Ajker Patrika

২১ আগস্টের দেড় যুগ: রাজনৈতিক অবিশ্বাসকে স্থায়ী করেছে

তানিম আহমেদ, ঢাকা
আপডেট : ২১ আগস্ট ২০২২, ০৮: ৪২
২১ আগস্টের দেড় যুগ: রাজনৈতিক অবিশ্বাসকে স্থায়ী করেছে

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগ সমাবেশ আয়োজন করে নিজেরাই শিকার হয়েছিল ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার। সেদিনকার মূল লক্ষ্য বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেঁচে গেলেও জীবন দিতে হয়েছিল নারীনেত্রী আইভী রহমানসহ ২৪ জন নেতা-কর্মীকে।

আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, সেদিনকার ঘটনা ভিন্ন দিকে নিতে তৎকালীন বিএনপির সরকার সব রকমের চেষ্টা করছে। এতে দলটির প্রতি তৈরি হওয়া অবিশ্বাস দেশের রাজনীতিতে এখনো বিদ্যমান। তাঁরা বলছেন, তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করতেই এই হামলা চালানো হয়েছে। এই হামলার মূল টার্গেট ছিল দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। শুধু গ্রেনেড হামলা নয়, সেদিন তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গাড়ি লক্ষ্য করে চালানো হয় ছয়টি গুলি। তিনি অল্পের জন্য বেঁচে গেলেও, তাঁর শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, বড় দুই দলের মধ্যে সম্পর্কের উন্নতি আদৌ হবে কি না তার বড় শর্ত হয়ে দাঁড়াচ্ছে ২১ আগস্ট। আর তাদের মধ্যে সৌহার্দ্য কিংবা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের পাশাপাশি কাজের সম্পর্কের বিষয়েও বড় বাধা হয়ে আছে এটি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার ঘটনার পাশাপাশি এটিও রাজনৈতিক সমঝোতার বড় বাধা।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক আল মাসুদ হাসনউজ্জামান বলেন, ২১ আগস্টের ঘটনা দেশের রাজনীতির ইতিহাসে একটি ঘৃণ্য কাজ। দেশের রাজনীতিতে এই ফ্যাক্টরটি চলে আসে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে অনাস্থা, অবিশ্বাসের ক্ষেত্রে ২১ আগস্ট বড় প্রভাব বিস্তার করে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ২১ আগস্টের ঘটনার মধ্য দিয়ে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বিএনপি সন্ত্রাসী ও খুনি দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যার মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক সমমনা দলগুলোর মধ্যে বিভাজন তৈরি করে দিয়েছে, সেটা এখনো বিদ্যমান।

২১ আগস্টের ঘটনা বড় দুই দলের মধ্যে আস্থাহীনতার একটি বড় কারণ এবং তা এখনো বিরাজ করছে বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শান্তনু মজুমদার। তিনি বলেন, ‘এটা আমার কাছে মনে হয় “১৫ আগস্ট দুই”। সেদিন যেটুকু কাজ বাকি ছিল, তা ২১ আগস্ট করতে চেয়েছিল হামলাকারীরা। যদি সেদিন তাদের মূল পরিকল্পনা সফল হতো, তাহলে বাংলাদেশে বাঙালিত্ব, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ নিয়ে কথা বলার পরিস্থিতি থাকত কি না, সেটা সন্দেহ পোষণ করা যায়।’

২১ আগস্ট প্রতিহিংসা ও নির্মূলের রাজনীতির প্রকাশ ছিল বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও লেখক মহিউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সব সময় অবিশ্বাস ছিল। এরা পরস্পরে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী, কেউ কাউকে বিশ্বাস করে না, আস্থায় নেয় না। এটা নতুন কিছু নয়।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, ২১ আগস্ট বিশ্বের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটা জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড। ইতিহাসে যুদ্ধে ব্যবহৃত গ্রেনেড দিয়ে রাজনৈতিক সমাবেশে হামলার করার ঘটনা নেই। তিনি বলেন, ২১ আগস্টের সব ঘটনা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এর সঙ্গে বিএনপি ও তার সরকার জড়িত ছিল। পঁচাত্তরের পরে দেশের রাজনীতিতে যে বিভাজন সৃষ্টি হয়েছিল, ২১ আগস্টের মাধ্যমে সেই বিভাজনটা আরও বেড়েছে। আস্থার যে সংকট তৈরি হয়েছে, সেটা তো কমার কোনো কারণ নেই বলে তিনি মন্তব্য করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পদোন্নতি দিয়ে ৬৫ হাজার সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা: ডিজি

দিনাজপুরে হিন্দু নেতাকে অপহরণ করে হত্যা: ভারত সরকার ও বিরোধী দল কংগ্রেসের উদ্বেগ

সমালোচনার মুখে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের নিয়োগ বাতিল

আজ থেকে ৫০০ টাকায় মিলবে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট

মির্জা ফখরুলের কাছে অভিযোগ, ১৬ দিনের মাথায় ঠাকুরগাঁও থানার ওসি বদলি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত