Ajker Patrika

পাটের দাম বেড়েছে মণে হাজার টাকা

ফয়সাল পারভেজ, মাগুরা
Thumbnail image

মাগুরায় এক সপ্তাহ আগেও পাটের দাম ছিল মণপ্রতি ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকা। দামের সেই খরা কাটিয়ে এ সপ্তাহ থেকে পাটের দাম বাড়তে শুরু করেছে। এখন মণপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৪০০ থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকা। মণে পাটের দাম বেড়েছে প্রায় ১ হাজার টাকা।

অনাবৃষ্টির কারণে চলতি মৌসুমে পাট জাগ দেওয়ার পানির সংকট ছিল তীব্র। মাগুরার অধিকাংশ কৃষক কৃত্রিম সেচ দিয়ে পাট জাগ দিয়েছেন। কম পানিতে স্বল্প সময় জাগ দেওয়া পাটের আঁশের মান ভালো না হওয়ায় বেশি দাম মেলেনি। তবে বেশি সময় জাগ দেওয়া পাটের আঁশ ভালো হওয়ায় এখন দাম অনেক বেশি পাওয়া যাচ্ছে।

মাগুরা নতুন বাজার এলাকায় গুদামগুলোতে এখন পাট কেনাবেচার ব্যস্ততা চলছে। কৃষকেরা ভ্যান বা নছিমনে করে পাট নিয়ে বাজারে বিক্রি করছেন।  পাটের দাম বাড়ায় খুশি কৃষক জালাল হোসেন। মাগুরার নহাটা এলাকার এই কৃষক বলেন, ‘মাঠে পানি না থাকায় এবার সেচ দিয়ে পুকুর ভরিছি। এরপর দুই বিঘা জমির পাট ভেজাইছি। গাদাগাদি করায় পাটের আঁশের চেহারা কালচে ছিল। আগা ফেটে যাওয়ায় বাজারে নিলি দাম ছিল ২ হাজার টাকা মণ। খরচের টাকা উঠে না এরাম অবস্থা। আজ (রোববার) এসে দেখি সেই পাট ২ হাজার ৬০০ টাকা মণ।’

মাগুরা সদরের আঠারখাদা এলাকার বেনীপুর গ্রামের কৃষক অসিত বিশ্বাস জানান, পাটের দাম এখন ওপরের দিকে। প্রথম দিকে ভালো পাট বাজারে আসেনি। যারা একটু বেশি পানিতে জাগ দিয়েছে, তাদের পাট ভালো হয়েছে। এ জন্য পাটের দাম আমরা পাচ্ছি। আশা করা যায়, এই পাট ৩ হাজার টাকা মণ ছাড়িয়ে যাবে।

মাগুরা নতুন বাজারের পাট ব্যবসায়ী আমিন হোসেন বলেন, ‘পাটের মান অনুযায়ী আমরা দাম দিয়ে থাকি। এবার প্রথম পর্যায়ে মান অতটা ভালো ছিল না। পাটের আগা থাকা জরুরি। যে পাটের আগা ভেঙে যায়, তার দাম কমে যায়। এবার পানিশূন্যতায় বেশির ভাগ পাটের আগা ভেঙে গেছে। এখন পাইকারি বাজারে ভালো মানের পাটের দাম ৩ হাজার টাকা। আশা করা যায়, কৃষকেরা আরও ভালো মানের পাট বাজারে আনবেন।’

মাগুরা পাট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আবদুস সালাম জানান, এবার অনাবৃষ্টির কারণে পাট চাষে প্রথম থেকেই কৃষকের সমস্যা হয়েছে। কৃষকেরা যেন পাটের সঠিক দাম পান, সে বিষয়টি আমরা দেখছি। তবে দালালের দৌরাত্ম্য কমাতে হবে। তারা কৃষকের কাছ থেকে পাট কিনে মজুত করে রাখেন, যা আমাদের মতো মূল ব্যবসায়ীদের জন্য বড় ক্ষতির কারণ।’

মাগুরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সুফি মো. রফিকুজ্জামান বলেন, এবার বৃষ্টি কম হওয়ায় পাট নিয়ে কৃষকেরা বিপদে ছিলেন। জাগ দেওয়ার মতো পানি খাল-বিলে নেই বললেই চলে। ফলে অনেকে সেচ দিয়ে পাট জাগ দিয়েছেন। এটা খুবই ব্যয়বহুল। এক সপ্তাহ হলো আমরা দেখছি নদীতে পানি আসতে শুরু করেছে। কৃষক পাটের ন্যায্য দাম পাবেন। কারণ এবার পাটের বেশ চাহিদা রয়েছে।

জানা গেছে, এবার পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৫ হাজার ৮৬৫ হেক্টর জমিতে। বিপরীতে চাষ হয়েছে ৩৬ হাজার ৯৩০ হেক্টরে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত