Ajker Patrika

বৃক্ষরোপণ ও ধুলা ঠেকানোয় কম দূষণ রাজশাহীর বাতাসে

রিমন রহমান, রাজশাহী
আপডেট : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১২: ১৫
বৃক্ষরোপণ ও ধুলা ঠেকানোয় কম দূষণ রাজশাহীর বাতাসে

দেশের আটটি বিভাগীয় শহরের মধ্যে সবচেয়ে কম বায়ুদূষণ হয় রাজশাহীতে। স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) এক গবেষণায় এ চিত্র উঠে এসেছে। এর আগে ২০১৬ সালে যুক্তরাজ্যের দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, বাতাসে ভাসমান মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর কণা দ্রুত কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে বিশ্বে সবচেয়ে এগিয়ে আছে রাজশাহী শহর। জাতিসংঘের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) আগের দুই বছরের উপাত্তের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়। সাত বছর পরও রাজশাহী শহর পেল সবচেয়ে কম বায়ুদূষণের স্বীকৃতি।

ক্যাপসের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক অধ্যাপক আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, যে শহরের দূষণ বেশি, সেখানে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি ও সংস্কারকাজ, মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন, আশপাশের ইটভাটা, ছোট-বড় কয়েক হাজার শিল্পকারখানা, ফিটনেসবিহীন যানবাহনের কালো ধোঁয়া এবং ময়লা-আবর্জনা পোড়ানো হয়। এগুলো শহর দূষণের অন্যতম কারণ হিসেবে পরিলক্ষিত হয়। আর রাজশাহী শহর কর্তৃপক্ষের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কারণে এখানে বায়ুদূষণ কম বলে তাঁরা মনে করেন।

রাজশাহী সিটি করপোরেশনও (রাসিক) শহরে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার ‘রাজশাহী মহানগরীর সমন্বিত নগর অবকাঠামো উন্নয়ন’ শীর্ষক এই প্রকল্প বাস্তবায়নে নগরজুড়েই উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চলছে। সরু রাস্তাগুলো চওড়া হচ্ছে। বড় অবকাঠামো গড়ে উঠছে। তার পরও বায়ুদূষণ কম এ শহরে।

কীভাবে এটি সম্ভব জানতে চাইলে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের পরিবেশ উন্নয়ন কর্মকর্তা মাহমুদ-উল ইসলাম বলেন, দুটি কারণে রাজশাহী শহরে বাতাসের ক্ষতিকর ধূলিকণা কম। এর একটি প্রচুর বৃক্ষরোপণ, অন্যটি ফুটপাতের ধুলাবালু খোলা না রেখে কংক্রিটের টাইলস দিয়ে ঢেকে দেওয়া। এ দুই কারণেই এ শহরে বাতাসে ক্ষতিকর ধূলিকণা কমে এসেছে।

মাহমুদ বলছেন, একসময় ধূলিঝড় হলে রাজশাহী শহরের দক্ষিণের পদ্মার চর থেকে প্রচুর ধুলাবালু উড়ে আসত। বর্তমান সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন তাঁর প্রথম মেয়াদেই এদিকে নজর দেন। তিনি পদ্মাপাড়ে প্রচুর গাছ লাগাতে শুরু করেন। এখনো নদীর পাড়ে বীজ ছিটানো হয়। ফলে গাছপালার কারণে শুষ্ক মৌসুমে পদ্মার চরের ধুলাবালু সরাসরি উড়ে আসে না। রাসিকের নিজস্ব ‘জিরো সয়েল’ নামের একটি প্রকল্প চলছে দীর্ঘদিন ধরেই। এর মাধ্যমে শহরের সড়ক বিভাজক-আইল্যান্ডগুলোতে গাছ লাগানো হচ্ছে। সেখান থেকেও ধুলোবালু উড়তে পারছে না।

এ ছাড়া মানুষের পায়ে-পায়ে যেন ধুলোবালু না ছড়ায়, সে জন্য শহর থেকে নদীর পাড় পর্যন্ত ওয়াকওয়ে-ফুটপাত নির্মাণ করা হচ্ছে। সেগুলো কংক্রিটের টাইলস দিয়ে ঢেকে দেওয়া হচ্ছে। শহরে এখন গণপরিবহন বলতে শুধু রিকশা আর অটোরিকশা।

গত বছরের ৬ জানুয়ারি থেকে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত সারা দেশে ক্যাপসের এই গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

৮১ সদস্যের গবেষণা দলের নেতৃত্বে ছিলেন ক্যাপসের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার। গত বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে গবেষণার ফল প্রকাশ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত