Ajker Patrika

সফর মাসের তাৎপর্য ও আমল

মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ
সফর মাসের তাৎপর্য ও আমল

সফর হিজরি সনের দ্বিতীয় মাস। ধাতুগত অর্থ হিসেবে সফর মানে শূন্য, বিবর্ণ, দীপ্তিহীন ইত্যাদি। তৎকালীন আরব দেশে সফর মাসে খরা দেখা দিত।

মাঠঘাট শুকিয়ে যেত। এ জন্য এ মাসকে তারা বলত ‘আস-সাফারুল মুসাফফার’ বা বিবর্ণ সফর মাস। (লিসানুল আরব) জাহেলি যুগে আরবেরা এ মাসকে অশুভ মাস মনে করত। এমনকি তারা এ মাসের চাঁদ দেখা থেকেও বিরত থাকত এবং দ্রুত মাসটি শেষ হয়ে যাওয়ার অপেক্ষায় থাকত। নবুওয়ত লাভের পর রাসুল (সা.) সফর মাস-সম্পর্কিত এসব কুসংস্কারের বিলোপ সাধন করেন।

ঘোষণা করেন, ‘রোগের মধ্যে সংক্রমণ শক্তি নেই, সফর মাসের মধ্যে অকল্যাণের কিছু নেই এবং প্যাঁচা অশুভের লক্ষণ নয়।’ (বুখারি ও মুসলিম) পরবর্তী সময়ে মুসলমানেরা সফর মাসের নেতিবাচক বিশেষণ পরিহার করে ইতিবাচক বিশেষণ যুক্ত করে তার নাম রাখে ‘আস-সাফারুল মুজাফফর’ বা ‘সাফল্যের সফর মাস’।

অন্যান্য মাসের মতো সফর মাসও আমাদের জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। মহান রবের ইবাদত-বন্দেগি ও সৃষ্টির সেবার মাধ্যমে আমাদের এর সদ্ব্যবহার করতে হবে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা রাত-দিনের আবর্তন ও সময়ের পরিক্রমাকে কেবল তাদের জন্যই কল্যাণকর বলেছেন, যারা সময়ের সদ্ব্যবহার করে এবং সময়ের স্রষ্টার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। এরশাদ করেন, ‘তিনিই সে সত্তা, যিনি রাত ও দিন পরস্পরের অনুগামী করে সৃষ্টি করেছেন তার জন্য, যে উপদেশ গ্রহণ করতে এবং কৃতজ্ঞ হতে চায়।’ (সুরা ফুরকান: ৬২)

নিয়মিত ফরজ, ওয়াজিব ও সুন্নত ইবাদত ছাড়া নির্দিষ্টভাবে সফর মাসের বিশেষ কোনো আমল নেই। তবে সফর যেহেতু হিজরি সনের অন্যতম মাস, তাই এ মাসে সাধারণভাবে সব চান্দ্রমাস-সম্পর্কিত নফল আমলগুলো পালন করা উচিত। যেমন:

চাঁদ দেখে দোয়া পড়া
তালহা বিন উবাইদুল্লাহ (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) নতুন মাসের চাঁদ দেখে বলতেন, ‘আল্লাহুম্মা আহিল্লাহু আলাইনা বিল-আমনি ও ওয়াল-ইমানি ওয়াস-সালামাতি ওয়াল-ইসলামি, রাব্বি ও রাব্বুকাল্লাহ।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আপনি এ চাঁদকে আমাদের জন্য উদিত করুন—নিরাপত্তা, ইমান, শান্তি ও ইসলামের সঙ্গে। (হে চাঁদ) আমার ও তোমার রব আল্লাহ।’ (তিরমিজি) 

আইয়ামে বিজের রোজা রাখা
প্রতি চান্দ্রমাসের যেকোনো তিন দিন, বিশেষ করে ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ রোজা রাখা মুসতাহাব। রাসুল (সা.) বলেন, ‘প্রত্যেক মাসে তিন দিন রোজা রাখলে সারা বছর রোজা রাখার সওয়াব হবে।’ (বুখারি ও মুসলিম) মিলহান (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) আমাদের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ রোজা রাখার নির্দেশ দিতেন এবং বলতেন, ‘এতে পুরো বছর রোজা রাখার সওয়াব হবে।’ 
(আবু দাউদ) 
সফর মাসের শেষ বুধবারকে অনেকে ‘আখেরি চাহার সোম্বা’ নামে পালন করেন। বলা হয়ে থাকে, এ দিনে রাসুল (সা.) জীবনের সর্বশেষ রোগ থেকে সাময়িক আরোগ্য লাভ করেছিলেন, তাই সাহাবিরা শুকরিয়াস্বরূপ দান-সদকা ও শুকরানা নামাজ পড়েছিলেন। তবে ইসলামি স্কলারগণের মতে, শরিয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে এ দিনটি উদ্‌যাপন করা কোরআন-সুন্নাহ পরিপন্থী ও বিদআতের অন্তর্ভুক্ত। 

লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হোলি আর্টিজানের ঘটনায় ‘জঙ্গি সন্দেহে’ আটক ছিলেন অনিন্দ্য, রাজশাহীর সাবেক মেয়র লিটনের চাচাতো ভাই তিনি

‘তেলের ক্রেতা’ হিসেবে ভারতকে আর পাবে না রাশিয়া, জানালেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান: ভারতীয় দুই কোম্পানির ব্যাংক গ্যারান্টি প্রত্যাহার করল বাংলাদেশ

মহিলা মাদ্রাসা থেকে দুই শিশু শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার

রাবির অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত