আরিফুজ্জামান তুহিন, ঢাকা
জাপানের সরকারি সাহায্য সংস্থা জাইকার অর্থায়নে বিদ্যুতের মহাপরিকল্পনা করা হয় ২০১০ সালে। সে পরিকল্পনায় ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা বলা হয়, যার অর্ধেকের বেশি কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রগুলো থেকে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ১৭টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমতি দেয় সরকার। ব্যাপক আকারে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ শুরুতেই দেশে ও বিদেশে সমালোচনার মুখে পড়ে। তখন সরকারের প্রধান যুক্তি ছিল, কয়লার বিদ্যুৎ সব থেকে সস্তা। ১৩ বছর পর এসে দেখা যাচ্ছে, কয়লা
কোনোভাবেই সস্তা না। স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত দিক বাদ দিলেও কয়লার বিদ্যুতে ইউনিটপ্রতি খরচ সৌরবিদ্যুৎকে ছাড়িয়ে গেছে।
কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রে বিপুল উৎপাদন ব্যয়ের খেসারত দিতে হচ্ছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে (পিডিবি)। উচ্চমূল্যে কেনা বিদ্যুতের দাম দিতে গিয়ে গত বছর পিডিবির লোকসান হয়েছে প্রায় ৪৮ হাজার কোটি টাকা। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি বকেয়া পাওনা দিতে পারছে না। পিডিবির কাছে বেসরকারি এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর পাওনা দাঁড়িয়েছে ২৫ হাজার কোটি টাকা।
কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যয় সম্পর্কে সরকার হয়তো কিছুটা আঁচ করতে পেরেছিল। সে কারণে ১৭টি কেন্দ্রের অনুমতি দিলেও পরে সাতটি বাতিল করে দিয়েছে। বিদ্যুতের মহাপরিকল্পনার ছয়টি কয়লাভিত্তিক কেন্দ্র পুরোভাগে উৎপাদনে এসেছে। বাকি চারটি উৎপাদনে আসার কথা রয়েছে। উৎপাদনে আসা কেন্দ্রগুলোর গড় উৎপাদন ব্যয় ইউনিটপ্রতি প্রায় ১০ টাকা থেকে ২১ টাকা। অন্যদিকে পরিবেশবান্ধব সৌরবিদ্যুতে বর্তমানে উৎপাদন ব্যয় প্রতি ইউনিটে ১১ টাকার মতো।
কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণ কী—এমন প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ গতকাল রোববার টেলিফোনে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা যখন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তি করেছিলাম, তখন ডলারের দাম ছিল ৮০ থেকে ৮২ টাকা। এখন সেটি সরকারি হিসাবে ১১০ টাকা, বাস্তবে আরও বেশি। ডলারের এই পার্থক্যর কারণেই দামটা বেড়ে গেছে। এ ছাড়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক জ্বালানির বাজারও বেশ অস্থির। সামনে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের খরচ আরও কমবে।’
দেশে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম ব্যয়বহুল প্রকল্প মাতারবাড়ী। কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ীতে নির্মিত এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঙ্গে রয়েছে একটি গভীর সমুদ্রবন্দর সুবিধার কয়লাবন্দর। বন্দর ও বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণ ব্যয় প্রায় ৫২ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এটি হবে দুনিয়ার সব থেকে ব্যয়বহুল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। কেন্দ্রটি গত বছরের নভেম্বরের মাঝামাঝি উৎপাদনে এসেছে। এই কেন্দ্রের উৎপাদন ব্যয়ের তথ্য পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, পৃথিবীর অন্যতম ব্যয়বহুল এই কেন্দ্রের ব্যয় সবগুলো কেন্দ্রের রেকর্ড ছাপিয়ে যাবে।
বাংলাদেশে এই মুহূর্তে ছয়টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু আছে। চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে এই কেন্দ্র এখনো পুরোদমে চালু হয়নি। বাকি চারটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মধ্যে হলো পটুয়াখালীর পায়রাতে বাংলাদেশ ও চীনের সমান মালিকানায় নির্মিত ১৩০০ মেগাওয়াটের পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র, রামপাল ১৩৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, আদানি ২০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র ও বরগুনার ৩০৭ মেগাওয়াট বরিশাল বিদ্যুৎকেন্দ্র।
পিডিবির প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন, পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ-চীন পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিসিপিসিএল) নামে একটি প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন করা হয়েছে। গত বছরের এপ্রিল থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত ১০ মাসে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রে ইউনিটপ্রতি জ্বালানি ব্যয় পড়েছে গড়ে ৬ টাকা ৮২ পয়সা। এর সঙ্গে কেন্দ্রটির ক্যাপাসিটি চার্জ ২ টাকা ৮৩ পয়সা যোগ করলে এখানকার প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম পড়েছে ৯ টাকা ৬৫ পয়সা।
এরপরেই রয়েছে বাগেরহাটে সুন্দরবনের পাশে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র। ১৩২০ মেগাওয়াটের কেন্দ্রটির প্রতি ইউনিট কয়লার দাম পড়েছে ৭ টাকা ৮৭ পয়সা। এর সঙ্গে কেন্দ্রভাড়া ৫ টাকা ১৯ পয়সা যোগ করলে ইউনিট প্রতি ব্যয় দাঁড়ায় ১৩ টাকা ৬ পয়সা।
এদিকে চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে এস আলম শিল্পগ্রুপের ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রটির আংশিক চালু হয় গত বছরে। এই কেন্দ্রটির সব হিসাব পাওয়া যায়নি। গত বছরের অক্টোবর মাসে কেন্দ্রটিতে ব্যবহৃত কয়লার দাম পড়েছে ইউনিটপ্রতি ৬ টাকা ৮৩ পয়সা। এর সঙ্গে কেন্দ্রটির ভাড়া যোগ করলে ওই মাসে গড় বিদ্যুতের মূল্য দাঁড়ায় ১১ টাকা ৫৫ পয়সা।
ইউনিটপ্রতি ব্যয়ে শীর্ষে আদানি ও বরিশাল
পিডিবির প্রকৌশলীরা বলছেন, আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রটির খরচ সামাল দিতেই পিডিবি বিপদে পড়েছে। ২ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের কয়লার দাম গত ১০ মাসে গড়ে পড়েছে ইউনিটপ্রতি ১৫ টাকা ৬৯ পয়সা। কেন্দ্রটির ক্যাপাসিটি চার্জ ইউনিটপ্রতি ৪ টাকা ৫৫ পয়সা যোগ করলে উৎপাদন ব্যয় দাঁড়ায় ২০ টাকা ২৪ পয়সা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভারতের বৃহৎ শিল্পপ্রতিষ্ঠান আদানির নিজের কয়লাখনি থেকে কয়লা আনায় কেন্দ্রটির বিদ্যুৎ উৎপাদন বেশি। সে কারণে পিডিবির ক্ষতির পরিমাণও বেশি।
কয়লার বিদ্যুৎকেন্দ্র বেশ দাম পড়ছে কেন, জানতে চাইলে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সিনিয়র সহসভাপতি ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এম শামসুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র সস্তা ছিল না। এই কেন্দ্রগুলো পিডিবির জন্য এখনো বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আদানিকে কী প্রক্রিয়ায় কেন্দ্র দিয়েছে, তা প্রকাশ্য আনতে হবে। কারণ, আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বাংলাদেশের জন্য শ্বেতহস্তীতে পরিণত হয়েছে। এই কেন্দ্র একাই পিডিবির বড় দুঃখের কারণ হয়ে গেছে।
বরিশাল বিদ্যুৎকেন্দ্রটির উৎপাদন ব্যয় আদানি থেকেও ৬১ পয়সা বেশি। ৩০৭ মেগাওয়াটের এই কেন্দ্র কয়লার অভাবে বন্ধ থাকে। গত ১০ মাসের মধ্যে ৭ মাস চলেছে এটি। সাত মাসে গড়ে কেন্দ্রটির জ্বালানি ব্যয় হয়েছে প্রতি ইউনিট ১৬ টাকা ৯১ পয়সা। এর সঙ্গে কেন্দ্রের ভাড়া ৩ টাকা ৯৪ পয়সা যোগ করলে ইউনিটপ্রতি দাঁড়ায় ২০ টাকা ৮৫ পয়সা।
পিডিবির দুজন শীর্ষ প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বরিশাল বিদ্যুৎকেন্দ্রটি কয়লার অভাবে খুব বেশি উৎপাদনে থাকে না। এই কেন্দ্র ডলার-সংকটের কারণে এলসি বা আমদানি ঋণপত্র খুলতে পারে না। তারা বাংলাদেশের ভেতর থেকে ইটভাটায় আনা কয়লা বাংলাদেশি টাকা দিয়ে কিনে উৎপাদনে যায় মাঝেমধ্যে। কেন্দ্রটির পরিস্থিতি এতই করুণ যে তারা বিভিন্ন দেশি ও বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে গিয়ে কেন্দ্রটি বিক্রি করার প্রস্তাব নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কেন্দ্রটি কেনার বিষয়ে চীনা একটি কোম্পানির সঙ্গে প্রাথমিক আলাপও হয়েছে। তবে এই কেন্দ্রটির জমি নিয়ে আদালতে মামলা থাকায় অনেকে কেনার ক্ষেত্রে আগ্রহ কম দেখাচ্ছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও পরিবেশ আন্দোলনকর্মী আনু মুহাম্মদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র কখনোই সস্তা ছিল না। মূলত সরকার কিছু দেশ ও কোম্পানিকে বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ দেবে; সে কারণে এসব প্রচার করেছিল। এটা লবিস্টদের চাপে করা হয়েছিল। এখন এসে এসব পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে সৌরবিদ্যুৎ থেকেও অনেক বেশি খরচ পড়ে।
জাপানের সরকারি সাহায্য সংস্থা জাইকার অর্থায়নে বিদ্যুতের মহাপরিকল্পনা করা হয় ২০১০ সালে। সে পরিকল্পনায় ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা বলা হয়, যার অর্ধেকের বেশি কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রগুলো থেকে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ১৭টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমতি দেয় সরকার। ব্যাপক আকারে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ শুরুতেই দেশে ও বিদেশে সমালোচনার মুখে পড়ে। তখন সরকারের প্রধান যুক্তি ছিল, কয়লার বিদ্যুৎ সব থেকে সস্তা। ১৩ বছর পর এসে দেখা যাচ্ছে, কয়লা
কোনোভাবেই সস্তা না। স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত দিক বাদ দিলেও কয়লার বিদ্যুতে ইউনিটপ্রতি খরচ সৌরবিদ্যুৎকে ছাড়িয়ে গেছে।
কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রে বিপুল উৎপাদন ব্যয়ের খেসারত দিতে হচ্ছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে (পিডিবি)। উচ্চমূল্যে কেনা বিদ্যুতের দাম দিতে গিয়ে গত বছর পিডিবির লোকসান হয়েছে প্রায় ৪৮ হাজার কোটি টাকা। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি বকেয়া পাওনা দিতে পারছে না। পিডিবির কাছে বেসরকারি এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর পাওনা দাঁড়িয়েছে ২৫ হাজার কোটি টাকা।
কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যয় সম্পর্কে সরকার হয়তো কিছুটা আঁচ করতে পেরেছিল। সে কারণে ১৭টি কেন্দ্রের অনুমতি দিলেও পরে সাতটি বাতিল করে দিয়েছে। বিদ্যুতের মহাপরিকল্পনার ছয়টি কয়লাভিত্তিক কেন্দ্র পুরোভাগে উৎপাদনে এসেছে। বাকি চারটি উৎপাদনে আসার কথা রয়েছে। উৎপাদনে আসা কেন্দ্রগুলোর গড় উৎপাদন ব্যয় ইউনিটপ্রতি প্রায় ১০ টাকা থেকে ২১ টাকা। অন্যদিকে পরিবেশবান্ধব সৌরবিদ্যুতে বর্তমানে উৎপাদন ব্যয় প্রতি ইউনিটে ১১ টাকার মতো।
কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণ কী—এমন প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ গতকাল রোববার টেলিফোনে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা যখন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তি করেছিলাম, তখন ডলারের দাম ছিল ৮০ থেকে ৮২ টাকা। এখন সেটি সরকারি হিসাবে ১১০ টাকা, বাস্তবে আরও বেশি। ডলারের এই পার্থক্যর কারণেই দামটা বেড়ে গেছে। এ ছাড়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক জ্বালানির বাজারও বেশ অস্থির। সামনে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের খরচ আরও কমবে।’
দেশে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম ব্যয়বহুল প্রকল্প মাতারবাড়ী। কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ীতে নির্মিত এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঙ্গে রয়েছে একটি গভীর সমুদ্রবন্দর সুবিধার কয়লাবন্দর। বন্দর ও বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণ ব্যয় প্রায় ৫২ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এটি হবে দুনিয়ার সব থেকে ব্যয়বহুল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। কেন্দ্রটি গত বছরের নভেম্বরের মাঝামাঝি উৎপাদনে এসেছে। এই কেন্দ্রের উৎপাদন ব্যয়ের তথ্য পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, পৃথিবীর অন্যতম ব্যয়বহুল এই কেন্দ্রের ব্যয় সবগুলো কেন্দ্রের রেকর্ড ছাপিয়ে যাবে।
বাংলাদেশে এই মুহূর্তে ছয়টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু আছে। চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে এই কেন্দ্র এখনো পুরোদমে চালু হয়নি। বাকি চারটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মধ্যে হলো পটুয়াখালীর পায়রাতে বাংলাদেশ ও চীনের সমান মালিকানায় নির্মিত ১৩০০ মেগাওয়াটের পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র, রামপাল ১৩৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, আদানি ২০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র ও বরগুনার ৩০৭ মেগাওয়াট বরিশাল বিদ্যুৎকেন্দ্র।
পিডিবির প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন, পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ-চীন পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিসিপিসিএল) নামে একটি প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন করা হয়েছে। গত বছরের এপ্রিল থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত ১০ মাসে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রে ইউনিটপ্রতি জ্বালানি ব্যয় পড়েছে গড়ে ৬ টাকা ৮২ পয়সা। এর সঙ্গে কেন্দ্রটির ক্যাপাসিটি চার্জ ২ টাকা ৮৩ পয়সা যোগ করলে এখানকার প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম পড়েছে ৯ টাকা ৬৫ পয়সা।
এরপরেই রয়েছে বাগেরহাটে সুন্দরবনের পাশে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র। ১৩২০ মেগাওয়াটের কেন্দ্রটির প্রতি ইউনিট কয়লার দাম পড়েছে ৭ টাকা ৮৭ পয়সা। এর সঙ্গে কেন্দ্রভাড়া ৫ টাকা ১৯ পয়সা যোগ করলে ইউনিট প্রতি ব্যয় দাঁড়ায় ১৩ টাকা ৬ পয়সা।
এদিকে চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে এস আলম শিল্পগ্রুপের ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রটির আংশিক চালু হয় গত বছরে। এই কেন্দ্রটির সব হিসাব পাওয়া যায়নি। গত বছরের অক্টোবর মাসে কেন্দ্রটিতে ব্যবহৃত কয়লার দাম পড়েছে ইউনিটপ্রতি ৬ টাকা ৮৩ পয়সা। এর সঙ্গে কেন্দ্রটির ভাড়া যোগ করলে ওই মাসে গড় বিদ্যুতের মূল্য দাঁড়ায় ১১ টাকা ৫৫ পয়সা।
ইউনিটপ্রতি ব্যয়ে শীর্ষে আদানি ও বরিশাল
পিডিবির প্রকৌশলীরা বলছেন, আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রটির খরচ সামাল দিতেই পিডিবি বিপদে পড়েছে। ২ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের কয়লার দাম গত ১০ মাসে গড়ে পড়েছে ইউনিটপ্রতি ১৫ টাকা ৬৯ পয়সা। কেন্দ্রটির ক্যাপাসিটি চার্জ ইউনিটপ্রতি ৪ টাকা ৫৫ পয়সা যোগ করলে উৎপাদন ব্যয় দাঁড়ায় ২০ টাকা ২৪ পয়সা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভারতের বৃহৎ শিল্পপ্রতিষ্ঠান আদানির নিজের কয়লাখনি থেকে কয়লা আনায় কেন্দ্রটির বিদ্যুৎ উৎপাদন বেশি। সে কারণে পিডিবির ক্ষতির পরিমাণও বেশি।
কয়লার বিদ্যুৎকেন্দ্র বেশ দাম পড়ছে কেন, জানতে চাইলে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সিনিয়র সহসভাপতি ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এম শামসুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র সস্তা ছিল না। এই কেন্দ্রগুলো পিডিবির জন্য এখনো বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আদানিকে কী প্রক্রিয়ায় কেন্দ্র দিয়েছে, তা প্রকাশ্য আনতে হবে। কারণ, আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বাংলাদেশের জন্য শ্বেতহস্তীতে পরিণত হয়েছে। এই কেন্দ্র একাই পিডিবির বড় দুঃখের কারণ হয়ে গেছে।
বরিশাল বিদ্যুৎকেন্দ্রটির উৎপাদন ব্যয় আদানি থেকেও ৬১ পয়সা বেশি। ৩০৭ মেগাওয়াটের এই কেন্দ্র কয়লার অভাবে বন্ধ থাকে। গত ১০ মাসের মধ্যে ৭ মাস চলেছে এটি। সাত মাসে গড়ে কেন্দ্রটির জ্বালানি ব্যয় হয়েছে প্রতি ইউনিট ১৬ টাকা ৯১ পয়সা। এর সঙ্গে কেন্দ্রের ভাড়া ৩ টাকা ৯৪ পয়সা যোগ করলে ইউনিটপ্রতি দাঁড়ায় ২০ টাকা ৮৫ পয়সা।
পিডিবির দুজন শীর্ষ প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বরিশাল বিদ্যুৎকেন্দ্রটি কয়লার অভাবে খুব বেশি উৎপাদনে থাকে না। এই কেন্দ্র ডলার-সংকটের কারণে এলসি বা আমদানি ঋণপত্র খুলতে পারে না। তারা বাংলাদেশের ভেতর থেকে ইটভাটায় আনা কয়লা বাংলাদেশি টাকা দিয়ে কিনে উৎপাদনে যায় মাঝেমধ্যে। কেন্দ্রটির পরিস্থিতি এতই করুণ যে তারা বিভিন্ন দেশি ও বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে গিয়ে কেন্দ্রটি বিক্রি করার প্রস্তাব নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কেন্দ্রটি কেনার বিষয়ে চীনা একটি কোম্পানির সঙ্গে প্রাথমিক আলাপও হয়েছে। তবে এই কেন্দ্রটির জমি নিয়ে আদালতে মামলা থাকায় অনেকে কেনার ক্ষেত্রে আগ্রহ কম দেখাচ্ছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও পরিবেশ আন্দোলনকর্মী আনু মুহাম্মদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র কখনোই সস্তা ছিল না। মূলত সরকার কিছু দেশ ও কোম্পানিকে বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ দেবে; সে কারণে এসব প্রচার করেছিল। এটা লবিস্টদের চাপে করা হয়েছিল। এখন এসে এসব পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে সৌরবিদ্যুৎ থেকেও অনেক বেশি খরচ পড়ে।
আরিফুজ্জামান তুহিন, ঢাকা
জাপানের সরকারি সাহায্য সংস্থা জাইকার অর্থায়নে বিদ্যুতের মহাপরিকল্পনা করা হয় ২০১০ সালে। সে পরিকল্পনায় ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা বলা হয়, যার অর্ধেকের বেশি কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রগুলো থেকে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ১৭টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমতি দেয় সরকার। ব্যাপক আকারে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ শুরুতেই দেশে ও বিদেশে সমালোচনার মুখে পড়ে। তখন সরকারের প্রধান যুক্তি ছিল, কয়লার বিদ্যুৎ সব থেকে সস্তা। ১৩ বছর পর এসে দেখা যাচ্ছে, কয়লা
কোনোভাবেই সস্তা না। স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত দিক বাদ দিলেও কয়লার বিদ্যুতে ইউনিটপ্রতি খরচ সৌরবিদ্যুৎকে ছাড়িয়ে গেছে।
কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রে বিপুল উৎপাদন ব্যয়ের খেসারত দিতে হচ্ছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে (পিডিবি)। উচ্চমূল্যে কেনা বিদ্যুতের দাম দিতে গিয়ে গত বছর পিডিবির লোকসান হয়েছে প্রায় ৪৮ হাজার কোটি টাকা। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি বকেয়া পাওনা দিতে পারছে না। পিডিবির কাছে বেসরকারি এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর পাওনা দাঁড়িয়েছে ২৫ হাজার কোটি টাকা।
কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যয় সম্পর্কে সরকার হয়তো কিছুটা আঁচ করতে পেরেছিল। সে কারণে ১৭টি কেন্দ্রের অনুমতি দিলেও পরে সাতটি বাতিল করে দিয়েছে। বিদ্যুতের মহাপরিকল্পনার ছয়টি কয়লাভিত্তিক কেন্দ্র পুরোভাগে উৎপাদনে এসেছে। বাকি চারটি উৎপাদনে আসার কথা রয়েছে। উৎপাদনে আসা কেন্দ্রগুলোর গড় উৎপাদন ব্যয় ইউনিটপ্রতি প্রায় ১০ টাকা থেকে ২১ টাকা। অন্যদিকে পরিবেশবান্ধব সৌরবিদ্যুতে বর্তমানে উৎপাদন ব্যয় প্রতি ইউনিটে ১১ টাকার মতো।
কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণ কী—এমন প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ গতকাল রোববার টেলিফোনে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা যখন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তি করেছিলাম, তখন ডলারের দাম ছিল ৮০ থেকে ৮২ টাকা। এখন সেটি সরকারি হিসাবে ১১০ টাকা, বাস্তবে আরও বেশি। ডলারের এই পার্থক্যর কারণেই দামটা বেড়ে গেছে। এ ছাড়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক জ্বালানির বাজারও বেশ অস্থির। সামনে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের খরচ আরও কমবে।’
দেশে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম ব্যয়বহুল প্রকল্প মাতারবাড়ী। কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ীতে নির্মিত এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঙ্গে রয়েছে একটি গভীর সমুদ্রবন্দর সুবিধার কয়লাবন্দর। বন্দর ও বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণ ব্যয় প্রায় ৫২ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এটি হবে দুনিয়ার সব থেকে ব্যয়বহুল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। কেন্দ্রটি গত বছরের নভেম্বরের মাঝামাঝি উৎপাদনে এসেছে। এই কেন্দ্রের উৎপাদন ব্যয়ের তথ্য পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, পৃথিবীর অন্যতম ব্যয়বহুল এই কেন্দ্রের ব্যয় সবগুলো কেন্দ্রের রেকর্ড ছাপিয়ে যাবে।
বাংলাদেশে এই মুহূর্তে ছয়টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু আছে। চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে এই কেন্দ্র এখনো পুরোদমে চালু হয়নি। বাকি চারটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মধ্যে হলো পটুয়াখালীর পায়রাতে বাংলাদেশ ও চীনের সমান মালিকানায় নির্মিত ১৩০০ মেগাওয়াটের পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র, রামপাল ১৩৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, আদানি ২০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র ও বরগুনার ৩০৭ মেগাওয়াট বরিশাল বিদ্যুৎকেন্দ্র।
পিডিবির প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন, পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ-চীন পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিসিপিসিএল) নামে একটি প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন করা হয়েছে। গত বছরের এপ্রিল থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত ১০ মাসে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রে ইউনিটপ্রতি জ্বালানি ব্যয় পড়েছে গড়ে ৬ টাকা ৮২ পয়সা। এর সঙ্গে কেন্দ্রটির ক্যাপাসিটি চার্জ ২ টাকা ৮৩ পয়সা যোগ করলে এখানকার প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম পড়েছে ৯ টাকা ৬৫ পয়সা।
এরপরেই রয়েছে বাগেরহাটে সুন্দরবনের পাশে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র। ১৩২০ মেগাওয়াটের কেন্দ্রটির প্রতি ইউনিট কয়লার দাম পড়েছে ৭ টাকা ৮৭ পয়সা। এর সঙ্গে কেন্দ্রভাড়া ৫ টাকা ১৯ পয়সা যোগ করলে ইউনিট প্রতি ব্যয় দাঁড়ায় ১৩ টাকা ৬ পয়সা।
এদিকে চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে এস আলম শিল্পগ্রুপের ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রটির আংশিক চালু হয় গত বছরে। এই কেন্দ্রটির সব হিসাব পাওয়া যায়নি। গত বছরের অক্টোবর মাসে কেন্দ্রটিতে ব্যবহৃত কয়লার দাম পড়েছে ইউনিটপ্রতি ৬ টাকা ৮৩ পয়সা। এর সঙ্গে কেন্দ্রটির ভাড়া যোগ করলে ওই মাসে গড় বিদ্যুতের মূল্য দাঁড়ায় ১১ টাকা ৫৫ পয়সা।
ইউনিটপ্রতি ব্যয়ে শীর্ষে আদানি ও বরিশাল
পিডিবির প্রকৌশলীরা বলছেন, আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রটির খরচ সামাল দিতেই পিডিবি বিপদে পড়েছে। ২ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের কয়লার দাম গত ১০ মাসে গড়ে পড়েছে ইউনিটপ্রতি ১৫ টাকা ৬৯ পয়সা। কেন্দ্রটির ক্যাপাসিটি চার্জ ইউনিটপ্রতি ৪ টাকা ৫৫ পয়সা যোগ করলে উৎপাদন ব্যয় দাঁড়ায় ২০ টাকা ২৪ পয়সা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভারতের বৃহৎ শিল্পপ্রতিষ্ঠান আদানির নিজের কয়লাখনি থেকে কয়লা আনায় কেন্দ্রটির বিদ্যুৎ উৎপাদন বেশি। সে কারণে পিডিবির ক্ষতির পরিমাণও বেশি।
কয়লার বিদ্যুৎকেন্দ্র বেশ দাম পড়ছে কেন, জানতে চাইলে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সিনিয়র সহসভাপতি ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এম শামসুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র সস্তা ছিল না। এই কেন্দ্রগুলো পিডিবির জন্য এখনো বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আদানিকে কী প্রক্রিয়ায় কেন্দ্র দিয়েছে, তা প্রকাশ্য আনতে হবে। কারণ, আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বাংলাদেশের জন্য শ্বেতহস্তীতে পরিণত হয়েছে। এই কেন্দ্র একাই পিডিবির বড় দুঃখের কারণ হয়ে গেছে।
বরিশাল বিদ্যুৎকেন্দ্রটির উৎপাদন ব্যয় আদানি থেকেও ৬১ পয়সা বেশি। ৩০৭ মেগাওয়াটের এই কেন্দ্র কয়লার অভাবে বন্ধ থাকে। গত ১০ মাসের মধ্যে ৭ মাস চলেছে এটি। সাত মাসে গড়ে কেন্দ্রটির জ্বালানি ব্যয় হয়েছে প্রতি ইউনিট ১৬ টাকা ৯১ পয়সা। এর সঙ্গে কেন্দ্রের ভাড়া ৩ টাকা ৯৪ পয়সা যোগ করলে ইউনিটপ্রতি দাঁড়ায় ২০ টাকা ৮৫ পয়সা।
পিডিবির দুজন শীর্ষ প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বরিশাল বিদ্যুৎকেন্দ্রটি কয়লার অভাবে খুব বেশি উৎপাদনে থাকে না। এই কেন্দ্র ডলার-সংকটের কারণে এলসি বা আমদানি ঋণপত্র খুলতে পারে না। তারা বাংলাদেশের ভেতর থেকে ইটভাটায় আনা কয়লা বাংলাদেশি টাকা দিয়ে কিনে উৎপাদনে যায় মাঝেমধ্যে। কেন্দ্রটির পরিস্থিতি এতই করুণ যে তারা বিভিন্ন দেশি ও বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে গিয়ে কেন্দ্রটি বিক্রি করার প্রস্তাব নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কেন্দ্রটি কেনার বিষয়ে চীনা একটি কোম্পানির সঙ্গে প্রাথমিক আলাপও হয়েছে। তবে এই কেন্দ্রটির জমি নিয়ে আদালতে মামলা থাকায় অনেকে কেনার ক্ষেত্রে আগ্রহ কম দেখাচ্ছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও পরিবেশ আন্দোলনকর্মী আনু মুহাম্মদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র কখনোই সস্তা ছিল না। মূলত সরকার কিছু দেশ ও কোম্পানিকে বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ দেবে; সে কারণে এসব প্রচার করেছিল। এটা লবিস্টদের চাপে করা হয়েছিল। এখন এসে এসব পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে সৌরবিদ্যুৎ থেকেও অনেক বেশি খরচ পড়ে।
জাপানের সরকারি সাহায্য সংস্থা জাইকার অর্থায়নে বিদ্যুতের মহাপরিকল্পনা করা হয় ২০১০ সালে। সে পরিকল্পনায় ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা বলা হয়, যার অর্ধেকের বেশি কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রগুলো থেকে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ১৭টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমতি দেয় সরকার। ব্যাপক আকারে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ শুরুতেই দেশে ও বিদেশে সমালোচনার মুখে পড়ে। তখন সরকারের প্রধান যুক্তি ছিল, কয়লার বিদ্যুৎ সব থেকে সস্তা। ১৩ বছর পর এসে দেখা যাচ্ছে, কয়লা
কোনোভাবেই সস্তা না। স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত দিক বাদ দিলেও কয়লার বিদ্যুতে ইউনিটপ্রতি খরচ সৌরবিদ্যুৎকে ছাড়িয়ে গেছে।
কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রে বিপুল উৎপাদন ব্যয়ের খেসারত দিতে হচ্ছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে (পিডিবি)। উচ্চমূল্যে কেনা বিদ্যুতের দাম দিতে গিয়ে গত বছর পিডিবির লোকসান হয়েছে প্রায় ৪৮ হাজার কোটি টাকা। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি বকেয়া পাওনা দিতে পারছে না। পিডিবির কাছে বেসরকারি এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর পাওনা দাঁড়িয়েছে ২৫ হাজার কোটি টাকা।
কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যয় সম্পর্কে সরকার হয়তো কিছুটা আঁচ করতে পেরেছিল। সে কারণে ১৭টি কেন্দ্রের অনুমতি দিলেও পরে সাতটি বাতিল করে দিয়েছে। বিদ্যুতের মহাপরিকল্পনার ছয়টি কয়লাভিত্তিক কেন্দ্র পুরোভাগে উৎপাদনে এসেছে। বাকি চারটি উৎপাদনে আসার কথা রয়েছে। উৎপাদনে আসা কেন্দ্রগুলোর গড় উৎপাদন ব্যয় ইউনিটপ্রতি প্রায় ১০ টাকা থেকে ২১ টাকা। অন্যদিকে পরিবেশবান্ধব সৌরবিদ্যুতে বর্তমানে উৎপাদন ব্যয় প্রতি ইউনিটে ১১ টাকার মতো।
কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণ কী—এমন প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ গতকাল রোববার টেলিফোনে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা যখন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তি করেছিলাম, তখন ডলারের দাম ছিল ৮০ থেকে ৮২ টাকা। এখন সেটি সরকারি হিসাবে ১১০ টাকা, বাস্তবে আরও বেশি। ডলারের এই পার্থক্যর কারণেই দামটা বেড়ে গেছে। এ ছাড়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক জ্বালানির বাজারও বেশ অস্থির। সামনে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের খরচ আরও কমবে।’
দেশে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম ব্যয়বহুল প্রকল্প মাতারবাড়ী। কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ীতে নির্মিত এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঙ্গে রয়েছে একটি গভীর সমুদ্রবন্দর সুবিধার কয়লাবন্দর। বন্দর ও বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণ ব্যয় প্রায় ৫২ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এটি হবে দুনিয়ার সব থেকে ব্যয়বহুল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। কেন্দ্রটি গত বছরের নভেম্বরের মাঝামাঝি উৎপাদনে এসেছে। এই কেন্দ্রের উৎপাদন ব্যয়ের তথ্য পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, পৃথিবীর অন্যতম ব্যয়বহুল এই কেন্দ্রের ব্যয় সবগুলো কেন্দ্রের রেকর্ড ছাপিয়ে যাবে।
বাংলাদেশে এই মুহূর্তে ছয়টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু আছে। চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে এই কেন্দ্র এখনো পুরোদমে চালু হয়নি। বাকি চারটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মধ্যে হলো পটুয়াখালীর পায়রাতে বাংলাদেশ ও চীনের সমান মালিকানায় নির্মিত ১৩০০ মেগাওয়াটের পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র, রামপাল ১৩৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, আদানি ২০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র ও বরগুনার ৩০৭ মেগাওয়াট বরিশাল বিদ্যুৎকেন্দ্র।
পিডিবির প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন, পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ-চীন পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিসিপিসিএল) নামে একটি প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন করা হয়েছে। গত বছরের এপ্রিল থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত ১০ মাসে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রে ইউনিটপ্রতি জ্বালানি ব্যয় পড়েছে গড়ে ৬ টাকা ৮২ পয়সা। এর সঙ্গে কেন্দ্রটির ক্যাপাসিটি চার্জ ২ টাকা ৮৩ পয়সা যোগ করলে এখানকার প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম পড়েছে ৯ টাকা ৬৫ পয়সা।
এরপরেই রয়েছে বাগেরহাটে সুন্দরবনের পাশে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র। ১৩২০ মেগাওয়াটের কেন্দ্রটির প্রতি ইউনিট কয়লার দাম পড়েছে ৭ টাকা ৮৭ পয়সা। এর সঙ্গে কেন্দ্রভাড়া ৫ টাকা ১৯ পয়সা যোগ করলে ইউনিট প্রতি ব্যয় দাঁড়ায় ১৩ টাকা ৬ পয়সা।
এদিকে চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে এস আলম শিল্পগ্রুপের ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রটির আংশিক চালু হয় গত বছরে। এই কেন্দ্রটির সব হিসাব পাওয়া যায়নি। গত বছরের অক্টোবর মাসে কেন্দ্রটিতে ব্যবহৃত কয়লার দাম পড়েছে ইউনিটপ্রতি ৬ টাকা ৮৩ পয়সা। এর সঙ্গে কেন্দ্রটির ভাড়া যোগ করলে ওই মাসে গড় বিদ্যুতের মূল্য দাঁড়ায় ১১ টাকা ৫৫ পয়সা।
ইউনিটপ্রতি ব্যয়ে শীর্ষে আদানি ও বরিশাল
পিডিবির প্রকৌশলীরা বলছেন, আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রটির খরচ সামাল দিতেই পিডিবি বিপদে পড়েছে। ২ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের কয়লার দাম গত ১০ মাসে গড়ে পড়েছে ইউনিটপ্রতি ১৫ টাকা ৬৯ পয়সা। কেন্দ্রটির ক্যাপাসিটি চার্জ ইউনিটপ্রতি ৪ টাকা ৫৫ পয়সা যোগ করলে উৎপাদন ব্যয় দাঁড়ায় ২০ টাকা ২৪ পয়সা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভারতের বৃহৎ শিল্পপ্রতিষ্ঠান আদানির নিজের কয়লাখনি থেকে কয়লা আনায় কেন্দ্রটির বিদ্যুৎ উৎপাদন বেশি। সে কারণে পিডিবির ক্ষতির পরিমাণও বেশি।
কয়লার বিদ্যুৎকেন্দ্র বেশ দাম পড়ছে কেন, জানতে চাইলে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সিনিয়র সহসভাপতি ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এম শামসুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র সস্তা ছিল না। এই কেন্দ্রগুলো পিডিবির জন্য এখনো বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আদানিকে কী প্রক্রিয়ায় কেন্দ্র দিয়েছে, তা প্রকাশ্য আনতে হবে। কারণ, আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বাংলাদেশের জন্য শ্বেতহস্তীতে পরিণত হয়েছে। এই কেন্দ্র একাই পিডিবির বড় দুঃখের কারণ হয়ে গেছে।
বরিশাল বিদ্যুৎকেন্দ্রটির উৎপাদন ব্যয় আদানি থেকেও ৬১ পয়সা বেশি। ৩০৭ মেগাওয়াটের এই কেন্দ্র কয়লার অভাবে বন্ধ থাকে। গত ১০ মাসের মধ্যে ৭ মাস চলেছে এটি। সাত মাসে গড়ে কেন্দ্রটির জ্বালানি ব্যয় হয়েছে প্রতি ইউনিট ১৬ টাকা ৯১ পয়সা। এর সঙ্গে কেন্দ্রের ভাড়া ৩ টাকা ৯৪ পয়সা যোগ করলে ইউনিটপ্রতি দাঁড়ায় ২০ টাকা ৮৫ পয়সা।
পিডিবির দুজন শীর্ষ প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বরিশাল বিদ্যুৎকেন্দ্রটি কয়লার অভাবে খুব বেশি উৎপাদনে থাকে না। এই কেন্দ্র ডলার-সংকটের কারণে এলসি বা আমদানি ঋণপত্র খুলতে পারে না। তারা বাংলাদেশের ভেতর থেকে ইটভাটায় আনা কয়লা বাংলাদেশি টাকা দিয়ে কিনে উৎপাদনে যায় মাঝেমধ্যে। কেন্দ্রটির পরিস্থিতি এতই করুণ যে তারা বিভিন্ন দেশি ও বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে গিয়ে কেন্দ্রটি বিক্রি করার প্রস্তাব নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কেন্দ্রটি কেনার বিষয়ে চীনা একটি কোম্পানির সঙ্গে প্রাথমিক আলাপও হয়েছে। তবে এই কেন্দ্রটির জমি নিয়ে আদালতে মামলা থাকায় অনেকে কেনার ক্ষেত্রে আগ্রহ কম দেখাচ্ছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও পরিবেশ আন্দোলনকর্মী আনু মুহাম্মদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র কখনোই সস্তা ছিল না। মূলত সরকার কিছু দেশ ও কোম্পানিকে বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ দেবে; সে কারণে এসব প্রচার করেছিল। এটা লবিস্টদের চাপে করা হয়েছিল। এখন এসে এসব পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে সৌরবিদ্যুৎ থেকেও অনেক বেশি খরচ পড়ে।
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৫ দিন আগে‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।
জাপানের সরকারি সাহায্য সংস্থা জাইকার অর্থায়নে বিদ্যুতের মহাপরিকল্পনা করা হয় ২০১০ সালে। সে পরিকল্পনায় ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা বলা হয়, যার অর্ধেকের বেশি কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রগুলো থেকে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ১৭টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমতি দেয় সরকার। ব্যাপক আকারে কয়লাভিত্তিক বিদ
২৫ মার্চ ২০২৪‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]
জাপানের সরকারি সাহায্য সংস্থা জাইকার অর্থায়নে বিদ্যুতের মহাপরিকল্পনা করা হয় ২০১০ সালে। সে পরিকল্পনায় ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা বলা হয়, যার অর্ধেকের বেশি কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রগুলো থেকে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ১৭টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমতি দেয় সরকার। ব্যাপক আকারে কয়লাভিত্তিক বিদ
২৫ মার্চ ২০২৪গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৫ দিন আগেভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।
জাপানের সরকারি সাহায্য সংস্থা জাইকার অর্থায়নে বিদ্যুতের মহাপরিকল্পনা করা হয় ২০১০ সালে। সে পরিকল্পনায় ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা বলা হয়, যার অর্ধেকের বেশি কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রগুলো থেকে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ১৭টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমতি দেয় সরকার। ব্যাপক আকারে কয়লাভিত্তিক বিদ
২৫ মার্চ ২০২৪গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৫ দিন আগে‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।
জাপানের সরকারি সাহায্য সংস্থা জাইকার অর্থায়নে বিদ্যুতের মহাপরিকল্পনা করা হয় ২০১০ সালে। সে পরিকল্পনায় ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা বলা হয়, যার অর্ধেকের বেশি কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রগুলো থেকে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ১৭টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমতি দেয় সরকার। ব্যাপক আকারে কয়লাভিত্তিক বিদ
২৫ মার্চ ২০২৪গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৫ দিন আগে‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫