Ajker Patrika

হাত চলে না, মুখে বলে এসএসসি পরীক্ষা

মিজান মাহী, দুর্গাপুর (রাজশাহী) 
হাত চলে না, মুখে বলে এসএসসি পরীক্ষা

অন্য শিশুদের মতো সুস্থ সবল হয়ে বেড়ে ওঠেন জাকারিয়া (১৮)। খেলাধুলা, দৌড়ঝাঁপ ও সাইকেল নিয়ে মাতিয়ে বেড়িয়েছেন এ-গ্রাম থেকে ও-গ্রাম। কিন্তু সেই জাকারিয়া এখন বিরল রোগে আক্রান্ত। চলে না এখন তাঁর দুই হাত। শক্তি কমে গেছে পায়েও।

তবে এসব কোনো বাধাই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি জাকারিয়ার কাছে। তাঁর হাত দুটো শুকিয়ে চিকন ও বাঁকা হয়ে গেছে। পায়ে আংশিক শক্তি আছে। সেই শক্তি আর মনোবল দিয়ে মুখে বলে অন্যের সহযোগিতা নিয়ে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন।

রাজশাহীর দুর্গাপুরের পাঁচুবাড়ী উচ্চবিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন জাকারিয়া। শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কাছে হার না মেনে এভাবে অষ্টম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনার সংগ্রাম চালিয়ে এসেছেন তিনি। গত সোমবার উপজেলার কয়ামাজপুর উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে দেখা গেছে জাকারিয়াকে। উপজেলার নামোদুরখালী এলাকায় তাঁর বাড়ি। বাবার নাম নুরুল ইসলাম। তিনিও জাকারিয়ার মতো এই বিরল রোগে আক্রান্ত হয়ে শয্যাশায়ী।

পরীক্ষাকেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, ১০৯ নম্বর কক্ষের সামনের বেঞ্চে বসে পরীক্ষা দিচ্ছেন জাকারিয়া। বেঞ্চের ওপর রাখা আছে প্রতিবন্ধী কার্ডও। সবাই যখন লিখছে তিনি তখন বসে থেকে সময় পার করছেন। তাঁর সহপাঠীদের পরীক্ষা শেষ হলে তিনি মুখে বলবেন আর তারা একটু লেখে দেবে, এই আশায় অধীর আগ্রহে বসে আছেন তিনি।

জাকারিয়া বলেন, ‘আমার বয়স যখন ১০ বছর তখন বাবা (নুরুল ইসলাম) এই রোগে আক্রান্ত হন। তখন আমি সুস্থ ছিলাম। বাবা এখন শয্যাশায়ী। ১৪ বছর বয়সে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ালেখার সময় হঠাৎ আমিও বিরল এই রোগে আক্রান্ত হই।’

পাঁচুবাড়ী উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক সুরুজ মিয়া বলেন, জাকারিয়া পড়ালেখায় ভালো ছিল। এখন বিরল রোগে আক্রান্ত হলেও পড়াশোনায় তার আগ্রহ কমেনি।

কয়ামাজপুর উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের সচিব হাবিল উদ্দিন বলেন, ওই শিক্ষার্থী প্রতিবন্ধী হওয়ায় নিয়ম অনুযায়ী তাকে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত