ড. মইনুল ইসলাম

৩ এপ্রিল পত্রপত্রিকায় দেখলাম, প্রধানমন্ত্রী রূপপুরে দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প গ্রহণের জন্য রাশিয়ার রোসাটমের প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা শুরু করে দিয়েছেন। বিশ্বের উন্নত দেশগুলো যেখানে পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে সরে এসে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনে অগ্রাধিকার দিচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রীর এহেন আসক্তি খুবই দুঃখজনক। তিনি এ ব্যাপারে বারবার বঙ্গবন্ধুর আগ্রহের কথা জানিয়ে থাকেন, কিন্তু সোলার পাওয়ারের কথা জানা থাকলে নিশ্চয়ই বঙ্গবন্ধু এই পরিবেশবান্ধব ও ঝুঁকিমুক্ত প্রযুক্তি গ্রহণকে অগ্রাধিকার দিতেন বলেই আমার দৃঢ় বিশ্বাস। বাংলাদেশে এক দশকে অনেক মেগা প্রজেক্ট বাস্তবায়িত হয়েছে, কিংবা বাস্তবায়নাধীন রয়েছে, যেগুলোর কয়েকটিকে স্বল্পপ্রয়োজনীয় অথবা অপ্রয়োজনীয় বলা চলে। চলমান প্রকল্পের মধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর এবং পায়রাবন্দর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প, ঢাকা থেকে গাজীপুর পর্যন্ত বাস্তবায়নাধীন বিআরটি প্রকল্প এবং চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারী হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প ‘সাদা হাতি’ প্রকল্পের নিকৃষ্ট উদাহরণ। রাশিয়ার ১২ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক ঋণসহ মোট ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে নির্মাণাধীন রূপপুর প্রকল্প থেকে ২০২৫ সালে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে বলে বলা হচ্ছে। সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক হলো, রাশিয়া ভারতে ২ হাজার মেগাওয়াট ক্যাপাসিটির পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ করে দিয়েছে মাত্র ৬ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে। অতএব, প্রশ্ন করা যৌক্তিক যে বাংলাদেশ কেন এত বেশি বৈদেশিক ঋণ নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে এই পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণের জন্য চুক্তি করেছে?
বর্তমান সরকার যে জনগণের কাছে জবাবদিহির ধার ধারে না, এর উদাহরণ এই রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প। ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের অনেক বিকল্প প্রযুক্তি বিশ্বে রয়েছে, যেখানে রূপপুর প্রকল্পের অর্ধেক ব্যয়ে ওই পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়। এই মহাবিপজ্জনক পারমাণবিক প্রযুক্তি বাংলাদেশের মতো একটি ঘনবসতিপূর্ণ দেশের মাঝখানে স্থাপনকে আমি সমর্থন করিনি। সোলার পাওয়ার প্রযুক্তিকে অগ্রাধিকার দিলে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ব্যয় রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্রের মোট ব্যয়ের অর্ধেকও হতো না। অথচ, সৌরবিদ্যুৎ সবচেয়ে পরিবেশবান্ধব এবং ঝুঁকিমুক্ত প্রযুক্তি। সাম্প্রতিক গবেষণায় প্রমাণিত, এক ইউনিট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ ইতিমধ্যেই গণচীন, ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ডে বাংলাদেশি ১০ টাকার নিচে নেমে এসেছে। ১৭ নভেম্বর ২০২৩ একটি দৈনিকে প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়েছে, ব্লুমবার্গের এক গবেষণায় দেখানো হয়েছে যে ২০২৫ সালের পর সৌরবিদ্যুতের উৎপাদন খরচ অন্য সব বিকল্পের তুলনায় বাংলাদেশেও কমে আসবে। ২০৩০ সালে এক মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুতের উৎপাদন খরচ হবে মাত্র ৪২ ডলার, যেখানে এলএনজিচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রে পড়বে ৯৪ ডলার এবং কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রে ১১৮ ডলার।
তাহলে এত ব্যয়বহুল ‘সাদা হাতি’ প্রকল্প আমরা কেন নিলাম? এই ঋণ পরিশোধে ২০ বছর সময় লাগবে বলে সরকারিভাবেই জানানো হচ্ছে, কিন্তু ২০২৫ সাল থেকে প্রতি কিস্তিতে বাংলাদেশকে সুদাসলে প্রতিবছর ৫৬৫ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে হবে। (২০২৩ সাল থেকে রাশিয়ান ঋণের ৩৩০ মিলিয়ন ডলার সুদ পরিশোধ শুরু হয়ে গেছে)। এহেন ‘সাদা হাতি’ প্রকল্পগুলো যে ইতিমধ্যেই দেশের বৈদেশিক ঋণ পরিশোধকে বিপজ্জনক পর্যায়ে নিয়ে গেছে, সেটা ওয়াকিবহাল মহলের অজানা নয়। এখন যদি রূপপুর দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প গৃহীত হয়, তাহলে আরও কয়েক বিলিয়ন ডলার যুক্ত হবে দেশের বৈদেশিক ঋণে।
গাজীপুরের সাবেক মেয়র ও জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব জাহাঙ্গীর আলম চলমান বিআরটি প্রকল্পটি যে ৫০ বছর ধরে গাজীপুরের জনগণের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর ভূমিকা পালন করবে, সে সত্য কথাটি উচ্চারণ করেছেন, এ জন্য তাঁকে আমি সাধুবাদ জানাচ্ছি। আসলেই এই বিআরটি প্রকল্প ঢাকা বিমানবন্দর থেকে গাজীপুর পর্যন্ত বিস্তৃত সম্ভাব্য একটি আট লেনের মহাসড়ককে মারাত্মকভাবে পঙ্গু করে দিয়েছে, জাতি যার কুফল ভোগ করবে যুগের পর যুগ ধরে। বিমানবন্দর পর্যন্ত এয়ারপোর্ট রোডটি আট লেনের মহাসড়ক, কিন্তু এরপর বিআরটি প্রকল্পের জন্য এই সড়কের তিন থেকে চারটি লেনকে মহাসড়ক থেকে আলাদা করে ফেলা হয়েছে। আবার মাঝে মাঝে অনেক ফ্লাইওভারও নির্মাণ করা হয়েছে প্রকল্পের অধীনে। এত গুরুত্বপূর্ণ একটি মহাসড়কের মাঝখানের সবচেয়ে বেশি ব্যবহারোপযোগী তিন-চারটি লেনকে বিআরটি প্রকল্পে ‘স্পেশাল বাস’ ছাড়া অন্যান্য যানবাহনের জন্য নিষিদ্ধ জোনে পরিণত করা হয়েছে। এখন প্রশ্ন উঠেছে, ওই সব স্পেশাল বাসে কতজন মানুষ চলাচল করবে আর প্রকল্পের কারণে বাদ হয়ে যাওয়া তিন-চার লেনে এর কত গুণ মানুষ চলাচল করতে পারত! এই প্রকল্পের ব্যয় হওয়ার কথা ছিল ৪ হাজার কোটি টাকা, কিন্তু ইতিমধ্যেই প্রকল্পের খরচ ১৮ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। কার উর্বর মস্তিষ্ক থেকে বিআরটি প্রকল্পের ধারণা বেরিয়ে এসেছিল, জানি না।
একই সঙ্গে যে দুটি রেলপথ প্রকল্পের কথা উল্লেখ করা হলো, সেগুলোও অনেকখানি অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প। ওয়াকিবহাল মহল সহজেই বুঝবে যে পদ্মা সেতুর সড়কপথ চালু হওয়ার পর ওই সেতুর মাধ্যমে ঢাকা-যশোর-পায়রা পর্যন্ত নির্মীয়মাণ রেলপথের অর্থনৈতিক ‘ফিজিবিলিটি’ ভবিষ্যতে খুব বেশি আকর্ষণীয় হওয়ার তেমন সুযোগ থাকে না, কারণ রেলপথটি মালামাল পরিবহনের তুলনামূলক খরচের বিবেচনায় সড়কপথের সঙ্গে কখনোই প্রতিযোগিতামূলক বিবেচিত হবে না। ফলে ভবিষ্যতেও এ রেলপথটি ‘আন্ডার-ইউটিলাইজড’ থেকে যাবে। দিনে চার-পাঁচটি ট্রেন হয়তো চলবে এই পথে। অতএব, ওই প্রকল্পের সম্ভাব্য আয় দিয়ে ২১ হাজার কোটি টাকা চৈনিক ঋণের অর্থে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পটির সুদাসলে কিস্তি পরিশোধ করা অসম্ভব প্রমাণিত হবে। এমনকি, ভারতকে এই রেলপথ ব্যবহার করতে দিলেও অদূর ভবিষ্যতে প্রকল্পটি ‘সাদা হাতি’ প্রকল্পই থেকে যাবে।
একই আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে, চট্টগ্রাম-দোহাজারী-কক্সবাজার-ঘুমধুম রেলপথ প্রকল্প নিয়ে। ‘কুনমিং ইনিশিয়েটিভ’ আঞ্চলিক সহযোগিতা কর্মসূচির অধীন ‘বিসিআইএম ইকোনমিক করিডর’ যখন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার তোড়জোড় চালু ছিল, তখন বাংলাদেশকে মিয়ানমার হয়ে চীনের ইউনান প্রদেশের কুনমিং নগরীর সঙ্গে যুক্ত করার উদ্দেশ্যে এ রেলপথটি নির্মাণের পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছিল। কিন্তু ভারতে নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতাসীন হওয়ার পর ভারত ‘বিসিআইএম ইকোনমিক করিডর’ প্রতিষ্ঠার চুক্তি থেকে সরে গেছে। অতএব, এখন রেলপথটি কক্সবাজার পর্যন্ত নির্মিত হয়েছে। এই রেলপথটিও অদূর ভবিষ্যতে ‘আন্ডার-ইউটিলাইজড’ হওয়া ছাড়া গত্যন্তর নেই। এই রেলপথের আয় দিয়ে কখনোই এই প্রকল্পের ঋণের কিস্তি শোধ করা যাবে না। এ চারটি প্রকল্পই ‘ইকোনমিক ফিজিবিলিটি’র দৃষ্টিকোণ থেকে গ্রহণযোগ্য বিবেচিত হবে না।
প্রয়োজনীয় প্রকল্প গ্রহণের পরিবর্তে যদি এহেন চটকদার ও স্বল্পপ্রয়োজনীয় প্রকল্প গৃহীত হয়, তাহলে শ্রীলঙ্কার মতো ঋণগ্রস্ততার ফাঁদে বাংলাদেশও পড়তে পারে। ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। সরকারের কর-জিডিপির অনুপাত যেখানে ৮ শতাংশে নেমে গেছে, সেখানে ঋণ পরিশোধের জন্য দ্রুত বর্ধমান বাজেট-বরাদ্দ অশনিসংকেতের শামিল। ২০২১ সালের আগস্টে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ২০২৪ সালের এপ্রিলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আইএমএফের বিপিএম-৬ হিসাবপদ্ধতি অনুযায়ী, ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে বৈদেশিক ঋণের সুদাসল পরিশোধ খাতে যে বরাদ্দ রাখা হয়েছে তার চেয়ে এ বছর প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার বেশি খরচ হবে এ খাতে। মেগা প্রজেক্টগুলোর ঋণ পরিশোধের ‘গ্রেস-পিরিয়ড’ শেষ হলে আগামী অর্থবছরগুলোতে এ খাতে বরাদ্দ আরও অনেক দ্রুতগতিতে বাড়বে ২০৩০ সাল পর্যন্ত। একই সঙ্গে বলা প্রয়োজন, বাংলাদেশের অর্থনীতি পোশাক রপ্তানি এবং রেমিট্যান্সের ওপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীল। বর্তমান অর্থবছরের রপ্তানি খাতের চলমান প্রবৃদ্ধি আশাব্যঞ্জক হলেও তা অর্থনীতির চাহিদার সঙ্গে তাল মেলাতে পারছে না। কারণ, রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধি শ্লথ হয়ে গেছে। এই প্রবণতাগুলো গেড়ে বসলে আমাদের অর্থনীতি মহাসংকটে পড়তে পারে।
লেখক: অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

৩ এপ্রিল পত্রপত্রিকায় দেখলাম, প্রধানমন্ত্রী রূপপুরে দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প গ্রহণের জন্য রাশিয়ার রোসাটমের প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা শুরু করে দিয়েছেন। বিশ্বের উন্নত দেশগুলো যেখানে পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে সরে এসে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনে অগ্রাধিকার দিচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রীর এহেন আসক্তি খুবই দুঃখজনক। তিনি এ ব্যাপারে বারবার বঙ্গবন্ধুর আগ্রহের কথা জানিয়ে থাকেন, কিন্তু সোলার পাওয়ারের কথা জানা থাকলে নিশ্চয়ই বঙ্গবন্ধু এই পরিবেশবান্ধব ও ঝুঁকিমুক্ত প্রযুক্তি গ্রহণকে অগ্রাধিকার দিতেন বলেই আমার দৃঢ় বিশ্বাস। বাংলাদেশে এক দশকে অনেক মেগা প্রজেক্ট বাস্তবায়িত হয়েছে, কিংবা বাস্তবায়নাধীন রয়েছে, যেগুলোর কয়েকটিকে স্বল্পপ্রয়োজনীয় অথবা অপ্রয়োজনীয় বলা চলে। চলমান প্রকল্পের মধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর এবং পায়রাবন্দর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প, ঢাকা থেকে গাজীপুর পর্যন্ত বাস্তবায়নাধীন বিআরটি প্রকল্প এবং চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারী হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প ‘সাদা হাতি’ প্রকল্পের নিকৃষ্ট উদাহরণ। রাশিয়ার ১২ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক ঋণসহ মোট ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে নির্মাণাধীন রূপপুর প্রকল্প থেকে ২০২৫ সালে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে বলে বলা হচ্ছে। সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক হলো, রাশিয়া ভারতে ২ হাজার মেগাওয়াট ক্যাপাসিটির পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ করে দিয়েছে মাত্র ৬ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে। অতএব, প্রশ্ন করা যৌক্তিক যে বাংলাদেশ কেন এত বেশি বৈদেশিক ঋণ নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে এই পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণের জন্য চুক্তি করেছে?
বর্তমান সরকার যে জনগণের কাছে জবাবদিহির ধার ধারে না, এর উদাহরণ এই রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প। ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের অনেক বিকল্প প্রযুক্তি বিশ্বে রয়েছে, যেখানে রূপপুর প্রকল্পের অর্ধেক ব্যয়ে ওই পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়। এই মহাবিপজ্জনক পারমাণবিক প্রযুক্তি বাংলাদেশের মতো একটি ঘনবসতিপূর্ণ দেশের মাঝখানে স্থাপনকে আমি সমর্থন করিনি। সোলার পাওয়ার প্রযুক্তিকে অগ্রাধিকার দিলে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ব্যয় রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্রের মোট ব্যয়ের অর্ধেকও হতো না। অথচ, সৌরবিদ্যুৎ সবচেয়ে পরিবেশবান্ধব এবং ঝুঁকিমুক্ত প্রযুক্তি। সাম্প্রতিক গবেষণায় প্রমাণিত, এক ইউনিট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ ইতিমধ্যেই গণচীন, ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ডে বাংলাদেশি ১০ টাকার নিচে নেমে এসেছে। ১৭ নভেম্বর ২০২৩ একটি দৈনিকে প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়েছে, ব্লুমবার্গের এক গবেষণায় দেখানো হয়েছে যে ২০২৫ সালের পর সৌরবিদ্যুতের উৎপাদন খরচ অন্য সব বিকল্পের তুলনায় বাংলাদেশেও কমে আসবে। ২০৩০ সালে এক মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুতের উৎপাদন খরচ হবে মাত্র ৪২ ডলার, যেখানে এলএনজিচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রে পড়বে ৯৪ ডলার এবং কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রে ১১৮ ডলার।
তাহলে এত ব্যয়বহুল ‘সাদা হাতি’ প্রকল্প আমরা কেন নিলাম? এই ঋণ পরিশোধে ২০ বছর সময় লাগবে বলে সরকারিভাবেই জানানো হচ্ছে, কিন্তু ২০২৫ সাল থেকে প্রতি কিস্তিতে বাংলাদেশকে সুদাসলে প্রতিবছর ৫৬৫ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে হবে। (২০২৩ সাল থেকে রাশিয়ান ঋণের ৩৩০ মিলিয়ন ডলার সুদ পরিশোধ শুরু হয়ে গেছে)। এহেন ‘সাদা হাতি’ প্রকল্পগুলো যে ইতিমধ্যেই দেশের বৈদেশিক ঋণ পরিশোধকে বিপজ্জনক পর্যায়ে নিয়ে গেছে, সেটা ওয়াকিবহাল মহলের অজানা নয়। এখন যদি রূপপুর দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প গৃহীত হয়, তাহলে আরও কয়েক বিলিয়ন ডলার যুক্ত হবে দেশের বৈদেশিক ঋণে।
গাজীপুরের সাবেক মেয়র ও জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব জাহাঙ্গীর আলম চলমান বিআরটি প্রকল্পটি যে ৫০ বছর ধরে গাজীপুরের জনগণের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর ভূমিকা পালন করবে, সে সত্য কথাটি উচ্চারণ করেছেন, এ জন্য তাঁকে আমি সাধুবাদ জানাচ্ছি। আসলেই এই বিআরটি প্রকল্প ঢাকা বিমানবন্দর থেকে গাজীপুর পর্যন্ত বিস্তৃত সম্ভাব্য একটি আট লেনের মহাসড়ককে মারাত্মকভাবে পঙ্গু করে দিয়েছে, জাতি যার কুফল ভোগ করবে যুগের পর যুগ ধরে। বিমানবন্দর পর্যন্ত এয়ারপোর্ট রোডটি আট লেনের মহাসড়ক, কিন্তু এরপর বিআরটি প্রকল্পের জন্য এই সড়কের তিন থেকে চারটি লেনকে মহাসড়ক থেকে আলাদা করে ফেলা হয়েছে। আবার মাঝে মাঝে অনেক ফ্লাইওভারও নির্মাণ করা হয়েছে প্রকল্পের অধীনে। এত গুরুত্বপূর্ণ একটি মহাসড়কের মাঝখানের সবচেয়ে বেশি ব্যবহারোপযোগী তিন-চারটি লেনকে বিআরটি প্রকল্পে ‘স্পেশাল বাস’ ছাড়া অন্যান্য যানবাহনের জন্য নিষিদ্ধ জোনে পরিণত করা হয়েছে। এখন প্রশ্ন উঠেছে, ওই সব স্পেশাল বাসে কতজন মানুষ চলাচল করবে আর প্রকল্পের কারণে বাদ হয়ে যাওয়া তিন-চার লেনে এর কত গুণ মানুষ চলাচল করতে পারত! এই প্রকল্পের ব্যয় হওয়ার কথা ছিল ৪ হাজার কোটি টাকা, কিন্তু ইতিমধ্যেই প্রকল্পের খরচ ১৮ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। কার উর্বর মস্তিষ্ক থেকে বিআরটি প্রকল্পের ধারণা বেরিয়ে এসেছিল, জানি না।
একই সঙ্গে যে দুটি রেলপথ প্রকল্পের কথা উল্লেখ করা হলো, সেগুলোও অনেকখানি অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প। ওয়াকিবহাল মহল সহজেই বুঝবে যে পদ্মা সেতুর সড়কপথ চালু হওয়ার পর ওই সেতুর মাধ্যমে ঢাকা-যশোর-পায়রা পর্যন্ত নির্মীয়মাণ রেলপথের অর্থনৈতিক ‘ফিজিবিলিটি’ ভবিষ্যতে খুব বেশি আকর্ষণীয় হওয়ার তেমন সুযোগ থাকে না, কারণ রেলপথটি মালামাল পরিবহনের তুলনামূলক খরচের বিবেচনায় সড়কপথের সঙ্গে কখনোই প্রতিযোগিতামূলক বিবেচিত হবে না। ফলে ভবিষ্যতেও এ রেলপথটি ‘আন্ডার-ইউটিলাইজড’ থেকে যাবে। দিনে চার-পাঁচটি ট্রেন হয়তো চলবে এই পথে। অতএব, ওই প্রকল্পের সম্ভাব্য আয় দিয়ে ২১ হাজার কোটি টাকা চৈনিক ঋণের অর্থে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পটির সুদাসলে কিস্তি পরিশোধ করা অসম্ভব প্রমাণিত হবে। এমনকি, ভারতকে এই রেলপথ ব্যবহার করতে দিলেও অদূর ভবিষ্যতে প্রকল্পটি ‘সাদা হাতি’ প্রকল্পই থেকে যাবে।
একই আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে, চট্টগ্রাম-দোহাজারী-কক্সবাজার-ঘুমধুম রেলপথ প্রকল্প নিয়ে। ‘কুনমিং ইনিশিয়েটিভ’ আঞ্চলিক সহযোগিতা কর্মসূচির অধীন ‘বিসিআইএম ইকোনমিক করিডর’ যখন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার তোড়জোড় চালু ছিল, তখন বাংলাদেশকে মিয়ানমার হয়ে চীনের ইউনান প্রদেশের কুনমিং নগরীর সঙ্গে যুক্ত করার উদ্দেশ্যে এ রেলপথটি নির্মাণের পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছিল। কিন্তু ভারতে নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতাসীন হওয়ার পর ভারত ‘বিসিআইএম ইকোনমিক করিডর’ প্রতিষ্ঠার চুক্তি থেকে সরে গেছে। অতএব, এখন রেলপথটি কক্সবাজার পর্যন্ত নির্মিত হয়েছে। এই রেলপথটিও অদূর ভবিষ্যতে ‘আন্ডার-ইউটিলাইজড’ হওয়া ছাড়া গত্যন্তর নেই। এই রেলপথের আয় দিয়ে কখনোই এই প্রকল্পের ঋণের কিস্তি শোধ করা যাবে না। এ চারটি প্রকল্পই ‘ইকোনমিক ফিজিবিলিটি’র দৃষ্টিকোণ থেকে গ্রহণযোগ্য বিবেচিত হবে না।
প্রয়োজনীয় প্রকল্প গ্রহণের পরিবর্তে যদি এহেন চটকদার ও স্বল্পপ্রয়োজনীয় প্রকল্প গৃহীত হয়, তাহলে শ্রীলঙ্কার মতো ঋণগ্রস্ততার ফাঁদে বাংলাদেশও পড়তে পারে। ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। সরকারের কর-জিডিপির অনুপাত যেখানে ৮ শতাংশে নেমে গেছে, সেখানে ঋণ পরিশোধের জন্য দ্রুত বর্ধমান বাজেট-বরাদ্দ অশনিসংকেতের শামিল। ২০২১ সালের আগস্টে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ২০২৪ সালের এপ্রিলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আইএমএফের বিপিএম-৬ হিসাবপদ্ধতি অনুযায়ী, ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে বৈদেশিক ঋণের সুদাসল পরিশোধ খাতে যে বরাদ্দ রাখা হয়েছে তার চেয়ে এ বছর প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার বেশি খরচ হবে এ খাতে। মেগা প্রজেক্টগুলোর ঋণ পরিশোধের ‘গ্রেস-পিরিয়ড’ শেষ হলে আগামী অর্থবছরগুলোতে এ খাতে বরাদ্দ আরও অনেক দ্রুতগতিতে বাড়বে ২০৩০ সাল পর্যন্ত। একই সঙ্গে বলা প্রয়োজন, বাংলাদেশের অর্থনীতি পোশাক রপ্তানি এবং রেমিট্যান্সের ওপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীল। বর্তমান অর্থবছরের রপ্তানি খাতের চলমান প্রবৃদ্ধি আশাব্যঞ্জক হলেও তা অর্থনীতির চাহিদার সঙ্গে তাল মেলাতে পারছে না। কারণ, রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধি শ্লথ হয়ে গেছে। এই প্রবণতাগুলো গেড়ে বসলে আমাদের অর্থনীতি মহাসংকটে পড়তে পারে।
লেখক: অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
ড. মইনুল ইসলাম

৩ এপ্রিল পত্রপত্রিকায় দেখলাম, প্রধানমন্ত্রী রূপপুরে দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প গ্রহণের জন্য রাশিয়ার রোসাটমের প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা শুরু করে দিয়েছেন। বিশ্বের উন্নত দেশগুলো যেখানে পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে সরে এসে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনে অগ্রাধিকার দিচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রীর এহেন আসক্তি খুবই দুঃখজনক। তিনি এ ব্যাপারে বারবার বঙ্গবন্ধুর আগ্রহের কথা জানিয়ে থাকেন, কিন্তু সোলার পাওয়ারের কথা জানা থাকলে নিশ্চয়ই বঙ্গবন্ধু এই পরিবেশবান্ধব ও ঝুঁকিমুক্ত প্রযুক্তি গ্রহণকে অগ্রাধিকার দিতেন বলেই আমার দৃঢ় বিশ্বাস। বাংলাদেশে এক দশকে অনেক মেগা প্রজেক্ট বাস্তবায়িত হয়েছে, কিংবা বাস্তবায়নাধীন রয়েছে, যেগুলোর কয়েকটিকে স্বল্পপ্রয়োজনীয় অথবা অপ্রয়োজনীয় বলা চলে। চলমান প্রকল্পের মধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর এবং পায়রাবন্দর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প, ঢাকা থেকে গাজীপুর পর্যন্ত বাস্তবায়নাধীন বিআরটি প্রকল্প এবং চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারী হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প ‘সাদা হাতি’ প্রকল্পের নিকৃষ্ট উদাহরণ। রাশিয়ার ১২ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক ঋণসহ মোট ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে নির্মাণাধীন রূপপুর প্রকল্প থেকে ২০২৫ সালে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে বলে বলা হচ্ছে। সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক হলো, রাশিয়া ভারতে ২ হাজার মেগাওয়াট ক্যাপাসিটির পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ করে দিয়েছে মাত্র ৬ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে। অতএব, প্রশ্ন করা যৌক্তিক যে বাংলাদেশ কেন এত বেশি বৈদেশিক ঋণ নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে এই পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণের জন্য চুক্তি করেছে?
বর্তমান সরকার যে জনগণের কাছে জবাবদিহির ধার ধারে না, এর উদাহরণ এই রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প। ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের অনেক বিকল্প প্রযুক্তি বিশ্বে রয়েছে, যেখানে রূপপুর প্রকল্পের অর্ধেক ব্যয়ে ওই পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়। এই মহাবিপজ্জনক পারমাণবিক প্রযুক্তি বাংলাদেশের মতো একটি ঘনবসতিপূর্ণ দেশের মাঝখানে স্থাপনকে আমি সমর্থন করিনি। সোলার পাওয়ার প্রযুক্তিকে অগ্রাধিকার দিলে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ব্যয় রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্রের মোট ব্যয়ের অর্ধেকও হতো না। অথচ, সৌরবিদ্যুৎ সবচেয়ে পরিবেশবান্ধব এবং ঝুঁকিমুক্ত প্রযুক্তি। সাম্প্রতিক গবেষণায় প্রমাণিত, এক ইউনিট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ ইতিমধ্যেই গণচীন, ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ডে বাংলাদেশি ১০ টাকার নিচে নেমে এসেছে। ১৭ নভেম্বর ২০২৩ একটি দৈনিকে প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়েছে, ব্লুমবার্গের এক গবেষণায় দেখানো হয়েছে যে ২০২৫ সালের পর সৌরবিদ্যুতের উৎপাদন খরচ অন্য সব বিকল্পের তুলনায় বাংলাদেশেও কমে আসবে। ২০৩০ সালে এক মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুতের উৎপাদন খরচ হবে মাত্র ৪২ ডলার, যেখানে এলএনজিচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রে পড়বে ৯৪ ডলার এবং কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রে ১১৮ ডলার।
তাহলে এত ব্যয়বহুল ‘সাদা হাতি’ প্রকল্প আমরা কেন নিলাম? এই ঋণ পরিশোধে ২০ বছর সময় লাগবে বলে সরকারিভাবেই জানানো হচ্ছে, কিন্তু ২০২৫ সাল থেকে প্রতি কিস্তিতে বাংলাদেশকে সুদাসলে প্রতিবছর ৫৬৫ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে হবে। (২০২৩ সাল থেকে রাশিয়ান ঋণের ৩৩০ মিলিয়ন ডলার সুদ পরিশোধ শুরু হয়ে গেছে)। এহেন ‘সাদা হাতি’ প্রকল্পগুলো যে ইতিমধ্যেই দেশের বৈদেশিক ঋণ পরিশোধকে বিপজ্জনক পর্যায়ে নিয়ে গেছে, সেটা ওয়াকিবহাল মহলের অজানা নয়। এখন যদি রূপপুর দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প গৃহীত হয়, তাহলে আরও কয়েক বিলিয়ন ডলার যুক্ত হবে দেশের বৈদেশিক ঋণে।
গাজীপুরের সাবেক মেয়র ও জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব জাহাঙ্গীর আলম চলমান বিআরটি প্রকল্পটি যে ৫০ বছর ধরে গাজীপুরের জনগণের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর ভূমিকা পালন করবে, সে সত্য কথাটি উচ্চারণ করেছেন, এ জন্য তাঁকে আমি সাধুবাদ জানাচ্ছি। আসলেই এই বিআরটি প্রকল্প ঢাকা বিমানবন্দর থেকে গাজীপুর পর্যন্ত বিস্তৃত সম্ভাব্য একটি আট লেনের মহাসড়ককে মারাত্মকভাবে পঙ্গু করে দিয়েছে, জাতি যার কুফল ভোগ করবে যুগের পর যুগ ধরে। বিমানবন্দর পর্যন্ত এয়ারপোর্ট রোডটি আট লেনের মহাসড়ক, কিন্তু এরপর বিআরটি প্রকল্পের জন্য এই সড়কের তিন থেকে চারটি লেনকে মহাসড়ক থেকে আলাদা করে ফেলা হয়েছে। আবার মাঝে মাঝে অনেক ফ্লাইওভারও নির্মাণ করা হয়েছে প্রকল্পের অধীনে। এত গুরুত্বপূর্ণ একটি মহাসড়কের মাঝখানের সবচেয়ে বেশি ব্যবহারোপযোগী তিন-চারটি লেনকে বিআরটি প্রকল্পে ‘স্পেশাল বাস’ ছাড়া অন্যান্য যানবাহনের জন্য নিষিদ্ধ জোনে পরিণত করা হয়েছে। এখন প্রশ্ন উঠেছে, ওই সব স্পেশাল বাসে কতজন মানুষ চলাচল করবে আর প্রকল্পের কারণে বাদ হয়ে যাওয়া তিন-চার লেনে এর কত গুণ মানুষ চলাচল করতে পারত! এই প্রকল্পের ব্যয় হওয়ার কথা ছিল ৪ হাজার কোটি টাকা, কিন্তু ইতিমধ্যেই প্রকল্পের খরচ ১৮ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। কার উর্বর মস্তিষ্ক থেকে বিআরটি প্রকল্পের ধারণা বেরিয়ে এসেছিল, জানি না।
একই সঙ্গে যে দুটি রেলপথ প্রকল্পের কথা উল্লেখ করা হলো, সেগুলোও অনেকখানি অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প। ওয়াকিবহাল মহল সহজেই বুঝবে যে পদ্মা সেতুর সড়কপথ চালু হওয়ার পর ওই সেতুর মাধ্যমে ঢাকা-যশোর-পায়রা পর্যন্ত নির্মীয়মাণ রেলপথের অর্থনৈতিক ‘ফিজিবিলিটি’ ভবিষ্যতে খুব বেশি আকর্ষণীয় হওয়ার তেমন সুযোগ থাকে না, কারণ রেলপথটি মালামাল পরিবহনের তুলনামূলক খরচের বিবেচনায় সড়কপথের সঙ্গে কখনোই প্রতিযোগিতামূলক বিবেচিত হবে না। ফলে ভবিষ্যতেও এ রেলপথটি ‘আন্ডার-ইউটিলাইজড’ থেকে যাবে। দিনে চার-পাঁচটি ট্রেন হয়তো চলবে এই পথে। অতএব, ওই প্রকল্পের সম্ভাব্য আয় দিয়ে ২১ হাজার কোটি টাকা চৈনিক ঋণের অর্থে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পটির সুদাসলে কিস্তি পরিশোধ করা অসম্ভব প্রমাণিত হবে। এমনকি, ভারতকে এই রেলপথ ব্যবহার করতে দিলেও অদূর ভবিষ্যতে প্রকল্পটি ‘সাদা হাতি’ প্রকল্পই থেকে যাবে।
একই আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে, চট্টগ্রাম-দোহাজারী-কক্সবাজার-ঘুমধুম রেলপথ প্রকল্প নিয়ে। ‘কুনমিং ইনিশিয়েটিভ’ আঞ্চলিক সহযোগিতা কর্মসূচির অধীন ‘বিসিআইএম ইকোনমিক করিডর’ যখন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার তোড়জোড় চালু ছিল, তখন বাংলাদেশকে মিয়ানমার হয়ে চীনের ইউনান প্রদেশের কুনমিং নগরীর সঙ্গে যুক্ত করার উদ্দেশ্যে এ রেলপথটি নির্মাণের পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছিল। কিন্তু ভারতে নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতাসীন হওয়ার পর ভারত ‘বিসিআইএম ইকোনমিক করিডর’ প্রতিষ্ঠার চুক্তি থেকে সরে গেছে। অতএব, এখন রেলপথটি কক্সবাজার পর্যন্ত নির্মিত হয়েছে। এই রেলপথটিও অদূর ভবিষ্যতে ‘আন্ডার-ইউটিলাইজড’ হওয়া ছাড়া গত্যন্তর নেই। এই রেলপথের আয় দিয়ে কখনোই এই প্রকল্পের ঋণের কিস্তি শোধ করা যাবে না। এ চারটি প্রকল্পই ‘ইকোনমিক ফিজিবিলিটি’র দৃষ্টিকোণ থেকে গ্রহণযোগ্য বিবেচিত হবে না।
প্রয়োজনীয় প্রকল্প গ্রহণের পরিবর্তে যদি এহেন চটকদার ও স্বল্পপ্রয়োজনীয় প্রকল্প গৃহীত হয়, তাহলে শ্রীলঙ্কার মতো ঋণগ্রস্ততার ফাঁদে বাংলাদেশও পড়তে পারে। ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। সরকারের কর-জিডিপির অনুপাত যেখানে ৮ শতাংশে নেমে গেছে, সেখানে ঋণ পরিশোধের জন্য দ্রুত বর্ধমান বাজেট-বরাদ্দ অশনিসংকেতের শামিল। ২০২১ সালের আগস্টে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ২০২৪ সালের এপ্রিলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আইএমএফের বিপিএম-৬ হিসাবপদ্ধতি অনুযায়ী, ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে বৈদেশিক ঋণের সুদাসল পরিশোধ খাতে যে বরাদ্দ রাখা হয়েছে তার চেয়ে এ বছর প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার বেশি খরচ হবে এ খাতে। মেগা প্রজেক্টগুলোর ঋণ পরিশোধের ‘গ্রেস-পিরিয়ড’ শেষ হলে আগামী অর্থবছরগুলোতে এ খাতে বরাদ্দ আরও অনেক দ্রুতগতিতে বাড়বে ২০৩০ সাল পর্যন্ত। একই সঙ্গে বলা প্রয়োজন, বাংলাদেশের অর্থনীতি পোশাক রপ্তানি এবং রেমিট্যান্সের ওপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীল। বর্তমান অর্থবছরের রপ্তানি খাতের চলমান প্রবৃদ্ধি আশাব্যঞ্জক হলেও তা অর্থনীতির চাহিদার সঙ্গে তাল মেলাতে পারছে না। কারণ, রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধি শ্লথ হয়ে গেছে। এই প্রবণতাগুলো গেড়ে বসলে আমাদের অর্থনীতি মহাসংকটে পড়তে পারে।
লেখক: অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

৩ এপ্রিল পত্রপত্রিকায় দেখলাম, প্রধানমন্ত্রী রূপপুরে দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প গ্রহণের জন্য রাশিয়ার রোসাটমের প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা শুরু করে দিয়েছেন। বিশ্বের উন্নত দেশগুলো যেখানে পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে সরে এসে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনে অগ্রাধিকার দিচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রীর এহেন আসক্তি খুবই দুঃখজনক। তিনি এ ব্যাপারে বারবার বঙ্গবন্ধুর আগ্রহের কথা জানিয়ে থাকেন, কিন্তু সোলার পাওয়ারের কথা জানা থাকলে নিশ্চয়ই বঙ্গবন্ধু এই পরিবেশবান্ধব ও ঝুঁকিমুক্ত প্রযুক্তি গ্রহণকে অগ্রাধিকার দিতেন বলেই আমার দৃঢ় বিশ্বাস। বাংলাদেশে এক দশকে অনেক মেগা প্রজেক্ট বাস্তবায়িত হয়েছে, কিংবা বাস্তবায়নাধীন রয়েছে, যেগুলোর কয়েকটিকে স্বল্পপ্রয়োজনীয় অথবা অপ্রয়োজনীয় বলা চলে। চলমান প্রকল্পের মধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর এবং পায়রাবন্দর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প, ঢাকা থেকে গাজীপুর পর্যন্ত বাস্তবায়নাধীন বিআরটি প্রকল্প এবং চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারী হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প ‘সাদা হাতি’ প্রকল্পের নিকৃষ্ট উদাহরণ। রাশিয়ার ১২ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক ঋণসহ মোট ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে নির্মাণাধীন রূপপুর প্রকল্প থেকে ২০২৫ সালে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে বলে বলা হচ্ছে। সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক হলো, রাশিয়া ভারতে ২ হাজার মেগাওয়াট ক্যাপাসিটির পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ করে দিয়েছে মাত্র ৬ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে। অতএব, প্রশ্ন করা যৌক্তিক যে বাংলাদেশ কেন এত বেশি বৈদেশিক ঋণ নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে এই পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণের জন্য চুক্তি করেছে?
বর্তমান সরকার যে জনগণের কাছে জবাবদিহির ধার ধারে না, এর উদাহরণ এই রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প। ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের অনেক বিকল্প প্রযুক্তি বিশ্বে রয়েছে, যেখানে রূপপুর প্রকল্পের অর্ধেক ব্যয়ে ওই পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়। এই মহাবিপজ্জনক পারমাণবিক প্রযুক্তি বাংলাদেশের মতো একটি ঘনবসতিপূর্ণ দেশের মাঝখানে স্থাপনকে আমি সমর্থন করিনি। সোলার পাওয়ার প্রযুক্তিকে অগ্রাধিকার দিলে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ব্যয় রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্রের মোট ব্যয়ের অর্ধেকও হতো না। অথচ, সৌরবিদ্যুৎ সবচেয়ে পরিবেশবান্ধব এবং ঝুঁকিমুক্ত প্রযুক্তি। সাম্প্রতিক গবেষণায় প্রমাণিত, এক ইউনিট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ ইতিমধ্যেই গণচীন, ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ডে বাংলাদেশি ১০ টাকার নিচে নেমে এসেছে। ১৭ নভেম্বর ২০২৩ একটি দৈনিকে প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়েছে, ব্লুমবার্গের এক গবেষণায় দেখানো হয়েছে যে ২০২৫ সালের পর সৌরবিদ্যুতের উৎপাদন খরচ অন্য সব বিকল্পের তুলনায় বাংলাদেশেও কমে আসবে। ২০৩০ সালে এক মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুতের উৎপাদন খরচ হবে মাত্র ৪২ ডলার, যেখানে এলএনজিচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রে পড়বে ৯৪ ডলার এবং কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রে ১১৮ ডলার।
তাহলে এত ব্যয়বহুল ‘সাদা হাতি’ প্রকল্প আমরা কেন নিলাম? এই ঋণ পরিশোধে ২০ বছর সময় লাগবে বলে সরকারিভাবেই জানানো হচ্ছে, কিন্তু ২০২৫ সাল থেকে প্রতি কিস্তিতে বাংলাদেশকে সুদাসলে প্রতিবছর ৫৬৫ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে হবে। (২০২৩ সাল থেকে রাশিয়ান ঋণের ৩৩০ মিলিয়ন ডলার সুদ পরিশোধ শুরু হয়ে গেছে)। এহেন ‘সাদা হাতি’ প্রকল্পগুলো যে ইতিমধ্যেই দেশের বৈদেশিক ঋণ পরিশোধকে বিপজ্জনক পর্যায়ে নিয়ে গেছে, সেটা ওয়াকিবহাল মহলের অজানা নয়। এখন যদি রূপপুর দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প গৃহীত হয়, তাহলে আরও কয়েক বিলিয়ন ডলার যুক্ত হবে দেশের বৈদেশিক ঋণে।
গাজীপুরের সাবেক মেয়র ও জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব জাহাঙ্গীর আলম চলমান বিআরটি প্রকল্পটি যে ৫০ বছর ধরে গাজীপুরের জনগণের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর ভূমিকা পালন করবে, সে সত্য কথাটি উচ্চারণ করেছেন, এ জন্য তাঁকে আমি সাধুবাদ জানাচ্ছি। আসলেই এই বিআরটি প্রকল্প ঢাকা বিমানবন্দর থেকে গাজীপুর পর্যন্ত বিস্তৃত সম্ভাব্য একটি আট লেনের মহাসড়ককে মারাত্মকভাবে পঙ্গু করে দিয়েছে, জাতি যার কুফল ভোগ করবে যুগের পর যুগ ধরে। বিমানবন্দর পর্যন্ত এয়ারপোর্ট রোডটি আট লেনের মহাসড়ক, কিন্তু এরপর বিআরটি প্রকল্পের জন্য এই সড়কের তিন থেকে চারটি লেনকে মহাসড়ক থেকে আলাদা করে ফেলা হয়েছে। আবার মাঝে মাঝে অনেক ফ্লাইওভারও নির্মাণ করা হয়েছে প্রকল্পের অধীনে। এত গুরুত্বপূর্ণ একটি মহাসড়কের মাঝখানের সবচেয়ে বেশি ব্যবহারোপযোগী তিন-চারটি লেনকে বিআরটি প্রকল্পে ‘স্পেশাল বাস’ ছাড়া অন্যান্য যানবাহনের জন্য নিষিদ্ধ জোনে পরিণত করা হয়েছে। এখন প্রশ্ন উঠেছে, ওই সব স্পেশাল বাসে কতজন মানুষ চলাচল করবে আর প্রকল্পের কারণে বাদ হয়ে যাওয়া তিন-চার লেনে এর কত গুণ মানুষ চলাচল করতে পারত! এই প্রকল্পের ব্যয় হওয়ার কথা ছিল ৪ হাজার কোটি টাকা, কিন্তু ইতিমধ্যেই প্রকল্পের খরচ ১৮ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। কার উর্বর মস্তিষ্ক থেকে বিআরটি প্রকল্পের ধারণা বেরিয়ে এসেছিল, জানি না।
একই সঙ্গে যে দুটি রেলপথ প্রকল্পের কথা উল্লেখ করা হলো, সেগুলোও অনেকখানি অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প। ওয়াকিবহাল মহল সহজেই বুঝবে যে পদ্মা সেতুর সড়কপথ চালু হওয়ার পর ওই সেতুর মাধ্যমে ঢাকা-যশোর-পায়রা পর্যন্ত নির্মীয়মাণ রেলপথের অর্থনৈতিক ‘ফিজিবিলিটি’ ভবিষ্যতে খুব বেশি আকর্ষণীয় হওয়ার তেমন সুযোগ থাকে না, কারণ রেলপথটি মালামাল পরিবহনের তুলনামূলক খরচের বিবেচনায় সড়কপথের সঙ্গে কখনোই প্রতিযোগিতামূলক বিবেচিত হবে না। ফলে ভবিষ্যতেও এ রেলপথটি ‘আন্ডার-ইউটিলাইজড’ থেকে যাবে। দিনে চার-পাঁচটি ট্রেন হয়তো চলবে এই পথে। অতএব, ওই প্রকল্পের সম্ভাব্য আয় দিয়ে ২১ হাজার কোটি টাকা চৈনিক ঋণের অর্থে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পটির সুদাসলে কিস্তি পরিশোধ করা অসম্ভব প্রমাণিত হবে। এমনকি, ভারতকে এই রেলপথ ব্যবহার করতে দিলেও অদূর ভবিষ্যতে প্রকল্পটি ‘সাদা হাতি’ প্রকল্পই থেকে যাবে।
একই আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে, চট্টগ্রাম-দোহাজারী-কক্সবাজার-ঘুমধুম রেলপথ প্রকল্প নিয়ে। ‘কুনমিং ইনিশিয়েটিভ’ আঞ্চলিক সহযোগিতা কর্মসূচির অধীন ‘বিসিআইএম ইকোনমিক করিডর’ যখন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার তোড়জোড় চালু ছিল, তখন বাংলাদেশকে মিয়ানমার হয়ে চীনের ইউনান প্রদেশের কুনমিং নগরীর সঙ্গে যুক্ত করার উদ্দেশ্যে এ রেলপথটি নির্মাণের পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছিল। কিন্তু ভারতে নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতাসীন হওয়ার পর ভারত ‘বিসিআইএম ইকোনমিক করিডর’ প্রতিষ্ঠার চুক্তি থেকে সরে গেছে। অতএব, এখন রেলপথটি কক্সবাজার পর্যন্ত নির্মিত হয়েছে। এই রেলপথটিও অদূর ভবিষ্যতে ‘আন্ডার-ইউটিলাইজড’ হওয়া ছাড়া গত্যন্তর নেই। এই রেলপথের আয় দিয়ে কখনোই এই প্রকল্পের ঋণের কিস্তি শোধ করা যাবে না। এ চারটি প্রকল্পই ‘ইকোনমিক ফিজিবিলিটি’র দৃষ্টিকোণ থেকে গ্রহণযোগ্য বিবেচিত হবে না।
প্রয়োজনীয় প্রকল্প গ্রহণের পরিবর্তে যদি এহেন চটকদার ও স্বল্পপ্রয়োজনীয় প্রকল্প গৃহীত হয়, তাহলে শ্রীলঙ্কার মতো ঋণগ্রস্ততার ফাঁদে বাংলাদেশও পড়তে পারে। ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। সরকারের কর-জিডিপির অনুপাত যেখানে ৮ শতাংশে নেমে গেছে, সেখানে ঋণ পরিশোধের জন্য দ্রুত বর্ধমান বাজেট-বরাদ্দ অশনিসংকেতের শামিল। ২০২১ সালের আগস্টে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ২০২৪ সালের এপ্রিলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আইএমএফের বিপিএম-৬ হিসাবপদ্ধতি অনুযায়ী, ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে বৈদেশিক ঋণের সুদাসল পরিশোধ খাতে যে বরাদ্দ রাখা হয়েছে তার চেয়ে এ বছর প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার বেশি খরচ হবে এ খাতে। মেগা প্রজেক্টগুলোর ঋণ পরিশোধের ‘গ্রেস-পিরিয়ড’ শেষ হলে আগামী অর্থবছরগুলোতে এ খাতে বরাদ্দ আরও অনেক দ্রুতগতিতে বাড়বে ২০৩০ সাল পর্যন্ত। একই সঙ্গে বলা প্রয়োজন, বাংলাদেশের অর্থনীতি পোশাক রপ্তানি এবং রেমিট্যান্সের ওপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীল। বর্তমান অর্থবছরের রপ্তানি খাতের চলমান প্রবৃদ্ধি আশাব্যঞ্জক হলেও তা অর্থনীতির চাহিদার সঙ্গে তাল মেলাতে পারছে না। কারণ, রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধি শ্লথ হয়ে গেছে। এই প্রবণতাগুলো গেড়ে বসলে আমাদের অর্থনীতি মহাসংকটে পড়তে পারে।
লেখক: অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

৩ এপ্রিল পত্রপত্রিকায় দেখলাম, প্রধানমন্ত্রী রূপপুরে দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প গ্রহণের জন্য রাশিয়ার রোসাটমের প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা শুরু করে দিয়েছেন। বিশ্বের উন্নত দেশগুলো যেখানে পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে সরে এসে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনে অগ্রাধিকার দিচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্
০৬ এপ্রিল ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

৩ এপ্রিল পত্রপত্রিকায় দেখলাম, প্রধানমন্ত্রী রূপপুরে দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প গ্রহণের জন্য রাশিয়ার রোসাটমের প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা শুরু করে দিয়েছেন। বিশ্বের উন্নত দেশগুলো যেখানে পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে সরে এসে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনে অগ্রাধিকার দিচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্
০৬ এপ্রিল ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

৩ এপ্রিল পত্রপত্রিকায় দেখলাম, প্রধানমন্ত্রী রূপপুরে দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প গ্রহণের জন্য রাশিয়ার রোসাটমের প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা শুরু করে দিয়েছেন। বিশ্বের উন্নত দেশগুলো যেখানে পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে সরে এসে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনে অগ্রাধিকার দিচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্
০৬ এপ্রিল ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

৩ এপ্রিল পত্রপত্রিকায় দেখলাম, প্রধানমন্ত্রী রূপপুরে দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প গ্রহণের জন্য রাশিয়ার রোসাটমের প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা শুরু করে দিয়েছেন। বিশ্বের উন্নত দেশগুলো যেখানে পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে সরে এসে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনে অগ্রাধিকার দিচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্
০৬ এপ্রিল ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫