Ajker Patrika

সুযোগ পাবেন নতুন শিল্পীরা

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৪ জুলাই ২০২২, ১২: ১৩
Thumbnail image

ওটিটির চাপে অনেকটাই কোণঠাসা টেলিভিশন চ্যানেলগুলো। অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোর যতই বাড়বাড়ন্ত হচ্ছে দেশে, শিল্পীরাও তত ঝুঁকছেন সেদিকে। কারণ, ওয়েব প্ল্যাটফর্মের কাজগুলোতে পারিশ্রমিক যেমন বেশি, কাজও হয় অনেক দিন প্রস্তুতি নিয়ে, বেশ গুছিয়ে। মানেও টিভি নাটকের চেয়ে অনেক এগিয়ে ওয়েব সিরিজ-সিনেমাগুলো। তুলনায় টিভি নাটকে পারিশ্রমিক কম, পরিশ্রম বেশি। দু-তিন দিনে একটি নাটকের শুটিং শেষ করতে কলাকুশলীদের প্রায় নাভিশ্বাস ওঠে। জনপ্রিয় অনেক অভিনয়শিল্পী তাই এখন টিভি নাটকের সংখ্যা কমিয়ে মন দিয়েছেন ওয়েব কনটেন্টে। আর এর প্রভাব পড়েছে টিভি নাটকে।

মোশাররফ করিম, চঞ্চল চৌধুরী, আফরান নিশো, জিয়াউল ফারুক অপূর্ব, তাহসান, নুসরাত ইমরোজ তিশা, জাকিয়া বারী মম, মেহজাবীন চৌধুরী, তাসনিয়া ফারিণের মতো জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পীরা এবার নাটকে সময় দিয়েছেন কম। ফলে কমসংখ্যক ঈদের নাটকে দেখা যাবে তাঁদের। মোশাররফ করিম এখন ওয়েব কনটেন্ট ও সিনেমা নিয়ে ব্যস্ত। প্রতি ঈদে তাঁর ৩০টির বেশি নাটক প্রচারিত হয়। তবে এ সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে এবার। ওটিটিতে ব্যস্ত হওয়ায় আফরান নিশোকে হাতে গোনা ৫-৬টি নাটকে দেখা যাবে। গত ঈদে অপূর্বর ২৫টি নাটক প্রচারিত হয়েছিল বিভিন্ন চ্যানেলে। তবে এবার সে সংখ্যা নেমেছে ১০-১৫-তে। মাতৃত্বকালীন ছুটিতে থাকায় এখনো শুটিংয়ে ফেরেননি নুসরাত ইমরোজ তিশা। ঈদের আগে মেহজাবীনও ছিলেন দীর্ঘ ছুটিতে। স্বল্পসংখ্যক ঈদের কাজ হাতে নিয়েছেন তিনি। সিনেমার শুটিংয়ে দীর্ঘদিন লন্ডনে থাকায় টিভি নাটকে সেভাবে সময় দিতে পারেননি তাসনিয়া ফারিণও। জনপ্রিয় শিল্পীদের শিডিউল পেতে তাই নির্মাতাদের বেশ ধকল পোহাতে হয়েছে।

দেশের ১৬টির মতো টিভি চ্যানেল ঈদ উৎসবে প্রায় ৪০০ নাটক-টেলিফিল্ম প্রচার করে। দর্শকদের কাছে এসব নাটক-টেলিফিল্মের আবেদন অনেক। তবে জনপ্রিয় শিল্পীদের শিডিউল না পাওয়ায় বিকল্প পথে হাঁটতে হয়েছে টিভি চ্যানেলগুলোকে। নতুন ও অনিয়মিত শিল্পীদের নিয়েই চ্যালেঞ্জ নিয়েছে তারা। এনটিভির অনুষ্ঠান-প্রধান আলফ্রেড খোকন জানিয়েছেন, এ চ্যানেলে এবার ঈদে ৩০টির মতো নাটক প্রচার হবে। জনপ্রিয় তারকাদের শিডিউলের অপেক্ষা না করে সম্ভাবনাময় নতুন শিল্পীদের নিয়েই অনেক নাটক তৈরি করেছে তারা। একই অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন প্রযোজক সাজু মুনতাসির। তারকাদের শিডিউল-জটিলতায় পড়ে তিনিও তুলনামূলক নতুন শিল্পীদের গুরুত্ব দিয়েছেন।

এতে নতুন শিল্পীদের জন্য তৈরি হয়েছে বড় সুযোগ। খায়রুল বাসার, আরশ খান, সামিরা খান মাহি, জাহের আলভী, নিশাত প্রিয়ম, জান্নাতুল সুমাইয়া হিমি, তানজিম সাইয়ারা তটিনী, রুকাইয়া জাহান চমক, মাখনুন সুলতানা মাহিমা, কেয়া পায়েল, রোদসী সিদ্দিকা—যাঁরা কয়েক বছর ধরে টিভি নাটকে নিজেদের অবস্থান তৈরির চেষ্টা করছেন, তাঁরা এবার ঈদের নাটকে হয়ে উঠবেন প্রধান মুখ। এ ছাড়া নিলয় আলমগীর, ফারহান আহমেদ জোভান, শামীম হাসান সরকারের মতো টিভির পর্দার অনিয়মিত শিল্পীদেরও অনেক নাটক প্রচার হবে এবার। ফলে এবারের ঈদে তাঁরা নিজেদের মেলে ধরার সুযোগ পাবেন।

বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন টেলিভিশনের নাটকসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এতে শিল্পীসংকট যেমন কাটবে, তেমনি জনপ্রিয় তারকাদের ওপর চাপও কমবে। এ বিষয়ে অভিনেতা জিয়াউল ফারুক অপূর্ব বলছেন, ‘এখন ইন্ডাস্ট্রি অনেক বড় হয়েছে। প্রচুর কাজ হচ্ছে। সুতরাং কয়েকজন শিল্পীর ওপর নির্ভর করে তো এত কাজ সম্ভব নয়। বেশি বেশি নতুন শিল্পী তৈরি করতে হবে। সে জায়গা থেকে এবার নতুনদের জন্য যে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, সেটাকে কাজে লাগিয়ে ভালো কাজ দিয়ে তাঁরা দর্শকদের মন জয় করবে—এটাই প্রত্যাশা।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত