Ajker Patrika

চার মাসেই স্কুল ভবনে ফাটল

মো. শামসুল হক, মির্জাগঞ্জ
আপডেট : ১৫ অক্টোবর ২০২১, ১০: ৩৯
চার মাসেই স্কুল ভবনে ফাটল

মির্জাগঞ্জের মাধবখালী ইউনিয়নে চৈতা গ্রামের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আবু ইউসুফ আলী মোল্লা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়। আট মাস আগে বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হয়। পরে গত ২৩ মে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের ভবনটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রায় দুই কোটি ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় বিদ্যালয়ের ভবনটি। তবে উদ্বোধনের মাত্র চার মাসেই ভবনের দেয়ালের বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে ফাটল। ফলে আতঙ্কে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০১৯ সালে আবু ইউসুফ আলী মোল্লা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ভবনটি নির্মাণ করা হয়। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে নির্মাণকাজ শেষ হয়। তবে ভবনটি উদ্বোধনের মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই এটির বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দেয়। অভিযোগ পেয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার উদ্যোগে ঠিকাদারের মাধ্যমে ভবনটির ফাটল সংস্কার করা হয়। তবে এতে কোনো লাভ হয়নি। পুনরায় ফাটল দেখা দিয়ে বর্তমানে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে ভবনটি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গাজী মো. মোতাহার উদ্দিন বলেন, গত ১২ সেপ্টেম্বর শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় ভবনটি। নতুন ভবন পেয়ে শিক্ষক-কর্মচারী, শিক্ষার্থীসহ সবাই খুশি হয়েছিল। কিন্তু নিম্নমানের কাজের কারণে কিছুদিন পরই এটি মেরামতের প্রয়োজন পড়ে। যদিও নামসর্বস্ব সংস্কার কাজও করা হয় ভবনের কিছু অংশে। তবে ভারী বৃষ্টিতে ভবনের ছাদ চুঁয়ে পানি পড়ে। প্রধান শিক্ষক বলেন, ভবনের বিভিন্ন স্থানে দৃশ্যমান হচ্ছে ফাটল। এতে ভবটিতে ক্লাস করতে ভয় পাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন (পিআইও) কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়। ৮টি কক্ষ ও ২টি চিলেকোঠা বিশিষ্ট দ্বিতল ভবনটি নির্মাণ করা হয়। বরগুনার বেতাগী উপজেলার মেসার্স খান এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভবন নির্মাণের কাজ করে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভবনটির সামনের ডান পাশের দিকের দেয়ালের বিভিন্ন অংশে বড় বড় ফাটল, দোতলায় ওঠার সিঁড়ির আস্তর উঠে গেছে, প্রধান শিক্ষকের কক্ষ, করিডর, শ্রেণিকক্ষের দেয়াল ও পলেস্তারায় ফাটল ধরেছে। ভেতরে কয়েকটি শ্রেণিকক্ষের ছাদ চুঁইয়ে পানি পড়ে ভবনের ভেতরের রং নষ্ট হয়ে সেখানে শেওলা পড়ে গেছে।

বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী জান্নাতি বলেন, বৃষ্টিতে ছাদ দিয়ে শ্রেণিকক্ষের ভেতরে পানি পড়ে। এতে ক্লাস করতে আমাদের কষ্ট হয়। পানি পড়ে শেওলা ধরেছে ছাদের কিছু অংশে। আর ভবনের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখে আমাদের ভয় লাগে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স খান এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. খলিলুর রহমান বলেন, ‘আমার লাইসেন্স নিয়ে এক ব্যক্তি কাজ করেছেন। পিআইও সাহেব বিষয়টি নিয়ে আমার সঙ্গে আলাপ করেছেন। আমি এর বেশি কিছু জানি না।’ নির্মাণকাজের সাব ঠিকাদার মো. মামুন বলেন, বিদ্যালয়ের যে স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে সেসব স্থানে আমি দ্রুত মেরামত করে দেব।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ের ভবনের ফাটলে ভয়ের কিছু নেই। পিলার ও বিমে ফাটল নেই। নির্মাণের সময় ভালো কিউরিং না হওয়ায় এ ধরনের ফাটল দেখা দিতে পারে। শিগগিরই ভবন মেরামতের ব্যবস্থা করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত