Ajker Patrika

কর্মসংস্থান কর্মসূচিতে অনিয়ম

মীর মো. মহিব্বুল্লাহ, পটুয়াখালী
আপডেট : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১০: ০২
কর্মসংস্থান কর্মসূচিতে অনিয়ম

পটুয়াখালীতে অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচিতে প্রথম ধাপে শ্রমিক দিয়ে কাজ করানোর পরিবর্তে খননযন্ত্রের মাধ্যমে (এক্সকাভেটর) কাজ করানো হচ্ছে। এভাবে নিয়ম ভেঙে পটুয়াখালী সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ৪০ দিনের কর্মসূচি বাস্তবায়ন হচ্ছে। কাজ নিয়ে নানা অভিযোগ এলাকাবাসীর। এ ছাড়া সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী এই প্রকল্প চলমান থাকার সময় নিয়মিত তদারকির কথা থাকলেও তা করা হচ্ছে না বলেও অভিযোগ রয়েছে।

জানা গেছে, সরকারিভাবে এই প্রকল্পকে অতিদরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচি ওয়েজ প্রকল্প নাম দিলেও স্থানীয়ভাবে এটি ৪০ দিনের কর্মসূচি হিসেবে পরিচিত। ২০২১-২২ অর্থবছরে এবার পটুয়াখালী সদর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে ৩৫টি মাটির রাস্তা নির্মাণে ৯৭৮ জন শ্রমিকের বিপরীতে ১ কোটি ৫৬ লাখ ৪৮ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তবে বাস্তবে এসব প্রকল্পের অধিকাংশেই কোনো শ্রমিক নেই।

এদিকে গত ২২ জানুয়ারি থেকে পটুয়াখালী সদর উপজেলায় শুরু হওয়া সরকারের এই কর্মসূচি আগামী ২ মার্চ পর্যন্ত চলার কথা ছিল। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ১০১ জন শ্রমিক দিয়ে তিনটি সড়ক নির্মাণের কথা, যা শেষ করতে মোট ১৬ লাখ ১৬ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তবে সরেজমিনে দেখা গেছে, মাটির রাস্তা নির্মাণে এক্সকাভেটর মেশিন ব্যবহার করা হচ্ছে। তিনটি প্রকল্পের কোনোটিতেই শ্রমিক দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে না। অতিদরিদ্র কর্মহীন শ্রমিকেরা যেমন কাজ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, তেমনি সড়কের পাশে থাকা মানুষের গাছপালাসহ তাঁদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে বলেও অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।

লাউকাঠী ইউনিয়নের নয়া মিয়ার বাড়ি থেকে হাজিবাড়ি পর্যন্ত রাস্তা পুনর্নির্মাণ প্রকল্পের ওই এলাকার বাসিন্দা মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘বৃষ্টি হইলে কত কষ্টে এই রাস্তা দিয়া যাই। এবার আমাগো দিয়া সরকার এই রাস্তা করানোর কথা, কিন্তু আমাগো মেম্বার মেশিন দিয়া রাস্তা কাইট্টা চইল্লা গেছে। রাস্তা যা আছেলে তা-ও নষ্ট করছে। আমরা করলে সুন্দর করে করতে পারতাম’

ওই এলাকার মিজানুর রহমান বলেন, ‘ভেকু মেশিন দিয়া রাস্তা কাইট্টা আমার ৫০ হাজার টাকার গাছ নষ্ট করছে।’

ওই এলাকার হাজিবাড়ির বাসিন্ধা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আবদুল মালেক বলেন, ‘ভেকু মেশিন দিয়ে কাজ করছে। কাজ এখনো শেষ হয়নি। মাটি ফেলে রাখায় চলাচলে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। প্রথমে শুনেছিলাম লেবার দিয়ে রাস্তার কাজ করানো হবে। পরে দেখলাম লেবার ছাড়াই কাজ হচ্ছে।’

এদিকে লাউকাঠী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. শহিদুল ইসলাম খোকন বলেন, ‘সরকার শ্রমিকপ্রতি দৈনিক ৪০০ টাকা হারে মজুরি নির্ধারণ করলেও, এই টাকায় শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। আর সে কারণেই আমরা ভেকু ব্যবহার করছি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পটুয়াখালী সদর উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘৪০ দিন প্রকল্পে শ্রমিক দিয়ে করবে। এক্সকাভেটর দিয়ে করার বৈধতা নাই, আর আমরা কাউকে করতে বলিও নাই। এবার শ্রমিকদের নগদ অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে, যে কাজ করবে, সে পাবে। এক্সকাভেটর দিয়ে কাজ করলে টাকা পাবেও না, আর আমরা দিব না।’

তদারকির বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, ‘৩৫টা প্রকল্পে কাজ চলে। তদারকি নাই বললে তো হবে না। লাউকাঠি আমি তিনবার গিয়েছি।’ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, ‘এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে দেখছি। এ রকম হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জট খুলছে ব্ল্যাংক স্মার্ট কার্ড ক্রয়ের

এনসিপি নেতার বাড়িতে কাফনের কাপড়, চিরকুটে লেখা—‘প্রস্তুত হ রাজাকার’

গণশুনানিতে দুদক চেয়ারম্যানের প্রতি ক্ষোভ দেখালেন মৎস্যচাষি

যাচ্ছিলেন বিয়ের দিন-তারিখ ঠিক করতে, গণপিটুনিতে প্রাণ হারালেন জামাই-শ্বশুর

৪০ পুলিশ কর্মকর্তার পদক প্রত্যাহার, অর্থ ফেরতের নির্দেশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত