অরুণ কর্মকার

আকার-আয়তন ও ব্যাপ্তিতে আমাদের রাজধানী শহর ঢাকা এক মহানগরীই বটে। তবে নগর ব্যবস্থাপনার আধুনিক যেসব বৈশিষ্ট্য, তার ছিটেফোঁটাও এখন পর্যন্ত এখানে নেই। এখন পর্যন্ত নেই বলছি কারণ, আশায় আছি কোনো এক সময় থাকবে। অবশ্য সে আশা যে প্রায়ই দুরাশা বলে মনে হয় না, সে কথা বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি না।
এই যে আশাকে ছাপিয়ে দুরাশার প্রকট হয়ে ওঠা, এর কারণ যে শুধু এই মহানগরীতে একের পর এক ঘটে চলা প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা, তা নয়। আরও কারণ আছে। যেমন, মোট ৫৪টি সংস্থা আমাদের এই মহানগরীর উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনার কোনো না কোনো দায়িত্ব পালনে নিয়োজিত আছে। কিন্তু তাদের কাজের মধ্যে সমন্বয় আছে বলে কেউ কখনো শোনেনি, সমন্বয়ের কোনো নজির দেখা যাওয়া তো দূরের কথা।
এই সমন্বয়হীনতারও কারণ আছে। ওই ৫৪টি সংস্থার প্রতিটিরই নিজস্ব আইনকানুন আছে। সেসবের আওতায় পরিচালিত হয় তারা। কাজেই যার যার পরিকল্পনা কিংবা স্বকপোলকল্পনা অনুযায়ীও কাজ করতে বাধা নেই। একটির সঙ্গে আরেকটির, একের সঙ্গে অপরের সমন্বয় করার কোনো বাধ্যবাধকতা তাদের নেই। অথচ আধুনিক নগর ব্যবস্থাপনার অপরিহার্য অনুষঙ্গ হলো এই সমন্বয়।
আমাদের নগর ব্যবস্থাপনার অবস্থা যখন এই, তখন নগরী যে অরক্ষিত হয়ে পড়বে, সে তো আর কাউকে বলে বোঝাতে হয় না। তবে বলার বিষয় হলো, এমন একটি অরক্ষিত নগরীতে শ্রেণি-পেশা-সামাজিক অবস্থাননির্বিশেষে সব নাগরিক হয়ে পড়ে অনিরাপদ। নাগরিকদের জীবন-জীবিকা হয়ে যায় অনিশ্চিত। পবিত্র শবে বরাতের দিন বিকেলে গুলিস্তানসংলগ্ন কুইন্স মার্কেটে স্যানিটারি সামগ্রী কিনতে এসে প্রাণ হারিয়েছেন যে দম্পতি, কিংবা যে তরুণ এসেছিলেন মায়ের জন্য ইফতারসামগ্রী নিতে, এমনকি যাঁরা পথচারী ছিলেন, ওই ভবনের সামনে বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রী ছিলেন যাঁরা, তাঁদের মধ্যে হতাহতদের মতো পরিণতি এই নগরীর যেকোনো নাগরিকের হতে পারে যেকোনো দিন, যেকোনো সময়।
আমাদের নগর ব্যবস্থাপনার আরেকটি বিশেষ লক্ষণীয় বিষয় হলো, যেখানে যখন যে কারণেই দুর্ঘটনা ঘটুক, আর যে বা যাঁরাই সে দুর্ঘটনার শিকার হন, তার দায় কারও নয়। কোনো সংস্থা কিংবা কর্তৃপক্ষ এর কোনো দায় নেয় না। কখনো তাদের ওপর দায় চাপেও না। ‘কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়’ গোছের একটা ব্যাপার আরকি! অথচ নগর ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব তাদের। দায় কিছুটা চাপে সংশ্লিষ্ট ভবনের মালিকের ঘাড়ে। আর চূড়ান্তভাবে চাপে গ্যাস কিংবা বিদ্যুৎ প্রভৃতি ইউটিলিটির ওপর।
তা সে ইউটিলিটির দায় তো আছেই। আমাদের গ্যাস-বিদ্যুতের ব্যবহার যত বেড়েছে, এগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দুর্ঘটনাও বেড়েছে। ফায়ার সার্ভিসের তথ্য বলছে, এই ঢাকাতেই নাকি প্রতিবছর তিন হাজারের বেশি অগ্নিকাণ্ড ঘটে। অর্থাৎ প্রতিদিন ৮-৯টি। এর বেশির ভাগেরই কারণ গ্যাস-বিদ্যুৎ ব্যবস্থার ত্রুটি এবং সেই সূত্রে বিস্ফোরণ। কিন্তু আমাদের নগর ব্যবস্থাপনায় এর প্রতিকারের কোনো বিধান নেই। আধুনিক নগর ব্যবস্থাপনায় আছে। নগরবাসী এবং নগর ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে নিয়ম মেনে সে দায়িত্ব পালন করে।
যেমন, বিদ্যুৎ-সংযোগের ক্ষেত্রে সংযোগ দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট বিতরণ কোম্পানির পক্ষ থেকে বাসা-বাড়ি কিংবা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান জরিপ করে নির্দিষ্ট লোডে (বিদ্যুৎ ব্যবহারের নির্ধারিত পরিমাণ) সংযোগ দেওয়া হয়। এরপর আর বিতরণ কোম্পানির কোনো খবর থাকে না বিল নেওয়া ছাড়া। এদিকে গ্রাহক বছরের পর বছর ধরে ইচ্ছেমতো বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম বাড়িয়ে চলেন। বিদ্যুৎ ব্যবহারও নির্ধারিত লোডের চেয়ে অনেক বেশি হয়। সেই বাড়তি বিলও বিতরণ কোম্পানি নিতে থাকে। কিন্তু গ্রাহক অননুমোদিতভাবে লোড বাড়ানোর ফলে তাঁর বাড়ির বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় কতটা ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে, উভয় পক্ষের কাছেই তা থাকে উপেক্ষিত। ফলে দুর্ঘটনা ঘটে। এ ক্ষেত্রে গ্রাহকের যেমন দায় আছে, তেমনি দায় আছে বিতরণ কোম্পানিরও। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, শিল্প-কারখানায় বিদ্যুৎ ব্যবহার হয় অনেক বেশি। তাই সেখানে অব্যবস্থাপনার ঝুঁকিও অনেক উঁচুমাত্রার। বিতরণ কোম্পানি বছরে কিংবা দুই বছরেও একবার গ্রাহকের দুয়ারে হাজির হলে এসব দুর্ঘটনা কমত।
নগর-মহানগরীর কোনো ভবনে গ্যাস জমতে পারে নানাভাবে। রান্নার গ্যাসলাইনের ছিদ্র থেকে ছড়িয়ে পড়া গ্যাস যেমন ভবনের কোনো আবদ্ধ স্থানে দীর্ঘদিন ধরে ধীরে ধীরে জমা হতে পারে, তেমনি পয়োনিষ্কাশন লাইনের ছিদ্র, ভূগর্ভস্থ জলাধার, সেপটিক ট্যাংক, জেনারেটর প্রভৃতি থেকেও গ্যাস জমা হতে পারে। এই ধরনের জমা হওয়া গ্যাস কোনো অগ্নিস্ফুলিঙ্গের সংস্পর্শে এলেই ঘটতে পারে ভয়াবহ বিস্ফোরণ। এইভাবে জমা হওয়া গ্যাসই ঢাকার সর্বশেষ দুটি বিস্ফোরণের কারণ বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
আমাদের গ্যাসলাইনগুলো অনেক পুরোনো। তাতে ছিদ্রও আছে অসংখ্য। বাসাবাড়ি, শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের লাইনও ছিদ্রমুক্ত নয়। তিতাস গ্যাস সঞ্চালন ও বিতরণ কোম্পানির হয়ে একটি পেশাদার প্রকৌশল প্রতিষ্ঠান বছর কয়েক আগে একটি জরিপ করেছিল গ্যাসলাইনের ছিদ্র বিষয়ে। সমগ্র ঢাকায় নয়, কয়েকটি এলাকায় করা হয়েছিল সেই জরিপ। তার ভিত্তিতে হিসাব করে দেখা গেছে, লাইনে ছিদ্র থাকায় প্রতিদিন তিতাসের সিস্টেম থেকে অন্তত ২০০ মিলিয়ন (২০ কোটি) ঘনফুট গ্যাস উবে যাচ্ছে। এই গ্যাস পুরোটাই যে বাতাসে মিলিয়ে যাচ্ছে, তা বলা যায় না। কোথাও কোথাও কোনো আবদ্ধ স্থানে (ট্র্যাপ) কিছু কিছু গ্যাস জমা হতে পারে, যা একসময় প্রাণঘাতী বিস্ফোরক হয়ে ওঠে।
এ ছাড়া আমাদের পয়োনিষ্কাশন-ব্যবস্থার অবস্থা যাচ্ছেতাই। সেখান থেকেও মিথেন গ্যাস তৈরি ও নির্গত হয়ে কোনো কোনো স্থানে জমতে পারে। সেপটিক ট্যাংক ও ভূগর্ভস্থ জলাধার পরিষ্কার করার সময় বিষাক্ত গ্যাসে শ্রমিকের মৃত্যুর খবর আমরা মাঝেমধ্যেই শুনে থাকি। এই বিষাক্ত গ্যাস আর কিছু না, মিথেন।
আমাদের ভবনগুলোর অধিকাংশ ত্রুটিপূর্ণ। আজকাল বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায়ও দেখা যায় কিছু অকালকুষ্মাণ্ড একত্র হয়ে কোনো একটা জায়গা কিনে কিংবা কোনোভাবে দখলে নিয়ে ভবন তৈরি করে ফ্ল্যাট বিক্রি করে। এরা সব বর্তমান অসুস্থ রাজনৈতিক-সামাজিক ব্যবস্থার ফসল হিসেবে গজিয়ে ওঠা বাটপার। এদের তৈরি ভবনগুলোও হয় সে রকমই। ফলে সাধারণ মানুষের ঝুঁকি বাড়ে।
কিন্তু আমাদের নগর ব্যবস্থাপকেরা কী করেন! গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি, পয়োনিষ্কাশন, মানসম্পন্ন ভবন নির্মাণ প্রভৃতি যে বিষয়গুলো এখানে উল্লেখ করা হলো, তার প্রতিটির জন্য অন্তত একটি করে সংস্থা রয়েছে। জননিরাপত্তার দৃষ্টিকোণ থেকে তারা কি নিয়মিত এগুলোর দেখভাল করে? করে না।
নগরে কোনো একটি ভবন তৈরি হওয়ার পর সেটি নিরাপদে বসবাসযোগ্য কি না, তা দেখার জন্যও কর্তৃপক্ষ রয়েছে। তাদের দায়িত্ব ভবনটির বাসযোগ্যতা পরীক্ষা করে একটি ব্যবহার সনদ (অকুপেন্সি সার্টিফিকেট) দেওয়া। শুধু তা-ই নয়, প্রতি তিন থেকে পাঁচ বছর পরপর ভবন পুনঃ পরীক্ষা করে সেই সনদ নবায়ন করারও বিধান রয়েছে। কিন্তু একজন অভিজ্ঞ পেশাজীবী জানালেন, ঢাকায় অন্তত ৬ লাখ ভবনের মধ্যে এই সনদ রয়েছে ১০০টির মতো ভবনের।
এ ছাড়া রয়েছে রান্নায় ব্যবহৃত এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার। এই সিলিন্ডার ব্যবহারের ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীর সতর্কতা বিশেষ প্রয়োজন। এখানে রয়েছে দাহ্য রাসায়নিক পদার্থের গুদাম। অনুমোদিত এবং অননুমোদিত। এই নগরীতে দুর্ঘটনা না ঘটার কি কোনো কারণ আছে?
নিমতলীতে অগ্নিকাণ্ডের পর এক যুগের বেশি সময় অতিবাহিত হয়েছে। চুরিহাট্টায় রাসায়নিকের গুদামে বিস্ফোরণের পর চার বছর চলে গেছে। রাসায়নিক সামগ্রীর গুদাম-ব্যবসার জন্য সরকার নতুন জায়গা করে দিয়েছে। তারপরও নগরীতে রাসায়নিকের গুদাম থাকে কীভাবে? রাখেন কারা? নগর ব্যবস্থাপনার এই হাল কারা করেছেন? যাঁরা করেছেন দুর্ঘটনার জন্য, প্রাণহানির জন্য, তাঁদের কোনো দায় নেই!
শুধু তো বিস্ফোরণ কিংবা অগ্নিকাণ্ড নয়, সড়ক দুর্ঘটনাও আছে! গত ফেব্রুয়ারি মাসেও এই ঢাকা মহানগরীতে ১৮ জন মারা গেছেন সড়ক দুর্ঘটনায়। এক দিন অন্তর একটি করে প্রাণ পৃথিবীর আর কোনো নগর-মহানগরীতে নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার উদাহরণ খুঁজে পাওয়া যাবে কি? অথচ কেউ দায় নেবেন না! কোনো ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠান দায়ী হবে না! বিস্ফোরণ-অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারানো মানুষের জন্য দাফন-কাফনের নিমিত্তে কিছু অর্থ দিয়েই শেষ হবে দায়িত্ব।
মূলত অব্যবস্থাপনার কারণে অরক্ষিত এই মহানগরী। এই মহানগরীতে সব ধরনের দুর্ঘটনা ও মৃত্যুর জন্য দায়ী কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা। অব্যবস্থাপনা এবং অব্যবস্থাপনা। এর সঙ্গে আরও থাকতে পারে অবহেলা। মানুষের প্রতি অবহেলা। কর্তব্যের প্রতি অবহেলা, যা ক্ষমার অযোগ্য।
অরুণ কর্মকার, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক

আকার-আয়তন ও ব্যাপ্তিতে আমাদের রাজধানী শহর ঢাকা এক মহানগরীই বটে। তবে নগর ব্যবস্থাপনার আধুনিক যেসব বৈশিষ্ট্য, তার ছিটেফোঁটাও এখন পর্যন্ত এখানে নেই। এখন পর্যন্ত নেই বলছি কারণ, আশায় আছি কোনো এক সময় থাকবে। অবশ্য সে আশা যে প্রায়ই দুরাশা বলে মনে হয় না, সে কথা বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি না।
এই যে আশাকে ছাপিয়ে দুরাশার প্রকট হয়ে ওঠা, এর কারণ যে শুধু এই মহানগরীতে একের পর এক ঘটে চলা প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা, তা নয়। আরও কারণ আছে। যেমন, মোট ৫৪টি সংস্থা আমাদের এই মহানগরীর উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনার কোনো না কোনো দায়িত্ব পালনে নিয়োজিত আছে। কিন্তু তাদের কাজের মধ্যে সমন্বয় আছে বলে কেউ কখনো শোনেনি, সমন্বয়ের কোনো নজির দেখা যাওয়া তো দূরের কথা।
এই সমন্বয়হীনতারও কারণ আছে। ওই ৫৪টি সংস্থার প্রতিটিরই নিজস্ব আইনকানুন আছে। সেসবের আওতায় পরিচালিত হয় তারা। কাজেই যার যার পরিকল্পনা কিংবা স্বকপোলকল্পনা অনুযায়ীও কাজ করতে বাধা নেই। একটির সঙ্গে আরেকটির, একের সঙ্গে অপরের সমন্বয় করার কোনো বাধ্যবাধকতা তাদের নেই। অথচ আধুনিক নগর ব্যবস্থাপনার অপরিহার্য অনুষঙ্গ হলো এই সমন্বয়।
আমাদের নগর ব্যবস্থাপনার অবস্থা যখন এই, তখন নগরী যে অরক্ষিত হয়ে পড়বে, সে তো আর কাউকে বলে বোঝাতে হয় না। তবে বলার বিষয় হলো, এমন একটি অরক্ষিত নগরীতে শ্রেণি-পেশা-সামাজিক অবস্থাননির্বিশেষে সব নাগরিক হয়ে পড়ে অনিরাপদ। নাগরিকদের জীবন-জীবিকা হয়ে যায় অনিশ্চিত। পবিত্র শবে বরাতের দিন বিকেলে গুলিস্তানসংলগ্ন কুইন্স মার্কেটে স্যানিটারি সামগ্রী কিনতে এসে প্রাণ হারিয়েছেন যে দম্পতি, কিংবা যে তরুণ এসেছিলেন মায়ের জন্য ইফতারসামগ্রী নিতে, এমনকি যাঁরা পথচারী ছিলেন, ওই ভবনের সামনে বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রী ছিলেন যাঁরা, তাঁদের মধ্যে হতাহতদের মতো পরিণতি এই নগরীর যেকোনো নাগরিকের হতে পারে যেকোনো দিন, যেকোনো সময়।
আমাদের নগর ব্যবস্থাপনার আরেকটি বিশেষ লক্ষণীয় বিষয় হলো, যেখানে যখন যে কারণেই দুর্ঘটনা ঘটুক, আর যে বা যাঁরাই সে দুর্ঘটনার শিকার হন, তার দায় কারও নয়। কোনো সংস্থা কিংবা কর্তৃপক্ষ এর কোনো দায় নেয় না। কখনো তাদের ওপর দায় চাপেও না। ‘কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়’ গোছের একটা ব্যাপার আরকি! অথচ নগর ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব তাদের। দায় কিছুটা চাপে সংশ্লিষ্ট ভবনের মালিকের ঘাড়ে। আর চূড়ান্তভাবে চাপে গ্যাস কিংবা বিদ্যুৎ প্রভৃতি ইউটিলিটির ওপর।
তা সে ইউটিলিটির দায় তো আছেই। আমাদের গ্যাস-বিদ্যুতের ব্যবহার যত বেড়েছে, এগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দুর্ঘটনাও বেড়েছে। ফায়ার সার্ভিসের তথ্য বলছে, এই ঢাকাতেই নাকি প্রতিবছর তিন হাজারের বেশি অগ্নিকাণ্ড ঘটে। অর্থাৎ প্রতিদিন ৮-৯টি। এর বেশির ভাগেরই কারণ গ্যাস-বিদ্যুৎ ব্যবস্থার ত্রুটি এবং সেই সূত্রে বিস্ফোরণ। কিন্তু আমাদের নগর ব্যবস্থাপনায় এর প্রতিকারের কোনো বিধান নেই। আধুনিক নগর ব্যবস্থাপনায় আছে। নগরবাসী এবং নগর ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে নিয়ম মেনে সে দায়িত্ব পালন করে।
যেমন, বিদ্যুৎ-সংযোগের ক্ষেত্রে সংযোগ দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট বিতরণ কোম্পানির পক্ষ থেকে বাসা-বাড়ি কিংবা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান জরিপ করে নির্দিষ্ট লোডে (বিদ্যুৎ ব্যবহারের নির্ধারিত পরিমাণ) সংযোগ দেওয়া হয়। এরপর আর বিতরণ কোম্পানির কোনো খবর থাকে না বিল নেওয়া ছাড়া। এদিকে গ্রাহক বছরের পর বছর ধরে ইচ্ছেমতো বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম বাড়িয়ে চলেন। বিদ্যুৎ ব্যবহারও নির্ধারিত লোডের চেয়ে অনেক বেশি হয়। সেই বাড়তি বিলও বিতরণ কোম্পানি নিতে থাকে। কিন্তু গ্রাহক অননুমোদিতভাবে লোড বাড়ানোর ফলে তাঁর বাড়ির বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় কতটা ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে, উভয় পক্ষের কাছেই তা থাকে উপেক্ষিত। ফলে দুর্ঘটনা ঘটে। এ ক্ষেত্রে গ্রাহকের যেমন দায় আছে, তেমনি দায় আছে বিতরণ কোম্পানিরও। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, শিল্প-কারখানায় বিদ্যুৎ ব্যবহার হয় অনেক বেশি। তাই সেখানে অব্যবস্থাপনার ঝুঁকিও অনেক উঁচুমাত্রার। বিতরণ কোম্পানি বছরে কিংবা দুই বছরেও একবার গ্রাহকের দুয়ারে হাজির হলে এসব দুর্ঘটনা কমত।
নগর-মহানগরীর কোনো ভবনে গ্যাস জমতে পারে নানাভাবে। রান্নার গ্যাসলাইনের ছিদ্র থেকে ছড়িয়ে পড়া গ্যাস যেমন ভবনের কোনো আবদ্ধ স্থানে দীর্ঘদিন ধরে ধীরে ধীরে জমা হতে পারে, তেমনি পয়োনিষ্কাশন লাইনের ছিদ্র, ভূগর্ভস্থ জলাধার, সেপটিক ট্যাংক, জেনারেটর প্রভৃতি থেকেও গ্যাস জমা হতে পারে। এই ধরনের জমা হওয়া গ্যাস কোনো অগ্নিস্ফুলিঙ্গের সংস্পর্শে এলেই ঘটতে পারে ভয়াবহ বিস্ফোরণ। এইভাবে জমা হওয়া গ্যাসই ঢাকার সর্বশেষ দুটি বিস্ফোরণের কারণ বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
আমাদের গ্যাসলাইনগুলো অনেক পুরোনো। তাতে ছিদ্রও আছে অসংখ্য। বাসাবাড়ি, শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের লাইনও ছিদ্রমুক্ত নয়। তিতাস গ্যাস সঞ্চালন ও বিতরণ কোম্পানির হয়ে একটি পেশাদার প্রকৌশল প্রতিষ্ঠান বছর কয়েক আগে একটি জরিপ করেছিল গ্যাসলাইনের ছিদ্র বিষয়ে। সমগ্র ঢাকায় নয়, কয়েকটি এলাকায় করা হয়েছিল সেই জরিপ। তার ভিত্তিতে হিসাব করে দেখা গেছে, লাইনে ছিদ্র থাকায় প্রতিদিন তিতাসের সিস্টেম থেকে অন্তত ২০০ মিলিয়ন (২০ কোটি) ঘনফুট গ্যাস উবে যাচ্ছে। এই গ্যাস পুরোটাই যে বাতাসে মিলিয়ে যাচ্ছে, তা বলা যায় না। কোথাও কোথাও কোনো আবদ্ধ স্থানে (ট্র্যাপ) কিছু কিছু গ্যাস জমা হতে পারে, যা একসময় প্রাণঘাতী বিস্ফোরক হয়ে ওঠে।
এ ছাড়া আমাদের পয়োনিষ্কাশন-ব্যবস্থার অবস্থা যাচ্ছেতাই। সেখান থেকেও মিথেন গ্যাস তৈরি ও নির্গত হয়ে কোনো কোনো স্থানে জমতে পারে। সেপটিক ট্যাংক ও ভূগর্ভস্থ জলাধার পরিষ্কার করার সময় বিষাক্ত গ্যাসে শ্রমিকের মৃত্যুর খবর আমরা মাঝেমধ্যেই শুনে থাকি। এই বিষাক্ত গ্যাস আর কিছু না, মিথেন।
আমাদের ভবনগুলোর অধিকাংশ ত্রুটিপূর্ণ। আজকাল বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায়ও দেখা যায় কিছু অকালকুষ্মাণ্ড একত্র হয়ে কোনো একটা জায়গা কিনে কিংবা কোনোভাবে দখলে নিয়ে ভবন তৈরি করে ফ্ল্যাট বিক্রি করে। এরা সব বর্তমান অসুস্থ রাজনৈতিক-সামাজিক ব্যবস্থার ফসল হিসেবে গজিয়ে ওঠা বাটপার। এদের তৈরি ভবনগুলোও হয় সে রকমই। ফলে সাধারণ মানুষের ঝুঁকি বাড়ে।
কিন্তু আমাদের নগর ব্যবস্থাপকেরা কী করেন! গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি, পয়োনিষ্কাশন, মানসম্পন্ন ভবন নির্মাণ প্রভৃতি যে বিষয়গুলো এখানে উল্লেখ করা হলো, তার প্রতিটির জন্য অন্তত একটি করে সংস্থা রয়েছে। জননিরাপত্তার দৃষ্টিকোণ থেকে তারা কি নিয়মিত এগুলোর দেখভাল করে? করে না।
নগরে কোনো একটি ভবন তৈরি হওয়ার পর সেটি নিরাপদে বসবাসযোগ্য কি না, তা দেখার জন্যও কর্তৃপক্ষ রয়েছে। তাদের দায়িত্ব ভবনটির বাসযোগ্যতা পরীক্ষা করে একটি ব্যবহার সনদ (অকুপেন্সি সার্টিফিকেট) দেওয়া। শুধু তা-ই নয়, প্রতি তিন থেকে পাঁচ বছর পরপর ভবন পুনঃ পরীক্ষা করে সেই সনদ নবায়ন করারও বিধান রয়েছে। কিন্তু একজন অভিজ্ঞ পেশাজীবী জানালেন, ঢাকায় অন্তত ৬ লাখ ভবনের মধ্যে এই সনদ রয়েছে ১০০টির মতো ভবনের।
এ ছাড়া রয়েছে রান্নায় ব্যবহৃত এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার। এই সিলিন্ডার ব্যবহারের ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীর সতর্কতা বিশেষ প্রয়োজন। এখানে রয়েছে দাহ্য রাসায়নিক পদার্থের গুদাম। অনুমোদিত এবং অননুমোদিত। এই নগরীতে দুর্ঘটনা না ঘটার কি কোনো কারণ আছে?
নিমতলীতে অগ্নিকাণ্ডের পর এক যুগের বেশি সময় অতিবাহিত হয়েছে। চুরিহাট্টায় রাসায়নিকের গুদামে বিস্ফোরণের পর চার বছর চলে গেছে। রাসায়নিক সামগ্রীর গুদাম-ব্যবসার জন্য সরকার নতুন জায়গা করে দিয়েছে। তারপরও নগরীতে রাসায়নিকের গুদাম থাকে কীভাবে? রাখেন কারা? নগর ব্যবস্থাপনার এই হাল কারা করেছেন? যাঁরা করেছেন দুর্ঘটনার জন্য, প্রাণহানির জন্য, তাঁদের কোনো দায় নেই!
শুধু তো বিস্ফোরণ কিংবা অগ্নিকাণ্ড নয়, সড়ক দুর্ঘটনাও আছে! গত ফেব্রুয়ারি মাসেও এই ঢাকা মহানগরীতে ১৮ জন মারা গেছেন সড়ক দুর্ঘটনায়। এক দিন অন্তর একটি করে প্রাণ পৃথিবীর আর কোনো নগর-মহানগরীতে নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার উদাহরণ খুঁজে পাওয়া যাবে কি? অথচ কেউ দায় নেবেন না! কোনো ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠান দায়ী হবে না! বিস্ফোরণ-অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারানো মানুষের জন্য দাফন-কাফনের নিমিত্তে কিছু অর্থ দিয়েই শেষ হবে দায়িত্ব।
মূলত অব্যবস্থাপনার কারণে অরক্ষিত এই মহানগরী। এই মহানগরীতে সব ধরনের দুর্ঘটনা ও মৃত্যুর জন্য দায়ী কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা। অব্যবস্থাপনা এবং অব্যবস্থাপনা। এর সঙ্গে আরও থাকতে পারে অবহেলা। মানুষের প্রতি অবহেলা। কর্তব্যের প্রতি অবহেলা, যা ক্ষমার অযোগ্য।
অরুণ কর্মকার, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক
অরুণ কর্মকার

আকার-আয়তন ও ব্যাপ্তিতে আমাদের রাজধানী শহর ঢাকা এক মহানগরীই বটে। তবে নগর ব্যবস্থাপনার আধুনিক যেসব বৈশিষ্ট্য, তার ছিটেফোঁটাও এখন পর্যন্ত এখানে নেই। এখন পর্যন্ত নেই বলছি কারণ, আশায় আছি কোনো এক সময় থাকবে। অবশ্য সে আশা যে প্রায়ই দুরাশা বলে মনে হয় না, সে কথা বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি না।
এই যে আশাকে ছাপিয়ে দুরাশার প্রকট হয়ে ওঠা, এর কারণ যে শুধু এই মহানগরীতে একের পর এক ঘটে চলা প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা, তা নয়। আরও কারণ আছে। যেমন, মোট ৫৪টি সংস্থা আমাদের এই মহানগরীর উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনার কোনো না কোনো দায়িত্ব পালনে নিয়োজিত আছে। কিন্তু তাদের কাজের মধ্যে সমন্বয় আছে বলে কেউ কখনো শোনেনি, সমন্বয়ের কোনো নজির দেখা যাওয়া তো দূরের কথা।
এই সমন্বয়হীনতারও কারণ আছে। ওই ৫৪টি সংস্থার প্রতিটিরই নিজস্ব আইনকানুন আছে। সেসবের আওতায় পরিচালিত হয় তারা। কাজেই যার যার পরিকল্পনা কিংবা স্বকপোলকল্পনা অনুযায়ীও কাজ করতে বাধা নেই। একটির সঙ্গে আরেকটির, একের সঙ্গে অপরের সমন্বয় করার কোনো বাধ্যবাধকতা তাদের নেই। অথচ আধুনিক নগর ব্যবস্থাপনার অপরিহার্য অনুষঙ্গ হলো এই সমন্বয়।
আমাদের নগর ব্যবস্থাপনার অবস্থা যখন এই, তখন নগরী যে অরক্ষিত হয়ে পড়বে, সে তো আর কাউকে বলে বোঝাতে হয় না। তবে বলার বিষয় হলো, এমন একটি অরক্ষিত নগরীতে শ্রেণি-পেশা-সামাজিক অবস্থাননির্বিশেষে সব নাগরিক হয়ে পড়ে অনিরাপদ। নাগরিকদের জীবন-জীবিকা হয়ে যায় অনিশ্চিত। পবিত্র শবে বরাতের দিন বিকেলে গুলিস্তানসংলগ্ন কুইন্স মার্কেটে স্যানিটারি সামগ্রী কিনতে এসে প্রাণ হারিয়েছেন যে দম্পতি, কিংবা যে তরুণ এসেছিলেন মায়ের জন্য ইফতারসামগ্রী নিতে, এমনকি যাঁরা পথচারী ছিলেন, ওই ভবনের সামনে বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রী ছিলেন যাঁরা, তাঁদের মধ্যে হতাহতদের মতো পরিণতি এই নগরীর যেকোনো নাগরিকের হতে পারে যেকোনো দিন, যেকোনো সময়।
আমাদের নগর ব্যবস্থাপনার আরেকটি বিশেষ লক্ষণীয় বিষয় হলো, যেখানে যখন যে কারণেই দুর্ঘটনা ঘটুক, আর যে বা যাঁরাই সে দুর্ঘটনার শিকার হন, তার দায় কারও নয়। কোনো সংস্থা কিংবা কর্তৃপক্ষ এর কোনো দায় নেয় না। কখনো তাদের ওপর দায় চাপেও না। ‘কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়’ গোছের একটা ব্যাপার আরকি! অথচ নগর ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব তাদের। দায় কিছুটা চাপে সংশ্লিষ্ট ভবনের মালিকের ঘাড়ে। আর চূড়ান্তভাবে চাপে গ্যাস কিংবা বিদ্যুৎ প্রভৃতি ইউটিলিটির ওপর।
তা সে ইউটিলিটির দায় তো আছেই। আমাদের গ্যাস-বিদ্যুতের ব্যবহার যত বেড়েছে, এগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দুর্ঘটনাও বেড়েছে। ফায়ার সার্ভিসের তথ্য বলছে, এই ঢাকাতেই নাকি প্রতিবছর তিন হাজারের বেশি অগ্নিকাণ্ড ঘটে। অর্থাৎ প্রতিদিন ৮-৯টি। এর বেশির ভাগেরই কারণ গ্যাস-বিদ্যুৎ ব্যবস্থার ত্রুটি এবং সেই সূত্রে বিস্ফোরণ। কিন্তু আমাদের নগর ব্যবস্থাপনায় এর প্রতিকারের কোনো বিধান নেই। আধুনিক নগর ব্যবস্থাপনায় আছে। নগরবাসী এবং নগর ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে নিয়ম মেনে সে দায়িত্ব পালন করে।
যেমন, বিদ্যুৎ-সংযোগের ক্ষেত্রে সংযোগ দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট বিতরণ কোম্পানির পক্ষ থেকে বাসা-বাড়ি কিংবা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান জরিপ করে নির্দিষ্ট লোডে (বিদ্যুৎ ব্যবহারের নির্ধারিত পরিমাণ) সংযোগ দেওয়া হয়। এরপর আর বিতরণ কোম্পানির কোনো খবর থাকে না বিল নেওয়া ছাড়া। এদিকে গ্রাহক বছরের পর বছর ধরে ইচ্ছেমতো বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম বাড়িয়ে চলেন। বিদ্যুৎ ব্যবহারও নির্ধারিত লোডের চেয়ে অনেক বেশি হয়। সেই বাড়তি বিলও বিতরণ কোম্পানি নিতে থাকে। কিন্তু গ্রাহক অননুমোদিতভাবে লোড বাড়ানোর ফলে তাঁর বাড়ির বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় কতটা ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে, উভয় পক্ষের কাছেই তা থাকে উপেক্ষিত। ফলে দুর্ঘটনা ঘটে। এ ক্ষেত্রে গ্রাহকের যেমন দায় আছে, তেমনি দায় আছে বিতরণ কোম্পানিরও। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, শিল্প-কারখানায় বিদ্যুৎ ব্যবহার হয় অনেক বেশি। তাই সেখানে অব্যবস্থাপনার ঝুঁকিও অনেক উঁচুমাত্রার। বিতরণ কোম্পানি বছরে কিংবা দুই বছরেও একবার গ্রাহকের দুয়ারে হাজির হলে এসব দুর্ঘটনা কমত।
নগর-মহানগরীর কোনো ভবনে গ্যাস জমতে পারে নানাভাবে। রান্নার গ্যাসলাইনের ছিদ্র থেকে ছড়িয়ে পড়া গ্যাস যেমন ভবনের কোনো আবদ্ধ স্থানে দীর্ঘদিন ধরে ধীরে ধীরে জমা হতে পারে, তেমনি পয়োনিষ্কাশন লাইনের ছিদ্র, ভূগর্ভস্থ জলাধার, সেপটিক ট্যাংক, জেনারেটর প্রভৃতি থেকেও গ্যাস জমা হতে পারে। এই ধরনের জমা হওয়া গ্যাস কোনো অগ্নিস্ফুলিঙ্গের সংস্পর্শে এলেই ঘটতে পারে ভয়াবহ বিস্ফোরণ। এইভাবে জমা হওয়া গ্যাসই ঢাকার সর্বশেষ দুটি বিস্ফোরণের কারণ বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
আমাদের গ্যাসলাইনগুলো অনেক পুরোনো। তাতে ছিদ্রও আছে অসংখ্য। বাসাবাড়ি, শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের লাইনও ছিদ্রমুক্ত নয়। তিতাস গ্যাস সঞ্চালন ও বিতরণ কোম্পানির হয়ে একটি পেশাদার প্রকৌশল প্রতিষ্ঠান বছর কয়েক আগে একটি জরিপ করেছিল গ্যাসলাইনের ছিদ্র বিষয়ে। সমগ্র ঢাকায় নয়, কয়েকটি এলাকায় করা হয়েছিল সেই জরিপ। তার ভিত্তিতে হিসাব করে দেখা গেছে, লাইনে ছিদ্র থাকায় প্রতিদিন তিতাসের সিস্টেম থেকে অন্তত ২০০ মিলিয়ন (২০ কোটি) ঘনফুট গ্যাস উবে যাচ্ছে। এই গ্যাস পুরোটাই যে বাতাসে মিলিয়ে যাচ্ছে, তা বলা যায় না। কোথাও কোথাও কোনো আবদ্ধ স্থানে (ট্র্যাপ) কিছু কিছু গ্যাস জমা হতে পারে, যা একসময় প্রাণঘাতী বিস্ফোরক হয়ে ওঠে।
এ ছাড়া আমাদের পয়োনিষ্কাশন-ব্যবস্থার অবস্থা যাচ্ছেতাই। সেখান থেকেও মিথেন গ্যাস তৈরি ও নির্গত হয়ে কোনো কোনো স্থানে জমতে পারে। সেপটিক ট্যাংক ও ভূগর্ভস্থ জলাধার পরিষ্কার করার সময় বিষাক্ত গ্যাসে শ্রমিকের মৃত্যুর খবর আমরা মাঝেমধ্যেই শুনে থাকি। এই বিষাক্ত গ্যাস আর কিছু না, মিথেন।
আমাদের ভবনগুলোর অধিকাংশ ত্রুটিপূর্ণ। আজকাল বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায়ও দেখা যায় কিছু অকালকুষ্মাণ্ড একত্র হয়ে কোনো একটা জায়গা কিনে কিংবা কোনোভাবে দখলে নিয়ে ভবন তৈরি করে ফ্ল্যাট বিক্রি করে। এরা সব বর্তমান অসুস্থ রাজনৈতিক-সামাজিক ব্যবস্থার ফসল হিসেবে গজিয়ে ওঠা বাটপার। এদের তৈরি ভবনগুলোও হয় সে রকমই। ফলে সাধারণ মানুষের ঝুঁকি বাড়ে।
কিন্তু আমাদের নগর ব্যবস্থাপকেরা কী করেন! গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি, পয়োনিষ্কাশন, মানসম্পন্ন ভবন নির্মাণ প্রভৃতি যে বিষয়গুলো এখানে উল্লেখ করা হলো, তার প্রতিটির জন্য অন্তত একটি করে সংস্থা রয়েছে। জননিরাপত্তার দৃষ্টিকোণ থেকে তারা কি নিয়মিত এগুলোর দেখভাল করে? করে না।
নগরে কোনো একটি ভবন তৈরি হওয়ার পর সেটি নিরাপদে বসবাসযোগ্য কি না, তা দেখার জন্যও কর্তৃপক্ষ রয়েছে। তাদের দায়িত্ব ভবনটির বাসযোগ্যতা পরীক্ষা করে একটি ব্যবহার সনদ (অকুপেন্সি সার্টিফিকেট) দেওয়া। শুধু তা-ই নয়, প্রতি তিন থেকে পাঁচ বছর পরপর ভবন পুনঃ পরীক্ষা করে সেই সনদ নবায়ন করারও বিধান রয়েছে। কিন্তু একজন অভিজ্ঞ পেশাজীবী জানালেন, ঢাকায় অন্তত ৬ লাখ ভবনের মধ্যে এই সনদ রয়েছে ১০০টির মতো ভবনের।
এ ছাড়া রয়েছে রান্নায় ব্যবহৃত এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার। এই সিলিন্ডার ব্যবহারের ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীর সতর্কতা বিশেষ প্রয়োজন। এখানে রয়েছে দাহ্য রাসায়নিক পদার্থের গুদাম। অনুমোদিত এবং অননুমোদিত। এই নগরীতে দুর্ঘটনা না ঘটার কি কোনো কারণ আছে?
নিমতলীতে অগ্নিকাণ্ডের পর এক যুগের বেশি সময় অতিবাহিত হয়েছে। চুরিহাট্টায় রাসায়নিকের গুদামে বিস্ফোরণের পর চার বছর চলে গেছে। রাসায়নিক সামগ্রীর গুদাম-ব্যবসার জন্য সরকার নতুন জায়গা করে দিয়েছে। তারপরও নগরীতে রাসায়নিকের গুদাম থাকে কীভাবে? রাখেন কারা? নগর ব্যবস্থাপনার এই হাল কারা করেছেন? যাঁরা করেছেন দুর্ঘটনার জন্য, প্রাণহানির জন্য, তাঁদের কোনো দায় নেই!
শুধু তো বিস্ফোরণ কিংবা অগ্নিকাণ্ড নয়, সড়ক দুর্ঘটনাও আছে! গত ফেব্রুয়ারি মাসেও এই ঢাকা মহানগরীতে ১৮ জন মারা গেছেন সড়ক দুর্ঘটনায়। এক দিন অন্তর একটি করে প্রাণ পৃথিবীর আর কোনো নগর-মহানগরীতে নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার উদাহরণ খুঁজে পাওয়া যাবে কি? অথচ কেউ দায় নেবেন না! কোনো ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠান দায়ী হবে না! বিস্ফোরণ-অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারানো মানুষের জন্য দাফন-কাফনের নিমিত্তে কিছু অর্থ দিয়েই শেষ হবে দায়িত্ব।
মূলত অব্যবস্থাপনার কারণে অরক্ষিত এই মহানগরী। এই মহানগরীতে সব ধরনের দুর্ঘটনা ও মৃত্যুর জন্য দায়ী কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা। অব্যবস্থাপনা এবং অব্যবস্থাপনা। এর সঙ্গে আরও থাকতে পারে অবহেলা। মানুষের প্রতি অবহেলা। কর্তব্যের প্রতি অবহেলা, যা ক্ষমার অযোগ্য।
অরুণ কর্মকার, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক

আকার-আয়তন ও ব্যাপ্তিতে আমাদের রাজধানী শহর ঢাকা এক মহানগরীই বটে। তবে নগর ব্যবস্থাপনার আধুনিক যেসব বৈশিষ্ট্য, তার ছিটেফোঁটাও এখন পর্যন্ত এখানে নেই। এখন পর্যন্ত নেই বলছি কারণ, আশায় আছি কোনো এক সময় থাকবে। অবশ্য সে আশা যে প্রায়ই দুরাশা বলে মনে হয় না, সে কথা বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি না।
এই যে আশাকে ছাপিয়ে দুরাশার প্রকট হয়ে ওঠা, এর কারণ যে শুধু এই মহানগরীতে একের পর এক ঘটে চলা প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা, তা নয়। আরও কারণ আছে। যেমন, মোট ৫৪টি সংস্থা আমাদের এই মহানগরীর উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনার কোনো না কোনো দায়িত্ব পালনে নিয়োজিত আছে। কিন্তু তাদের কাজের মধ্যে সমন্বয় আছে বলে কেউ কখনো শোনেনি, সমন্বয়ের কোনো নজির দেখা যাওয়া তো দূরের কথা।
এই সমন্বয়হীনতারও কারণ আছে। ওই ৫৪টি সংস্থার প্রতিটিরই নিজস্ব আইনকানুন আছে। সেসবের আওতায় পরিচালিত হয় তারা। কাজেই যার যার পরিকল্পনা কিংবা স্বকপোলকল্পনা অনুযায়ীও কাজ করতে বাধা নেই। একটির সঙ্গে আরেকটির, একের সঙ্গে অপরের সমন্বয় করার কোনো বাধ্যবাধকতা তাদের নেই। অথচ আধুনিক নগর ব্যবস্থাপনার অপরিহার্য অনুষঙ্গ হলো এই সমন্বয়।
আমাদের নগর ব্যবস্থাপনার অবস্থা যখন এই, তখন নগরী যে অরক্ষিত হয়ে পড়বে, সে তো আর কাউকে বলে বোঝাতে হয় না। তবে বলার বিষয় হলো, এমন একটি অরক্ষিত নগরীতে শ্রেণি-পেশা-সামাজিক অবস্থাননির্বিশেষে সব নাগরিক হয়ে পড়ে অনিরাপদ। নাগরিকদের জীবন-জীবিকা হয়ে যায় অনিশ্চিত। পবিত্র শবে বরাতের দিন বিকেলে গুলিস্তানসংলগ্ন কুইন্স মার্কেটে স্যানিটারি সামগ্রী কিনতে এসে প্রাণ হারিয়েছেন যে দম্পতি, কিংবা যে তরুণ এসেছিলেন মায়ের জন্য ইফতারসামগ্রী নিতে, এমনকি যাঁরা পথচারী ছিলেন, ওই ভবনের সামনে বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রী ছিলেন যাঁরা, তাঁদের মধ্যে হতাহতদের মতো পরিণতি এই নগরীর যেকোনো নাগরিকের হতে পারে যেকোনো দিন, যেকোনো সময়।
আমাদের নগর ব্যবস্থাপনার আরেকটি বিশেষ লক্ষণীয় বিষয় হলো, যেখানে যখন যে কারণেই দুর্ঘটনা ঘটুক, আর যে বা যাঁরাই সে দুর্ঘটনার শিকার হন, তার দায় কারও নয়। কোনো সংস্থা কিংবা কর্তৃপক্ষ এর কোনো দায় নেয় না। কখনো তাদের ওপর দায় চাপেও না। ‘কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়’ গোছের একটা ব্যাপার আরকি! অথচ নগর ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব তাদের। দায় কিছুটা চাপে সংশ্লিষ্ট ভবনের মালিকের ঘাড়ে। আর চূড়ান্তভাবে চাপে গ্যাস কিংবা বিদ্যুৎ প্রভৃতি ইউটিলিটির ওপর।
তা সে ইউটিলিটির দায় তো আছেই। আমাদের গ্যাস-বিদ্যুতের ব্যবহার যত বেড়েছে, এগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দুর্ঘটনাও বেড়েছে। ফায়ার সার্ভিসের তথ্য বলছে, এই ঢাকাতেই নাকি প্রতিবছর তিন হাজারের বেশি অগ্নিকাণ্ড ঘটে। অর্থাৎ প্রতিদিন ৮-৯টি। এর বেশির ভাগেরই কারণ গ্যাস-বিদ্যুৎ ব্যবস্থার ত্রুটি এবং সেই সূত্রে বিস্ফোরণ। কিন্তু আমাদের নগর ব্যবস্থাপনায় এর প্রতিকারের কোনো বিধান নেই। আধুনিক নগর ব্যবস্থাপনায় আছে। নগরবাসী এবং নগর ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে নিয়ম মেনে সে দায়িত্ব পালন করে।
যেমন, বিদ্যুৎ-সংযোগের ক্ষেত্রে সংযোগ দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট বিতরণ কোম্পানির পক্ষ থেকে বাসা-বাড়ি কিংবা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান জরিপ করে নির্দিষ্ট লোডে (বিদ্যুৎ ব্যবহারের নির্ধারিত পরিমাণ) সংযোগ দেওয়া হয়। এরপর আর বিতরণ কোম্পানির কোনো খবর থাকে না বিল নেওয়া ছাড়া। এদিকে গ্রাহক বছরের পর বছর ধরে ইচ্ছেমতো বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম বাড়িয়ে চলেন। বিদ্যুৎ ব্যবহারও নির্ধারিত লোডের চেয়ে অনেক বেশি হয়। সেই বাড়তি বিলও বিতরণ কোম্পানি নিতে থাকে। কিন্তু গ্রাহক অননুমোদিতভাবে লোড বাড়ানোর ফলে তাঁর বাড়ির বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় কতটা ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে, উভয় পক্ষের কাছেই তা থাকে উপেক্ষিত। ফলে দুর্ঘটনা ঘটে। এ ক্ষেত্রে গ্রাহকের যেমন দায় আছে, তেমনি দায় আছে বিতরণ কোম্পানিরও। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, শিল্প-কারখানায় বিদ্যুৎ ব্যবহার হয় অনেক বেশি। তাই সেখানে অব্যবস্থাপনার ঝুঁকিও অনেক উঁচুমাত্রার। বিতরণ কোম্পানি বছরে কিংবা দুই বছরেও একবার গ্রাহকের দুয়ারে হাজির হলে এসব দুর্ঘটনা কমত।
নগর-মহানগরীর কোনো ভবনে গ্যাস জমতে পারে নানাভাবে। রান্নার গ্যাসলাইনের ছিদ্র থেকে ছড়িয়ে পড়া গ্যাস যেমন ভবনের কোনো আবদ্ধ স্থানে দীর্ঘদিন ধরে ধীরে ধীরে জমা হতে পারে, তেমনি পয়োনিষ্কাশন লাইনের ছিদ্র, ভূগর্ভস্থ জলাধার, সেপটিক ট্যাংক, জেনারেটর প্রভৃতি থেকেও গ্যাস জমা হতে পারে। এই ধরনের জমা হওয়া গ্যাস কোনো অগ্নিস্ফুলিঙ্গের সংস্পর্শে এলেই ঘটতে পারে ভয়াবহ বিস্ফোরণ। এইভাবে জমা হওয়া গ্যাসই ঢাকার সর্বশেষ দুটি বিস্ফোরণের কারণ বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
আমাদের গ্যাসলাইনগুলো অনেক পুরোনো। তাতে ছিদ্রও আছে অসংখ্য। বাসাবাড়ি, শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের লাইনও ছিদ্রমুক্ত নয়। তিতাস গ্যাস সঞ্চালন ও বিতরণ কোম্পানির হয়ে একটি পেশাদার প্রকৌশল প্রতিষ্ঠান বছর কয়েক আগে একটি জরিপ করেছিল গ্যাসলাইনের ছিদ্র বিষয়ে। সমগ্র ঢাকায় নয়, কয়েকটি এলাকায় করা হয়েছিল সেই জরিপ। তার ভিত্তিতে হিসাব করে দেখা গেছে, লাইনে ছিদ্র থাকায় প্রতিদিন তিতাসের সিস্টেম থেকে অন্তত ২০০ মিলিয়ন (২০ কোটি) ঘনফুট গ্যাস উবে যাচ্ছে। এই গ্যাস পুরোটাই যে বাতাসে মিলিয়ে যাচ্ছে, তা বলা যায় না। কোথাও কোথাও কোনো আবদ্ধ স্থানে (ট্র্যাপ) কিছু কিছু গ্যাস জমা হতে পারে, যা একসময় প্রাণঘাতী বিস্ফোরক হয়ে ওঠে।
এ ছাড়া আমাদের পয়োনিষ্কাশন-ব্যবস্থার অবস্থা যাচ্ছেতাই। সেখান থেকেও মিথেন গ্যাস তৈরি ও নির্গত হয়ে কোনো কোনো স্থানে জমতে পারে। সেপটিক ট্যাংক ও ভূগর্ভস্থ জলাধার পরিষ্কার করার সময় বিষাক্ত গ্যাসে শ্রমিকের মৃত্যুর খবর আমরা মাঝেমধ্যেই শুনে থাকি। এই বিষাক্ত গ্যাস আর কিছু না, মিথেন।
আমাদের ভবনগুলোর অধিকাংশ ত্রুটিপূর্ণ। আজকাল বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায়ও দেখা যায় কিছু অকালকুষ্মাণ্ড একত্র হয়ে কোনো একটা জায়গা কিনে কিংবা কোনোভাবে দখলে নিয়ে ভবন তৈরি করে ফ্ল্যাট বিক্রি করে। এরা সব বর্তমান অসুস্থ রাজনৈতিক-সামাজিক ব্যবস্থার ফসল হিসেবে গজিয়ে ওঠা বাটপার। এদের তৈরি ভবনগুলোও হয় সে রকমই। ফলে সাধারণ মানুষের ঝুঁকি বাড়ে।
কিন্তু আমাদের নগর ব্যবস্থাপকেরা কী করেন! গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি, পয়োনিষ্কাশন, মানসম্পন্ন ভবন নির্মাণ প্রভৃতি যে বিষয়গুলো এখানে উল্লেখ করা হলো, তার প্রতিটির জন্য অন্তত একটি করে সংস্থা রয়েছে। জননিরাপত্তার দৃষ্টিকোণ থেকে তারা কি নিয়মিত এগুলোর দেখভাল করে? করে না।
নগরে কোনো একটি ভবন তৈরি হওয়ার পর সেটি নিরাপদে বসবাসযোগ্য কি না, তা দেখার জন্যও কর্তৃপক্ষ রয়েছে। তাদের দায়িত্ব ভবনটির বাসযোগ্যতা পরীক্ষা করে একটি ব্যবহার সনদ (অকুপেন্সি সার্টিফিকেট) দেওয়া। শুধু তা-ই নয়, প্রতি তিন থেকে পাঁচ বছর পরপর ভবন পুনঃ পরীক্ষা করে সেই সনদ নবায়ন করারও বিধান রয়েছে। কিন্তু একজন অভিজ্ঞ পেশাজীবী জানালেন, ঢাকায় অন্তত ৬ লাখ ভবনের মধ্যে এই সনদ রয়েছে ১০০টির মতো ভবনের।
এ ছাড়া রয়েছে রান্নায় ব্যবহৃত এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার। এই সিলিন্ডার ব্যবহারের ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীর সতর্কতা বিশেষ প্রয়োজন। এখানে রয়েছে দাহ্য রাসায়নিক পদার্থের গুদাম। অনুমোদিত এবং অননুমোদিত। এই নগরীতে দুর্ঘটনা না ঘটার কি কোনো কারণ আছে?
নিমতলীতে অগ্নিকাণ্ডের পর এক যুগের বেশি সময় অতিবাহিত হয়েছে। চুরিহাট্টায় রাসায়নিকের গুদামে বিস্ফোরণের পর চার বছর চলে গেছে। রাসায়নিক সামগ্রীর গুদাম-ব্যবসার জন্য সরকার নতুন জায়গা করে দিয়েছে। তারপরও নগরীতে রাসায়নিকের গুদাম থাকে কীভাবে? রাখেন কারা? নগর ব্যবস্থাপনার এই হাল কারা করেছেন? যাঁরা করেছেন দুর্ঘটনার জন্য, প্রাণহানির জন্য, তাঁদের কোনো দায় নেই!
শুধু তো বিস্ফোরণ কিংবা অগ্নিকাণ্ড নয়, সড়ক দুর্ঘটনাও আছে! গত ফেব্রুয়ারি মাসেও এই ঢাকা মহানগরীতে ১৮ জন মারা গেছেন সড়ক দুর্ঘটনায়। এক দিন অন্তর একটি করে প্রাণ পৃথিবীর আর কোনো নগর-মহানগরীতে নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার উদাহরণ খুঁজে পাওয়া যাবে কি? অথচ কেউ দায় নেবেন না! কোনো ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠান দায়ী হবে না! বিস্ফোরণ-অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারানো মানুষের জন্য দাফন-কাফনের নিমিত্তে কিছু অর্থ দিয়েই শেষ হবে দায়িত্ব।
মূলত অব্যবস্থাপনার কারণে অরক্ষিত এই মহানগরী। এই মহানগরীতে সব ধরনের দুর্ঘটনা ও মৃত্যুর জন্য দায়ী কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা। অব্যবস্থাপনা এবং অব্যবস্থাপনা। এর সঙ্গে আরও থাকতে পারে অবহেলা। মানুষের প্রতি অবহেলা। কর্তব্যের প্রতি অবহেলা, যা ক্ষমার অযোগ্য।
অরুণ কর্মকার, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

আকার-আয়তন ও ব্যাপ্তিতে আমাদের রাজধানী শহর ঢাকা এক মহানগরীই বটে। তবে নগর ব্যবস্থাপনার আধুনিক যেসব বৈশিষ্ট্য, তার ছিটেফোঁটাও এখন পর্যন্ত এখানে নেই। এখন পর্যন্ত নেই বলছি কারণ, আশায় আছি কোনো এক সময় থাকবে। অবশ্য সে আশা যে প্রায়ই দুরাশা বলে মনে হয় না, সে কথা বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি না।
১১ মার্চ ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

আকার-আয়তন ও ব্যাপ্তিতে আমাদের রাজধানী শহর ঢাকা এক মহানগরীই বটে। তবে নগর ব্যবস্থাপনার আধুনিক যেসব বৈশিষ্ট্য, তার ছিটেফোঁটাও এখন পর্যন্ত এখানে নেই। এখন পর্যন্ত নেই বলছি কারণ, আশায় আছি কোনো এক সময় থাকবে। অবশ্য সে আশা যে প্রায়ই দুরাশা বলে মনে হয় না, সে কথা বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি না।
১১ মার্চ ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

আকার-আয়তন ও ব্যাপ্তিতে আমাদের রাজধানী শহর ঢাকা এক মহানগরীই বটে। তবে নগর ব্যবস্থাপনার আধুনিক যেসব বৈশিষ্ট্য, তার ছিটেফোঁটাও এখন পর্যন্ত এখানে নেই। এখন পর্যন্ত নেই বলছি কারণ, আশায় আছি কোনো এক সময় থাকবে। অবশ্য সে আশা যে প্রায়ই দুরাশা বলে মনে হয় না, সে কথা বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি না।
১১ মার্চ ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আকার-আয়তন ও ব্যাপ্তিতে আমাদের রাজধানী শহর ঢাকা এক মহানগরীই বটে। তবে নগর ব্যবস্থাপনার আধুনিক যেসব বৈশিষ্ট্য, তার ছিটেফোঁটাও এখন পর্যন্ত এখানে নেই। এখন পর্যন্ত নেই বলছি কারণ, আশায় আছি কোনো এক সময় থাকবে। অবশ্য সে আশা যে প্রায়ই দুরাশা বলে মনে হয় না, সে কথা বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি না।
১১ মার্চ ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫