মহিউদ্দিন খান মোহন

‘আমি এক পাহলোয়ান, ঘাড় মোর ত্যাড়া/লাইত্থাইয়া ভাঙি আমি পাটখড়ির বেড়া/কুস্তি লড়তে গিয়ে পড়ে যাই তলে/অমনি মুতিয়া দেই নিজ বাহুবলে’।
ছেলেবেলায় শোনা একটি ব্যঙ্গাত্মক ছড়া। এর মর্মার্থ ব্যাখ্যা করে বলার দরকার আছে বলে মনে হয় না। হামবড়া ভাব প্রকাশ করে যাঁরা সমাজে কল্কে পেতে চান, ছড়াটি তাঁদের ক্ষেত্রেই বেশি ব্যবহার হতো। সম্প্রতি আমাদের মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়ের মুখনিঃসৃত বাণী ওই ছড়াটিকে পুনরায় মনে করিয়ে দিল।
যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে ৯ ও ১০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে গণতন্ত্র নিয়ে এক বৈশ্বিক শীর্ষ সম্মেলন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ওই সম্মেলনের উদ্যোক্তা। ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠেয় ওই সম্মেলনে বিশ্বের ১১০টি দেশকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও বাংলাদেশ বাদ পড়েছে। এ ধরনের একটি সম্মেলনে বাংলাদেশের আমন্ত্রণ না পাওয়া আমাদের জন্য বেদনাদায়ক সন্দেহ নেই। কেননা, আমরা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র কেন বাংলাদেশকে ওই সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানাল না, সেটা পরিষ্কার নয়। সরকারের পক্ষ থেকেও অফিশিয়ালি এ বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। আর তা বলাটা সমীচীনও নয় বোধ হয়। কেননা, মেজবান নিজেই নির্ধারণ করবেন কাকে কাকে তিনি মেহমান করবেন। এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র যে গণতন্ত্র সম্মেলন আয়োজন করেছে, তাতে কোন কোন দেশকে তারা আমন্ত্রণ জানাবে, সেটা তাদেরই এখতিয়ার। তবে যেহেতু আমরা নিজেদের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলে দাবি করি, সেহেতু এ ধরনের বৈশ্বিক সম্মেলনে দাওয়াত না পাওয়া আমাদের জন্য অমর্যাদাকরও বটে।
এই দাওয়াত না পাওয়ার বিষয়ে একটি চমকপ্রদ ব্যাখ্যা দিয়েছেন আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। বলেছেন, ‘ওই সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র সম্ভবত দুর্বল গণতন্ত্রের দেশগুলোকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। সে কারণে বাংলাদেশ আমন্ত্রণ পায়নি।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশে স্থিতিশীল গণতন্ত্র বিরাজ করছে। এটি হচ্ছে স্বচ্ছ গণতন্ত্র। জনগণ সুষ্ঠু ও মুক্তভাবে ভোট দিতে পারছে।’ (সূত্র: ২৬ নভেম্বরের দৈনিক পত্রিকাসমূহ)
এর পরদিন সিলেটে তিনি বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র সব সময় নানা ইস্যুতে বিভিন্ন দেশকে চাপে রাখতে চায়। তারা কখনো গণতন্ত্রের কথা বলে, কখনো সুশাসন, সন্ত্রাসবাদ ও দুর্নীতির কথা বলে এ রকম চাপ সৃষ্টি করে। এটা তাদের একটি রাজনীতি। কে দাওয়াত দিল আর না দিল, তাতে কিছু আসে-যায় না। আমাদের গণতন্ত্র আমাদেরই ঠিক করতে হবে। এটা অন্য কেউ করে দেবে না।’ (সূত্র: ২৭ নভেম্বরের দৈনিকসমূহ)
অত্যন্ত কঠিন সত্য উচ্চারণ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। আমাদের গণতন্ত্র আমাদেরই ঠিক করতে হবে, অন্য কেউ তা করে দেবে না। তবে এ কথা দ্বারা তিনি প্রকারন্তরে এটা স্বীকার করে নিয়েছেন যে, আমাদের গণতন্ত্র আসলে ঠিক নেই। সে জন্যই তা ঠিক করার প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়েছে তাঁর কাছে। মন্ত্রী মহোদয়ের শেষের কথাকে যদি আমরা সত্যি বলে ধরে নিই, তাহলে তার প্রথম বচনের কী হবে? তাঁর মতে, যুক্তরাষ্ট্র দুর্বল গণতন্ত্রের দেশগুলোকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। তার মানে আমরা দুর্বল নই, শক্তিশালী। তো শক্তিশালী সে গণতন্ত্রকে আবার ঠিক করার প্রশ্ন আসে কী করে? উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের আমন্ত্রণ তালিকায় বাংলাদেশ না থাকলেও দক্ষিণ এশিয়া থেকে ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও ভুটান রয়েছে। এখন প্রশ্ন হলো, ভারত কি দুর্বল গণতন্ত্রের দেশ? সর্বোপরি যে ১১০টি দেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, সেগুলোও কি দুর্বল গণতন্ত্রের দেশ? দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত-পাকিস্তানের চেয়ে আমরা কি শক্তিশালী গণতন্ত্রের দেশ? হলে কতটা শক্তিশালী?
একটি দেশে গণতন্ত্র কতটা শক্তিশালী, তা মাপার জন্য কোনো ব্যারোমিটার এ পর্যন্ত আবিষ্কার হয়নি। তবে পারিপার্শ্বিক পরিবেশ পরিস্থিতি থেকেই সাধারণত বোঝা যায় গণতন্ত্রের অবস্থা বা দুরবস্থা। আমাদের দেশে বর্তমানে গণতন্ত্রের যে চেহারা-সুরত আমরা দেখছি, তাতে আত্মতৃপ্তির অবকাশ আছে বলে মনে হয় না। কয়েক বছর ধরে স্থিতিশীল গণতন্ত্র রয়েছে এবং জনগণ মুক্তভাবে ভোট দিতে পারছে— পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ বক্তব্য কতটা বাস্তবতাপ্রসূত, তা নিয়ে অবশ্যই প্রশ্ন তোলা যায়। এটা ঠিক, দেশে এখন একধরনের স্থিতিশীল পরিবেশ বিরাজ করছে, উন্নয়নকাজ অব্যাহত গতিতে চলছে। তবে এ স্থিতিশীলতা যতটা না শক্তিশালী গণতন্ত্রের কারণে তার চেয়ে বহুলাংশে দুর্বল বিরোধী দলের জন্য। এ এক অস্বাভাবিক স্থিতিশীল পরিবেশ। সবকিছু আপাতদৃষ্টিতে শান্ত, কিন্তু কোথায় যেন একটা অস্বস্তি মনের ভেতর খোঁচা মারছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী তো বহির্বিশ্বসংক্রান্ত বিষয়ে ব্যস্ত সময় কাটান, তাই দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে তেমন মনোযোগ হয়তো দিতে পারেন না। না হলে আমাদের গণতন্ত্রের বর্তমান শীর্ণকায় দশা তাঁর নজর এড়াত না। আমাদের গণতন্ত্র কেমন শক্তিশালী—তার প্রমাণ তো চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ধারাবাহিকভাবেই আমরা পাচ্ছি। মন্ত্রী যে দেশগুলোকে দুর্বল গণতন্ত্রের দেশ বলেছেন, সেসব দেশের জাতীয় কিংবা স্থানীয় নির্বাচনে এত মানবজীবনের ইতি ঘটে কি না, তা ভেবে দেখা দরকার। শুনতে খারাপ লাগলেও বলতে দ্বিধা নেই, একমাত্র বিবেক-বুদ্ধি ভোঁতা হয়ে যাওয়া ব্যক্তি ছাড়া আর কেউ বাংলাদেশের বর্তমান গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করতে পারেন না। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা ও গণমাধ্যম মাঝেমধ্যেই বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে থাকে। হয়তো তাদের সমীক্ষা, পরিসংখ্যান কিংবা মন্তব্য আমাদের জন্য স্বস্তিদায়ক বা মনঃপূত হয় না। কিন্তু তাতে তো বাস্তব পরিস্থিতির কোনো হেরফের হবে না।
তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একটি ব্যাপারে ধন্যবাদ পাওয়ার দাবি রাখেন। তিনি ইচ্ছে করলে যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশের দাওয়াত না পাওয়ার বিষয়টিকে বিএনপির ষড়যন্ত্র বলে চালিয়ে দিতে পারতেন। বলতে পারতেন, বিএনপি আন্তর্জাতিক লবিস্ট নিয়োগ করে জো বাইডেনকে প্রভাবিত করেছে বাংলাদেশকে দাওয়াত না দিতে। অজুহাত হিসেবে কথাটি মন্দ হতো না। যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র সম্মেলনে দাওয়াত পাওয়া গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার পরিমাপক বলে আমি মনে করি না। তবে দাওয়াত না পাওয়াটা অবশ্যই দুঃখজনক। এতে অনুমান করা যায়, বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর মোড়ল রাষ্ট্রটির দৃষ্টিতে আমাদের মূল্যায়ন কী। আমাদের ক্ষমতাসীন দলের নেতা ও মন্ত্রীরা দিবানিশি বলে চলেছেন, দেশে গণতন্ত্রের ভরা জোয়ার বইছে। কিন্তু তা যে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আমাদের ছোট নদী’ কবিতার সেই ছোট্ট নদীটির মতো বৈশাখ মাসে হাঁটু জলের ধারায় পরিণত হয়েছে, তা কি তাঁরা উপলব্ধি করতে পারছেন?
লেখক: মহিউদ্দিন খান মোহন সাংবাদিক ও রাজনীতি বিশ্লেষক

‘আমি এক পাহলোয়ান, ঘাড় মোর ত্যাড়া/লাইত্থাইয়া ভাঙি আমি পাটখড়ির বেড়া/কুস্তি লড়তে গিয়ে পড়ে যাই তলে/অমনি মুতিয়া দেই নিজ বাহুবলে’।
ছেলেবেলায় শোনা একটি ব্যঙ্গাত্মক ছড়া। এর মর্মার্থ ব্যাখ্যা করে বলার দরকার আছে বলে মনে হয় না। হামবড়া ভাব প্রকাশ করে যাঁরা সমাজে কল্কে পেতে চান, ছড়াটি তাঁদের ক্ষেত্রেই বেশি ব্যবহার হতো। সম্প্রতি আমাদের মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়ের মুখনিঃসৃত বাণী ওই ছড়াটিকে পুনরায় মনে করিয়ে দিল।
যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে ৯ ও ১০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে গণতন্ত্র নিয়ে এক বৈশ্বিক শীর্ষ সম্মেলন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ওই সম্মেলনের উদ্যোক্তা। ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠেয় ওই সম্মেলনে বিশ্বের ১১০টি দেশকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও বাংলাদেশ বাদ পড়েছে। এ ধরনের একটি সম্মেলনে বাংলাদেশের আমন্ত্রণ না পাওয়া আমাদের জন্য বেদনাদায়ক সন্দেহ নেই। কেননা, আমরা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র কেন বাংলাদেশকে ওই সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানাল না, সেটা পরিষ্কার নয়। সরকারের পক্ষ থেকেও অফিশিয়ালি এ বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। আর তা বলাটা সমীচীনও নয় বোধ হয়। কেননা, মেজবান নিজেই নির্ধারণ করবেন কাকে কাকে তিনি মেহমান করবেন। এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র যে গণতন্ত্র সম্মেলন আয়োজন করেছে, তাতে কোন কোন দেশকে তারা আমন্ত্রণ জানাবে, সেটা তাদেরই এখতিয়ার। তবে যেহেতু আমরা নিজেদের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলে দাবি করি, সেহেতু এ ধরনের বৈশ্বিক সম্মেলনে দাওয়াত না পাওয়া আমাদের জন্য অমর্যাদাকরও বটে।
এই দাওয়াত না পাওয়ার বিষয়ে একটি চমকপ্রদ ব্যাখ্যা দিয়েছেন আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। বলেছেন, ‘ওই সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র সম্ভবত দুর্বল গণতন্ত্রের দেশগুলোকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। সে কারণে বাংলাদেশ আমন্ত্রণ পায়নি।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশে স্থিতিশীল গণতন্ত্র বিরাজ করছে। এটি হচ্ছে স্বচ্ছ গণতন্ত্র। জনগণ সুষ্ঠু ও মুক্তভাবে ভোট দিতে পারছে।’ (সূত্র: ২৬ নভেম্বরের দৈনিক পত্রিকাসমূহ)
এর পরদিন সিলেটে তিনি বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র সব সময় নানা ইস্যুতে বিভিন্ন দেশকে চাপে রাখতে চায়। তারা কখনো গণতন্ত্রের কথা বলে, কখনো সুশাসন, সন্ত্রাসবাদ ও দুর্নীতির কথা বলে এ রকম চাপ সৃষ্টি করে। এটা তাদের একটি রাজনীতি। কে দাওয়াত দিল আর না দিল, তাতে কিছু আসে-যায় না। আমাদের গণতন্ত্র আমাদেরই ঠিক করতে হবে। এটা অন্য কেউ করে দেবে না।’ (সূত্র: ২৭ নভেম্বরের দৈনিকসমূহ)
অত্যন্ত কঠিন সত্য উচ্চারণ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। আমাদের গণতন্ত্র আমাদেরই ঠিক করতে হবে, অন্য কেউ তা করে দেবে না। তবে এ কথা দ্বারা তিনি প্রকারন্তরে এটা স্বীকার করে নিয়েছেন যে, আমাদের গণতন্ত্র আসলে ঠিক নেই। সে জন্যই তা ঠিক করার প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়েছে তাঁর কাছে। মন্ত্রী মহোদয়ের শেষের কথাকে যদি আমরা সত্যি বলে ধরে নিই, তাহলে তার প্রথম বচনের কী হবে? তাঁর মতে, যুক্তরাষ্ট্র দুর্বল গণতন্ত্রের দেশগুলোকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। তার মানে আমরা দুর্বল নই, শক্তিশালী। তো শক্তিশালী সে গণতন্ত্রকে আবার ঠিক করার প্রশ্ন আসে কী করে? উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের আমন্ত্রণ তালিকায় বাংলাদেশ না থাকলেও দক্ষিণ এশিয়া থেকে ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও ভুটান রয়েছে। এখন প্রশ্ন হলো, ভারত কি দুর্বল গণতন্ত্রের দেশ? সর্বোপরি যে ১১০টি দেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, সেগুলোও কি দুর্বল গণতন্ত্রের দেশ? দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত-পাকিস্তানের চেয়ে আমরা কি শক্তিশালী গণতন্ত্রের দেশ? হলে কতটা শক্তিশালী?
একটি দেশে গণতন্ত্র কতটা শক্তিশালী, তা মাপার জন্য কোনো ব্যারোমিটার এ পর্যন্ত আবিষ্কার হয়নি। তবে পারিপার্শ্বিক পরিবেশ পরিস্থিতি থেকেই সাধারণত বোঝা যায় গণতন্ত্রের অবস্থা বা দুরবস্থা। আমাদের দেশে বর্তমানে গণতন্ত্রের যে চেহারা-সুরত আমরা দেখছি, তাতে আত্মতৃপ্তির অবকাশ আছে বলে মনে হয় না। কয়েক বছর ধরে স্থিতিশীল গণতন্ত্র রয়েছে এবং জনগণ মুক্তভাবে ভোট দিতে পারছে— পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ বক্তব্য কতটা বাস্তবতাপ্রসূত, তা নিয়ে অবশ্যই প্রশ্ন তোলা যায়। এটা ঠিক, দেশে এখন একধরনের স্থিতিশীল পরিবেশ বিরাজ করছে, উন্নয়নকাজ অব্যাহত গতিতে চলছে। তবে এ স্থিতিশীলতা যতটা না শক্তিশালী গণতন্ত্রের কারণে তার চেয়ে বহুলাংশে দুর্বল বিরোধী দলের জন্য। এ এক অস্বাভাবিক স্থিতিশীল পরিবেশ। সবকিছু আপাতদৃষ্টিতে শান্ত, কিন্তু কোথায় যেন একটা অস্বস্তি মনের ভেতর খোঁচা মারছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী তো বহির্বিশ্বসংক্রান্ত বিষয়ে ব্যস্ত সময় কাটান, তাই দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে তেমন মনোযোগ হয়তো দিতে পারেন না। না হলে আমাদের গণতন্ত্রের বর্তমান শীর্ণকায় দশা তাঁর নজর এড়াত না। আমাদের গণতন্ত্র কেমন শক্তিশালী—তার প্রমাণ তো চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ধারাবাহিকভাবেই আমরা পাচ্ছি। মন্ত্রী যে দেশগুলোকে দুর্বল গণতন্ত্রের দেশ বলেছেন, সেসব দেশের জাতীয় কিংবা স্থানীয় নির্বাচনে এত মানবজীবনের ইতি ঘটে কি না, তা ভেবে দেখা দরকার। শুনতে খারাপ লাগলেও বলতে দ্বিধা নেই, একমাত্র বিবেক-বুদ্ধি ভোঁতা হয়ে যাওয়া ব্যক্তি ছাড়া আর কেউ বাংলাদেশের বর্তমান গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করতে পারেন না। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা ও গণমাধ্যম মাঝেমধ্যেই বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে থাকে। হয়তো তাদের সমীক্ষা, পরিসংখ্যান কিংবা মন্তব্য আমাদের জন্য স্বস্তিদায়ক বা মনঃপূত হয় না। কিন্তু তাতে তো বাস্তব পরিস্থিতির কোনো হেরফের হবে না।
তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একটি ব্যাপারে ধন্যবাদ পাওয়ার দাবি রাখেন। তিনি ইচ্ছে করলে যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশের দাওয়াত না পাওয়ার বিষয়টিকে বিএনপির ষড়যন্ত্র বলে চালিয়ে দিতে পারতেন। বলতে পারতেন, বিএনপি আন্তর্জাতিক লবিস্ট নিয়োগ করে জো বাইডেনকে প্রভাবিত করেছে বাংলাদেশকে দাওয়াত না দিতে। অজুহাত হিসেবে কথাটি মন্দ হতো না। যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র সম্মেলনে দাওয়াত পাওয়া গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার পরিমাপক বলে আমি মনে করি না। তবে দাওয়াত না পাওয়াটা অবশ্যই দুঃখজনক। এতে অনুমান করা যায়, বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর মোড়ল রাষ্ট্রটির দৃষ্টিতে আমাদের মূল্যায়ন কী। আমাদের ক্ষমতাসীন দলের নেতা ও মন্ত্রীরা দিবানিশি বলে চলেছেন, দেশে গণতন্ত্রের ভরা জোয়ার বইছে। কিন্তু তা যে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আমাদের ছোট নদী’ কবিতার সেই ছোট্ট নদীটির মতো বৈশাখ মাসে হাঁটু জলের ধারায় পরিণত হয়েছে, তা কি তাঁরা উপলব্ধি করতে পারছেন?
লেখক: মহিউদ্দিন খান মোহন সাংবাদিক ও রাজনীতি বিশ্লেষক
মহিউদ্দিন খান মোহন

‘আমি এক পাহলোয়ান, ঘাড় মোর ত্যাড়া/লাইত্থাইয়া ভাঙি আমি পাটখড়ির বেড়া/কুস্তি লড়তে গিয়ে পড়ে যাই তলে/অমনি মুতিয়া দেই নিজ বাহুবলে’।
ছেলেবেলায় শোনা একটি ব্যঙ্গাত্মক ছড়া। এর মর্মার্থ ব্যাখ্যা করে বলার দরকার আছে বলে মনে হয় না। হামবড়া ভাব প্রকাশ করে যাঁরা সমাজে কল্কে পেতে চান, ছড়াটি তাঁদের ক্ষেত্রেই বেশি ব্যবহার হতো। সম্প্রতি আমাদের মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়ের মুখনিঃসৃত বাণী ওই ছড়াটিকে পুনরায় মনে করিয়ে দিল।
যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে ৯ ও ১০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে গণতন্ত্র নিয়ে এক বৈশ্বিক শীর্ষ সম্মেলন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ওই সম্মেলনের উদ্যোক্তা। ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠেয় ওই সম্মেলনে বিশ্বের ১১০টি দেশকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও বাংলাদেশ বাদ পড়েছে। এ ধরনের একটি সম্মেলনে বাংলাদেশের আমন্ত্রণ না পাওয়া আমাদের জন্য বেদনাদায়ক সন্দেহ নেই। কেননা, আমরা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র কেন বাংলাদেশকে ওই সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানাল না, সেটা পরিষ্কার নয়। সরকারের পক্ষ থেকেও অফিশিয়ালি এ বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। আর তা বলাটা সমীচীনও নয় বোধ হয়। কেননা, মেজবান নিজেই নির্ধারণ করবেন কাকে কাকে তিনি মেহমান করবেন। এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র যে গণতন্ত্র সম্মেলন আয়োজন করেছে, তাতে কোন কোন দেশকে তারা আমন্ত্রণ জানাবে, সেটা তাদেরই এখতিয়ার। তবে যেহেতু আমরা নিজেদের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলে দাবি করি, সেহেতু এ ধরনের বৈশ্বিক সম্মেলনে দাওয়াত না পাওয়া আমাদের জন্য অমর্যাদাকরও বটে।
এই দাওয়াত না পাওয়ার বিষয়ে একটি চমকপ্রদ ব্যাখ্যা দিয়েছেন আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। বলেছেন, ‘ওই সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র সম্ভবত দুর্বল গণতন্ত্রের দেশগুলোকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। সে কারণে বাংলাদেশ আমন্ত্রণ পায়নি।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশে স্থিতিশীল গণতন্ত্র বিরাজ করছে। এটি হচ্ছে স্বচ্ছ গণতন্ত্র। জনগণ সুষ্ঠু ও মুক্তভাবে ভোট দিতে পারছে।’ (সূত্র: ২৬ নভেম্বরের দৈনিক পত্রিকাসমূহ)
এর পরদিন সিলেটে তিনি বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র সব সময় নানা ইস্যুতে বিভিন্ন দেশকে চাপে রাখতে চায়। তারা কখনো গণতন্ত্রের কথা বলে, কখনো সুশাসন, সন্ত্রাসবাদ ও দুর্নীতির কথা বলে এ রকম চাপ সৃষ্টি করে। এটা তাদের একটি রাজনীতি। কে দাওয়াত দিল আর না দিল, তাতে কিছু আসে-যায় না। আমাদের গণতন্ত্র আমাদেরই ঠিক করতে হবে। এটা অন্য কেউ করে দেবে না।’ (সূত্র: ২৭ নভেম্বরের দৈনিকসমূহ)
অত্যন্ত কঠিন সত্য উচ্চারণ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। আমাদের গণতন্ত্র আমাদেরই ঠিক করতে হবে, অন্য কেউ তা করে দেবে না। তবে এ কথা দ্বারা তিনি প্রকারন্তরে এটা স্বীকার করে নিয়েছেন যে, আমাদের গণতন্ত্র আসলে ঠিক নেই। সে জন্যই তা ঠিক করার প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়েছে তাঁর কাছে। মন্ত্রী মহোদয়ের শেষের কথাকে যদি আমরা সত্যি বলে ধরে নিই, তাহলে তার প্রথম বচনের কী হবে? তাঁর মতে, যুক্তরাষ্ট্র দুর্বল গণতন্ত্রের দেশগুলোকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। তার মানে আমরা দুর্বল নই, শক্তিশালী। তো শক্তিশালী সে গণতন্ত্রকে আবার ঠিক করার প্রশ্ন আসে কী করে? উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের আমন্ত্রণ তালিকায় বাংলাদেশ না থাকলেও দক্ষিণ এশিয়া থেকে ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও ভুটান রয়েছে। এখন প্রশ্ন হলো, ভারত কি দুর্বল গণতন্ত্রের দেশ? সর্বোপরি যে ১১০টি দেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, সেগুলোও কি দুর্বল গণতন্ত্রের দেশ? দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত-পাকিস্তানের চেয়ে আমরা কি শক্তিশালী গণতন্ত্রের দেশ? হলে কতটা শক্তিশালী?
একটি দেশে গণতন্ত্র কতটা শক্তিশালী, তা মাপার জন্য কোনো ব্যারোমিটার এ পর্যন্ত আবিষ্কার হয়নি। তবে পারিপার্শ্বিক পরিবেশ পরিস্থিতি থেকেই সাধারণত বোঝা যায় গণতন্ত্রের অবস্থা বা দুরবস্থা। আমাদের দেশে বর্তমানে গণতন্ত্রের যে চেহারা-সুরত আমরা দেখছি, তাতে আত্মতৃপ্তির অবকাশ আছে বলে মনে হয় না। কয়েক বছর ধরে স্থিতিশীল গণতন্ত্র রয়েছে এবং জনগণ মুক্তভাবে ভোট দিতে পারছে— পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ বক্তব্য কতটা বাস্তবতাপ্রসূত, তা নিয়ে অবশ্যই প্রশ্ন তোলা যায়। এটা ঠিক, দেশে এখন একধরনের স্থিতিশীল পরিবেশ বিরাজ করছে, উন্নয়নকাজ অব্যাহত গতিতে চলছে। তবে এ স্থিতিশীলতা যতটা না শক্তিশালী গণতন্ত্রের কারণে তার চেয়ে বহুলাংশে দুর্বল বিরোধী দলের জন্য। এ এক অস্বাভাবিক স্থিতিশীল পরিবেশ। সবকিছু আপাতদৃষ্টিতে শান্ত, কিন্তু কোথায় যেন একটা অস্বস্তি মনের ভেতর খোঁচা মারছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী তো বহির্বিশ্বসংক্রান্ত বিষয়ে ব্যস্ত সময় কাটান, তাই দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে তেমন মনোযোগ হয়তো দিতে পারেন না। না হলে আমাদের গণতন্ত্রের বর্তমান শীর্ণকায় দশা তাঁর নজর এড়াত না। আমাদের গণতন্ত্র কেমন শক্তিশালী—তার প্রমাণ তো চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ধারাবাহিকভাবেই আমরা পাচ্ছি। মন্ত্রী যে দেশগুলোকে দুর্বল গণতন্ত্রের দেশ বলেছেন, সেসব দেশের জাতীয় কিংবা স্থানীয় নির্বাচনে এত মানবজীবনের ইতি ঘটে কি না, তা ভেবে দেখা দরকার। শুনতে খারাপ লাগলেও বলতে দ্বিধা নেই, একমাত্র বিবেক-বুদ্ধি ভোঁতা হয়ে যাওয়া ব্যক্তি ছাড়া আর কেউ বাংলাদেশের বর্তমান গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করতে পারেন না। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা ও গণমাধ্যম মাঝেমধ্যেই বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে থাকে। হয়তো তাদের সমীক্ষা, পরিসংখ্যান কিংবা মন্তব্য আমাদের জন্য স্বস্তিদায়ক বা মনঃপূত হয় না। কিন্তু তাতে তো বাস্তব পরিস্থিতির কোনো হেরফের হবে না।
তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একটি ব্যাপারে ধন্যবাদ পাওয়ার দাবি রাখেন। তিনি ইচ্ছে করলে যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশের দাওয়াত না পাওয়ার বিষয়টিকে বিএনপির ষড়যন্ত্র বলে চালিয়ে দিতে পারতেন। বলতে পারতেন, বিএনপি আন্তর্জাতিক লবিস্ট নিয়োগ করে জো বাইডেনকে প্রভাবিত করেছে বাংলাদেশকে দাওয়াত না দিতে। অজুহাত হিসেবে কথাটি মন্দ হতো না। যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র সম্মেলনে দাওয়াত পাওয়া গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার পরিমাপক বলে আমি মনে করি না। তবে দাওয়াত না পাওয়াটা অবশ্যই দুঃখজনক। এতে অনুমান করা যায়, বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর মোড়ল রাষ্ট্রটির দৃষ্টিতে আমাদের মূল্যায়ন কী। আমাদের ক্ষমতাসীন দলের নেতা ও মন্ত্রীরা দিবানিশি বলে চলেছেন, দেশে গণতন্ত্রের ভরা জোয়ার বইছে। কিন্তু তা যে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আমাদের ছোট নদী’ কবিতার সেই ছোট্ট নদীটির মতো বৈশাখ মাসে হাঁটু জলের ধারায় পরিণত হয়েছে, তা কি তাঁরা উপলব্ধি করতে পারছেন?
লেখক: মহিউদ্দিন খান মোহন সাংবাদিক ও রাজনীতি বিশ্লেষক

‘আমি এক পাহলোয়ান, ঘাড় মোর ত্যাড়া/লাইত্থাইয়া ভাঙি আমি পাটখড়ির বেড়া/কুস্তি লড়তে গিয়ে পড়ে যাই তলে/অমনি মুতিয়া দেই নিজ বাহুবলে’।
ছেলেবেলায় শোনা একটি ব্যঙ্গাত্মক ছড়া। এর মর্মার্থ ব্যাখ্যা করে বলার দরকার আছে বলে মনে হয় না। হামবড়া ভাব প্রকাশ করে যাঁরা সমাজে কল্কে পেতে চান, ছড়াটি তাঁদের ক্ষেত্রেই বেশি ব্যবহার হতো। সম্প্রতি আমাদের মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়ের মুখনিঃসৃত বাণী ওই ছড়াটিকে পুনরায় মনে করিয়ে দিল।
যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে ৯ ও ১০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে গণতন্ত্র নিয়ে এক বৈশ্বিক শীর্ষ সম্মেলন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ওই সম্মেলনের উদ্যোক্তা। ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠেয় ওই সম্মেলনে বিশ্বের ১১০টি দেশকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও বাংলাদেশ বাদ পড়েছে। এ ধরনের একটি সম্মেলনে বাংলাদেশের আমন্ত্রণ না পাওয়া আমাদের জন্য বেদনাদায়ক সন্দেহ নেই। কেননা, আমরা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র কেন বাংলাদেশকে ওই সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানাল না, সেটা পরিষ্কার নয়। সরকারের পক্ষ থেকেও অফিশিয়ালি এ বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। আর তা বলাটা সমীচীনও নয় বোধ হয়। কেননা, মেজবান নিজেই নির্ধারণ করবেন কাকে কাকে তিনি মেহমান করবেন। এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র যে গণতন্ত্র সম্মেলন আয়োজন করেছে, তাতে কোন কোন দেশকে তারা আমন্ত্রণ জানাবে, সেটা তাদেরই এখতিয়ার। তবে যেহেতু আমরা নিজেদের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলে দাবি করি, সেহেতু এ ধরনের বৈশ্বিক সম্মেলনে দাওয়াত না পাওয়া আমাদের জন্য অমর্যাদাকরও বটে।
এই দাওয়াত না পাওয়ার বিষয়ে একটি চমকপ্রদ ব্যাখ্যা দিয়েছেন আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। বলেছেন, ‘ওই সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র সম্ভবত দুর্বল গণতন্ত্রের দেশগুলোকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। সে কারণে বাংলাদেশ আমন্ত্রণ পায়নি।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশে স্থিতিশীল গণতন্ত্র বিরাজ করছে। এটি হচ্ছে স্বচ্ছ গণতন্ত্র। জনগণ সুষ্ঠু ও মুক্তভাবে ভোট দিতে পারছে।’ (সূত্র: ২৬ নভেম্বরের দৈনিক পত্রিকাসমূহ)
এর পরদিন সিলেটে তিনি বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র সব সময় নানা ইস্যুতে বিভিন্ন দেশকে চাপে রাখতে চায়। তারা কখনো গণতন্ত্রের কথা বলে, কখনো সুশাসন, সন্ত্রাসবাদ ও দুর্নীতির কথা বলে এ রকম চাপ সৃষ্টি করে। এটা তাদের একটি রাজনীতি। কে দাওয়াত দিল আর না দিল, তাতে কিছু আসে-যায় না। আমাদের গণতন্ত্র আমাদেরই ঠিক করতে হবে। এটা অন্য কেউ করে দেবে না।’ (সূত্র: ২৭ নভেম্বরের দৈনিকসমূহ)
অত্যন্ত কঠিন সত্য উচ্চারণ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। আমাদের গণতন্ত্র আমাদেরই ঠিক করতে হবে, অন্য কেউ তা করে দেবে না। তবে এ কথা দ্বারা তিনি প্রকারন্তরে এটা স্বীকার করে নিয়েছেন যে, আমাদের গণতন্ত্র আসলে ঠিক নেই। সে জন্যই তা ঠিক করার প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়েছে তাঁর কাছে। মন্ত্রী মহোদয়ের শেষের কথাকে যদি আমরা সত্যি বলে ধরে নিই, তাহলে তার প্রথম বচনের কী হবে? তাঁর মতে, যুক্তরাষ্ট্র দুর্বল গণতন্ত্রের দেশগুলোকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। তার মানে আমরা দুর্বল নই, শক্তিশালী। তো শক্তিশালী সে গণতন্ত্রকে আবার ঠিক করার প্রশ্ন আসে কী করে? উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের আমন্ত্রণ তালিকায় বাংলাদেশ না থাকলেও দক্ষিণ এশিয়া থেকে ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও ভুটান রয়েছে। এখন প্রশ্ন হলো, ভারত কি দুর্বল গণতন্ত্রের দেশ? সর্বোপরি যে ১১০টি দেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, সেগুলোও কি দুর্বল গণতন্ত্রের দেশ? দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত-পাকিস্তানের চেয়ে আমরা কি শক্তিশালী গণতন্ত্রের দেশ? হলে কতটা শক্তিশালী?
একটি দেশে গণতন্ত্র কতটা শক্তিশালী, তা মাপার জন্য কোনো ব্যারোমিটার এ পর্যন্ত আবিষ্কার হয়নি। তবে পারিপার্শ্বিক পরিবেশ পরিস্থিতি থেকেই সাধারণত বোঝা যায় গণতন্ত্রের অবস্থা বা দুরবস্থা। আমাদের দেশে বর্তমানে গণতন্ত্রের যে চেহারা-সুরত আমরা দেখছি, তাতে আত্মতৃপ্তির অবকাশ আছে বলে মনে হয় না। কয়েক বছর ধরে স্থিতিশীল গণতন্ত্র রয়েছে এবং জনগণ মুক্তভাবে ভোট দিতে পারছে— পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ বক্তব্য কতটা বাস্তবতাপ্রসূত, তা নিয়ে অবশ্যই প্রশ্ন তোলা যায়। এটা ঠিক, দেশে এখন একধরনের স্থিতিশীল পরিবেশ বিরাজ করছে, উন্নয়নকাজ অব্যাহত গতিতে চলছে। তবে এ স্থিতিশীলতা যতটা না শক্তিশালী গণতন্ত্রের কারণে তার চেয়ে বহুলাংশে দুর্বল বিরোধী দলের জন্য। এ এক অস্বাভাবিক স্থিতিশীল পরিবেশ। সবকিছু আপাতদৃষ্টিতে শান্ত, কিন্তু কোথায় যেন একটা অস্বস্তি মনের ভেতর খোঁচা মারছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী তো বহির্বিশ্বসংক্রান্ত বিষয়ে ব্যস্ত সময় কাটান, তাই দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে তেমন মনোযোগ হয়তো দিতে পারেন না। না হলে আমাদের গণতন্ত্রের বর্তমান শীর্ণকায় দশা তাঁর নজর এড়াত না। আমাদের গণতন্ত্র কেমন শক্তিশালী—তার প্রমাণ তো চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ধারাবাহিকভাবেই আমরা পাচ্ছি। মন্ত্রী যে দেশগুলোকে দুর্বল গণতন্ত্রের দেশ বলেছেন, সেসব দেশের জাতীয় কিংবা স্থানীয় নির্বাচনে এত মানবজীবনের ইতি ঘটে কি না, তা ভেবে দেখা দরকার। শুনতে খারাপ লাগলেও বলতে দ্বিধা নেই, একমাত্র বিবেক-বুদ্ধি ভোঁতা হয়ে যাওয়া ব্যক্তি ছাড়া আর কেউ বাংলাদেশের বর্তমান গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করতে পারেন না। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা ও গণমাধ্যম মাঝেমধ্যেই বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে থাকে। হয়তো তাদের সমীক্ষা, পরিসংখ্যান কিংবা মন্তব্য আমাদের জন্য স্বস্তিদায়ক বা মনঃপূত হয় না। কিন্তু তাতে তো বাস্তব পরিস্থিতির কোনো হেরফের হবে না।
তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একটি ব্যাপারে ধন্যবাদ পাওয়ার দাবি রাখেন। তিনি ইচ্ছে করলে যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশের দাওয়াত না পাওয়ার বিষয়টিকে বিএনপির ষড়যন্ত্র বলে চালিয়ে দিতে পারতেন। বলতে পারতেন, বিএনপি আন্তর্জাতিক লবিস্ট নিয়োগ করে জো বাইডেনকে প্রভাবিত করেছে বাংলাদেশকে দাওয়াত না দিতে। অজুহাত হিসেবে কথাটি মন্দ হতো না। যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র সম্মেলনে দাওয়াত পাওয়া গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার পরিমাপক বলে আমি মনে করি না। তবে দাওয়াত না পাওয়াটা অবশ্যই দুঃখজনক। এতে অনুমান করা যায়, বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর মোড়ল রাষ্ট্রটির দৃষ্টিতে আমাদের মূল্যায়ন কী। আমাদের ক্ষমতাসীন দলের নেতা ও মন্ত্রীরা দিবানিশি বলে চলেছেন, দেশে গণতন্ত্রের ভরা জোয়ার বইছে। কিন্তু তা যে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আমাদের ছোট নদী’ কবিতার সেই ছোট্ট নদীটির মতো বৈশাখ মাসে হাঁটু জলের ধারায় পরিণত হয়েছে, তা কি তাঁরা উপলব্ধি করতে পারছেন?
লেখক: মহিউদ্দিন খান মোহন সাংবাদিক ও রাজনীতি বিশ্লেষক

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

‘আমি এক পাহলোয়ান, ঘাড় মোর ত্যাড়া/লাইত্থাইয়া ভাঙি আমি পাটখড়ির বেড়া/কুস্তি লড়তে গিয়ে পড়ে যাই তলে/অমনি মুতিয়া দেই নিজ বাহুবলে’।‘আমি এক পাহলোয়ান, ঘাড় মোর ত্যাড়া/লাইত্থাইয়া ভাঙি আমি পাটখড়ির বেড়া/কুস্তি লড়তে গিয়ে পড়ে যাই তলে/অমনি মুতিয়া দেই নিজ বাহুবলে’।
০৫ ডিসেম্বর ২০২১
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘আমি এক পাহলোয়ান, ঘাড় মোর ত্যাড়া/লাইত্থাইয়া ভাঙি আমি পাটখড়ির বেড়া/কুস্তি লড়তে গিয়ে পড়ে যাই তলে/অমনি মুতিয়া দেই নিজ বাহুবলে’।‘আমি এক পাহলোয়ান, ঘাড় মোর ত্যাড়া/লাইত্থাইয়া ভাঙি আমি পাটখড়ির বেড়া/কুস্তি লড়তে গিয়ে পড়ে যাই তলে/অমনি মুতিয়া দেই নিজ বাহুবলে’।
০৫ ডিসেম্বর ২০২১
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

‘আমি এক পাহলোয়ান, ঘাড় মোর ত্যাড়া/লাইত্থাইয়া ভাঙি আমি পাটখড়ির বেড়া/কুস্তি লড়তে গিয়ে পড়ে যাই তলে/অমনি মুতিয়া দেই নিজ বাহুবলে’।‘আমি এক পাহলোয়ান, ঘাড় মোর ত্যাড়া/লাইত্থাইয়া ভাঙি আমি পাটখড়ির বেড়া/কুস্তি লড়তে গিয়ে পড়ে যাই তলে/অমনি মুতিয়া দেই নিজ বাহুবলে’।
০৫ ডিসেম্বর ২০২১
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

‘আমি এক পাহলোয়ান, ঘাড় মোর ত্যাড়া/লাইত্থাইয়া ভাঙি আমি পাটখড়ির বেড়া/কুস্তি লড়তে গিয়ে পড়ে যাই তলে/অমনি মুতিয়া দেই নিজ বাহুবলে’।‘আমি এক পাহলোয়ান, ঘাড় মোর ত্যাড়া/লাইত্থাইয়া ভাঙি আমি পাটখড়ির বেড়া/কুস্তি লড়তে গিয়ে পড়ে যাই তলে/অমনি মুতিয়া দেই নিজ বাহুবলে’।
০৫ ডিসেম্বর ২০২১
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫