ে ওভাবেই ব্যাগ ছেড়ে দেওয়ার পর তর্কও হয় অনেকের সঙ্গে।
ইমিগ্রেশন পুলিশ ও কাস্টমসের কেউই এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি । তবে তাঁদের মতে, গায়ের জোরে এভাবে তল্লাশি করে বিজিবি। নিয়মানুযায়ী বন্ড এলাকার মধ্যে বিজিবির তল্লাশি করার এখতিয়ার নেই। কিন্তু অনেক সময় কাস্টমসের আগেই জোর করে অনেককে তল্লাশি করতে নিয়ে যায় তারা। বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েক দফা অভিযোগ চালাচালিও হয়েছে।
বন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা শারমিন জাহান জানান, এ বিষয়ে বারবার বলেও কোনো কাজ হয়নি, তাই মন্তব্য দেবেন না। বিজিবি যশোর ৪৯ ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাহেদ মিনহাজ সিদ্দিকী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শূন্য রেখা পার হওয়ার পর স্ক্যানে অস্ত্র, গোলাবারুদ, বিস্ফোরক আছে কি না সেটা চেক করা হয়। ভেতরে অন্য কিছু আছে কি না, তা দেখা যায় না। ট্যাক্স ফাকি দিয়ে কিংবা অবৈধ কোনো জিনিস আছে কি না, তা বিশেষ তথ্যের ভিত্তিতে টার্মিনালের গেটে চেক করা হয়।’
যে টাকার হিসাব নেই
ছয় বছরের নাতি শিহাব আল অনিক ও মেয়ের চিকিৎসার জন্য ভারতে যাচ্ছিলেন যশোরের রেজাউল ইসলাম। শনিবার বিকেলে ভ্রমণ কর দিতে দাঁড়ান বেনাপোল টার্মিনালে সোনালী ব্যাংকের কাউন্টারের সামনে। পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের কোনো কর লাগে না। ৫ থেকে ১২ বছর পর্যন্ত ২৫০ টাকা। এর বেশি বয়সী প্রতি জনের ৫০০ টাকা ভ্রমণ কর লাগে। কিন্তু কাউন্টার থেকে রেজাউলকে বলা হয়, ছোটদের ভ্রমণ করের রসিদ নেই, তাই শিশু অনিকের জন্য ৫০০ টাকাই দিতে হবে। আবার পরামর্শ দেওয়া হয় পাশ থেকে অনলাইনে দিয়ে আসতে। অসুস্থ নাতি ও মেয়েকে রেখে রেজাউল দৌড়ে এক দোকানে ৫০ টাকা বেশি দিয়ে পরিশোধ করলেন। অভিযোগের সুরে বললেন, ‘এখানে দিতে হলে দ্বিগুণ দিতে হবে। আবার ওনারাই বলে দিচ্ছেন দোকান থেকে করে আনতে।’ সোনালী ব্যাংকের সামনে লাগানো নোটিশে লেখা, ২০২০ সালের ৭ মার্চ থেকে এই রসিদ-সংকটের শুরু। অর্থাৎ আড়াই বছর ধরে অপ্রাপ্ত বয়সীদের কাছ থেকে দ্বিগুণ টাকা নিচ্ছে।
কাউন্টারে বসা সিনিয়র অফিসার সোহবার হোসেন বলেন, ‘আমাদের কাছে রসিদ আসে না, তাই ২৫০ টাকার ভ্রমণ কর নিতে পারি না।’ ইমিগ্রেশনের হিসাবে, প্রতিদিন বেনাপোল দিয়ে ভারতে যাওয়া মানুষের প্রায় ২০ শতাংশ শিশু। এর মধ্যে ৬-১২ বছরের ১৫ শতাংশ। সে হিসাবে প্রতিদিন শুধু ভ্রমণ করই বেশি নেওয়া হচ্ছে প্রায় সোয়া লাখ টাকা। অবশ্য যাঁরা অনলাইনে দেন, তাঁরা নিস্তার পান।
সোনালী ব্যাংক বেনাপোল শাখার ব্যবস্থাপক (ম্যানেজার) মহসীন আলী বলেন, ‘মূল কার্যালয় থেকে রসিদ দেওয়া হয় না; তাই বাধ্য হয়ে দ্বিগুণ টাকা রাখতে হচ্ছে।’
বেনাপোল পৌরসভার সদ্য বিদায়ী মেয়র আশরাফুল আলম লিটন বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সময় প্রশাসনের কাছে সুবিধা বাড়াতে নানা দাবি জানিয়েছি। তবে আমলাতন্ত্রের দৌরাত্ম্যে কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে যাত্রীরা বঞ্চিত।’
বেনাপোল রেলস্টেশনে বেনাপোল এক্সপ্রেস থামতেই হুড়োহুড়ি শুরু। কারণ, এই ট্রেনের বেশির ভাগ মানুষের গন্তব্য স্টেশন থেকে এক কিলোমিটারের কিছু বেশি দূরে বেনাপোল স্থলবন্দর চেকপোস্ট। বাইরে ইজিবাইকচালকদের হাঁকডাক সব বন্দরকেন্দ্রিক। যাত্রীদেরও আগে যাওয়ার তাড়া। কেউ একা, কেউ দল বেঁধে আবার কেউ অসুস্থ স্বজনকে নিয়ে যাচ্ছেন। স্টেশনের সামনে চায়ের দোকান, হোটেল দেখে বোঝার উপায় নেই, প্রতিদিন প্রায় সাত হাজার মানুষ এই পথ দিয়ে ভারতে যাতায়াত করেন। তবে মফস্বলের ছাপ স্পষ্ট।
২০১৩ সালের আগস্টে উদ্বোধন করা হয় বেনাপোল আন্তর্জাতিক যাত্রী টার্মিনাল। ব্যবহার শুরু হয় ২০১৭ সালের ২ জুন। যাত্রীদের বসার জায়গা, টয়লেট, ক্যানটিন, বাসের টিকিট সুবিধা একসঙ্গে থাকার কথা। টার্মিনালে পৌঁছার আগে দেখা যায়, কড়া রোদে ঠায় দাঁড়িয়ে ভারতগামী বাংলাদেশিরা। টার্মিনাল থেকে মানুষের সারি পৌঁছেছে প্রায় এক কিলোমিটার দূরের সীমান্তবর্তী গ্রাম সাদিপুর রোডে।
এখানে ইমিগ্রেশন শুরু হয় সকাল সাড়ে ছয়টায়। তাই ট্রেন-বাসে যে যেভাবেই আসেন, সকাল সকাল লাইনে দাঁড়ান দ্রুত ওপারে যাওয়ার আশায়। জানা যায়, আগের দিনও এ পথ দিয়ে ভারতে গেছেন ৩ হাজার ৪৯৮ জন, আর ফিরেছেন ৩ হাজার ১৮৬ জন। ইমিগ্রেশন পুলিশের তথ্যমতে, গড়ে প্রতিদিন সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার মানুষ ভারতে যান বেনাপোল বন্দর দিয়ে। ফেরতও আসেন প্রায় সমসংখ্যক। সব মিলিয়ে সাত হাজারের বেশি মানুষের যাতায়াত। অথচ টার্মিনালে মাত্র ৩৯টি চেয়ার যাত্রীদের বসার জন্য। অপরিচ্ছন্ন টয়লেট, নেই ক্যানটিন সুবিধা।
ভারতে ভ্রমণের জন্য জনপ্রতি দিতে হয় ৫০ টাকা যাত্রী সুবিধা ফি। সে হিসাবে বেনাপোলে প্রতিদিন গড়ে ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা শুধু সুবিধা ফি দেন বাংলাদেশি যাত্রীরা। ২০১৭ সাল থেকে প্রায় ৩০ কোটি টাকা মিলেছে সুবিধা ফি বাবদ।
যাত্রীদের সুবিধা যেমনই হোক, বন্দর কর্তৃপক্ষ নিজেদের সুবিধার জন্য টার্মিনালে কনফারেন্স কক্ষ, প্রশাসনিক কার্যালয় স্থাপন করে জায়গা দখল করে রেখেছে।
যাত্রীদের সুবিধা কম থাকার বিষয়টি স্বীকার করে বেনাপোল স্থলবন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মনিরুল ইসলাম জানান, বিশ্রাম নেওয়ার স্থানসহ সার্বিক সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর জন্য নতুন জায়গা অধিগ্রহণ করার প্রক্রিয়া চলছে। টার্মিনালের পেছনের দিকে আরও বড় জায়গা নেওয়া হবে।
কর্তৃপক্ষের এত কক্ষ কেন জানতে চাইলে বন্দর পরিচালক মো. মনিরুজ্জামানের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি। পরিচালককে কয়েক দফা ফোন করে এবং এসএমএস পাঠিয়েও সাড়া মেলেনি।
ভোগান্তি ওপারে, এপারে হয়রানি
খুলনার হাজী মুহসীন রোডের বাসিন্দা ডা. কেপি রায় ৮ ডিসেম্বর সীমান্ত পার হন। কিন্তু ভারতের অংশে ইমিগ্রেশন শেষ করতে সময় লাগে প্রায় সাড়ে আট ঘণ্টা। গত শনিবার তিনি বেনাপোলে ফিরেছেন। ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, ‘যাওয়ার সময় এখানে কোনো ঝামেলা হয় না। কিন্তু পার হয়ে অন্তত ৫০০ মানুষ দাঁড়িয়ে থাকেন শূন্য রেখায়। ওপারে ভোগান্তির শেষ নেই। ভারতের ইমিগ্রেশনে অন্তত ২০টা বুথ থাকলেও কাজ হয় মাত্র ৪টায়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়।’
যশোরের বেসপাড়ার সমর চ্যাটার্জি এগিয়ে এসে বললেন, ‘পাঁচ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে ভারত থেকে এলাম। শুরুতেই ব্যাগ স্ক্যান করল বিজিবি, তারপর ইমিগ্রেশন করে কাস্টমসের স্ক্যানিং। বেরোনোর পথেই আবার ব্যাগ খুলে সব ওলটপালট করে চেক করল বিজিবি। দুবার স্ক্যান করার পরে টার্মিনালের গেটেই আবার চেক কেন?’
তাঁর কথার সত্যতা মিলল টার্মিনালের গেটে। বিজিবির সদস্যরা ব্যাগ খুলে সবার জিনিসপত্র উল্টেপাল্টে দেখছিলেন। কিছু না পেয়ে ওভাবেই ব্যাগ ছেড়ে দেওয়ার পর তর্কও হয় অনেকের সঙ্গে।
ইমিগ্রেশন পুলিশ ও কাস্টমসের কেউই এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি । তবে তাঁদের মতে, গায়ের জোরে এভাবে তল্লাশি করে বিজিবি। নিয়মানুযায়ী বন্ড এলাকার মধ্যে বিজিবির তল্লাশি করার এখতিয়ার নেই। কিন্তু অনেক সময় কাস্টমসের আগেই জোর করে অনেককে তল্লাশি করতে নিয়ে যায় তারা। বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েক দফা অভিযোগ চালাচালিও হয়েছে।
বন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা শারমিন জাহান জানান, এ বিষয়ে বারবার বলেও কোনো কাজ হয়নি, তাই মন্তব্য দেবেন না। বিজিবি যশোর ৪৯ ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাহেদ মিনহাজ সিদ্দিকী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শূন্য রেখা পার হওয়ার পর স্ক্যানে অস্ত্র, গোলাবারুদ, বিস্ফোরক আছে কি না সেটা চেক করা হয়। ভেতরে অন্য কিছু আছে কি না, তা দেখা যায় না। ট্যাক্স ফাকি দিয়ে কিংবা অবৈধ কোনো জিনিস আছে কি না, তা বিশেষ তথ্যের ভিত্তিতে টার্মিনালের গেটে চেক করা হয়।’
যে টাকার হিসাব নেই
ছয় বছরের নাতি শিহাব আল অনিক ও মেয়ের চিকিৎসার জন্য ভারতে যাচ্ছিলেন যশোরের রেজাউল ইসলাম। শনিবার বিকেলে ভ্রমণ কর দিতে দাঁড়ান বেনাপোল টার্মিনালে সোনালী ব্যাংকের কাউন্টারের সামনে। পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের কোনো কর লাগে না। ৫ থেকে ১২ বছর পর্যন্ত ২৫০ টাকা। এর বেশি বয়সী প্রতি জনের ৫০০ টাকা ভ্রমণ কর লাগে। কিন্তু কাউন্টার থেকে রেজাউলকে বলা হয়, ছোটদের ভ্রমণ করের রসিদ নেই, তাই শিশু অনিকের জন্য ৫০০ টাকাই দিতে হবে। আবার পরামর্শ দেওয়া হয় পাশ থেকে অনলাইনে দিয়ে আসতে। অসুস্থ নাতি ও মেয়েকে রেখে রেজাউল দৌড়ে এক দোকানে ৫০ টাকা বেশি দিয়ে পরিশোধ করলেন। অভিযোগের সুরে বললেন, ‘এখানে দিতে হলে দ্বিগুণ দিতে হবে। আবার ওনারাই বলে দিচ্ছেন দোকান থেকে করে আনতে।’ সোনালী ব্যাংকের সামনে লাগানো নোটিশে লেখা, ২০২০ সালের ৭ মার্চ থেকে এই রসিদ-সংকটের শুরু। অর্থাৎ আড়াই বছর ধরে অপ্রাপ্ত বয়সীদের কাছ থেকে দ্বিগুণ টাকা নিচ্ছে।
কাউন্টারে বসা সিনিয়র অফিসার সোহবার হোসেন বলেন, ‘আমাদের কাছে রসিদ আসে না, তাই ২৫০ টাকার ভ্রমণ কর নিতে পারি না।’ ইমিগ্রেশনের হিসাবে, প্রতিদিন বেনাপোল দিয়ে ভারতে যাওয়া মানুষের প্রায় ২০ শতাংশ শিশু। এর মধ্যে ৬-১২ বছরের ১৫ শতাংশ। সে হিসাবে প্রতিদিন শুধু ভ্রমণ করই বেশি নেওয়া হচ্ছে প্রায় সোয়া লাখ টাকা। অবশ্য যাঁরা অনলাইনে দেন, তাঁরা নিস্তার পান।
সোনালী ব্যাংক বেনাপোল শাখার ব্যবস্থাপক (ম্যানেজার) মহসীন আলী বলেন, ‘মূল কার্যালয় থেকে রসিদ দেওয়া হয় না; তাই বাধ্য হয়ে দ্বিগুণ টাকা রাখতে হচ্ছে।’
বেনাপোল পৌরসভার সদ্য বিদায়ী মেয়র আশরাফুল আলম লিটন বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সময় প্রশাসনের কাছে সুবিধা বাড়াতে নানা দাবি জানিয়েছি। তবে আমলাতন্ত্রের দৌরাত্ম্যে কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে যাত্রীরা বঞ্চিত।’
রাশেদ নিজাম ও আজিজুল হক, বেনাপোল (যশোর) থেকে
বেনাপোল রেলস্টেশনে বেনাপোল এক্সপ্রেস থামতেই হুড়োহুড়ি শুরু। কারণ, এই ট্রেনের বেশির ভাগ মানুষের গন্তব্য স্টেশন থেকে এক কিলোমিটারের কিছু বেশি দূরে বেনাপোল স্থলবন্দর চেকপোস্ট। বাইরে ইজিবাইকচালকদের হাঁকডাক সব বন্দরকেন্দ্রিক। যাত্রীদেরও আগে যাওয়ার তাড়া। কেউ একা, কেউ দল বেঁধে আবার কেউ অসুস্থ স্বজনকে নিয়ে যাচ্ছেন। স্টেশনের সামনে চায়ের দোকান, হোটেল দেখে বোঝার উপায় নেই, প্রতিদিন প্রায় সাত হাজার মানুষ এই পথ দিয়ে ভারতে যাতায়াত করেন। তবে মফস্বলের ছাপ স্পষ্ট।
২০১৩ সালের আগস্টে উদ্বোধন করা হয় বেনাপোল আন্তর্জাতিক যাত্রী টার্মিনাল। ব্যবহার শুরু হয় ২০১৭ সালের ২ জুন। যাত্রীদের বসার জায়গা, টয়লেট, ক্যানটিন, বাসের টিকিট সুবিধা একসঙ্গে থাকার কথা। টার্মিনালে পৌঁছার আগে দেখা যায়, কড়া রোদে ঠায় দাঁড়িয়ে ভারতগামী বাংলাদেশিরা। টার্মিনাল থেকে মানুষের সারি পৌঁছেছে প্রায় এক কিলোমিটার দূরের সীমান্তবর্তী গ্রাম সাদিপুর রোডে।
এখানে ইমিগ্রেশন শুরু হয় সকাল সাড়ে ছয়টায়। তাই ট্রেন-বাসে যে যেভাবেই আসেন, সকাল সকাল লাইনে দাঁড়ান দ্রুত ওপারে যাওয়ার আশায়। জানা যায়, আগের দিনও এ পথ দিয়ে ভারতে গেছেন ৩ হাজার ৪৯৮ জন, আর ফিরেছেন ৩ হাজার ১৮৬ জন। ইমিগ্রেশন পুলিশের তথ্যমতে, গড়ে প্রতিদিন সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার মানুষ ভারতে যান বেনাপোল বন্দর দিয়ে। ফেরতও আসেন প্রায় সমসংখ্যক। সব মিলিয়ে সাত হাজারের বেশি মানুষের যাতায়াত। অথচ টার্মিনালে মাত্র ৩৯টি চেয়ার যাত্রীদের বসার জন্য। অপরিচ্ছন্ন টয়লেট, নেই ক্যানটিন সুবিধা।
ভারতে ভ্রমণের জন্য জনপ্রতি দিতে হয় ৫০ টাকা যাত্রী সুবিধা ফি। সে হিসাবে বেনাপোলে প্রতিদিন গড়ে ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা শুধু সুবিধা ফি দেন বাংলাদেশি যাত্রীরা। ২০১৭ সাল থেকে প্রায় ৩০ কোটি টাকা মিলেছে সুবিধা ফি বাবদ।
যাত্রীদের সুবিধা যেমনই হোক, বন্দর কর্তৃপক্ষ নিজেদের সুবিধার জন্য টার্মিনালে কনফারেন্স কক্ষ, প্রশাসনিক কার্যালয় স্থাপন করে জায়গা দখল করে রেখেছে।
যাত্রীদের সুবিধা কম থাকার বিষয়টি স্বীকার করে বেনাপোল স্থলবন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মনিরুল ইসলাম জানান, বিশ্রাম নেওয়ার স্থানসহ সার্বিক সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর জন্য নতুন জায়গা অধিগ্রহণ করার প্রক্রিয়া চলছে। টার্মিনালের পেছনের দিকে আরও বড় জায়গা নেওয়া হবে।
কর্তৃপক্ষের এত কক্ষ কেন জানতে চাইলে বন্দর পরিচালক মো. মনিরুজ্জামানের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি। পরিচালককে কয়েক দফা ফোন করে এবং এসএমএস পাঠিয়েও সাড়া মেলেনি।
ভোগান্তি ওপারে, এপারে হয়রানি
খুলনার হাজী মুহসীন রোডের বাসিন্দা ডা. কেপি রায় ৮ ডিসেম্বর সীমান্ত পার হন। কিন্তু ভারতের অংশে ইমিগ্রেশন শেষ করতে সময় লাগে প্রায় সাড়ে আট ঘণ্টা। গত শনিবার তিনি বেনাপোলে ফিরেছেন। ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, ‘যাওয়ার সময় এখানে কোনো ঝামেলা হয় না। কিন্তু পার হয়ে অন্তত ৫০০ মানুষ দাঁড়িয়ে থাকেন শূন্য রেখায়। ওপারে ভোগান্তির শেষ নেই। ভারতের ইমিগ্রেশনে অন্তত ২০টা বুথ থাকলেও কাজ হয় মাত্র ৪টায়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়।’
যশোরের বেসপাড়ার সমর চ্যাটার্জি এগিয়ে এসে বললেন, ‘পাঁচ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে ভারত থেকে এলাম। শুরুতেই ব্যাগ স্ক্যান করল বিজিবি, তারপর ইমিগ্রেশন করে কাস্টমসের স্ক্যানিং। বেরোনোর পথেই আবার ব্যাগ খুলে সব ওলটপালট করে চেক করল বিজিবি। দুবার স্ক্যান করার পরে টার্মিনালের গেটেই আবার চেক কেন?’
তাঁর কথার সত্যতা মিলল টার্মিনালের গেটে। বিজিবির সদস্যরা ব্যাগ খুলে সবার জিনিসপত্র উল্টেপাল্টে দেখছিলেন। কিছু না পেয়ে ওভাবেই ব্যাগ ছেড়ে দেওয়ার পর তর্কও হয় অনেকের সঙ্গে।
ইমিগ্রেশন পুলিশ ও কাস্টমসের কেউই এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি । তবে তাঁদের মতে, গায়ের জোরে এভাবে তল্লাশি করে বিজিবি। নিয়মানুযায়ী বন্ড এলাকার মধ্যে বিজিবির তল্লাশি করার এখতিয়ার নেই। কিন্তু অনেক সময় কাস্টমসের আগেই জোর করে অনেককে তল্লাশি করতে নিয়ে যায় তারা। বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েক দফা অভিযোগ চালাচালিও হয়েছে।
বন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা শারমিন জাহান জানান, এ বিষয়ে বারবার বলেও কোনো কাজ হয়নি, তাই মন্তব্য দেবেন না। বিজিবি যশোর ৪৯ ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাহেদ মিনহাজ সিদ্দিকী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শূন্য রেখা পার হওয়ার পর স্ক্যানে অস্ত্র, গোলাবারুদ, বিস্ফোরক আছে কি না সেটা চেক করা হয়। ভেতরে অন্য কিছু আছে কি না, তা দেখা যায় না। ট্যাক্স ফাকি দিয়ে কিংবা অবৈধ কোনো জিনিস আছে কি না, তা বিশেষ তথ্যের ভিত্তিতে টার্মিনালের গেটে চেক করা হয়।’
যে টাকার হিসাব নেই
ছয় বছরের নাতি শিহাব আল অনিক ও মেয়ের চিকিৎসার জন্য ভারতে যাচ্ছিলেন যশোরের রেজাউল ইসলাম। শনিবার বিকেলে ভ্রমণ কর দিতে দাঁড়ান বেনাপোল টার্মিনালে সোনালী ব্যাংকের কাউন্টারের সামনে। পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের কোনো কর লাগে না। ৫ থেকে ১২ বছর পর্যন্ত ২৫০ টাকা। এর বেশি বয়সী প্রতি জনের ৫০০ টাকা ভ্রমণ কর লাগে। কিন্তু কাউন্টার থেকে রেজাউলকে বলা হয়, ছোটদের ভ্রমণ করের রসিদ নেই, তাই শিশু অনিকের জন্য ৫০০ টাকাই দিতে হবে। আবার পরামর্শ দেওয়া হয় পাশ থেকে অনলাইনে দিয়ে আসতে। অসুস্থ নাতি ও মেয়েকে রেখে রেজাউল দৌড়ে এক দোকানে ৫০ টাকা বেশি দিয়ে পরিশোধ করলেন। অভিযোগের সুরে বললেন, ‘এখানে দিতে হলে দ্বিগুণ দিতে হবে। আবার ওনারাই বলে দিচ্ছেন দোকান থেকে করে আনতে।’ সোনালী ব্যাংকের সামনে লাগানো নোটিশে লেখা, ২০২০ সালের ৭ মার্চ থেকে এই রসিদ-সংকটের শুরু। অর্থাৎ আড়াই বছর ধরে অপ্রাপ্ত বয়সীদের কাছ থেকে দ্বিগুণ টাকা নিচ্ছে।
কাউন্টারে বসা সিনিয়র অফিসার সোহবার হোসেন বলেন, ‘আমাদের কাছে রসিদ আসে না, তাই ২৫০ টাকার ভ্রমণ কর নিতে পারি না।’ ইমিগ্রেশনের হিসাবে, প্রতিদিন বেনাপোল দিয়ে ভারতে যাওয়া মানুষের প্রায় ২০ শতাংশ শিশু। এর মধ্যে ৬-১২ বছরের ১৫ শতাংশ। সে হিসাবে প্রতিদিন শুধু ভ্রমণ করই বেশি নেওয়া হচ্ছে প্রায় সোয়া লাখ টাকা। অবশ্য যাঁরা অনলাইনে দেন, তাঁরা নিস্তার পান।
সোনালী ব্যাংক বেনাপোল শাখার ব্যবস্থাপক (ম্যানেজার) মহসীন আলী বলেন, ‘মূল কার্যালয় থেকে রসিদ দেওয়া হয় না; তাই বাধ্য হয়ে দ্বিগুণ টাকা রাখতে হচ্ছে।’
বেনাপোল পৌরসভার সদ্য বিদায়ী মেয়র আশরাফুল আলম লিটন বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সময় প্রশাসনের কাছে সুবিধা বাড়াতে নানা দাবি জানিয়েছি। তবে আমলাতন্ত্রের দৌরাত্ম্যে কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে যাত্রীরা বঞ্চিত।’
বেনাপোল রেলস্টেশনে বেনাপোল এক্সপ্রেস থামতেই হুড়োহুড়ি শুরু। কারণ, এই ট্রেনের বেশির ভাগ মানুষের গন্তব্য স্টেশন থেকে এক কিলোমিটারের কিছু বেশি দূরে বেনাপোল স্থলবন্দর চেকপোস্ট। বাইরে ইজিবাইকচালকদের হাঁকডাক সব বন্দরকেন্দ্রিক। যাত্রীদেরও আগে যাওয়ার তাড়া। কেউ একা, কেউ দল বেঁধে আবার কেউ অসুস্থ স্বজনকে নিয়ে যাচ্ছেন। স্টেশনের সামনে চায়ের দোকান, হোটেল দেখে বোঝার উপায় নেই, প্রতিদিন প্রায় সাত হাজার মানুষ এই পথ দিয়ে ভারতে যাতায়াত করেন। তবে মফস্বলের ছাপ স্পষ্ট।
২০১৩ সালের আগস্টে উদ্বোধন করা হয় বেনাপোল আন্তর্জাতিক যাত্রী টার্মিনাল। ব্যবহার শুরু হয় ২০১৭ সালের ২ জুন। যাত্রীদের বসার জায়গা, টয়লেট, ক্যানটিন, বাসের টিকিট সুবিধা একসঙ্গে থাকার কথা। টার্মিনালে পৌঁছার আগে দেখা যায়, কড়া রোদে ঠায় দাঁড়িয়ে ভারতগামী বাংলাদেশিরা। টার্মিনাল থেকে মানুষের সারি পৌঁছেছে প্রায় এক কিলোমিটার দূরের সীমান্তবর্তী গ্রাম সাদিপুর রোডে।
এখানে ইমিগ্রেশন শুরু হয় সকাল সাড়ে ছয়টায়। তাই ট্রেন-বাসে যে যেভাবেই আসেন, সকাল সকাল লাইনে দাঁড়ান দ্রুত ওপারে যাওয়ার আশায়। জানা যায়, আগের দিনও এ পথ দিয়ে ভারতে গেছেন ৩ হাজার ৪৯৮ জন, আর ফিরেছেন ৩ হাজার ১৮৬ জন। ইমিগ্রেশন পুলিশের তথ্যমতে, গড়ে প্রতিদিন সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার মানুষ ভারতে যান বেনাপোল বন্দর দিয়ে। ফেরতও আসেন প্রায় সমসংখ্যক। সব মিলিয়ে সাত হাজারের বেশি মানুষের যাতায়াত। অথচ টার্মিনালে মাত্র ৩৯টি চেয়ার যাত্রীদের বসার জন্য। অপরিচ্ছন্ন টয়লেট, নেই ক্যানটিন সুবিধা।
ভারতে ভ্রমণের জন্য জনপ্রতি দিতে হয় ৫০ টাকা যাত্রী সুবিধা ফি। সে হিসাবে বেনাপোলে প্রতিদিন গড়ে ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা শুধু সুবিধা ফি দেন বাংলাদেশি যাত্রীরা। ২০১৭ সাল থেকে প্রায় ৩০ কোটি টাকা মিলেছে সুবিধা ফি বাবদ।
যাত্রীদের সুবিধা যেমনই হোক, বন্দর কর্তৃপক্ষ নিজেদের সুবিধার জন্য টার্মিনালে কনফারেন্স কক্ষ, প্রশাসনিক কার্যালয় স্থাপন করে জায়গা দখল করে রেখেছে।
যাত্রীদের সুবিধা কম থাকার বিষয়টি স্বীকার করে বেনাপোল স্থলবন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মনিরুল ইসলাম জানান, বিশ্রাম নেওয়ার স্থানসহ সার্বিক সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর জন্য নতুন জায়গা অধিগ্রহণ করার প্রক্রিয়া চলছে। টার্মিনালের পেছনের দিকে আরও বড় জায়গা নেওয়া হবে।
কর্তৃপক্ষের এত কক্ষ কেন জানতে চাইলে বন্দর পরিচালক মো. মনিরুজ্জামানের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি। পরিচালককে কয়েক দফা ফোন করে এবং এসএমএস পাঠিয়েও সাড়া মেলেনি।
ভোগান্তি ওপারে, এপারে হয়রানি
খুলনার হাজী মুহসীন রোডের বাসিন্দা ডা. কেপি রায় ৮ ডিসেম্বর সীমান্ত পার হন। কিন্তু ভারতের অংশে ইমিগ্রেশন শেষ করতে সময় লাগে প্রায় সাড়ে আট ঘণ্টা। গত শনিবার তিনি বেনাপোলে ফিরেছেন। ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, ‘যাওয়ার সময় এখানে কোনো ঝামেলা হয় না। কিন্তু পার হয়ে অন্তত ৫০০ মানুষ দাঁড়িয়ে থাকেন শূন্য রেখায়। ওপারে ভোগান্তির শেষ নেই। ভারতের ইমিগ্রেশনে অন্তত ২০টা বুথ থাকলেও কাজ হয় মাত্র ৪টায়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়।’
যশোরের বেসপাড়ার সমর চ্যাটার্জি এগিয়ে এসে বললেন, ‘পাঁচ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে ভারত থেকে এলাম। শুরুতেই ব্যাগ স্ক্যান করল বিজিবি, তারপর ইমিগ্রেশন করে কাস্টমসের স্ক্যানিং। বেরোনোর পথেই আবার ব্যাগ খুলে সব ওলটপালট করে চেক করল বিজিবি। দুবার স্ক্যান করার পরে টার্মিনালের গেটেই আবার চেক কেন?’
তাঁর কথার সত্যতা মিলল টার্মিনালের গেটে। বিজিবির সদস্যরা ব্যাগ খুলে সবার জিনিসপত্র উল্টেপাল্টে দেখছিলেন। কিছু না পেয়ে ওভাবেই ব্যাগ ছেড়ে দেওয়ার পর তর্কও হয় অনেকের সঙ্গে।
ইমিগ্রেশন পুলিশ ও কাস্টমসের কেউই এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি । তবে তাঁদের মতে, গায়ের জোরে এভাবে তল্লাশি করে বিজিবি। নিয়মানুযায়ী বন্ড এলাকার মধ্যে বিজিবির তল্লাশি করার এখতিয়ার নেই। কিন্তু অনেক সময় কাস্টমসের আগেই জোর করে অনেককে তল্লাশি করতে নিয়ে যায় তারা। বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েক দফা অভিযোগ চালাচালিও হয়েছে।
বন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা শারমিন জাহান জানান, এ বিষয়ে বারবার বলেও কোনো কাজ হয়নি, তাই মন্তব্য দেবেন না। বিজিবি যশোর ৪৯ ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাহেদ মিনহাজ সিদ্দিকী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শূন্য রেখা পার হওয়ার পর স্ক্যানে অস্ত্র, গোলাবারুদ, বিস্ফোরক আছে কি না সেটা চেক করা হয়। ভেতরে অন্য কিছু আছে কি না, তা দেখা যায় না। ট্যাক্স ফাকি দিয়ে কিংবা অবৈধ কোনো জিনিস আছে কি না, তা বিশেষ তথ্যের ভিত্তিতে টার্মিনালের গেটে চেক করা হয়।’
যে টাকার হিসাব নেই
ছয় বছরের নাতি শিহাব আল অনিক ও মেয়ের চিকিৎসার জন্য ভারতে যাচ্ছিলেন যশোরের রেজাউল ইসলাম। শনিবার বিকেলে ভ্রমণ কর দিতে দাঁড়ান বেনাপোল টার্মিনালে সোনালী ব্যাংকের কাউন্টারের সামনে। পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের কোনো কর লাগে না। ৫ থেকে ১২ বছর পর্যন্ত ২৫০ টাকা। এর বেশি বয়সী প্রতি জনের ৫০০ টাকা ভ্রমণ কর লাগে। কিন্তু কাউন্টার থেকে রেজাউলকে বলা হয়, ছোটদের ভ্রমণ করের রসিদ নেই, তাই শিশু অনিকের জন্য ৫০০ টাকাই দিতে হবে। আবার পরামর্শ দেওয়া হয় পাশ থেকে অনলাইনে দিয়ে আসতে। অসুস্থ নাতি ও মেয়েকে রেখে রেজাউল দৌড়ে এক দোকানে ৫০ টাকা বেশি দিয়ে পরিশোধ করলেন। অভিযোগের সুরে বললেন, ‘এখানে দিতে হলে দ্বিগুণ দিতে হবে। আবার ওনারাই বলে দিচ্ছেন দোকান থেকে করে আনতে।’ সোনালী ব্যাংকের সামনে লাগানো নোটিশে লেখা, ২০২০ সালের ৭ মার্চ থেকে এই রসিদ-সংকটের শুরু। অর্থাৎ আড়াই বছর ধরে অপ্রাপ্ত বয়সীদের কাছ থেকে দ্বিগুণ টাকা নিচ্ছে।
কাউন্টারে বসা সিনিয়র অফিসার সোহবার হোসেন বলেন, ‘আমাদের কাছে রসিদ আসে না, তাই ২৫০ টাকার ভ্রমণ কর নিতে পারি না।’ ইমিগ্রেশনের হিসাবে, প্রতিদিন বেনাপোল দিয়ে ভারতে যাওয়া মানুষের প্রায় ২০ শতাংশ শিশু। এর মধ্যে ৬-১২ বছরের ১৫ শতাংশ। সে হিসাবে প্রতিদিন শুধু ভ্রমণ করই বেশি নেওয়া হচ্ছে প্রায় সোয়া লাখ টাকা। অবশ্য যাঁরা অনলাইনে দেন, তাঁরা নিস্তার পান।
সোনালী ব্যাংক বেনাপোল শাখার ব্যবস্থাপক (ম্যানেজার) মহসীন আলী বলেন, ‘মূল কার্যালয় থেকে রসিদ দেওয়া হয় না; তাই বাধ্য হয়ে দ্বিগুণ টাকা রাখতে হচ্ছে।’
বেনাপোল পৌরসভার সদ্য বিদায়ী মেয়র আশরাফুল আলম লিটন বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সময় প্রশাসনের কাছে সুবিধা বাড়াতে নানা দাবি জানিয়েছি। তবে আমলাতন্ত্রের দৌরাত্ম্যে কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে যাত্রীরা বঞ্চিত।’
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৭ দিন আগে‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।
বেনাপোল রেলস্টেশনে বেনাপোল এক্সপ্রেস থামতেই হুড়োহুড়ি শুরু। কারণ, এই ট্রেনের বেশির ভাগ মানুষের গন্তব্য স্টেশন থেকে এক কিলোমিটারের কিছু বেশি দূরে বেনাপোল স্থলবন্দর চেকপোস্ট। বাইরে ইজিবাইকচালকদের হাঁকডাক সব বন্দরকেন্দ্রিক। যাত্রীদেরও আগে যাওয়ার তাড়া।
২০ ডিসেম্বর ২০২২‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]
বেনাপোল রেলস্টেশনে বেনাপোল এক্সপ্রেস থামতেই হুড়োহুড়ি শুরু। কারণ, এই ট্রেনের বেশির ভাগ মানুষের গন্তব্য স্টেশন থেকে এক কিলোমিটারের কিছু বেশি দূরে বেনাপোল স্থলবন্দর চেকপোস্ট। বাইরে ইজিবাইকচালকদের হাঁকডাক সব বন্দরকেন্দ্রিক। যাত্রীদেরও আগে যাওয়ার তাড়া।
২০ ডিসেম্বর ২০২২গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৭ দিন আগেভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।
বেনাপোল রেলস্টেশনে বেনাপোল এক্সপ্রেস থামতেই হুড়োহুড়ি শুরু। কারণ, এই ট্রেনের বেশির ভাগ মানুষের গন্তব্য স্টেশন থেকে এক কিলোমিটারের কিছু বেশি দূরে বেনাপোল স্থলবন্দর চেকপোস্ট। বাইরে ইজিবাইকচালকদের হাঁকডাক সব বন্দরকেন্দ্রিক। যাত্রীদেরও আগে যাওয়ার তাড়া।
২০ ডিসেম্বর ২০২২গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৭ দিন আগে‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।
বেনাপোল রেলস্টেশনে বেনাপোল এক্সপ্রেস থামতেই হুড়োহুড়ি শুরু। কারণ, এই ট্রেনের বেশির ভাগ মানুষের গন্তব্য স্টেশন থেকে এক কিলোমিটারের কিছু বেশি দূরে বেনাপোল স্থলবন্দর চেকপোস্ট। বাইরে ইজিবাইকচালকদের হাঁকডাক সব বন্দরকেন্দ্রিক। যাত্রীদেরও আগে যাওয়ার তাড়া।
২০ ডিসেম্বর ২০২২গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৭ দিন আগে‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫