Ajker Patrika

ভূমধ্যসাগরে প্রাণ হারানো পাঁচজনের বাড়িতে মাতম

মাদারীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১১: ১৪
Thumbnail image

সমুদ্রপথে ইতালি যাওয়ার সময় তিউনিসিয়ার ভূমধ্যসাগরে ঝোড়ো বাতাস ও সৃষ্ট তীব্র ঠান্ডায় হাইপোথার্মিয়ায় প্রাণ হারিয়েছেন বাংলাদেশি সাত যুবক। তাঁদের মধ্যে পাঁচজনের বাড়িই মাদারীপুরে। একজনের বাড়ি সুনামগঞ্জে ও অন্য আরেকজনের বাড়ি কিশোরগঞ্জ। গত রোববার ইতালিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের পাঠানো এক জরুরি নোটিশের মাধ্যমে সাতজনের নাম জানা যায়।

গতকাল সোমবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, মাদারীপুরের মৃত পাঁচজনের মধ্যে চারজনের পরিবারের সন্ধান পেয়েছে প্রশাসন। তাঁদের বাড়িতে এখন চলছে মাতম। তবে বাপ্পী নামের আরেক যুবকের বাড়িও মাদারীপুর সদর উপজেলায় বলে জানা গেছে। পূর্ণ ঠিকানা লেখা থাকায় এখনো তাঁর পরিবারের সন্ধান পাওয়া যায়নি।

নিহতেরা হলেন, মাদারীপুর সদর উপজেলার পেয়ারপুর ইউনিয়নের পশ্চিম পেয়ারপুর গ্রামের শাজাহান হাওলাদারের ছেলে ইমরান হোসেন (২২), মস্তফাপুর ইউনিয়নের চতুরপাড় গ্রামের শাহাজালালের ছেলে জহিরুল (২০), ঘটকচর এলাকার কাশেম মোল্লার ছেলে সাফায়েত (১৯), পেয়ারপুর ইউনিয়নের বড়াইলবাড়ি গ্রামের প্রেমানন্দ তালুকদারের ছেলে জয় তালুকদার রতন (২০)।

নিহত জহিরুলের পিতা শাহাজালাল বলেন, ‘সন্তানের মারা যাওয়ার খবর সরকারি চিঠির মাধ্যমে জানতে পারলাম। প্রায় ১০ থেকে ১২ দিন ধরে ছেলের সঙ্গে ফোনে কথা হয় না। দালালেরা ফোন করে বলেছে জহিরুল হাসপাতালের আইসিইউতে আছে। যদি সন্তান মারা যায়, তাহলে তাঁর লাশ যেন সরকার আমাদের কাছে এনে দেয়।’

নিহত ইমরান হোসেনের বোন নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, ‘২১ জানুয়ারির আগে ভয়েস মেসেজের মাধ্যমে ইমরানের কথা শুনি। তারপর থেকে আর কোনো যোগাযোগ নেই। বাবা-মা এখন পর্যন্ত জানে না।’

নিহত সাফায়েতের বোনের স্বামী রাসেল বলেন, ‘সাফায়েত মারা যাওয়ার কথা আমি শুনেছি। সাফায়েতের সঙ্গে যাওয়া পাশের বাড়ির দুজন জীবিত। তাঁরা ফোন করে বলেছেন সাফায়েত মারা গেছে।’

দূতাবাসের চিঠি সূত্রে জানা গেছে, ২৫ জানুয়ারি ২০২২ লিবিয়া হতে ইতালি আসার পথে অতিরিক্ত ঠান্ডায় মারা যাওয়া অভিবাসন প্রত্যাশী ৭ জন বাংলাদেশির পরিচয় নিশ্চিত করতে ইতালির বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সিলর মো. এরফানুল হকের নেতৃত্বে দুই সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। এ সময় জীবিত উদ্ধার হওয়াদের সঙ্গে কথা বলে মৃত সাতজনের নাম জানা যায়। মৃতদেহ সরকারি খরচে দেশে আনার জন্য এবং নিহতদের পরিবারের সদস্যদের জেলা প্রশাসক বা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগের জন্য চিঠিতে অনুরোধ করা হয়। ইতালি দূতাবাসের একটি ই-মেইলের ঠিকানাও দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, ‘যেসব অভিবাসন প্রত্যাশী মারা গেছেন, তাঁদের লাশ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দালালদের ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে রয়েছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত