হাইথেম গুয়েসমি

মানবাধিকার এখন মৃত একটি বিষয়। জলবায়ুজনিত নাজুক পরিস্থিতি, আপাতদৃষ্টিতে অন্তহীন সংঘাত এবং এর ফলে শরণার্থী-সংকট বেড়েছে। এ কারণে বিশ্বজুড়ে দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সবচেয়ে মৌলিক অধিকার রক্ষার জন্য একটি কার্যকর বৈশ্বিক কৌশলের অনুপস্থিতি এটি স্পষ্ট করেছে যে ‘মানবাধিকার’ ধারণাটির সব অর্থ এবং উদ্দেশ্য হারিয়েছে প্রত্যেকের জন্য, বিশেষ করে আমরা যারা গ্লোবাল সাউথের বাসিন্দা (আফ্রিকা ও এশিয়ার স্বল্পোন্নত দেশগুলো)।
জাতিসংঘের মতে, প্রায় ৮২ কোটি ৪০ লাখ মানুষ, যা বিশ্ব জনসংখ্যার ১০ শতাংশ প্রতি রাতে ক্ষুধার্ত অবস্থায় ঘুমাতে যায়। যারা ক্ষুধার সঙ্গে লড়াই করছে, তাদের মধ্যে ৮০ শতাংশ জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাস করছে। আর এই এলাকাগুলো গ্লোবাল সাউথে পড়েছে। যুদ্ধ ও অভ্যুত্থান—প্রায়ই বৈশ্বিক শক্তিগুলোর মধ্যে হয়ে থাকে। এসব বিষয় এই অঞ্চলগুলোতে নানাভাবে, নানান পরিমাণে ক্ষতি করছে।
তাদের দুর্দশার শেষ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা না দেখতে পেয়ে গ্লোবাল সাউথের অনেক বাসিন্দা নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধির জন্য গ্লোবাল নর্থে (ইউরোপ ও আমেরিকা) পাড়ি জমাতে মরুভূমি এবং সাগরে বিপজ্জনক যাত্রা শুরু করেছে। এই শরণার্থীদের মানবাধিকার রক্ষার জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার পরিবর্তে, পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলো যারা নিজেদের মানবাধিকারের ধারণার উদ্ভাবক বলে গর্ব করে, তারা তাদের সঙ্গে শত্রুর মতো আচরণ করছে।
ফলে হাজার হাজার মানুষ যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সীমান্তে অমানবিক অভিবাসী আটককেন্দ্রগুলোতে পড়ে আছে এবং ভূমধ্যসাগর এখন অভিবাসীদের কবরস্থান। ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশনের মিসিং মাইগ্রেন্টস প্রজেক্ট অনুসারে, ২০১৪ সাল থেকে ভূমধ্যসাগরে ২৮ হাজারের বেশি মানুষের ডুবে যাওয়ার ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে। মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা জানা অসম্ভব এবং সেটা সম্ভবত অনেক বেশি।
গ্লোবাল সাউথের বাসিন্দাদের এভাবে ভূমধ্যসাগরে ডুবে যাওয়াই যেন একমাত্র ভবিতব্য। যারা বিশ্বব্যাপী সংখ্যাগরিষ্ঠ, তারা ব্যাপকভাবে মারা যাচ্ছে। কারণ পশ্চিমা নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাদের মানবাধিকারকে সুরক্ষার যোগ্য বলে মনেই করে না। তারা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বেড়ে ওঠা প্রাকৃতিক দুর্যোগে এবং আরও ভূ-রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডার জন্য যুদ্ধে মারা যাচ্ছে। তাদের ড্রোন দিয়ে হত্যা করা হচ্ছে এবং জীবন্ত পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে।
মানবাধিকারের মৃত্যুর লক্ষণ সর্বব্যাপী। পশ্চিমা সরকারগুলো ইসরায়েলের বর্ণবাদী আচরণকে জবাবদিহির হাত থেকে রক্ষা করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করছে। তারা ইসরায়েলের নিপীড়ন প্রতিরোধকারী ফিলিস্তিনিদের এবং তাদের মুক্তির সংগ্রামকে সমর্থন করে এমন ব্যক্তিদের অপরাধী হিসেবে আখ্যায়িত করছে। গ্লোবাল নর্থের নেতৃস্থানীয় সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিগুলো তাদের প্ল্যাটফর্মে ইতিমধ্যেই প্রান্তিক এবং হুমকির মুখে থাকা জনসংখ্যাকে লক্ষ্য করে বিপজ্জনক ভুল তথ্য প্রচারের অনুমতি দিচ্ছে। ইউরোপীয় দেশগুলো এখনো একটি বিষাক্ত কীটনাশক গ্লোবাল সাউথের দেশগুলোতে বিক্রি করছে, যা কিনা শিশু এবং অনাগত শিশুদের জন্য ক্ষতিকর বলে ইউরোপীয় ইউনিয়নে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তালিকায় এ রকম আরও অনেক কিছুই আছে।
পশ্চিমারা সব সময় নিজেদের মানবাধিকারের সত্যিকারের রক্ষক হিসেবে বিক্রির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়া, চীন ও ইরানের মতো দেশগুলোর নাগরিকদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য প্রায়ই নিন্দা জানায় এবং এমনকি মাঝেমধ্যে দেশগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। তারা প্রায়ই এসব দেশকে সাহায্য দিতে মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নত করার শর্ত বেঁধে দেয়। কোনো কোনো দেশ অতীতে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে কি না, এই অজুহাতে সামরিক হস্তক্ষেপও শুরু করে।
উদাহরণস্বরূপ ইউরোপের একেবারে কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত ইউক্রেনে আক্রমণের প্রতিক্রিয়ায়, গ্লোবাল নর্থের দেশগুলো রাশিয়া যে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে, তার নিন্দাই করেনি। প্রয়োজনে ইউক্রেনের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে। কোনো বাধার সম্মুখীন না হয়ে অন্য দেশে যাতে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে পায় তার ব্যবস্থা করেছে। তারা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রতিও তাদের সমর্থন রেখেছিল এবং ক্রেমলিনকে দোষী সাব্যস্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য তদন্তকারীদের সরবরাহ করেছিল।
প্রকৃতপক্ষে, যে দেশগুলো ইউক্রেনের জনগণকে সাহায্য করার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছিল, তারা একইভাবে সুদানিদের জন্য তাদের সীমানা খুলে দেয়নি, যখন তারা একইভাবে গুরুতর সামরিক হুমকির মুখে পড়ে। তারা কখনো ফিলিস্তিনিদের জন্যও তা করেনি, যাদের অনেকেই এখনো হিংসাত্মক আক্রমণকারীর লৌহমুষ্টির মধ্যে বসবাস করছে।
আইসিসিকে কখন সমর্থন করবে, সে বিষয়টি তারা খুব বেছে বেছে করে থাকে। নিশ্চিতভাবে তারা আফ্রিকানদের বিরুদ্ধে আইসিসির বিচারকে সমর্থন করেছিল, যখন এটি তাদের অ্যাজেন্ডা অনুসারে উপযুক্ত ছিল। কিন্তু তারা কখনোই এর কৌঁসুলিদের তাদের নিজস্ব ড্রোন যুদ্ধ বা বেআইনি নির্যাতন কর্মসূচির কাছাকাছি কোথাও যেতে দেয়নি।
যদিও তারা এখন রাশিয়াকে সহযোগিতা করছে—এমন যেকোনো রাষ্ট্রকে নিন্দা করছে। গ্লোবাল সাউথে তারা নিজেরাই দীর্ঘদিন ধরে মানবাধিকারের উদ্বেগের চেয়ে ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে আসছে, নিপীড়নের শাসনকে সমর্থন করছে এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে দুর্বল করছে। আর এ কারণে গ্লোবাল সাউথের অনেক দেশ ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধকে সমর্থন করতে দ্বিধাগ্রস্ত হয়েছে।
বিশ্বব্যাপী মানবাধিকারব্যবস্থা ও আলোচনায় এই সংকট নতুন নয়। ১৯৮৪ সালে যখন জাতিসংঘে সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণাপত্র (ইউডিএইচআর) পাস হয়, তখন এটিকে আরও শান্তিপূর্ণ বিশ্বের দিকে একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং হলোকাস্টের ভয়াবহতা পেছনে ফেলে আসার পর এর একটি আশার রশ্মি ছিল, যা ইঙ্গিত দেয় যে একটি উন্নত বিশ্ব গড়ার, যেখানে সবার মৌলিক অধিকারগুলোর সম্মান করা সম্ভব হতে পারে। তবে এই স্বপ্ন বেশি দিন টেকেনি। যে জাতিগুলো শাসনব্যবস্থায় নতুন মানবাধিকারের বিকাশে এগিয়ে এসেছিল, তারা তাদের স্বার্থকে এগিয়ে নিতে, তাদের শত্রুদের আঘাত করতে এবং তাদের স্বার্থ সম্প্রসারণের জন্য দ্রুত তা লঙ্ঘন করতে শুরু করে। এমনকি তারা ‘গণতন্ত্র’ প্রতিষ্ঠার জন্য এবং ‘মানবাধিকার’ রক্ষার জন্য গ্লোবাল সাউথের বেশ কয়েকটি দেশকে আক্রমণ করে।
যারা ইউডিএইচআর স্বাক্ষরের পর থেকে গ্লোবাল নর্থের আগ্রাসন এবং দ্বৈত ভূমিকার কারণে সবচেয়ে বেশি ভুগছে, তারা আর নিশ্চিত নয় যে পশ্চিমা সরকার, প্রতিষ্ঠান এবং সংস্থাগুলো তাদের মৌলিক অধিকার রক্ষা করতে পারে। তারা এখন সেগুলোকে অকার্যকর ও বিপজ্জনক হিসেবে দেখে।
আরবের রাস্তায় যারা প্রতিবাদ করছে, ব্রাজিলের ফাভেলাসে ক্রমাগত আক্রমণের শিকার হচ্ছে, গাজার খোলা-হাওয়ার কারাগার থেকে বাঁচার চেষ্টা করছে বা বাংলাদেশের (কক্সবাজারে) বিস্তীর্ণ শরণার্থীশিবির থেকে বেরিয়ে আসার উপায় খুঁজছে—তারা আর বিশ্বাস করে না বা আশা করে না যে গ্লোবাল নর্থ এগিয়ে আসবে এবং তাদের কথিত পবিত্র ‘মানবাধিকার’ লঙ্ঘন হবে না, তা নিশ্চিত করার জন্য কিছু করবে।
শুধু আন্তর্জাতিক রাজনীতির জন্য বৈষম্যমূলক আদেশ, নীতি হিসেবে মানবাধিকারের পশ্চিমের ভন্ডামিকে আমরা এড়িয়ে চলতে পারি। আমরা প্রত্যেকের মৌলিক অধিকার সংজ্ঞায়িত এবং সুরক্ষার জন্য আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক, বৈচিত্র্যময় ও প্রতিনিধিত্বমূলক পদ্ধতি নিজেরাই তৈরি করতে পারি।
এটি করার মাধ্যমে গ্লোবাল সাউথের স্থানীয় সম্প্রদায় ও আদিবাসী জনগোষ্ঠী পরিবেশ সংরক্ষণ এবং টেকসই উন্নয়ন পুনর্বিবেচনা ও বাস্তবায়নে সক্রিয় এবং কেন্দ্রীয় ভূমিকা নিতে পারবে। যেহেতু আমরা একাধিক আন্তসংযুক্ত পরিবেশগত এবং মানবিক সংকটের মুখোমুখি, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবিলম্বে বর্তমান শাসনব্যবস্থায় মানবাধিকারের যে মৃত্যু ঘটছে তা বুঝতে হবে এবং দ্রুত একটি বিকল্প পদক্ষেপ নিতে হবে, যা সত্যিকার অর্থে সব মানুষের মৌলিক অধিকার এবং চাহিদা অন্তর্ভুক্ত করবে। সব মানুষের মৌলিক অধিকার রক্ষার জন্য আমাদের জরুরিভাবে একটি নতুন কাঠামো দরকার।
হাইথেম গুয়েসমি, তিউনিসিয়ার শিক্ষাবিদ ও লেখক
(আল জাজিরায় প্রকাশিত লেখাটি ইংরেজি থেকে অনূদিত ও ঈষৎ সংক্ষেপিত)

মানবাধিকার এখন মৃত একটি বিষয়। জলবায়ুজনিত নাজুক পরিস্থিতি, আপাতদৃষ্টিতে অন্তহীন সংঘাত এবং এর ফলে শরণার্থী-সংকট বেড়েছে। এ কারণে বিশ্বজুড়ে দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সবচেয়ে মৌলিক অধিকার রক্ষার জন্য একটি কার্যকর বৈশ্বিক কৌশলের অনুপস্থিতি এটি স্পষ্ট করেছে যে ‘মানবাধিকার’ ধারণাটির সব অর্থ এবং উদ্দেশ্য হারিয়েছে প্রত্যেকের জন্য, বিশেষ করে আমরা যারা গ্লোবাল সাউথের বাসিন্দা (আফ্রিকা ও এশিয়ার স্বল্পোন্নত দেশগুলো)।
জাতিসংঘের মতে, প্রায় ৮২ কোটি ৪০ লাখ মানুষ, যা বিশ্ব জনসংখ্যার ১০ শতাংশ প্রতি রাতে ক্ষুধার্ত অবস্থায় ঘুমাতে যায়। যারা ক্ষুধার সঙ্গে লড়াই করছে, তাদের মধ্যে ৮০ শতাংশ জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাস করছে। আর এই এলাকাগুলো গ্লোবাল সাউথে পড়েছে। যুদ্ধ ও অভ্যুত্থান—প্রায়ই বৈশ্বিক শক্তিগুলোর মধ্যে হয়ে থাকে। এসব বিষয় এই অঞ্চলগুলোতে নানাভাবে, নানান পরিমাণে ক্ষতি করছে।
তাদের দুর্দশার শেষ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা না দেখতে পেয়ে গ্লোবাল সাউথের অনেক বাসিন্দা নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধির জন্য গ্লোবাল নর্থে (ইউরোপ ও আমেরিকা) পাড়ি জমাতে মরুভূমি এবং সাগরে বিপজ্জনক যাত্রা শুরু করেছে। এই শরণার্থীদের মানবাধিকার রক্ষার জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার পরিবর্তে, পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলো যারা নিজেদের মানবাধিকারের ধারণার উদ্ভাবক বলে গর্ব করে, তারা তাদের সঙ্গে শত্রুর মতো আচরণ করছে।
ফলে হাজার হাজার মানুষ যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সীমান্তে অমানবিক অভিবাসী আটককেন্দ্রগুলোতে পড়ে আছে এবং ভূমধ্যসাগর এখন অভিবাসীদের কবরস্থান। ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশনের মিসিং মাইগ্রেন্টস প্রজেক্ট অনুসারে, ২০১৪ সাল থেকে ভূমধ্যসাগরে ২৮ হাজারের বেশি মানুষের ডুবে যাওয়ার ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে। মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা জানা অসম্ভব এবং সেটা সম্ভবত অনেক বেশি।
গ্লোবাল সাউথের বাসিন্দাদের এভাবে ভূমধ্যসাগরে ডুবে যাওয়াই যেন একমাত্র ভবিতব্য। যারা বিশ্বব্যাপী সংখ্যাগরিষ্ঠ, তারা ব্যাপকভাবে মারা যাচ্ছে। কারণ পশ্চিমা নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাদের মানবাধিকারকে সুরক্ষার যোগ্য বলে মনেই করে না। তারা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বেড়ে ওঠা প্রাকৃতিক দুর্যোগে এবং আরও ভূ-রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডার জন্য যুদ্ধে মারা যাচ্ছে। তাদের ড্রোন দিয়ে হত্যা করা হচ্ছে এবং জীবন্ত পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে।
মানবাধিকারের মৃত্যুর লক্ষণ সর্বব্যাপী। পশ্চিমা সরকারগুলো ইসরায়েলের বর্ণবাদী আচরণকে জবাবদিহির হাত থেকে রক্ষা করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করছে। তারা ইসরায়েলের নিপীড়ন প্রতিরোধকারী ফিলিস্তিনিদের এবং তাদের মুক্তির সংগ্রামকে সমর্থন করে এমন ব্যক্তিদের অপরাধী হিসেবে আখ্যায়িত করছে। গ্লোবাল নর্থের নেতৃস্থানীয় সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিগুলো তাদের প্ল্যাটফর্মে ইতিমধ্যেই প্রান্তিক এবং হুমকির মুখে থাকা জনসংখ্যাকে লক্ষ্য করে বিপজ্জনক ভুল তথ্য প্রচারের অনুমতি দিচ্ছে। ইউরোপীয় দেশগুলো এখনো একটি বিষাক্ত কীটনাশক গ্লোবাল সাউথের দেশগুলোতে বিক্রি করছে, যা কিনা শিশু এবং অনাগত শিশুদের জন্য ক্ষতিকর বলে ইউরোপীয় ইউনিয়নে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তালিকায় এ রকম আরও অনেক কিছুই আছে।
পশ্চিমারা সব সময় নিজেদের মানবাধিকারের সত্যিকারের রক্ষক হিসেবে বিক্রির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়া, চীন ও ইরানের মতো দেশগুলোর নাগরিকদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য প্রায়ই নিন্দা জানায় এবং এমনকি মাঝেমধ্যে দেশগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। তারা প্রায়ই এসব দেশকে সাহায্য দিতে মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নত করার শর্ত বেঁধে দেয়। কোনো কোনো দেশ অতীতে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে কি না, এই অজুহাতে সামরিক হস্তক্ষেপও শুরু করে।
উদাহরণস্বরূপ ইউরোপের একেবারে কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত ইউক্রেনে আক্রমণের প্রতিক্রিয়ায়, গ্লোবাল নর্থের দেশগুলো রাশিয়া যে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে, তার নিন্দাই করেনি। প্রয়োজনে ইউক্রেনের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে। কোনো বাধার সম্মুখীন না হয়ে অন্য দেশে যাতে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে পায় তার ব্যবস্থা করেছে। তারা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রতিও তাদের সমর্থন রেখেছিল এবং ক্রেমলিনকে দোষী সাব্যস্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য তদন্তকারীদের সরবরাহ করেছিল।
প্রকৃতপক্ষে, যে দেশগুলো ইউক্রেনের জনগণকে সাহায্য করার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছিল, তারা একইভাবে সুদানিদের জন্য তাদের সীমানা খুলে দেয়নি, যখন তারা একইভাবে গুরুতর সামরিক হুমকির মুখে পড়ে। তারা কখনো ফিলিস্তিনিদের জন্যও তা করেনি, যাদের অনেকেই এখনো হিংসাত্মক আক্রমণকারীর লৌহমুষ্টির মধ্যে বসবাস করছে।
আইসিসিকে কখন সমর্থন করবে, সে বিষয়টি তারা খুব বেছে বেছে করে থাকে। নিশ্চিতভাবে তারা আফ্রিকানদের বিরুদ্ধে আইসিসির বিচারকে সমর্থন করেছিল, যখন এটি তাদের অ্যাজেন্ডা অনুসারে উপযুক্ত ছিল। কিন্তু তারা কখনোই এর কৌঁসুলিদের তাদের নিজস্ব ড্রোন যুদ্ধ বা বেআইনি নির্যাতন কর্মসূচির কাছাকাছি কোথাও যেতে দেয়নি।
যদিও তারা এখন রাশিয়াকে সহযোগিতা করছে—এমন যেকোনো রাষ্ট্রকে নিন্দা করছে। গ্লোবাল সাউথে তারা নিজেরাই দীর্ঘদিন ধরে মানবাধিকারের উদ্বেগের চেয়ে ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে আসছে, নিপীড়নের শাসনকে সমর্থন করছে এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে দুর্বল করছে। আর এ কারণে গ্লোবাল সাউথের অনেক দেশ ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধকে সমর্থন করতে দ্বিধাগ্রস্ত হয়েছে।
বিশ্বব্যাপী মানবাধিকারব্যবস্থা ও আলোচনায় এই সংকট নতুন নয়। ১৯৮৪ সালে যখন জাতিসংঘে সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণাপত্র (ইউডিএইচআর) পাস হয়, তখন এটিকে আরও শান্তিপূর্ণ বিশ্বের দিকে একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং হলোকাস্টের ভয়াবহতা পেছনে ফেলে আসার পর এর একটি আশার রশ্মি ছিল, যা ইঙ্গিত দেয় যে একটি উন্নত বিশ্ব গড়ার, যেখানে সবার মৌলিক অধিকারগুলোর সম্মান করা সম্ভব হতে পারে। তবে এই স্বপ্ন বেশি দিন টেকেনি। যে জাতিগুলো শাসনব্যবস্থায় নতুন মানবাধিকারের বিকাশে এগিয়ে এসেছিল, তারা তাদের স্বার্থকে এগিয়ে নিতে, তাদের শত্রুদের আঘাত করতে এবং তাদের স্বার্থ সম্প্রসারণের জন্য দ্রুত তা লঙ্ঘন করতে শুরু করে। এমনকি তারা ‘গণতন্ত্র’ প্রতিষ্ঠার জন্য এবং ‘মানবাধিকার’ রক্ষার জন্য গ্লোবাল সাউথের বেশ কয়েকটি দেশকে আক্রমণ করে।
যারা ইউডিএইচআর স্বাক্ষরের পর থেকে গ্লোবাল নর্থের আগ্রাসন এবং দ্বৈত ভূমিকার কারণে সবচেয়ে বেশি ভুগছে, তারা আর নিশ্চিত নয় যে পশ্চিমা সরকার, প্রতিষ্ঠান এবং সংস্থাগুলো তাদের মৌলিক অধিকার রক্ষা করতে পারে। তারা এখন সেগুলোকে অকার্যকর ও বিপজ্জনক হিসেবে দেখে।
আরবের রাস্তায় যারা প্রতিবাদ করছে, ব্রাজিলের ফাভেলাসে ক্রমাগত আক্রমণের শিকার হচ্ছে, গাজার খোলা-হাওয়ার কারাগার থেকে বাঁচার চেষ্টা করছে বা বাংলাদেশের (কক্সবাজারে) বিস্তীর্ণ শরণার্থীশিবির থেকে বেরিয়ে আসার উপায় খুঁজছে—তারা আর বিশ্বাস করে না বা আশা করে না যে গ্লোবাল নর্থ এগিয়ে আসবে এবং তাদের কথিত পবিত্র ‘মানবাধিকার’ লঙ্ঘন হবে না, তা নিশ্চিত করার জন্য কিছু করবে।
শুধু আন্তর্জাতিক রাজনীতির জন্য বৈষম্যমূলক আদেশ, নীতি হিসেবে মানবাধিকারের পশ্চিমের ভন্ডামিকে আমরা এড়িয়ে চলতে পারি। আমরা প্রত্যেকের মৌলিক অধিকার সংজ্ঞায়িত এবং সুরক্ষার জন্য আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক, বৈচিত্র্যময় ও প্রতিনিধিত্বমূলক পদ্ধতি নিজেরাই তৈরি করতে পারি।
এটি করার মাধ্যমে গ্লোবাল সাউথের স্থানীয় সম্প্রদায় ও আদিবাসী জনগোষ্ঠী পরিবেশ সংরক্ষণ এবং টেকসই উন্নয়ন পুনর্বিবেচনা ও বাস্তবায়নে সক্রিয় এবং কেন্দ্রীয় ভূমিকা নিতে পারবে। যেহেতু আমরা একাধিক আন্তসংযুক্ত পরিবেশগত এবং মানবিক সংকটের মুখোমুখি, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবিলম্বে বর্তমান শাসনব্যবস্থায় মানবাধিকারের যে মৃত্যু ঘটছে তা বুঝতে হবে এবং দ্রুত একটি বিকল্প পদক্ষেপ নিতে হবে, যা সত্যিকার অর্থে সব মানুষের মৌলিক অধিকার এবং চাহিদা অন্তর্ভুক্ত করবে। সব মানুষের মৌলিক অধিকার রক্ষার জন্য আমাদের জরুরিভাবে একটি নতুন কাঠামো দরকার।
হাইথেম গুয়েসমি, তিউনিসিয়ার শিক্ষাবিদ ও লেখক
(আল জাজিরায় প্রকাশিত লেখাটি ইংরেজি থেকে অনূদিত ও ঈষৎ সংক্ষেপিত)

হাইথেম গুয়েসমি

মানবাধিকার এখন মৃত একটি বিষয়। জলবায়ুজনিত নাজুক পরিস্থিতি, আপাতদৃষ্টিতে অন্তহীন সংঘাত এবং এর ফলে শরণার্থী-সংকট বেড়েছে। এ কারণে বিশ্বজুড়ে দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সবচেয়ে মৌলিক অধিকার রক্ষার জন্য একটি কার্যকর বৈশ্বিক কৌশলের অনুপস্থিতি এটি স্পষ্ট করেছে যে ‘মানবাধিকার’ ধারণাটির সব অর্থ এবং উদ্দেশ্য হারিয়েছে প্রত্যেকের জন্য, বিশেষ করে আমরা যারা গ্লোবাল সাউথের বাসিন্দা (আফ্রিকা ও এশিয়ার স্বল্পোন্নত দেশগুলো)।
জাতিসংঘের মতে, প্রায় ৮২ কোটি ৪০ লাখ মানুষ, যা বিশ্ব জনসংখ্যার ১০ শতাংশ প্রতি রাতে ক্ষুধার্ত অবস্থায় ঘুমাতে যায়। যারা ক্ষুধার সঙ্গে লড়াই করছে, তাদের মধ্যে ৮০ শতাংশ জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাস করছে। আর এই এলাকাগুলো গ্লোবাল সাউথে পড়েছে। যুদ্ধ ও অভ্যুত্থান—প্রায়ই বৈশ্বিক শক্তিগুলোর মধ্যে হয়ে থাকে। এসব বিষয় এই অঞ্চলগুলোতে নানাভাবে, নানান পরিমাণে ক্ষতি করছে।
তাদের দুর্দশার শেষ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা না দেখতে পেয়ে গ্লোবাল সাউথের অনেক বাসিন্দা নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধির জন্য গ্লোবাল নর্থে (ইউরোপ ও আমেরিকা) পাড়ি জমাতে মরুভূমি এবং সাগরে বিপজ্জনক যাত্রা শুরু করেছে। এই শরণার্থীদের মানবাধিকার রক্ষার জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার পরিবর্তে, পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলো যারা নিজেদের মানবাধিকারের ধারণার উদ্ভাবক বলে গর্ব করে, তারা তাদের সঙ্গে শত্রুর মতো আচরণ করছে।
ফলে হাজার হাজার মানুষ যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সীমান্তে অমানবিক অভিবাসী আটককেন্দ্রগুলোতে পড়ে আছে এবং ভূমধ্যসাগর এখন অভিবাসীদের কবরস্থান। ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশনের মিসিং মাইগ্রেন্টস প্রজেক্ট অনুসারে, ২০১৪ সাল থেকে ভূমধ্যসাগরে ২৮ হাজারের বেশি মানুষের ডুবে যাওয়ার ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে। মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা জানা অসম্ভব এবং সেটা সম্ভবত অনেক বেশি।
গ্লোবাল সাউথের বাসিন্দাদের এভাবে ভূমধ্যসাগরে ডুবে যাওয়াই যেন একমাত্র ভবিতব্য। যারা বিশ্বব্যাপী সংখ্যাগরিষ্ঠ, তারা ব্যাপকভাবে মারা যাচ্ছে। কারণ পশ্চিমা নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাদের মানবাধিকারকে সুরক্ষার যোগ্য বলে মনেই করে না। তারা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বেড়ে ওঠা প্রাকৃতিক দুর্যোগে এবং আরও ভূ-রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডার জন্য যুদ্ধে মারা যাচ্ছে। তাদের ড্রোন দিয়ে হত্যা করা হচ্ছে এবং জীবন্ত পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে।
মানবাধিকারের মৃত্যুর লক্ষণ সর্বব্যাপী। পশ্চিমা সরকারগুলো ইসরায়েলের বর্ণবাদী আচরণকে জবাবদিহির হাত থেকে রক্ষা করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করছে। তারা ইসরায়েলের নিপীড়ন প্রতিরোধকারী ফিলিস্তিনিদের এবং তাদের মুক্তির সংগ্রামকে সমর্থন করে এমন ব্যক্তিদের অপরাধী হিসেবে আখ্যায়িত করছে। গ্লোবাল নর্থের নেতৃস্থানীয় সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিগুলো তাদের প্ল্যাটফর্মে ইতিমধ্যেই প্রান্তিক এবং হুমকির মুখে থাকা জনসংখ্যাকে লক্ষ্য করে বিপজ্জনক ভুল তথ্য প্রচারের অনুমতি দিচ্ছে। ইউরোপীয় দেশগুলো এখনো একটি বিষাক্ত কীটনাশক গ্লোবাল সাউথের দেশগুলোতে বিক্রি করছে, যা কিনা শিশু এবং অনাগত শিশুদের জন্য ক্ষতিকর বলে ইউরোপীয় ইউনিয়নে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তালিকায় এ রকম আরও অনেক কিছুই আছে।
পশ্চিমারা সব সময় নিজেদের মানবাধিকারের সত্যিকারের রক্ষক হিসেবে বিক্রির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়া, চীন ও ইরানের মতো দেশগুলোর নাগরিকদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য প্রায়ই নিন্দা জানায় এবং এমনকি মাঝেমধ্যে দেশগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। তারা প্রায়ই এসব দেশকে সাহায্য দিতে মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নত করার শর্ত বেঁধে দেয়। কোনো কোনো দেশ অতীতে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে কি না, এই অজুহাতে সামরিক হস্তক্ষেপও শুরু করে।
উদাহরণস্বরূপ ইউরোপের একেবারে কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত ইউক্রেনে আক্রমণের প্রতিক্রিয়ায়, গ্লোবাল নর্থের দেশগুলো রাশিয়া যে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে, তার নিন্দাই করেনি। প্রয়োজনে ইউক্রেনের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে। কোনো বাধার সম্মুখীন না হয়ে অন্য দেশে যাতে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে পায় তার ব্যবস্থা করেছে। তারা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রতিও তাদের সমর্থন রেখেছিল এবং ক্রেমলিনকে দোষী সাব্যস্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য তদন্তকারীদের সরবরাহ করেছিল।
প্রকৃতপক্ষে, যে দেশগুলো ইউক্রেনের জনগণকে সাহায্য করার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছিল, তারা একইভাবে সুদানিদের জন্য তাদের সীমানা খুলে দেয়নি, যখন তারা একইভাবে গুরুতর সামরিক হুমকির মুখে পড়ে। তারা কখনো ফিলিস্তিনিদের জন্যও তা করেনি, যাদের অনেকেই এখনো হিংসাত্মক আক্রমণকারীর লৌহমুষ্টির মধ্যে বসবাস করছে।
আইসিসিকে কখন সমর্থন করবে, সে বিষয়টি তারা খুব বেছে বেছে করে থাকে। নিশ্চিতভাবে তারা আফ্রিকানদের বিরুদ্ধে আইসিসির বিচারকে সমর্থন করেছিল, যখন এটি তাদের অ্যাজেন্ডা অনুসারে উপযুক্ত ছিল। কিন্তু তারা কখনোই এর কৌঁসুলিদের তাদের নিজস্ব ড্রোন যুদ্ধ বা বেআইনি নির্যাতন কর্মসূচির কাছাকাছি কোথাও যেতে দেয়নি।
যদিও তারা এখন রাশিয়াকে সহযোগিতা করছে—এমন যেকোনো রাষ্ট্রকে নিন্দা করছে। গ্লোবাল সাউথে তারা নিজেরাই দীর্ঘদিন ধরে মানবাধিকারের উদ্বেগের চেয়ে ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে আসছে, নিপীড়নের শাসনকে সমর্থন করছে এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে দুর্বল করছে। আর এ কারণে গ্লোবাল সাউথের অনেক দেশ ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধকে সমর্থন করতে দ্বিধাগ্রস্ত হয়েছে।
বিশ্বব্যাপী মানবাধিকারব্যবস্থা ও আলোচনায় এই সংকট নতুন নয়। ১৯৮৪ সালে যখন জাতিসংঘে সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণাপত্র (ইউডিএইচআর) পাস হয়, তখন এটিকে আরও শান্তিপূর্ণ বিশ্বের দিকে একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং হলোকাস্টের ভয়াবহতা পেছনে ফেলে আসার পর এর একটি আশার রশ্মি ছিল, যা ইঙ্গিত দেয় যে একটি উন্নত বিশ্ব গড়ার, যেখানে সবার মৌলিক অধিকারগুলোর সম্মান করা সম্ভব হতে পারে। তবে এই স্বপ্ন বেশি দিন টেকেনি। যে জাতিগুলো শাসনব্যবস্থায় নতুন মানবাধিকারের বিকাশে এগিয়ে এসেছিল, তারা তাদের স্বার্থকে এগিয়ে নিতে, তাদের শত্রুদের আঘাত করতে এবং তাদের স্বার্থ সম্প্রসারণের জন্য দ্রুত তা লঙ্ঘন করতে শুরু করে। এমনকি তারা ‘গণতন্ত্র’ প্রতিষ্ঠার জন্য এবং ‘মানবাধিকার’ রক্ষার জন্য গ্লোবাল সাউথের বেশ কয়েকটি দেশকে আক্রমণ করে।
যারা ইউডিএইচআর স্বাক্ষরের পর থেকে গ্লোবাল নর্থের আগ্রাসন এবং দ্বৈত ভূমিকার কারণে সবচেয়ে বেশি ভুগছে, তারা আর নিশ্চিত নয় যে পশ্চিমা সরকার, প্রতিষ্ঠান এবং সংস্থাগুলো তাদের মৌলিক অধিকার রক্ষা করতে পারে। তারা এখন সেগুলোকে অকার্যকর ও বিপজ্জনক হিসেবে দেখে।
আরবের রাস্তায় যারা প্রতিবাদ করছে, ব্রাজিলের ফাভেলাসে ক্রমাগত আক্রমণের শিকার হচ্ছে, গাজার খোলা-হাওয়ার কারাগার থেকে বাঁচার চেষ্টা করছে বা বাংলাদেশের (কক্সবাজারে) বিস্তীর্ণ শরণার্থীশিবির থেকে বেরিয়ে আসার উপায় খুঁজছে—তারা আর বিশ্বাস করে না বা আশা করে না যে গ্লোবাল নর্থ এগিয়ে আসবে এবং তাদের কথিত পবিত্র ‘মানবাধিকার’ লঙ্ঘন হবে না, তা নিশ্চিত করার জন্য কিছু করবে।
শুধু আন্তর্জাতিক রাজনীতির জন্য বৈষম্যমূলক আদেশ, নীতি হিসেবে মানবাধিকারের পশ্চিমের ভন্ডামিকে আমরা এড়িয়ে চলতে পারি। আমরা প্রত্যেকের মৌলিক অধিকার সংজ্ঞায়িত এবং সুরক্ষার জন্য আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক, বৈচিত্র্যময় ও প্রতিনিধিত্বমূলক পদ্ধতি নিজেরাই তৈরি করতে পারি।
এটি করার মাধ্যমে গ্লোবাল সাউথের স্থানীয় সম্প্রদায় ও আদিবাসী জনগোষ্ঠী পরিবেশ সংরক্ষণ এবং টেকসই উন্নয়ন পুনর্বিবেচনা ও বাস্তবায়নে সক্রিয় এবং কেন্দ্রীয় ভূমিকা নিতে পারবে। যেহেতু আমরা একাধিক আন্তসংযুক্ত পরিবেশগত এবং মানবিক সংকটের মুখোমুখি, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবিলম্বে বর্তমান শাসনব্যবস্থায় মানবাধিকারের যে মৃত্যু ঘটছে তা বুঝতে হবে এবং দ্রুত একটি বিকল্প পদক্ষেপ নিতে হবে, যা সত্যিকার অর্থে সব মানুষের মৌলিক অধিকার এবং চাহিদা অন্তর্ভুক্ত করবে। সব মানুষের মৌলিক অধিকার রক্ষার জন্য আমাদের জরুরিভাবে একটি নতুন কাঠামো দরকার।
হাইথেম গুয়েসমি, তিউনিসিয়ার শিক্ষাবিদ ও লেখক
(আল জাজিরায় প্রকাশিত লেখাটি ইংরেজি থেকে অনূদিত ও ঈষৎ সংক্ষেপিত)

মানবাধিকার এখন মৃত একটি বিষয়। জলবায়ুজনিত নাজুক পরিস্থিতি, আপাতদৃষ্টিতে অন্তহীন সংঘাত এবং এর ফলে শরণার্থী-সংকট বেড়েছে। এ কারণে বিশ্বজুড়ে দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সবচেয়ে মৌলিক অধিকার রক্ষার জন্য একটি কার্যকর বৈশ্বিক কৌশলের অনুপস্থিতি এটি স্পষ্ট করেছে যে ‘মানবাধিকার’ ধারণাটির সব অর্থ এবং উদ্দেশ্য হারিয়েছে প্রত্যেকের জন্য, বিশেষ করে আমরা যারা গ্লোবাল সাউথের বাসিন্দা (আফ্রিকা ও এশিয়ার স্বল্পোন্নত দেশগুলো)।
জাতিসংঘের মতে, প্রায় ৮২ কোটি ৪০ লাখ মানুষ, যা বিশ্ব জনসংখ্যার ১০ শতাংশ প্রতি রাতে ক্ষুধার্ত অবস্থায় ঘুমাতে যায়। যারা ক্ষুধার সঙ্গে লড়াই করছে, তাদের মধ্যে ৮০ শতাংশ জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাস করছে। আর এই এলাকাগুলো গ্লোবাল সাউথে পড়েছে। যুদ্ধ ও অভ্যুত্থান—প্রায়ই বৈশ্বিক শক্তিগুলোর মধ্যে হয়ে থাকে। এসব বিষয় এই অঞ্চলগুলোতে নানাভাবে, নানান পরিমাণে ক্ষতি করছে।
তাদের দুর্দশার শেষ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা না দেখতে পেয়ে গ্লোবাল সাউথের অনেক বাসিন্দা নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধির জন্য গ্লোবাল নর্থে (ইউরোপ ও আমেরিকা) পাড়ি জমাতে মরুভূমি এবং সাগরে বিপজ্জনক যাত্রা শুরু করেছে। এই শরণার্থীদের মানবাধিকার রক্ষার জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার পরিবর্তে, পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলো যারা নিজেদের মানবাধিকারের ধারণার উদ্ভাবক বলে গর্ব করে, তারা তাদের সঙ্গে শত্রুর মতো আচরণ করছে।
ফলে হাজার হাজার মানুষ যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সীমান্তে অমানবিক অভিবাসী আটককেন্দ্রগুলোতে পড়ে আছে এবং ভূমধ্যসাগর এখন অভিবাসীদের কবরস্থান। ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশনের মিসিং মাইগ্রেন্টস প্রজেক্ট অনুসারে, ২০১৪ সাল থেকে ভূমধ্যসাগরে ২৮ হাজারের বেশি মানুষের ডুবে যাওয়ার ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে। মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা জানা অসম্ভব এবং সেটা সম্ভবত অনেক বেশি।
গ্লোবাল সাউথের বাসিন্দাদের এভাবে ভূমধ্যসাগরে ডুবে যাওয়াই যেন একমাত্র ভবিতব্য। যারা বিশ্বব্যাপী সংখ্যাগরিষ্ঠ, তারা ব্যাপকভাবে মারা যাচ্ছে। কারণ পশ্চিমা নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাদের মানবাধিকারকে সুরক্ষার যোগ্য বলে মনেই করে না। তারা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বেড়ে ওঠা প্রাকৃতিক দুর্যোগে এবং আরও ভূ-রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডার জন্য যুদ্ধে মারা যাচ্ছে। তাদের ড্রোন দিয়ে হত্যা করা হচ্ছে এবং জীবন্ত পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে।
মানবাধিকারের মৃত্যুর লক্ষণ সর্বব্যাপী। পশ্চিমা সরকারগুলো ইসরায়েলের বর্ণবাদী আচরণকে জবাবদিহির হাত থেকে রক্ষা করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করছে। তারা ইসরায়েলের নিপীড়ন প্রতিরোধকারী ফিলিস্তিনিদের এবং তাদের মুক্তির সংগ্রামকে সমর্থন করে এমন ব্যক্তিদের অপরাধী হিসেবে আখ্যায়িত করছে। গ্লোবাল নর্থের নেতৃস্থানীয় সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিগুলো তাদের প্ল্যাটফর্মে ইতিমধ্যেই প্রান্তিক এবং হুমকির মুখে থাকা জনসংখ্যাকে লক্ষ্য করে বিপজ্জনক ভুল তথ্য প্রচারের অনুমতি দিচ্ছে। ইউরোপীয় দেশগুলো এখনো একটি বিষাক্ত কীটনাশক গ্লোবাল সাউথের দেশগুলোতে বিক্রি করছে, যা কিনা শিশু এবং অনাগত শিশুদের জন্য ক্ষতিকর বলে ইউরোপীয় ইউনিয়নে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তালিকায় এ রকম আরও অনেক কিছুই আছে।
পশ্চিমারা সব সময় নিজেদের মানবাধিকারের সত্যিকারের রক্ষক হিসেবে বিক্রির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়া, চীন ও ইরানের মতো দেশগুলোর নাগরিকদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য প্রায়ই নিন্দা জানায় এবং এমনকি মাঝেমধ্যে দেশগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। তারা প্রায়ই এসব দেশকে সাহায্য দিতে মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নত করার শর্ত বেঁধে দেয়। কোনো কোনো দেশ অতীতে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে কি না, এই অজুহাতে সামরিক হস্তক্ষেপও শুরু করে।
উদাহরণস্বরূপ ইউরোপের একেবারে কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত ইউক্রেনে আক্রমণের প্রতিক্রিয়ায়, গ্লোবাল নর্থের দেশগুলো রাশিয়া যে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে, তার নিন্দাই করেনি। প্রয়োজনে ইউক্রেনের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে। কোনো বাধার সম্মুখীন না হয়ে অন্য দেশে যাতে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে পায় তার ব্যবস্থা করেছে। তারা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রতিও তাদের সমর্থন রেখেছিল এবং ক্রেমলিনকে দোষী সাব্যস্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য তদন্তকারীদের সরবরাহ করেছিল।
প্রকৃতপক্ষে, যে দেশগুলো ইউক্রেনের জনগণকে সাহায্য করার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছিল, তারা একইভাবে সুদানিদের জন্য তাদের সীমানা খুলে দেয়নি, যখন তারা একইভাবে গুরুতর সামরিক হুমকির মুখে পড়ে। তারা কখনো ফিলিস্তিনিদের জন্যও তা করেনি, যাদের অনেকেই এখনো হিংসাত্মক আক্রমণকারীর লৌহমুষ্টির মধ্যে বসবাস করছে।
আইসিসিকে কখন সমর্থন করবে, সে বিষয়টি তারা খুব বেছে বেছে করে থাকে। নিশ্চিতভাবে তারা আফ্রিকানদের বিরুদ্ধে আইসিসির বিচারকে সমর্থন করেছিল, যখন এটি তাদের অ্যাজেন্ডা অনুসারে উপযুক্ত ছিল। কিন্তু তারা কখনোই এর কৌঁসুলিদের তাদের নিজস্ব ড্রোন যুদ্ধ বা বেআইনি নির্যাতন কর্মসূচির কাছাকাছি কোথাও যেতে দেয়নি।
যদিও তারা এখন রাশিয়াকে সহযোগিতা করছে—এমন যেকোনো রাষ্ট্রকে নিন্দা করছে। গ্লোবাল সাউথে তারা নিজেরাই দীর্ঘদিন ধরে মানবাধিকারের উদ্বেগের চেয়ে ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে আসছে, নিপীড়নের শাসনকে সমর্থন করছে এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে দুর্বল করছে। আর এ কারণে গ্লোবাল সাউথের অনেক দেশ ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধকে সমর্থন করতে দ্বিধাগ্রস্ত হয়েছে।
বিশ্বব্যাপী মানবাধিকারব্যবস্থা ও আলোচনায় এই সংকট নতুন নয়। ১৯৮৪ সালে যখন জাতিসংঘে সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণাপত্র (ইউডিএইচআর) পাস হয়, তখন এটিকে আরও শান্তিপূর্ণ বিশ্বের দিকে একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং হলোকাস্টের ভয়াবহতা পেছনে ফেলে আসার পর এর একটি আশার রশ্মি ছিল, যা ইঙ্গিত দেয় যে একটি উন্নত বিশ্ব গড়ার, যেখানে সবার মৌলিক অধিকারগুলোর সম্মান করা সম্ভব হতে পারে। তবে এই স্বপ্ন বেশি দিন টেকেনি। যে জাতিগুলো শাসনব্যবস্থায় নতুন মানবাধিকারের বিকাশে এগিয়ে এসেছিল, তারা তাদের স্বার্থকে এগিয়ে নিতে, তাদের শত্রুদের আঘাত করতে এবং তাদের স্বার্থ সম্প্রসারণের জন্য দ্রুত তা লঙ্ঘন করতে শুরু করে। এমনকি তারা ‘গণতন্ত্র’ প্রতিষ্ঠার জন্য এবং ‘মানবাধিকার’ রক্ষার জন্য গ্লোবাল সাউথের বেশ কয়েকটি দেশকে আক্রমণ করে।
যারা ইউডিএইচআর স্বাক্ষরের পর থেকে গ্লোবাল নর্থের আগ্রাসন এবং দ্বৈত ভূমিকার কারণে সবচেয়ে বেশি ভুগছে, তারা আর নিশ্চিত নয় যে পশ্চিমা সরকার, প্রতিষ্ঠান এবং সংস্থাগুলো তাদের মৌলিক অধিকার রক্ষা করতে পারে। তারা এখন সেগুলোকে অকার্যকর ও বিপজ্জনক হিসেবে দেখে।
আরবের রাস্তায় যারা প্রতিবাদ করছে, ব্রাজিলের ফাভেলাসে ক্রমাগত আক্রমণের শিকার হচ্ছে, গাজার খোলা-হাওয়ার কারাগার থেকে বাঁচার চেষ্টা করছে বা বাংলাদেশের (কক্সবাজারে) বিস্তীর্ণ শরণার্থীশিবির থেকে বেরিয়ে আসার উপায় খুঁজছে—তারা আর বিশ্বাস করে না বা আশা করে না যে গ্লোবাল নর্থ এগিয়ে আসবে এবং তাদের কথিত পবিত্র ‘মানবাধিকার’ লঙ্ঘন হবে না, তা নিশ্চিত করার জন্য কিছু করবে।
শুধু আন্তর্জাতিক রাজনীতির জন্য বৈষম্যমূলক আদেশ, নীতি হিসেবে মানবাধিকারের পশ্চিমের ভন্ডামিকে আমরা এড়িয়ে চলতে পারি। আমরা প্রত্যেকের মৌলিক অধিকার সংজ্ঞায়িত এবং সুরক্ষার জন্য আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক, বৈচিত্র্যময় ও প্রতিনিধিত্বমূলক পদ্ধতি নিজেরাই তৈরি করতে পারি।
এটি করার মাধ্যমে গ্লোবাল সাউথের স্থানীয় সম্প্রদায় ও আদিবাসী জনগোষ্ঠী পরিবেশ সংরক্ষণ এবং টেকসই উন্নয়ন পুনর্বিবেচনা ও বাস্তবায়নে সক্রিয় এবং কেন্দ্রীয় ভূমিকা নিতে পারবে। যেহেতু আমরা একাধিক আন্তসংযুক্ত পরিবেশগত এবং মানবিক সংকটের মুখোমুখি, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবিলম্বে বর্তমান শাসনব্যবস্থায় মানবাধিকারের যে মৃত্যু ঘটছে তা বুঝতে হবে এবং দ্রুত একটি বিকল্প পদক্ষেপ নিতে হবে, যা সত্যিকার অর্থে সব মানুষের মৌলিক অধিকার এবং চাহিদা অন্তর্ভুক্ত করবে। সব মানুষের মৌলিক অধিকার রক্ষার জন্য আমাদের জরুরিভাবে একটি নতুন কাঠামো দরকার।
হাইথেম গুয়েসমি, তিউনিসিয়ার শিক্ষাবিদ ও লেখক
(আল জাজিরায় প্রকাশিত লেখাটি ইংরেজি থেকে অনূদিত ও ঈষৎ সংক্ষেপিত)


গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।


মানবাধিকার এখন মৃত একটি বিষয়। জলবায়ুজনিত নাজুক পরিস্থিতি, আপাতদৃষ্টিতে অন্তহীন সংঘাত এবং এর ফলে শরণার্থী-সংকট বেড়েছে। এ কারণে বিশ্বজুড়ে দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সবচেয়ে মৌলিক অধিকার রক্ষার জন্য একটি কার্যকর বৈশ্বিক কৌশলের
০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]


মানবাধিকার এখন মৃত একটি বিষয়। জলবায়ুজনিত নাজুক পরিস্থিতি, আপাতদৃষ্টিতে অন্তহীন সংঘাত এবং এর ফলে শরণার্থী-সংকট বেড়েছে। এ কারণে বিশ্বজুড়ে দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সবচেয়ে মৌলিক অধিকার রক্ষার জন্য একটি কার্যকর বৈশ্বিক কৌশলের
০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।


মানবাধিকার এখন মৃত একটি বিষয়। জলবায়ুজনিত নাজুক পরিস্থিতি, আপাতদৃষ্টিতে অন্তহীন সংঘাত এবং এর ফলে শরণার্থী-সংকট বেড়েছে। এ কারণে বিশ্বজুড়ে দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সবচেয়ে মৌলিক অধিকার রক্ষার জন্য একটি কার্যকর বৈশ্বিক কৌশলের
০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।


মানবাধিকার এখন মৃত একটি বিষয়। জলবায়ুজনিত নাজুক পরিস্থিতি, আপাতদৃষ্টিতে অন্তহীন সংঘাত এবং এর ফলে শরণার্থী-সংকট বেড়েছে। এ কারণে বিশ্বজুড়ে দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সবচেয়ে মৌলিক অধিকার রক্ষার জন্য একটি কার্যকর বৈশ্বিক কৌশলের
০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫