ড. মো. গোলাম রহমান

মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে বাংলাদেশের এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র্যাব) জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে না নেওয়ার দাবি জানিয়ে ১২টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা গত ৮ নভেম্বর জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জ্যঁ পিয়ের ল্যাকোঁয়া বরাবর ব্যক্তিগতভাবে একটি চিঠি দিয়েছে। ইতিমধ্যে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ চিঠিটি প্রকাশ করেছে। বিষয়টি গণমাধ্যমে আসার পর এ নিয়ে জনমনে, রাজনৈতিক দলে ও আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনা দানা বাঁধতে শুরু করেছে।
যেকোনো দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা আলোচিত হয়, নিন্দিত হয়। তার প্রধান কারণ এসব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিয়ে জনমনে প্রশ্ন থেকে যায়। খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে শুরু করে চীন, রাশিয়া, কোরিয়া, ভারত, পাকিস্তান কিংবা বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও এসব নিয়ে প্রচুর অভিযোগ উত্থাপিত হয় এবং কিছু কিছু ব্যবস্থাও নেওয়া হয়। সম্ভবত উন্নয়নশীল দেশগুলোর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ও এর প্রতিকার নিয়ে বেশি কথা হয়ে থাকে। বাংলাদেশে বিভিন্ন সময়ে ঘটে যাওয়া কতিপয় ঘটনা মানুষের মনে প্রশ্নের অবতারণা করে, বিতর্ক ওঠে এবং সেসব অস্বাভাবিকও নয়।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছে এবং অংশগ্রহণকারীরা যোগ্যতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠনের অভিযোগের কারণে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি নতুন করে সামনে এসেছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, ২০০৪ সালে র্যাব গঠনের শুরু থেকেই বিভিন্ন রকম কার্যকলাপ ঘটছে, যাতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। ২০১৯ সালের ‘কনভেনশন অ্যাগেইনস্ট টর্চার’-এর একটি কমিটি জাতিসংঘ শান্তি মিশনে অংশগ্রহণ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ২০২১ সালের মার্চে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের কমিশনার মিচেল ব্যাচলেট সমস্যাটিকে দীর্ঘদিনের বলে অভিহিত করেছেন। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ গত ৫ ডিসেম্বর এসব লঙ্ঘন ও অপব্যবহারকে পক্ষান্তরে কর্মকর্তাদের উৎসাহিত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে। (ডেইলি স্টার, জানুয়ারি ২১, ২০২২, পৃষ্ঠা ১ ও ২)।
আমরা জানি, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক কোভনান্ট-এর প্রধান নয়টি বৈশিষ্ট্যের মধ্যে আটটি মেনে নিয়ে চুক্তি বাস্তবায়ন করছে। এর মধ্যে ইন্টারন্যাশনাল কমেন্ট অন সিভিল অ্যান্ড পলিটিক্যাল রাইটস এবং ইউএন কনভেনশন অ্যাগেইনস্ট টর্চার অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু তারপরও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা অপ্রত্যাশিত হলেও ঘটেছে। বাংলাদেশ স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন অঙ্গনে সুনাম অর্জন করে চলছে। জলবায়ু পরিবর্তন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, জীবনমানের উন্নয়ন এবং নানাবিধ আধুনিক সমাজব্যবস্থায় স্বাক্ষর রেখে চলেছে অন্য অনেক দেশের তুলনায়; বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোয় উদাহরণ সৃষ্টি করে চলেছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার বিদায়কালে একটি পত্রিকায় সাক্ষাৎকারে বলেছেন, চীন হচ্ছে তাঁদের প্রতিযোগী, তাঁদের শত্রু দেশ নয়। চীনের সহযোগিতা তাঁদের প্রয়োজন রয়েছে। গণতন্ত্র উন্নয়নে বাংলাদেশকে আরও সহায়তা দান, মানবাধিকার মর্যাদায় কার্যকর ভূমিকা, দুর্নীতি দমনে সহায়তার ইস্যুতে বাংলাদেশকে সংলাপ চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকটে বাংলাদেশকে সাহায্যের কথা বলেছেন। ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় আঞ্চলিক এবং বিশ্বশান্তি রক্ষায় বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন।
ক্রমাবনতিমান মানবাধিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্যও বড় চ্যালেঞ্জ। সভ্যতার শিখরে আরোহণরত দেশগুলো দেশের অর্থনৈতিক, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক উন্নয়ন এবং স্বার্থ রক্ষার জন্য নিজেদের নিয়োজিত করছে। আমরা চাই, গণতান্ত্রিক সমাজ বিকাশের স্বার্থে দেশের সব কাজে, বিশেষ করে সুশাসন অর্জনে জবাবদিহি কায়েম হবে। অতএব, রাজনৈতিক অঙ্গনে দুর্নীতি দমন, সুশাসন ও জবাবদিহির বিষয় চর্চা হবে, এটিই স্বাভাবিক। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। অন্যান্য দেশের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা পর্যালোচনা করে নিশ্চয়ই আমাদের কোনো স্বস্তি নেই, নেই কোনো আত্মসন্তুষ্টিও। তারপরও কয়েকটি বিষয়ে আমাদের জানা থাকা দরকার।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ২০২০-এর প্রতিবেদনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ঘটে যাওয়া এমন কিছু মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, অন্ততপক্ষে এক হাজার লোক পুলিশের আগ্নেয়াস্ত্রের গুলিতে নিহত হয়েছে। জনগণের জন্য পরিবেশিত সীমিতসংখ্যক পরিসংখ্যানে জানা যায়, এসব ঘটনায় কালো মানুষদের সংখ্যা আনুপাতিক হারে উল্লেখযোগ্য। যুক্তরাষ্ট্রের বার্ষিক কর্মসূচির অধীনে এসব মৃত্যুর হিসাব সঠিকভাবে রক্ষিত হয় না। ২০০১ থেকে ২০০৯ সিআইএ পরিচালিত গোপন বন্দী কার্যক্রমের অধীন যেসব ডজন ডজন বন্দী গুম, নির্যাতন এবং অন্যান্য নিপীড়নের শিকার হয়েছে, তাদের বিচার প্রাপ্তির সুযোগ পর্যন্ত দেওয়া হয়নি।
শুধু সীমিত অনুসন্ধানের কয়েকটি অভিযোগকে কোনো শাস্তির বিধান না করে সেগুলোর পরিসমাপ্তি টানা হয়েছে (অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল রিপোর্ট ২০২০ দ্রষ্টব্য)। ‘গ্লোবাল ওয়ার’-এর মতো একটি ত্রুটিপূর্ণ নীতির আলোকে যুক্তরাষ্ট্র সারা বিশ্বের কয়েকটি দেশে উপর্যুপরি সামরিক ড্রোন ব্যবহার করে মানবতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। এসব নিয়ে আলোচনা অনেক দীর্ঘ হতে পারে, কিন্তু আমার মনে হয় মানবাধিকার সংরক্ষণ হচ্ছে গণতন্ত্রের অন্যতম চেতনা, যা সব দেশের প্রত্যেক মানুষের জীবন-জীবিকা ও স্বাধীনতাকে সুসংহত করে। তাই মানবাধিকার লঙ্ঘন হয় এমন কাজ থেকে সবাইকে নিবৃত্ত থাকা উচিত।
বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির বিকাশের ধারা বজায় আছে। গণতন্ত্র যদি সঠিক চর্চায় না থাকে, তাহলে জনগণের অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক পরিসর সংকীর্ণ হয়ে আসবে। সমাজে বিভিন্ন ধর্ম-জাতি-গোষ্ঠী কিংবা সংখ্যালঘুদের ওপর সাম্প্রদায়িক ও স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি বা মহল নিজেদের কোটারি স্বার্থে হামলা ও লুটপাটের মতো ঘটনা ঘটিয়ে থাকে। আমরা ২০০১-এর নির্বাচন-পরবর্তী এ রকম ঘটনা গণমাধ্যমে সবিস্তারে প্রকাশিত হতে দেখেছি। পরবর্তীকালেও মাঝেমধ্যেই এ ধরনের হঠকারী ঘটনা ঘটেছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিঘ্নিত হয়েছে, মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে, আবার কতিপয় ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সক্রিয়তাও দেখেছি। দেশে সন্ত্রাস, জঙ্গি দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিশেষ ভূমিকা নিতেও দেখেছি। হোলি আর্টিজানের মতো নৃশংস ঘটনার পর শক্ত হাতে জঙ্গি দমন ও তাদের পরিকল্পনার মূল উৎপাটন করতেও দেখেছি।
দেশের মানুষ সব ধরনের মানবতাবিরোধী অপতৎপরতাকে ধিক্কার জানায়। দেশের বর্তমান সরকারও এসব বিষয়ে জিরো টলারেন্স মনোভাব প্রকাশ করে থাকে। বিক্ষিপ্তভাবে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো অবশ্যই অনভিপ্রেত ও অত্যন্ত নিন্দনীয়। এগুলো জবাবদিহির ঊর্ধ্বে নয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ প্রসঙ্গে সম্প্রতি প্রণিধানযোগ্য বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, র্যাব তৈরি করেছে আমেরিকান ও ব্রিটিশরা। তারা প্রশিক্ষণ দিয়েছে। ইউএসএ তাদের শিখিয়েছে রুলস অব এনগেজমেন্ট (নিয়মকানুন), কীভাবে মানুষের সঙ্গে ব্যবহার করতে হবে, কীভাবে জিজ্ঞাসাবাদ (হাউ টু ইন্টারোগেট) করতে হবে ইত্যাদি। তিনি আরও বলেছেন, র্যাবের যদি রুলস অব এনগেজমেন্টে কোনো দুর্বলতা থাকে, এই রুলস অব এনগেজমেন্টের জন্য যদি কোনো মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়, অবশ্যই নতুন করে ট্রেনিং হবে। তিনি আরও বলেছেন, তার জন্য কোনো ব্যক্তিবিশেষের ওপর হঠাৎ করে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া জাস্টিফাইড না। বাংলাদেশ বিচারহীনতার সংস্কৃতিতে বিশ্বাস করে না। সরকার এ বিষয়ে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। ইতিপূর্বের বিচারহীনতার মতো আইনকে বাতিল করে প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা হয়েছে।
বাংলাদেশের ঘটনাবলি নিয়ে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর আবেদন যতটা না সংস্কারমূলক, তার চেয়ে বেশি অভিযোগমূলক। বাংলাদেশ শান্তি মিশনে সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে বিশ্বে নজির স্থাপন করেছে। এই মর্যাদাসম্পন্ন সেবামূলক কাজের স্বীকৃতি এবং এই সুবাদে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের বিরুদ্ধে কোনো কোনো মহল বিরুদ্ধাচরণ করতে পারে। তাদের ভূমিকা সম্পর্কে আমাদের চোখ-কান খোলা রাখা প্রয়োজন।
এটা অত্যন্ত সংগত যে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাকে আমরা সমালোচনা করি। সভ্য সমাজও তা-ই করে। প্রতিটি দেশের প্রত্যেক মানুষের এই প্রত্যাশা হওয়া উচিত। দেশ-কাল-পাত্রভেদে বিশ্বের সব মানুষই মানুষ। মানবকল্যাণে নিবেদিত হয়ে দেশের জন্য, জনগণের জন্য কাজ করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। জনগণের জীবনমানের উন্নয়ন করার লক্ষ্যে সুশাসন নিশ্চিত করা প্রয়োজন সর্বত্র। আমাদের দেশে এর প্রয়োগ যেমন জরুরি, অন্য দেশগুলোতেও একইভাবে মানবাধিকারের যথাযথ প্রয়োগ জরুরি। মানবাধিকার প্রতিষ্ঠিত হোক আমাদের দেশে, প্রতিটি দেশে। কোনো দেশ, কোনো জাতি জবাবদিহির ঊর্ধ্বে নয়। আসুন, মানবতার জয়গান গাই।
লেখক: ড. মো. গোলাম রহমান।
সম্পাদক,আজকের পত্রিকা

মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে বাংলাদেশের এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র্যাব) জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে না নেওয়ার দাবি জানিয়ে ১২টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা গত ৮ নভেম্বর জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জ্যঁ পিয়ের ল্যাকোঁয়া বরাবর ব্যক্তিগতভাবে একটি চিঠি দিয়েছে। ইতিমধ্যে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ চিঠিটি প্রকাশ করেছে। বিষয়টি গণমাধ্যমে আসার পর এ নিয়ে জনমনে, রাজনৈতিক দলে ও আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনা দানা বাঁধতে শুরু করেছে।
যেকোনো দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা আলোচিত হয়, নিন্দিত হয়। তার প্রধান কারণ এসব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিয়ে জনমনে প্রশ্ন থেকে যায়। খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে শুরু করে চীন, রাশিয়া, কোরিয়া, ভারত, পাকিস্তান কিংবা বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও এসব নিয়ে প্রচুর অভিযোগ উত্থাপিত হয় এবং কিছু কিছু ব্যবস্থাও নেওয়া হয়। সম্ভবত উন্নয়নশীল দেশগুলোর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ও এর প্রতিকার নিয়ে বেশি কথা হয়ে থাকে। বাংলাদেশে বিভিন্ন সময়ে ঘটে যাওয়া কতিপয় ঘটনা মানুষের মনে প্রশ্নের অবতারণা করে, বিতর্ক ওঠে এবং সেসব অস্বাভাবিকও নয়।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছে এবং অংশগ্রহণকারীরা যোগ্যতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠনের অভিযোগের কারণে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি নতুন করে সামনে এসেছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, ২০০৪ সালে র্যাব গঠনের শুরু থেকেই বিভিন্ন রকম কার্যকলাপ ঘটছে, যাতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। ২০১৯ সালের ‘কনভেনশন অ্যাগেইনস্ট টর্চার’-এর একটি কমিটি জাতিসংঘ শান্তি মিশনে অংশগ্রহণ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ২০২১ সালের মার্চে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের কমিশনার মিচেল ব্যাচলেট সমস্যাটিকে দীর্ঘদিনের বলে অভিহিত করেছেন। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ গত ৫ ডিসেম্বর এসব লঙ্ঘন ও অপব্যবহারকে পক্ষান্তরে কর্মকর্তাদের উৎসাহিত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে। (ডেইলি স্টার, জানুয়ারি ২১, ২০২২, পৃষ্ঠা ১ ও ২)।
আমরা জানি, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক কোভনান্ট-এর প্রধান নয়টি বৈশিষ্ট্যের মধ্যে আটটি মেনে নিয়ে চুক্তি বাস্তবায়ন করছে। এর মধ্যে ইন্টারন্যাশনাল কমেন্ট অন সিভিল অ্যান্ড পলিটিক্যাল রাইটস এবং ইউএন কনভেনশন অ্যাগেইনস্ট টর্চার অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু তারপরও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা অপ্রত্যাশিত হলেও ঘটেছে। বাংলাদেশ স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন অঙ্গনে সুনাম অর্জন করে চলছে। জলবায়ু পরিবর্তন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, জীবনমানের উন্নয়ন এবং নানাবিধ আধুনিক সমাজব্যবস্থায় স্বাক্ষর রেখে চলেছে অন্য অনেক দেশের তুলনায়; বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোয় উদাহরণ সৃষ্টি করে চলেছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার বিদায়কালে একটি পত্রিকায় সাক্ষাৎকারে বলেছেন, চীন হচ্ছে তাঁদের প্রতিযোগী, তাঁদের শত্রু দেশ নয়। চীনের সহযোগিতা তাঁদের প্রয়োজন রয়েছে। গণতন্ত্র উন্নয়নে বাংলাদেশকে আরও সহায়তা দান, মানবাধিকার মর্যাদায় কার্যকর ভূমিকা, দুর্নীতি দমনে সহায়তার ইস্যুতে বাংলাদেশকে সংলাপ চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকটে বাংলাদেশকে সাহায্যের কথা বলেছেন। ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় আঞ্চলিক এবং বিশ্বশান্তি রক্ষায় বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন।
ক্রমাবনতিমান মানবাধিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্যও বড় চ্যালেঞ্জ। সভ্যতার শিখরে আরোহণরত দেশগুলো দেশের অর্থনৈতিক, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক উন্নয়ন এবং স্বার্থ রক্ষার জন্য নিজেদের নিয়োজিত করছে। আমরা চাই, গণতান্ত্রিক সমাজ বিকাশের স্বার্থে দেশের সব কাজে, বিশেষ করে সুশাসন অর্জনে জবাবদিহি কায়েম হবে। অতএব, রাজনৈতিক অঙ্গনে দুর্নীতি দমন, সুশাসন ও জবাবদিহির বিষয় চর্চা হবে, এটিই স্বাভাবিক। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। অন্যান্য দেশের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা পর্যালোচনা করে নিশ্চয়ই আমাদের কোনো স্বস্তি নেই, নেই কোনো আত্মসন্তুষ্টিও। তারপরও কয়েকটি বিষয়ে আমাদের জানা থাকা দরকার।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ২০২০-এর প্রতিবেদনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ঘটে যাওয়া এমন কিছু মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, অন্ততপক্ষে এক হাজার লোক পুলিশের আগ্নেয়াস্ত্রের গুলিতে নিহত হয়েছে। জনগণের জন্য পরিবেশিত সীমিতসংখ্যক পরিসংখ্যানে জানা যায়, এসব ঘটনায় কালো মানুষদের সংখ্যা আনুপাতিক হারে উল্লেখযোগ্য। যুক্তরাষ্ট্রের বার্ষিক কর্মসূচির অধীনে এসব মৃত্যুর হিসাব সঠিকভাবে রক্ষিত হয় না। ২০০১ থেকে ২০০৯ সিআইএ পরিচালিত গোপন বন্দী কার্যক্রমের অধীন যেসব ডজন ডজন বন্দী গুম, নির্যাতন এবং অন্যান্য নিপীড়নের শিকার হয়েছে, তাদের বিচার প্রাপ্তির সুযোগ পর্যন্ত দেওয়া হয়নি।
শুধু সীমিত অনুসন্ধানের কয়েকটি অভিযোগকে কোনো শাস্তির বিধান না করে সেগুলোর পরিসমাপ্তি টানা হয়েছে (অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল রিপোর্ট ২০২০ দ্রষ্টব্য)। ‘গ্লোবাল ওয়ার’-এর মতো একটি ত্রুটিপূর্ণ নীতির আলোকে যুক্তরাষ্ট্র সারা বিশ্বের কয়েকটি দেশে উপর্যুপরি সামরিক ড্রোন ব্যবহার করে মানবতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। এসব নিয়ে আলোচনা অনেক দীর্ঘ হতে পারে, কিন্তু আমার মনে হয় মানবাধিকার সংরক্ষণ হচ্ছে গণতন্ত্রের অন্যতম চেতনা, যা সব দেশের প্রত্যেক মানুষের জীবন-জীবিকা ও স্বাধীনতাকে সুসংহত করে। তাই মানবাধিকার লঙ্ঘন হয় এমন কাজ থেকে সবাইকে নিবৃত্ত থাকা উচিত।
বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির বিকাশের ধারা বজায় আছে। গণতন্ত্র যদি সঠিক চর্চায় না থাকে, তাহলে জনগণের অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক পরিসর সংকীর্ণ হয়ে আসবে। সমাজে বিভিন্ন ধর্ম-জাতি-গোষ্ঠী কিংবা সংখ্যালঘুদের ওপর সাম্প্রদায়িক ও স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি বা মহল নিজেদের কোটারি স্বার্থে হামলা ও লুটপাটের মতো ঘটনা ঘটিয়ে থাকে। আমরা ২০০১-এর নির্বাচন-পরবর্তী এ রকম ঘটনা গণমাধ্যমে সবিস্তারে প্রকাশিত হতে দেখেছি। পরবর্তীকালেও মাঝেমধ্যেই এ ধরনের হঠকারী ঘটনা ঘটেছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিঘ্নিত হয়েছে, মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে, আবার কতিপয় ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সক্রিয়তাও দেখেছি। দেশে সন্ত্রাস, জঙ্গি দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিশেষ ভূমিকা নিতেও দেখেছি। হোলি আর্টিজানের মতো নৃশংস ঘটনার পর শক্ত হাতে জঙ্গি দমন ও তাদের পরিকল্পনার মূল উৎপাটন করতেও দেখেছি।
দেশের মানুষ সব ধরনের মানবতাবিরোধী অপতৎপরতাকে ধিক্কার জানায়। দেশের বর্তমান সরকারও এসব বিষয়ে জিরো টলারেন্স মনোভাব প্রকাশ করে থাকে। বিক্ষিপ্তভাবে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো অবশ্যই অনভিপ্রেত ও অত্যন্ত নিন্দনীয়। এগুলো জবাবদিহির ঊর্ধ্বে নয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ প্রসঙ্গে সম্প্রতি প্রণিধানযোগ্য বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, র্যাব তৈরি করেছে আমেরিকান ও ব্রিটিশরা। তারা প্রশিক্ষণ দিয়েছে। ইউএসএ তাদের শিখিয়েছে রুলস অব এনগেজমেন্ট (নিয়মকানুন), কীভাবে মানুষের সঙ্গে ব্যবহার করতে হবে, কীভাবে জিজ্ঞাসাবাদ (হাউ টু ইন্টারোগেট) করতে হবে ইত্যাদি। তিনি আরও বলেছেন, র্যাবের যদি রুলস অব এনগেজমেন্টে কোনো দুর্বলতা থাকে, এই রুলস অব এনগেজমেন্টের জন্য যদি কোনো মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়, অবশ্যই নতুন করে ট্রেনিং হবে। তিনি আরও বলেছেন, তার জন্য কোনো ব্যক্তিবিশেষের ওপর হঠাৎ করে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া জাস্টিফাইড না। বাংলাদেশ বিচারহীনতার সংস্কৃতিতে বিশ্বাস করে না। সরকার এ বিষয়ে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। ইতিপূর্বের বিচারহীনতার মতো আইনকে বাতিল করে প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা হয়েছে।
বাংলাদেশের ঘটনাবলি নিয়ে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর আবেদন যতটা না সংস্কারমূলক, তার চেয়ে বেশি অভিযোগমূলক। বাংলাদেশ শান্তি মিশনে সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে বিশ্বে নজির স্থাপন করেছে। এই মর্যাদাসম্পন্ন সেবামূলক কাজের স্বীকৃতি এবং এই সুবাদে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের বিরুদ্ধে কোনো কোনো মহল বিরুদ্ধাচরণ করতে পারে। তাদের ভূমিকা সম্পর্কে আমাদের চোখ-কান খোলা রাখা প্রয়োজন।
এটা অত্যন্ত সংগত যে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাকে আমরা সমালোচনা করি। সভ্য সমাজও তা-ই করে। প্রতিটি দেশের প্রত্যেক মানুষের এই প্রত্যাশা হওয়া উচিত। দেশ-কাল-পাত্রভেদে বিশ্বের সব মানুষই মানুষ। মানবকল্যাণে নিবেদিত হয়ে দেশের জন্য, জনগণের জন্য কাজ করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। জনগণের জীবনমানের উন্নয়ন করার লক্ষ্যে সুশাসন নিশ্চিত করা প্রয়োজন সর্বত্র। আমাদের দেশে এর প্রয়োগ যেমন জরুরি, অন্য দেশগুলোতেও একইভাবে মানবাধিকারের যথাযথ প্রয়োগ জরুরি। মানবাধিকার প্রতিষ্ঠিত হোক আমাদের দেশে, প্রতিটি দেশে। কোনো দেশ, কোনো জাতি জবাবদিহির ঊর্ধ্বে নয়। আসুন, মানবতার জয়গান গাই।
লেখক: ড. মো. গোলাম রহমান।
সম্পাদক,আজকের পত্রিকা
ড. মো. গোলাম রহমান

মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে বাংলাদেশের এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র্যাব) জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে না নেওয়ার দাবি জানিয়ে ১২টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা গত ৮ নভেম্বর জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জ্যঁ পিয়ের ল্যাকোঁয়া বরাবর ব্যক্তিগতভাবে একটি চিঠি দিয়েছে। ইতিমধ্যে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ চিঠিটি প্রকাশ করেছে। বিষয়টি গণমাধ্যমে আসার পর এ নিয়ে জনমনে, রাজনৈতিক দলে ও আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনা দানা বাঁধতে শুরু করেছে।
যেকোনো দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা আলোচিত হয়, নিন্দিত হয়। তার প্রধান কারণ এসব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিয়ে জনমনে প্রশ্ন থেকে যায়। খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে শুরু করে চীন, রাশিয়া, কোরিয়া, ভারত, পাকিস্তান কিংবা বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও এসব নিয়ে প্রচুর অভিযোগ উত্থাপিত হয় এবং কিছু কিছু ব্যবস্থাও নেওয়া হয়। সম্ভবত উন্নয়নশীল দেশগুলোর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ও এর প্রতিকার নিয়ে বেশি কথা হয়ে থাকে। বাংলাদেশে বিভিন্ন সময়ে ঘটে যাওয়া কতিপয় ঘটনা মানুষের মনে প্রশ্নের অবতারণা করে, বিতর্ক ওঠে এবং সেসব অস্বাভাবিকও নয়।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছে এবং অংশগ্রহণকারীরা যোগ্যতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠনের অভিযোগের কারণে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি নতুন করে সামনে এসেছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, ২০০৪ সালে র্যাব গঠনের শুরু থেকেই বিভিন্ন রকম কার্যকলাপ ঘটছে, যাতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। ২০১৯ সালের ‘কনভেনশন অ্যাগেইনস্ট টর্চার’-এর একটি কমিটি জাতিসংঘ শান্তি মিশনে অংশগ্রহণ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ২০২১ সালের মার্চে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের কমিশনার মিচেল ব্যাচলেট সমস্যাটিকে দীর্ঘদিনের বলে অভিহিত করেছেন। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ গত ৫ ডিসেম্বর এসব লঙ্ঘন ও অপব্যবহারকে পক্ষান্তরে কর্মকর্তাদের উৎসাহিত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে। (ডেইলি স্টার, জানুয়ারি ২১, ২০২২, পৃষ্ঠা ১ ও ২)।
আমরা জানি, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক কোভনান্ট-এর প্রধান নয়টি বৈশিষ্ট্যের মধ্যে আটটি মেনে নিয়ে চুক্তি বাস্তবায়ন করছে। এর মধ্যে ইন্টারন্যাশনাল কমেন্ট অন সিভিল অ্যান্ড পলিটিক্যাল রাইটস এবং ইউএন কনভেনশন অ্যাগেইনস্ট টর্চার অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু তারপরও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা অপ্রত্যাশিত হলেও ঘটেছে। বাংলাদেশ স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন অঙ্গনে সুনাম অর্জন করে চলছে। জলবায়ু পরিবর্তন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, জীবনমানের উন্নয়ন এবং নানাবিধ আধুনিক সমাজব্যবস্থায় স্বাক্ষর রেখে চলেছে অন্য অনেক দেশের তুলনায়; বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোয় উদাহরণ সৃষ্টি করে চলেছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার বিদায়কালে একটি পত্রিকায় সাক্ষাৎকারে বলেছেন, চীন হচ্ছে তাঁদের প্রতিযোগী, তাঁদের শত্রু দেশ নয়। চীনের সহযোগিতা তাঁদের প্রয়োজন রয়েছে। গণতন্ত্র উন্নয়নে বাংলাদেশকে আরও সহায়তা দান, মানবাধিকার মর্যাদায় কার্যকর ভূমিকা, দুর্নীতি দমনে সহায়তার ইস্যুতে বাংলাদেশকে সংলাপ চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকটে বাংলাদেশকে সাহায্যের কথা বলেছেন। ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় আঞ্চলিক এবং বিশ্বশান্তি রক্ষায় বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন।
ক্রমাবনতিমান মানবাধিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্যও বড় চ্যালেঞ্জ। সভ্যতার শিখরে আরোহণরত দেশগুলো দেশের অর্থনৈতিক, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক উন্নয়ন এবং স্বার্থ রক্ষার জন্য নিজেদের নিয়োজিত করছে। আমরা চাই, গণতান্ত্রিক সমাজ বিকাশের স্বার্থে দেশের সব কাজে, বিশেষ করে সুশাসন অর্জনে জবাবদিহি কায়েম হবে। অতএব, রাজনৈতিক অঙ্গনে দুর্নীতি দমন, সুশাসন ও জবাবদিহির বিষয় চর্চা হবে, এটিই স্বাভাবিক। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। অন্যান্য দেশের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা পর্যালোচনা করে নিশ্চয়ই আমাদের কোনো স্বস্তি নেই, নেই কোনো আত্মসন্তুষ্টিও। তারপরও কয়েকটি বিষয়ে আমাদের জানা থাকা দরকার।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ২০২০-এর প্রতিবেদনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ঘটে যাওয়া এমন কিছু মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, অন্ততপক্ষে এক হাজার লোক পুলিশের আগ্নেয়াস্ত্রের গুলিতে নিহত হয়েছে। জনগণের জন্য পরিবেশিত সীমিতসংখ্যক পরিসংখ্যানে জানা যায়, এসব ঘটনায় কালো মানুষদের সংখ্যা আনুপাতিক হারে উল্লেখযোগ্য। যুক্তরাষ্ট্রের বার্ষিক কর্মসূচির অধীনে এসব মৃত্যুর হিসাব সঠিকভাবে রক্ষিত হয় না। ২০০১ থেকে ২০০৯ সিআইএ পরিচালিত গোপন বন্দী কার্যক্রমের অধীন যেসব ডজন ডজন বন্দী গুম, নির্যাতন এবং অন্যান্য নিপীড়নের শিকার হয়েছে, তাদের বিচার প্রাপ্তির সুযোগ পর্যন্ত দেওয়া হয়নি।
শুধু সীমিত অনুসন্ধানের কয়েকটি অভিযোগকে কোনো শাস্তির বিধান না করে সেগুলোর পরিসমাপ্তি টানা হয়েছে (অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল রিপোর্ট ২০২০ দ্রষ্টব্য)। ‘গ্লোবাল ওয়ার’-এর মতো একটি ত্রুটিপূর্ণ নীতির আলোকে যুক্তরাষ্ট্র সারা বিশ্বের কয়েকটি দেশে উপর্যুপরি সামরিক ড্রোন ব্যবহার করে মানবতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। এসব নিয়ে আলোচনা অনেক দীর্ঘ হতে পারে, কিন্তু আমার মনে হয় মানবাধিকার সংরক্ষণ হচ্ছে গণতন্ত্রের অন্যতম চেতনা, যা সব দেশের প্রত্যেক মানুষের জীবন-জীবিকা ও স্বাধীনতাকে সুসংহত করে। তাই মানবাধিকার লঙ্ঘন হয় এমন কাজ থেকে সবাইকে নিবৃত্ত থাকা উচিত।
বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির বিকাশের ধারা বজায় আছে। গণতন্ত্র যদি সঠিক চর্চায় না থাকে, তাহলে জনগণের অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক পরিসর সংকীর্ণ হয়ে আসবে। সমাজে বিভিন্ন ধর্ম-জাতি-গোষ্ঠী কিংবা সংখ্যালঘুদের ওপর সাম্প্রদায়িক ও স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি বা মহল নিজেদের কোটারি স্বার্থে হামলা ও লুটপাটের মতো ঘটনা ঘটিয়ে থাকে। আমরা ২০০১-এর নির্বাচন-পরবর্তী এ রকম ঘটনা গণমাধ্যমে সবিস্তারে প্রকাশিত হতে দেখেছি। পরবর্তীকালেও মাঝেমধ্যেই এ ধরনের হঠকারী ঘটনা ঘটেছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিঘ্নিত হয়েছে, মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে, আবার কতিপয় ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সক্রিয়তাও দেখেছি। দেশে সন্ত্রাস, জঙ্গি দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিশেষ ভূমিকা নিতেও দেখেছি। হোলি আর্টিজানের মতো নৃশংস ঘটনার পর শক্ত হাতে জঙ্গি দমন ও তাদের পরিকল্পনার মূল উৎপাটন করতেও দেখেছি।
দেশের মানুষ সব ধরনের মানবতাবিরোধী অপতৎপরতাকে ধিক্কার জানায়। দেশের বর্তমান সরকারও এসব বিষয়ে জিরো টলারেন্স মনোভাব প্রকাশ করে থাকে। বিক্ষিপ্তভাবে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো অবশ্যই অনভিপ্রেত ও অত্যন্ত নিন্দনীয়। এগুলো জবাবদিহির ঊর্ধ্বে নয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ প্রসঙ্গে সম্প্রতি প্রণিধানযোগ্য বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, র্যাব তৈরি করেছে আমেরিকান ও ব্রিটিশরা। তারা প্রশিক্ষণ দিয়েছে। ইউএসএ তাদের শিখিয়েছে রুলস অব এনগেজমেন্ট (নিয়মকানুন), কীভাবে মানুষের সঙ্গে ব্যবহার করতে হবে, কীভাবে জিজ্ঞাসাবাদ (হাউ টু ইন্টারোগেট) করতে হবে ইত্যাদি। তিনি আরও বলেছেন, র্যাবের যদি রুলস অব এনগেজমেন্টে কোনো দুর্বলতা থাকে, এই রুলস অব এনগেজমেন্টের জন্য যদি কোনো মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়, অবশ্যই নতুন করে ট্রেনিং হবে। তিনি আরও বলেছেন, তার জন্য কোনো ব্যক্তিবিশেষের ওপর হঠাৎ করে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া জাস্টিফাইড না। বাংলাদেশ বিচারহীনতার সংস্কৃতিতে বিশ্বাস করে না। সরকার এ বিষয়ে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। ইতিপূর্বের বিচারহীনতার মতো আইনকে বাতিল করে প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা হয়েছে।
বাংলাদেশের ঘটনাবলি নিয়ে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর আবেদন যতটা না সংস্কারমূলক, তার চেয়ে বেশি অভিযোগমূলক। বাংলাদেশ শান্তি মিশনে সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে বিশ্বে নজির স্থাপন করেছে। এই মর্যাদাসম্পন্ন সেবামূলক কাজের স্বীকৃতি এবং এই সুবাদে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের বিরুদ্ধে কোনো কোনো মহল বিরুদ্ধাচরণ করতে পারে। তাদের ভূমিকা সম্পর্কে আমাদের চোখ-কান খোলা রাখা প্রয়োজন।
এটা অত্যন্ত সংগত যে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাকে আমরা সমালোচনা করি। সভ্য সমাজও তা-ই করে। প্রতিটি দেশের প্রত্যেক মানুষের এই প্রত্যাশা হওয়া উচিত। দেশ-কাল-পাত্রভেদে বিশ্বের সব মানুষই মানুষ। মানবকল্যাণে নিবেদিত হয়ে দেশের জন্য, জনগণের জন্য কাজ করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। জনগণের জীবনমানের উন্নয়ন করার লক্ষ্যে সুশাসন নিশ্চিত করা প্রয়োজন সর্বত্র। আমাদের দেশে এর প্রয়োগ যেমন জরুরি, অন্য দেশগুলোতেও একইভাবে মানবাধিকারের যথাযথ প্রয়োগ জরুরি। মানবাধিকার প্রতিষ্ঠিত হোক আমাদের দেশে, প্রতিটি দেশে। কোনো দেশ, কোনো জাতি জবাবদিহির ঊর্ধ্বে নয়। আসুন, মানবতার জয়গান গাই।
লেখক: ড. মো. গোলাম রহমান।
সম্পাদক,আজকের পত্রিকা

মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে বাংলাদেশের এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র্যাব) জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে না নেওয়ার দাবি জানিয়ে ১২টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা গত ৮ নভেম্বর জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জ্যঁ পিয়ের ল্যাকোঁয়া বরাবর ব্যক্তিগতভাবে একটি চিঠি দিয়েছে। ইতিমধ্যে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ চিঠিটি প্রকাশ করেছে। বিষয়টি গণমাধ্যমে আসার পর এ নিয়ে জনমনে, রাজনৈতিক দলে ও আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনা দানা বাঁধতে শুরু করেছে।
যেকোনো দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা আলোচিত হয়, নিন্দিত হয়। তার প্রধান কারণ এসব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিয়ে জনমনে প্রশ্ন থেকে যায়। খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে শুরু করে চীন, রাশিয়া, কোরিয়া, ভারত, পাকিস্তান কিংবা বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও এসব নিয়ে প্রচুর অভিযোগ উত্থাপিত হয় এবং কিছু কিছু ব্যবস্থাও নেওয়া হয়। সম্ভবত উন্নয়নশীল দেশগুলোর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ও এর প্রতিকার নিয়ে বেশি কথা হয়ে থাকে। বাংলাদেশে বিভিন্ন সময়ে ঘটে যাওয়া কতিপয় ঘটনা মানুষের মনে প্রশ্নের অবতারণা করে, বিতর্ক ওঠে এবং সেসব অস্বাভাবিকও নয়।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছে এবং অংশগ্রহণকারীরা যোগ্যতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠনের অভিযোগের কারণে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি নতুন করে সামনে এসেছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, ২০০৪ সালে র্যাব গঠনের শুরু থেকেই বিভিন্ন রকম কার্যকলাপ ঘটছে, যাতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। ২০১৯ সালের ‘কনভেনশন অ্যাগেইনস্ট টর্চার’-এর একটি কমিটি জাতিসংঘ শান্তি মিশনে অংশগ্রহণ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ২০২১ সালের মার্চে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের কমিশনার মিচেল ব্যাচলেট সমস্যাটিকে দীর্ঘদিনের বলে অভিহিত করেছেন। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ গত ৫ ডিসেম্বর এসব লঙ্ঘন ও অপব্যবহারকে পক্ষান্তরে কর্মকর্তাদের উৎসাহিত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে। (ডেইলি স্টার, জানুয়ারি ২১, ২০২২, পৃষ্ঠা ১ ও ২)।
আমরা জানি, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক কোভনান্ট-এর প্রধান নয়টি বৈশিষ্ট্যের মধ্যে আটটি মেনে নিয়ে চুক্তি বাস্তবায়ন করছে। এর মধ্যে ইন্টারন্যাশনাল কমেন্ট অন সিভিল অ্যান্ড পলিটিক্যাল রাইটস এবং ইউএন কনভেনশন অ্যাগেইনস্ট টর্চার অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু তারপরও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা অপ্রত্যাশিত হলেও ঘটেছে। বাংলাদেশ স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন অঙ্গনে সুনাম অর্জন করে চলছে। জলবায়ু পরিবর্তন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, জীবনমানের উন্নয়ন এবং নানাবিধ আধুনিক সমাজব্যবস্থায় স্বাক্ষর রেখে চলেছে অন্য অনেক দেশের তুলনায়; বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোয় উদাহরণ সৃষ্টি করে চলেছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার বিদায়কালে একটি পত্রিকায় সাক্ষাৎকারে বলেছেন, চীন হচ্ছে তাঁদের প্রতিযোগী, তাঁদের শত্রু দেশ নয়। চীনের সহযোগিতা তাঁদের প্রয়োজন রয়েছে। গণতন্ত্র উন্নয়নে বাংলাদেশকে আরও সহায়তা দান, মানবাধিকার মর্যাদায় কার্যকর ভূমিকা, দুর্নীতি দমনে সহায়তার ইস্যুতে বাংলাদেশকে সংলাপ চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকটে বাংলাদেশকে সাহায্যের কথা বলেছেন। ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় আঞ্চলিক এবং বিশ্বশান্তি রক্ষায় বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন।
ক্রমাবনতিমান মানবাধিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্যও বড় চ্যালেঞ্জ। সভ্যতার শিখরে আরোহণরত দেশগুলো দেশের অর্থনৈতিক, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক উন্নয়ন এবং স্বার্থ রক্ষার জন্য নিজেদের নিয়োজিত করছে। আমরা চাই, গণতান্ত্রিক সমাজ বিকাশের স্বার্থে দেশের সব কাজে, বিশেষ করে সুশাসন অর্জনে জবাবদিহি কায়েম হবে। অতএব, রাজনৈতিক অঙ্গনে দুর্নীতি দমন, সুশাসন ও জবাবদিহির বিষয় চর্চা হবে, এটিই স্বাভাবিক। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। অন্যান্য দেশের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা পর্যালোচনা করে নিশ্চয়ই আমাদের কোনো স্বস্তি নেই, নেই কোনো আত্মসন্তুষ্টিও। তারপরও কয়েকটি বিষয়ে আমাদের জানা থাকা দরকার।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ২০২০-এর প্রতিবেদনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ঘটে যাওয়া এমন কিছু মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, অন্ততপক্ষে এক হাজার লোক পুলিশের আগ্নেয়াস্ত্রের গুলিতে নিহত হয়েছে। জনগণের জন্য পরিবেশিত সীমিতসংখ্যক পরিসংখ্যানে জানা যায়, এসব ঘটনায় কালো মানুষদের সংখ্যা আনুপাতিক হারে উল্লেখযোগ্য। যুক্তরাষ্ট্রের বার্ষিক কর্মসূচির অধীনে এসব মৃত্যুর হিসাব সঠিকভাবে রক্ষিত হয় না। ২০০১ থেকে ২০০৯ সিআইএ পরিচালিত গোপন বন্দী কার্যক্রমের অধীন যেসব ডজন ডজন বন্দী গুম, নির্যাতন এবং অন্যান্য নিপীড়নের শিকার হয়েছে, তাদের বিচার প্রাপ্তির সুযোগ পর্যন্ত দেওয়া হয়নি।
শুধু সীমিত অনুসন্ধানের কয়েকটি অভিযোগকে কোনো শাস্তির বিধান না করে সেগুলোর পরিসমাপ্তি টানা হয়েছে (অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল রিপোর্ট ২০২০ দ্রষ্টব্য)। ‘গ্লোবাল ওয়ার’-এর মতো একটি ত্রুটিপূর্ণ নীতির আলোকে যুক্তরাষ্ট্র সারা বিশ্বের কয়েকটি দেশে উপর্যুপরি সামরিক ড্রোন ব্যবহার করে মানবতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। এসব নিয়ে আলোচনা অনেক দীর্ঘ হতে পারে, কিন্তু আমার মনে হয় মানবাধিকার সংরক্ষণ হচ্ছে গণতন্ত্রের অন্যতম চেতনা, যা সব দেশের প্রত্যেক মানুষের জীবন-জীবিকা ও স্বাধীনতাকে সুসংহত করে। তাই মানবাধিকার লঙ্ঘন হয় এমন কাজ থেকে সবাইকে নিবৃত্ত থাকা উচিত।
বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির বিকাশের ধারা বজায় আছে। গণতন্ত্র যদি সঠিক চর্চায় না থাকে, তাহলে জনগণের অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক পরিসর সংকীর্ণ হয়ে আসবে। সমাজে বিভিন্ন ধর্ম-জাতি-গোষ্ঠী কিংবা সংখ্যালঘুদের ওপর সাম্প্রদায়িক ও স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি বা মহল নিজেদের কোটারি স্বার্থে হামলা ও লুটপাটের মতো ঘটনা ঘটিয়ে থাকে। আমরা ২০০১-এর নির্বাচন-পরবর্তী এ রকম ঘটনা গণমাধ্যমে সবিস্তারে প্রকাশিত হতে দেখেছি। পরবর্তীকালেও মাঝেমধ্যেই এ ধরনের হঠকারী ঘটনা ঘটেছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিঘ্নিত হয়েছে, মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে, আবার কতিপয় ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সক্রিয়তাও দেখেছি। দেশে সন্ত্রাস, জঙ্গি দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিশেষ ভূমিকা নিতেও দেখেছি। হোলি আর্টিজানের মতো নৃশংস ঘটনার পর শক্ত হাতে জঙ্গি দমন ও তাদের পরিকল্পনার মূল উৎপাটন করতেও দেখেছি।
দেশের মানুষ সব ধরনের মানবতাবিরোধী অপতৎপরতাকে ধিক্কার জানায়। দেশের বর্তমান সরকারও এসব বিষয়ে জিরো টলারেন্স মনোভাব প্রকাশ করে থাকে। বিক্ষিপ্তভাবে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো অবশ্যই অনভিপ্রেত ও অত্যন্ত নিন্দনীয়। এগুলো জবাবদিহির ঊর্ধ্বে নয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ প্রসঙ্গে সম্প্রতি প্রণিধানযোগ্য বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, র্যাব তৈরি করেছে আমেরিকান ও ব্রিটিশরা। তারা প্রশিক্ষণ দিয়েছে। ইউএসএ তাদের শিখিয়েছে রুলস অব এনগেজমেন্ট (নিয়মকানুন), কীভাবে মানুষের সঙ্গে ব্যবহার করতে হবে, কীভাবে জিজ্ঞাসাবাদ (হাউ টু ইন্টারোগেট) করতে হবে ইত্যাদি। তিনি আরও বলেছেন, র্যাবের যদি রুলস অব এনগেজমেন্টে কোনো দুর্বলতা থাকে, এই রুলস অব এনগেজমেন্টের জন্য যদি কোনো মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়, অবশ্যই নতুন করে ট্রেনিং হবে। তিনি আরও বলেছেন, তার জন্য কোনো ব্যক্তিবিশেষের ওপর হঠাৎ করে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া জাস্টিফাইড না। বাংলাদেশ বিচারহীনতার সংস্কৃতিতে বিশ্বাস করে না। সরকার এ বিষয়ে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। ইতিপূর্বের বিচারহীনতার মতো আইনকে বাতিল করে প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা হয়েছে।
বাংলাদেশের ঘটনাবলি নিয়ে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর আবেদন যতটা না সংস্কারমূলক, তার চেয়ে বেশি অভিযোগমূলক। বাংলাদেশ শান্তি মিশনে সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে বিশ্বে নজির স্থাপন করেছে। এই মর্যাদাসম্পন্ন সেবামূলক কাজের স্বীকৃতি এবং এই সুবাদে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের বিরুদ্ধে কোনো কোনো মহল বিরুদ্ধাচরণ করতে পারে। তাদের ভূমিকা সম্পর্কে আমাদের চোখ-কান খোলা রাখা প্রয়োজন।
এটা অত্যন্ত সংগত যে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাকে আমরা সমালোচনা করি। সভ্য সমাজও তা-ই করে। প্রতিটি দেশের প্রত্যেক মানুষের এই প্রত্যাশা হওয়া উচিত। দেশ-কাল-পাত্রভেদে বিশ্বের সব মানুষই মানুষ। মানবকল্যাণে নিবেদিত হয়ে দেশের জন্য, জনগণের জন্য কাজ করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। জনগণের জীবনমানের উন্নয়ন করার লক্ষ্যে সুশাসন নিশ্চিত করা প্রয়োজন সর্বত্র। আমাদের দেশে এর প্রয়োগ যেমন জরুরি, অন্য দেশগুলোতেও একইভাবে মানবাধিকারের যথাযথ প্রয়োগ জরুরি। মানবাধিকার প্রতিষ্ঠিত হোক আমাদের দেশে, প্রতিটি দেশে। কোনো দেশ, কোনো জাতি জবাবদিহির ঊর্ধ্বে নয়। আসুন, মানবতার জয়গান গাই।
লেখক: ড. মো. গোলাম রহমান।
সম্পাদক,আজকের পত্রিকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে বাংলাদেশের এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র্যাব) জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে না নেওয়ার দাবি জানিয়ে ১২টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা গত ৮ নভেম্বর জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জ্যঁ পিয়ের ল্যাকোঁয়া বরাবর ব্যক্তিগতভাবে একটি চিঠি দিয়েছে। ইতিমধ্যে হিউম্যান র
২৫ জানুয়ারি ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে বাংলাদেশের এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র্যাব) জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে না নেওয়ার দাবি জানিয়ে ১২টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা গত ৮ নভেম্বর জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জ্যঁ পিয়ের ল্যাকোঁয়া বরাবর ব্যক্তিগতভাবে একটি চিঠি দিয়েছে। ইতিমধ্যে হিউম্যান র
২৫ জানুয়ারি ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে বাংলাদেশের এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র্যাব) জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে না নেওয়ার দাবি জানিয়ে ১২টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা গত ৮ নভেম্বর জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জ্যঁ পিয়ের ল্যাকোঁয়া বরাবর ব্যক্তিগতভাবে একটি চিঠি দিয়েছে। ইতিমধ্যে হিউম্যান র
২৫ জানুয়ারি ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে বাংলাদেশের এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র্যাব) জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে না নেওয়ার দাবি জানিয়ে ১২টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা গত ৮ নভেম্বর জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জ্যঁ পিয়ের ল্যাকোঁয়া বরাবর ব্যক্তিগতভাবে একটি চিঠি দিয়েছে। ইতিমধ্যে হিউম্যান র
২৫ জানুয়ারি ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫