ইশতিয়াক হাসান
আমাদের সৌভাগ্য, অজগরের মতো এত সুন্দর প্রজাতির সাপ এখনো বাংলাদেশে আছে। তাও একটি নয়, এর দুটি প্রজাতি দেশের বনাঞ্চলে দেখা যায়। আমার নিজেরও সরীসৃপকুলে সবচেয়ে পছন্দ অজগরই। তাই ১৬ জুলাই বিশ্ব সাপ দিবসে অজগর নিয়েই লেখা।
শুরুতে বরং গোটা বিশ্বের অজগর নিয়ে দু-চারটি তথ্য দিচ্ছি। এখন পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে ৪০ ধরনের বেশি অজগরের প্রজাতি আবিষ্কৃত হয়েছে। এশিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশ এবং অস্ট্রেলিয়ায় অজগরদের দেখা মেলে। এরা সাধারণত উষ্ণ এবং আর্দ্র জলবায়ু অঞ্চলে থাকতে ভালোবাসে।
অজগর গর্ত, পাথরের নিচে, স্তন্যপায়ী প্রাণীর তৈরি করা পরিত্যক্ত গর্ত এবং গাছের শাখায় বাস করে। প্রজাতিভেদে থাকার জায়গায় পার্থক্য থাকে। তবে মানুষ একে একে অজগরের আবাসস্থল দখল করে নেওয়ায়, কোথাও কোথাও এরা শহরের আশপাশে এবং খামার এলাকায় থাকাও রপ্ত করে নিয়েছে। কখনো কখনো বাংলাদেশেও মুরগির খামারে খাবারের খোঁজে অজগরের হানা দেওয়ার ও ধরা পড়ার ঘটনা ঘটে।
আকারে বিশাল কিন্তু অজগর মোটেই বিষধর নয়। এদের দাঁত অত্যন্ত শক্তিশালী হলেও বিষদাঁত নেই। এরা ভালো সাঁতারুও বটে।বাংলাদেশে অজগরের দুটি প্রজাতি আছে। এর একটি বার্মিজ অজগর বা ময়াল সাপ এবং অন্যটি গোলবাহার বা রেটিকুলেটেড পাইথন।অবশ্য স্থানীয়ভাবে কোথাও কোথাও যেকোনো ধরনের অজগরকেই ময়াল হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়।
ভাওয়াল-মধুপুরের শাল বন এবং সিলেট, চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের চিরসবুজ ও মিশ্র চিরসবুজ বনে ময়াল বা বার্মিজ অজগরের দেখা মেলে। তেমনি পাওয়া যায় সুন্দরবনেও। অবশ্য এখনো দেশের কোনো কোনো গ্রামীণ বনেও টিকে আছে এরা। এ ধরনের অজগর ৫-৬ মিটার (১৬ থেকে ২০ ফুট) লম্বা হয়। শরীরটা অনেক মোটা ও লম্বা আঁশে মোড়া।
অন্যদিকে পৃথিবীর দীর্ঘতম সাপ হলো গোলবাহার বা রেটিকুলেটেড পাইথন। সিলেট ও পার্বত্য চট্টগ্রামের বনে এখনো আছে গোলবাহাররা। লম্বায় ৯ মিটার বা ৩২ ফুট পর্যন্ত হতে পারে। বার্মিজ পাইথন বা ময়ালদের মতো এদের শরীরে হলুদ বা বাদামি ছোপ থাকে। তবে এটা অনেকটা জালের আকার ধারণ করে।
এবার প্রচণ্ড সাহসী এক অজগরের গল্প বলব। ভারতের কোয়েল নদীর কাছে ঘটনাটি ঘটে। তা আজ থেকে শ দেড়েক বছর আগে তো হবেই। বর্ণনা পাওয়া যায় খনি প্রকৌশলী মারভিন স্মিথের এক বইয়ে। বুনো কুকুরদের তাড়া করা একটি শূকরকে বাগে পেয়ে শরীর দিয়ে পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলে ২০ ফুট লম্বা বিশাল এক অজগর। একটু পরেই ঘটনাস্থলে হাজির হয় বুনো কুকুরের দল। বুনো কুকুরেরা খুব বেপরোয়া। বিখ্যাত শিকারি ও লেখক কেনেথ অ্যান্ডারসনের বইয়ে ভারতের জঙ্গলে বুনো কুকুরের দল বাঘকে মেরে খেয়ে ফেলার ঘটনারও বর্ণনা আছে।
কিন্তু কোয়েল নদীর ধারের ঘটনাটায় বুনো কুকুরদের পরাজয়ই মেনে নিতে হয়। আট সঙ্গীর মৃতদেহ ফেলে রেখে পালায় দলের বাকি সদস্যরা। অন্যদিকে বুনো কুকুরের কামড়-আঁচড়ে রক্তাক্ত হলেও অজগরটি বেঁচে যায়। বইটিতে বুনো কুকুরের দলের মোকাবিলা করার সময় অজগরটির একটি অদ্ভুত কৌশল ব্যবহারের কথা বলা হয়। এটি শক্তিশালী মাথা দিয়ে বুনো কুকুরের পাঁজরে আঘাত করে হাড় ভেঙে ফেলছিল।
অজগরের প্রজনন সময় শুরু ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে। মিলনের তিন-চার মাস পর এরা ডিম দেয়। স্ত্রী অজগর ডিমের চারদিকে কুণ্ডলী পাকিয়ে তা দেয়। ময়ালরা মার্চ থেকে জুনের মধ্যে ৫০-১০০টি ডিম দেয়। গোলবাহাররা বর্ষার গোড়ায় ১০ থেকে ১০০টি ডিম দেয়।
সাধারণত বন্য প্রাণী পানি খেতে আসে এমন জায়গায় লুকিয়ে মরার মতো পড়ে থাকে। শিকারকে প্রথমে কামড়ে ধরে, তারপর দেহের বিভিন্ন ভাঁজে একে পেঁচিয়ে দম বন্ধ করে মেরে ফেলে। এরপর ধীরে ধীরে খায়। একটি বড় প্রাণী খাওয়ার পর কয়েক দিন স্থির মরার মতো পড়ে থাকে অজগরেরা।
ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী থেকে শুরু করে হরিণ কিংবা শূকরও খায় এরা। কখনো কখনো হরিণ খেতে গিয়ে এদের মারা পড়ারও নজির আছে। অন্য সাপের মতো অজগরদের দাঁত পেছনে বাঁকা হওয়ায় খাবার মুখে ঢুকলে বের করতে পারে না। এতে হরিণ খাবার সময় শিং আটকে শিকারের সঙ্গে সঙ্গে অজগরের মৃত্যুর রেকর্ডও আছে।
পাকিস্তান আমলে গোটা পাকিস্তানের বন বিভাগের বড় কর্তা বা ইন্সপেক্টর জেনারেল অব ফরেস্ট ছিলেন ইউসুফ এস আহমদ। তিনি তাঁর উইথ দ্য ওয়াইল্ডস অ্যানিমেলস অব বেঙ্গল বইয়ে বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে পড়া বক্সার রাজাভাতখাওয়া জঙ্গলে একটি বিশালকায় অজগরের বড়সড় একটি মায়া হরিণ খাওয়ার দৃশ্যের বর্ণনা করেছিলেন। তেমনি ভারতের কুচবিহারের জঙ্গলে একটি হরিণ খাওয়ার অপেক্ষায় থাকা পাঁচটি অজগরকে দেখেছিলেন একসঙ্গে। এতগুলো অজগর একত্রে থাকার ঘটনা খুব বিরল। এগুলোও অবশ্য অন্তত ৭০-৮০ বছর আগের ঘটনা।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অজগর পোষা প্রাণী হিসেবেও জনপ্রিয়; বিশেষ করে বল পাইথন ও কার্পেট পাইথন। মাঝখানে অস্ট্রেলিয়ার এক ব্যক্তি কার্পেট অজগরসহ সার্ফিং করায় স্থানীয় বন্য প্রাণী সংরক্ষণের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা তাঁকে জরিমানা করেন। কেনেথ অ্যান্ডারসনও অজগর পুষতেন।
অজগর নিয়ে বাংলাদেশে চমৎকার গবেষণা করেছে শাহরিয়ার সিজার রহমান এবং তাঁর সংগঠন ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্স। লাউয়াছড়ার বনে অজগরের শরীরে রেডিও ট্রান্সমিটার বসিয়ে প্রকৃতিতে ছেড়ে দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করেন তাঁরা সরীসৃপটি সম্পর্কে।
অজগরের এমনিতে মানুষকে আক্রমণের খুব বেশি রেকর্ড নেই। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ইন্দোনেশিয়ায় অল্প কয়েক দিনের ব্যবধানে অজগরের পেটে যান দুই নারী। অজগর দুটিকেও অবশ্য পরে মেরে ফেলা হয়। বাংলাদেশে ২০০৩ সালে রাঙামাটির সাজেক ইউনিয়নেও এ ধরনের একটি ঘটনা ঘটে। বাসন্তী ত্রিপুরা নামের এক নারী স্বামীর সঙ্গে জুমে কাজ করছিলেন।
এ সময় একটি অজগর তাঁকে গিলে ফেলে। পরে স্বামী পাড়ার মানুষদের ডেকে সবাই মিলে সাপটিকে মেরে মৃত অবস্থায় ওই নারীকে বের করে আনেন। তবে এটি ব্যতিক্রম। এমন আর কোনো নজির দেশের বনাঞ্চলে নেই। আপাতদৃষ্টিতে মানুষের জন্য নিরীহ বলা চলে অজগরকে।
বর্তমানে বাংলাদেশে অজগরেরা আছে বড় বিপদে। খাবারের খোঁজে লোকালয়ে এসে এমনিতেই এরা মানুষের হাতে মারা পড়ছিল। এরপর আবার চন্দ্রবোড়ার সঙ্গে গায়ের রঙে কিছু মিল থাকায় ইদানীং প্রচুর হারে মারা পড়েছে নির্বিষ এ সাপটি।
বিশ্ব সাপ দিবসে একটাই চাওয়া, অজগরেরা নিজেদের মতো বিচরণ করুক বাংলাদেশের পাহাড়-অরণ্যে এবং গ্রামীণ বনে। খুব বিপদে না পড়লে আমরা অজগরসহ অন্য সাপদেরও না মারার চেষ্টা করি। কারণ প্রকৃতি থেকে সাপ হারিয়ে গেলে এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে আমাদের ওপরও।
লেখক: সাংবাদিক ও প্রকৃতিপ্রেমী
আমাদের সৌভাগ্য, অজগরের মতো এত সুন্দর প্রজাতির সাপ এখনো বাংলাদেশে আছে। তাও একটি নয়, এর দুটি প্রজাতি দেশের বনাঞ্চলে দেখা যায়। আমার নিজেরও সরীসৃপকুলে সবচেয়ে পছন্দ অজগরই। তাই ১৬ জুলাই বিশ্ব সাপ দিবসে অজগর নিয়েই লেখা।
শুরুতে বরং গোটা বিশ্বের অজগর নিয়ে দু-চারটি তথ্য দিচ্ছি। এখন পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে ৪০ ধরনের বেশি অজগরের প্রজাতি আবিষ্কৃত হয়েছে। এশিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশ এবং অস্ট্রেলিয়ায় অজগরদের দেখা মেলে। এরা সাধারণত উষ্ণ এবং আর্দ্র জলবায়ু অঞ্চলে থাকতে ভালোবাসে।
অজগর গর্ত, পাথরের নিচে, স্তন্যপায়ী প্রাণীর তৈরি করা পরিত্যক্ত গর্ত এবং গাছের শাখায় বাস করে। প্রজাতিভেদে থাকার জায়গায় পার্থক্য থাকে। তবে মানুষ একে একে অজগরের আবাসস্থল দখল করে নেওয়ায়, কোথাও কোথাও এরা শহরের আশপাশে এবং খামার এলাকায় থাকাও রপ্ত করে নিয়েছে। কখনো কখনো বাংলাদেশেও মুরগির খামারে খাবারের খোঁজে অজগরের হানা দেওয়ার ও ধরা পড়ার ঘটনা ঘটে।
আকারে বিশাল কিন্তু অজগর মোটেই বিষধর নয়। এদের দাঁত অত্যন্ত শক্তিশালী হলেও বিষদাঁত নেই। এরা ভালো সাঁতারুও বটে।বাংলাদেশে অজগরের দুটি প্রজাতি আছে। এর একটি বার্মিজ অজগর বা ময়াল সাপ এবং অন্যটি গোলবাহার বা রেটিকুলেটেড পাইথন।অবশ্য স্থানীয়ভাবে কোথাও কোথাও যেকোনো ধরনের অজগরকেই ময়াল হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়।
ভাওয়াল-মধুপুরের শাল বন এবং সিলেট, চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের চিরসবুজ ও মিশ্র চিরসবুজ বনে ময়াল বা বার্মিজ অজগরের দেখা মেলে। তেমনি পাওয়া যায় সুন্দরবনেও। অবশ্য এখনো দেশের কোনো কোনো গ্রামীণ বনেও টিকে আছে এরা। এ ধরনের অজগর ৫-৬ মিটার (১৬ থেকে ২০ ফুট) লম্বা হয়। শরীরটা অনেক মোটা ও লম্বা আঁশে মোড়া।
অন্যদিকে পৃথিবীর দীর্ঘতম সাপ হলো গোলবাহার বা রেটিকুলেটেড পাইথন। সিলেট ও পার্বত্য চট্টগ্রামের বনে এখনো আছে গোলবাহাররা। লম্বায় ৯ মিটার বা ৩২ ফুট পর্যন্ত হতে পারে। বার্মিজ পাইথন বা ময়ালদের মতো এদের শরীরে হলুদ বা বাদামি ছোপ থাকে। তবে এটা অনেকটা জালের আকার ধারণ করে।
এবার প্রচণ্ড সাহসী এক অজগরের গল্প বলব। ভারতের কোয়েল নদীর কাছে ঘটনাটি ঘটে। তা আজ থেকে শ দেড়েক বছর আগে তো হবেই। বর্ণনা পাওয়া যায় খনি প্রকৌশলী মারভিন স্মিথের এক বইয়ে। বুনো কুকুরদের তাড়া করা একটি শূকরকে বাগে পেয়ে শরীর দিয়ে পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলে ২০ ফুট লম্বা বিশাল এক অজগর। একটু পরেই ঘটনাস্থলে হাজির হয় বুনো কুকুরের দল। বুনো কুকুরেরা খুব বেপরোয়া। বিখ্যাত শিকারি ও লেখক কেনেথ অ্যান্ডারসনের বইয়ে ভারতের জঙ্গলে বুনো কুকুরের দল বাঘকে মেরে খেয়ে ফেলার ঘটনারও বর্ণনা আছে।
কিন্তু কোয়েল নদীর ধারের ঘটনাটায় বুনো কুকুরদের পরাজয়ই মেনে নিতে হয়। আট সঙ্গীর মৃতদেহ ফেলে রেখে পালায় দলের বাকি সদস্যরা। অন্যদিকে বুনো কুকুরের কামড়-আঁচড়ে রক্তাক্ত হলেও অজগরটি বেঁচে যায়। বইটিতে বুনো কুকুরের দলের মোকাবিলা করার সময় অজগরটির একটি অদ্ভুত কৌশল ব্যবহারের কথা বলা হয়। এটি শক্তিশালী মাথা দিয়ে বুনো কুকুরের পাঁজরে আঘাত করে হাড় ভেঙে ফেলছিল।
অজগরের প্রজনন সময় শুরু ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে। মিলনের তিন-চার মাস পর এরা ডিম দেয়। স্ত্রী অজগর ডিমের চারদিকে কুণ্ডলী পাকিয়ে তা দেয়। ময়ালরা মার্চ থেকে জুনের মধ্যে ৫০-১০০টি ডিম দেয়। গোলবাহাররা বর্ষার গোড়ায় ১০ থেকে ১০০টি ডিম দেয়।
সাধারণত বন্য প্রাণী পানি খেতে আসে এমন জায়গায় লুকিয়ে মরার মতো পড়ে থাকে। শিকারকে প্রথমে কামড়ে ধরে, তারপর দেহের বিভিন্ন ভাঁজে একে পেঁচিয়ে দম বন্ধ করে মেরে ফেলে। এরপর ধীরে ধীরে খায়। একটি বড় প্রাণী খাওয়ার পর কয়েক দিন স্থির মরার মতো পড়ে থাকে অজগরেরা।
ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী থেকে শুরু করে হরিণ কিংবা শূকরও খায় এরা। কখনো কখনো হরিণ খেতে গিয়ে এদের মারা পড়ারও নজির আছে। অন্য সাপের মতো অজগরদের দাঁত পেছনে বাঁকা হওয়ায় খাবার মুখে ঢুকলে বের করতে পারে না। এতে হরিণ খাবার সময় শিং আটকে শিকারের সঙ্গে সঙ্গে অজগরের মৃত্যুর রেকর্ডও আছে।
পাকিস্তান আমলে গোটা পাকিস্তানের বন বিভাগের বড় কর্তা বা ইন্সপেক্টর জেনারেল অব ফরেস্ট ছিলেন ইউসুফ এস আহমদ। তিনি তাঁর উইথ দ্য ওয়াইল্ডস অ্যানিমেলস অব বেঙ্গল বইয়ে বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে পড়া বক্সার রাজাভাতখাওয়া জঙ্গলে একটি বিশালকায় অজগরের বড়সড় একটি মায়া হরিণ খাওয়ার দৃশ্যের বর্ণনা করেছিলেন। তেমনি ভারতের কুচবিহারের জঙ্গলে একটি হরিণ খাওয়ার অপেক্ষায় থাকা পাঁচটি অজগরকে দেখেছিলেন একসঙ্গে। এতগুলো অজগর একত্রে থাকার ঘটনা খুব বিরল। এগুলোও অবশ্য অন্তত ৭০-৮০ বছর আগের ঘটনা।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অজগর পোষা প্রাণী হিসেবেও জনপ্রিয়; বিশেষ করে বল পাইথন ও কার্পেট পাইথন। মাঝখানে অস্ট্রেলিয়ার এক ব্যক্তি কার্পেট অজগরসহ সার্ফিং করায় স্থানীয় বন্য প্রাণী সংরক্ষণের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা তাঁকে জরিমানা করেন। কেনেথ অ্যান্ডারসনও অজগর পুষতেন।
অজগর নিয়ে বাংলাদেশে চমৎকার গবেষণা করেছে শাহরিয়ার সিজার রহমান এবং তাঁর সংগঠন ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্স। লাউয়াছড়ার বনে অজগরের শরীরে রেডিও ট্রান্সমিটার বসিয়ে প্রকৃতিতে ছেড়ে দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করেন তাঁরা সরীসৃপটি সম্পর্কে।
অজগরের এমনিতে মানুষকে আক্রমণের খুব বেশি রেকর্ড নেই। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ইন্দোনেশিয়ায় অল্প কয়েক দিনের ব্যবধানে অজগরের পেটে যান দুই নারী। অজগর দুটিকেও অবশ্য পরে মেরে ফেলা হয়। বাংলাদেশে ২০০৩ সালে রাঙামাটির সাজেক ইউনিয়নেও এ ধরনের একটি ঘটনা ঘটে। বাসন্তী ত্রিপুরা নামের এক নারী স্বামীর সঙ্গে জুমে কাজ করছিলেন।
এ সময় একটি অজগর তাঁকে গিলে ফেলে। পরে স্বামী পাড়ার মানুষদের ডেকে সবাই মিলে সাপটিকে মেরে মৃত অবস্থায় ওই নারীকে বের করে আনেন। তবে এটি ব্যতিক্রম। এমন আর কোনো নজির দেশের বনাঞ্চলে নেই। আপাতদৃষ্টিতে মানুষের জন্য নিরীহ বলা চলে অজগরকে।
বর্তমানে বাংলাদেশে অজগরেরা আছে বড় বিপদে। খাবারের খোঁজে লোকালয়ে এসে এমনিতেই এরা মানুষের হাতে মারা পড়ছিল। এরপর আবার চন্দ্রবোড়ার সঙ্গে গায়ের রঙে কিছু মিল থাকায় ইদানীং প্রচুর হারে মারা পড়েছে নির্বিষ এ সাপটি।
বিশ্ব সাপ দিবসে একটাই চাওয়া, অজগরেরা নিজেদের মতো বিচরণ করুক বাংলাদেশের পাহাড়-অরণ্যে এবং গ্রামীণ বনে। খুব বিপদে না পড়লে আমরা অজগরসহ অন্য সাপদেরও না মারার চেষ্টা করি। কারণ প্রকৃতি থেকে সাপ হারিয়ে গেলে এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে আমাদের ওপরও।
লেখক: সাংবাদিক ও প্রকৃতিপ্রেমী
ইশতিয়াক হাসান
আমাদের সৌভাগ্য, অজগরের মতো এত সুন্দর প্রজাতির সাপ এখনো বাংলাদেশে আছে। তাও একটি নয়, এর দুটি প্রজাতি দেশের বনাঞ্চলে দেখা যায়। আমার নিজেরও সরীসৃপকুলে সবচেয়ে পছন্দ অজগরই। তাই ১৬ জুলাই বিশ্ব সাপ দিবসে অজগর নিয়েই লেখা।
শুরুতে বরং গোটা বিশ্বের অজগর নিয়ে দু-চারটি তথ্য দিচ্ছি। এখন পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে ৪০ ধরনের বেশি অজগরের প্রজাতি আবিষ্কৃত হয়েছে। এশিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশ এবং অস্ট্রেলিয়ায় অজগরদের দেখা মেলে। এরা সাধারণত উষ্ণ এবং আর্দ্র জলবায়ু অঞ্চলে থাকতে ভালোবাসে।
অজগর গর্ত, পাথরের নিচে, স্তন্যপায়ী প্রাণীর তৈরি করা পরিত্যক্ত গর্ত এবং গাছের শাখায় বাস করে। প্রজাতিভেদে থাকার জায়গায় পার্থক্য থাকে। তবে মানুষ একে একে অজগরের আবাসস্থল দখল করে নেওয়ায়, কোথাও কোথাও এরা শহরের আশপাশে এবং খামার এলাকায় থাকাও রপ্ত করে নিয়েছে। কখনো কখনো বাংলাদেশেও মুরগির খামারে খাবারের খোঁজে অজগরের হানা দেওয়ার ও ধরা পড়ার ঘটনা ঘটে।
আকারে বিশাল কিন্তু অজগর মোটেই বিষধর নয়। এদের দাঁত অত্যন্ত শক্তিশালী হলেও বিষদাঁত নেই। এরা ভালো সাঁতারুও বটে।বাংলাদেশে অজগরের দুটি প্রজাতি আছে। এর একটি বার্মিজ অজগর বা ময়াল সাপ এবং অন্যটি গোলবাহার বা রেটিকুলেটেড পাইথন।অবশ্য স্থানীয়ভাবে কোথাও কোথাও যেকোনো ধরনের অজগরকেই ময়াল হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়।
ভাওয়াল-মধুপুরের শাল বন এবং সিলেট, চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের চিরসবুজ ও মিশ্র চিরসবুজ বনে ময়াল বা বার্মিজ অজগরের দেখা মেলে। তেমনি পাওয়া যায় সুন্দরবনেও। অবশ্য এখনো দেশের কোনো কোনো গ্রামীণ বনেও টিকে আছে এরা। এ ধরনের অজগর ৫-৬ মিটার (১৬ থেকে ২০ ফুট) লম্বা হয়। শরীরটা অনেক মোটা ও লম্বা আঁশে মোড়া।
অন্যদিকে পৃথিবীর দীর্ঘতম সাপ হলো গোলবাহার বা রেটিকুলেটেড পাইথন। সিলেট ও পার্বত্য চট্টগ্রামের বনে এখনো আছে গোলবাহাররা। লম্বায় ৯ মিটার বা ৩২ ফুট পর্যন্ত হতে পারে। বার্মিজ পাইথন বা ময়ালদের মতো এদের শরীরে হলুদ বা বাদামি ছোপ থাকে। তবে এটা অনেকটা জালের আকার ধারণ করে।
এবার প্রচণ্ড সাহসী এক অজগরের গল্প বলব। ভারতের কোয়েল নদীর কাছে ঘটনাটি ঘটে। তা আজ থেকে শ দেড়েক বছর আগে তো হবেই। বর্ণনা পাওয়া যায় খনি প্রকৌশলী মারভিন স্মিথের এক বইয়ে। বুনো কুকুরদের তাড়া করা একটি শূকরকে বাগে পেয়ে শরীর দিয়ে পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলে ২০ ফুট লম্বা বিশাল এক অজগর। একটু পরেই ঘটনাস্থলে হাজির হয় বুনো কুকুরের দল। বুনো কুকুরেরা খুব বেপরোয়া। বিখ্যাত শিকারি ও লেখক কেনেথ অ্যান্ডারসনের বইয়ে ভারতের জঙ্গলে বুনো কুকুরের দল বাঘকে মেরে খেয়ে ফেলার ঘটনারও বর্ণনা আছে।
কিন্তু কোয়েল নদীর ধারের ঘটনাটায় বুনো কুকুরদের পরাজয়ই মেনে নিতে হয়। আট সঙ্গীর মৃতদেহ ফেলে রেখে পালায় দলের বাকি সদস্যরা। অন্যদিকে বুনো কুকুরের কামড়-আঁচড়ে রক্তাক্ত হলেও অজগরটি বেঁচে যায়। বইটিতে বুনো কুকুরের দলের মোকাবিলা করার সময় অজগরটির একটি অদ্ভুত কৌশল ব্যবহারের কথা বলা হয়। এটি শক্তিশালী মাথা দিয়ে বুনো কুকুরের পাঁজরে আঘাত করে হাড় ভেঙে ফেলছিল।
অজগরের প্রজনন সময় শুরু ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে। মিলনের তিন-চার মাস পর এরা ডিম দেয়। স্ত্রী অজগর ডিমের চারদিকে কুণ্ডলী পাকিয়ে তা দেয়। ময়ালরা মার্চ থেকে জুনের মধ্যে ৫০-১০০টি ডিম দেয়। গোলবাহাররা বর্ষার গোড়ায় ১০ থেকে ১০০টি ডিম দেয়।
সাধারণত বন্য প্রাণী পানি খেতে আসে এমন জায়গায় লুকিয়ে মরার মতো পড়ে থাকে। শিকারকে প্রথমে কামড়ে ধরে, তারপর দেহের বিভিন্ন ভাঁজে একে পেঁচিয়ে দম বন্ধ করে মেরে ফেলে। এরপর ধীরে ধীরে খায়। একটি বড় প্রাণী খাওয়ার পর কয়েক দিন স্থির মরার মতো পড়ে থাকে অজগরেরা।
ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী থেকে শুরু করে হরিণ কিংবা শূকরও খায় এরা। কখনো কখনো হরিণ খেতে গিয়ে এদের মারা পড়ারও নজির আছে। অন্য সাপের মতো অজগরদের দাঁত পেছনে বাঁকা হওয়ায় খাবার মুখে ঢুকলে বের করতে পারে না। এতে হরিণ খাবার সময় শিং আটকে শিকারের সঙ্গে সঙ্গে অজগরের মৃত্যুর রেকর্ডও আছে।
পাকিস্তান আমলে গোটা পাকিস্তানের বন বিভাগের বড় কর্তা বা ইন্সপেক্টর জেনারেল অব ফরেস্ট ছিলেন ইউসুফ এস আহমদ। তিনি তাঁর উইথ দ্য ওয়াইল্ডস অ্যানিমেলস অব বেঙ্গল বইয়ে বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে পড়া বক্সার রাজাভাতখাওয়া জঙ্গলে একটি বিশালকায় অজগরের বড়সড় একটি মায়া হরিণ খাওয়ার দৃশ্যের বর্ণনা করেছিলেন। তেমনি ভারতের কুচবিহারের জঙ্গলে একটি হরিণ খাওয়ার অপেক্ষায় থাকা পাঁচটি অজগরকে দেখেছিলেন একসঙ্গে। এতগুলো অজগর একত্রে থাকার ঘটনা খুব বিরল। এগুলোও অবশ্য অন্তত ৭০-৮০ বছর আগের ঘটনা।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অজগর পোষা প্রাণী হিসেবেও জনপ্রিয়; বিশেষ করে বল পাইথন ও কার্পেট পাইথন। মাঝখানে অস্ট্রেলিয়ার এক ব্যক্তি কার্পেট অজগরসহ সার্ফিং করায় স্থানীয় বন্য প্রাণী সংরক্ষণের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা তাঁকে জরিমানা করেন। কেনেথ অ্যান্ডারসনও অজগর পুষতেন।
অজগর নিয়ে বাংলাদেশে চমৎকার গবেষণা করেছে শাহরিয়ার সিজার রহমান এবং তাঁর সংগঠন ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্স। লাউয়াছড়ার বনে অজগরের শরীরে রেডিও ট্রান্সমিটার বসিয়ে প্রকৃতিতে ছেড়ে দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করেন তাঁরা সরীসৃপটি সম্পর্কে।
অজগরের এমনিতে মানুষকে আক্রমণের খুব বেশি রেকর্ড নেই। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ইন্দোনেশিয়ায় অল্প কয়েক দিনের ব্যবধানে অজগরের পেটে যান দুই নারী। অজগর দুটিকেও অবশ্য পরে মেরে ফেলা হয়। বাংলাদেশে ২০০৩ সালে রাঙামাটির সাজেক ইউনিয়নেও এ ধরনের একটি ঘটনা ঘটে। বাসন্তী ত্রিপুরা নামের এক নারী স্বামীর সঙ্গে জুমে কাজ করছিলেন।
এ সময় একটি অজগর তাঁকে গিলে ফেলে। পরে স্বামী পাড়ার মানুষদের ডেকে সবাই মিলে সাপটিকে মেরে মৃত অবস্থায় ওই নারীকে বের করে আনেন। তবে এটি ব্যতিক্রম। এমন আর কোনো নজির দেশের বনাঞ্চলে নেই। আপাতদৃষ্টিতে মানুষের জন্য নিরীহ বলা চলে অজগরকে।
বর্তমানে বাংলাদেশে অজগরেরা আছে বড় বিপদে। খাবারের খোঁজে লোকালয়ে এসে এমনিতেই এরা মানুষের হাতে মারা পড়ছিল। এরপর আবার চন্দ্রবোড়ার সঙ্গে গায়ের রঙে কিছু মিল থাকায় ইদানীং প্রচুর হারে মারা পড়েছে নির্বিষ এ সাপটি।
বিশ্ব সাপ দিবসে একটাই চাওয়া, অজগরেরা নিজেদের মতো বিচরণ করুক বাংলাদেশের পাহাড়-অরণ্যে এবং গ্রামীণ বনে। খুব বিপদে না পড়লে আমরা অজগরসহ অন্য সাপদেরও না মারার চেষ্টা করি। কারণ প্রকৃতি থেকে সাপ হারিয়ে গেলে এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে আমাদের ওপরও।
লেখক: সাংবাদিক ও প্রকৃতিপ্রেমী
আমাদের সৌভাগ্য, অজগরের মতো এত সুন্দর প্রজাতির সাপ এখনো বাংলাদেশে আছে। তাও একটি নয়, এর দুটি প্রজাতি দেশের বনাঞ্চলে দেখা যায়। আমার নিজেরও সরীসৃপকুলে সবচেয়ে পছন্দ অজগরই। তাই ১৬ জুলাই বিশ্ব সাপ দিবসে অজগর নিয়েই লেখা।
শুরুতে বরং গোটা বিশ্বের অজগর নিয়ে দু-চারটি তথ্য দিচ্ছি। এখন পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে ৪০ ধরনের বেশি অজগরের প্রজাতি আবিষ্কৃত হয়েছে। এশিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশ এবং অস্ট্রেলিয়ায় অজগরদের দেখা মেলে। এরা সাধারণত উষ্ণ এবং আর্দ্র জলবায়ু অঞ্চলে থাকতে ভালোবাসে।
অজগর গর্ত, পাথরের নিচে, স্তন্যপায়ী প্রাণীর তৈরি করা পরিত্যক্ত গর্ত এবং গাছের শাখায় বাস করে। প্রজাতিভেদে থাকার জায়গায় পার্থক্য থাকে। তবে মানুষ একে একে অজগরের আবাসস্থল দখল করে নেওয়ায়, কোথাও কোথাও এরা শহরের আশপাশে এবং খামার এলাকায় থাকাও রপ্ত করে নিয়েছে। কখনো কখনো বাংলাদেশেও মুরগির খামারে খাবারের খোঁজে অজগরের হানা দেওয়ার ও ধরা পড়ার ঘটনা ঘটে।
আকারে বিশাল কিন্তু অজগর মোটেই বিষধর নয়। এদের দাঁত অত্যন্ত শক্তিশালী হলেও বিষদাঁত নেই। এরা ভালো সাঁতারুও বটে।বাংলাদেশে অজগরের দুটি প্রজাতি আছে। এর একটি বার্মিজ অজগর বা ময়াল সাপ এবং অন্যটি গোলবাহার বা রেটিকুলেটেড পাইথন।অবশ্য স্থানীয়ভাবে কোথাও কোথাও যেকোনো ধরনের অজগরকেই ময়াল হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়।
ভাওয়াল-মধুপুরের শাল বন এবং সিলেট, চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের চিরসবুজ ও মিশ্র চিরসবুজ বনে ময়াল বা বার্মিজ অজগরের দেখা মেলে। তেমনি পাওয়া যায় সুন্দরবনেও। অবশ্য এখনো দেশের কোনো কোনো গ্রামীণ বনেও টিকে আছে এরা। এ ধরনের অজগর ৫-৬ মিটার (১৬ থেকে ২০ ফুট) লম্বা হয়। শরীরটা অনেক মোটা ও লম্বা আঁশে মোড়া।
অন্যদিকে পৃথিবীর দীর্ঘতম সাপ হলো গোলবাহার বা রেটিকুলেটেড পাইথন। সিলেট ও পার্বত্য চট্টগ্রামের বনে এখনো আছে গোলবাহাররা। লম্বায় ৯ মিটার বা ৩২ ফুট পর্যন্ত হতে পারে। বার্মিজ পাইথন বা ময়ালদের মতো এদের শরীরে হলুদ বা বাদামি ছোপ থাকে। তবে এটা অনেকটা জালের আকার ধারণ করে।
এবার প্রচণ্ড সাহসী এক অজগরের গল্প বলব। ভারতের কোয়েল নদীর কাছে ঘটনাটি ঘটে। তা আজ থেকে শ দেড়েক বছর আগে তো হবেই। বর্ণনা পাওয়া যায় খনি প্রকৌশলী মারভিন স্মিথের এক বইয়ে। বুনো কুকুরদের তাড়া করা একটি শূকরকে বাগে পেয়ে শরীর দিয়ে পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলে ২০ ফুট লম্বা বিশাল এক অজগর। একটু পরেই ঘটনাস্থলে হাজির হয় বুনো কুকুরের দল। বুনো কুকুরেরা খুব বেপরোয়া। বিখ্যাত শিকারি ও লেখক কেনেথ অ্যান্ডারসনের বইয়ে ভারতের জঙ্গলে বুনো কুকুরের দল বাঘকে মেরে খেয়ে ফেলার ঘটনারও বর্ণনা আছে।
কিন্তু কোয়েল নদীর ধারের ঘটনাটায় বুনো কুকুরদের পরাজয়ই মেনে নিতে হয়। আট সঙ্গীর মৃতদেহ ফেলে রেখে পালায় দলের বাকি সদস্যরা। অন্যদিকে বুনো কুকুরের কামড়-আঁচড়ে রক্তাক্ত হলেও অজগরটি বেঁচে যায়। বইটিতে বুনো কুকুরের দলের মোকাবিলা করার সময় অজগরটির একটি অদ্ভুত কৌশল ব্যবহারের কথা বলা হয়। এটি শক্তিশালী মাথা দিয়ে বুনো কুকুরের পাঁজরে আঘাত করে হাড় ভেঙে ফেলছিল।
অজগরের প্রজনন সময় শুরু ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে। মিলনের তিন-চার মাস পর এরা ডিম দেয়। স্ত্রী অজগর ডিমের চারদিকে কুণ্ডলী পাকিয়ে তা দেয়। ময়ালরা মার্চ থেকে জুনের মধ্যে ৫০-১০০টি ডিম দেয়। গোলবাহাররা বর্ষার গোড়ায় ১০ থেকে ১০০টি ডিম দেয়।
সাধারণত বন্য প্রাণী পানি খেতে আসে এমন জায়গায় লুকিয়ে মরার মতো পড়ে থাকে। শিকারকে প্রথমে কামড়ে ধরে, তারপর দেহের বিভিন্ন ভাঁজে একে পেঁচিয়ে দম বন্ধ করে মেরে ফেলে। এরপর ধীরে ধীরে খায়। একটি বড় প্রাণী খাওয়ার পর কয়েক দিন স্থির মরার মতো পড়ে থাকে অজগরেরা।
ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী থেকে শুরু করে হরিণ কিংবা শূকরও খায় এরা। কখনো কখনো হরিণ খেতে গিয়ে এদের মারা পড়ারও নজির আছে। অন্য সাপের মতো অজগরদের দাঁত পেছনে বাঁকা হওয়ায় খাবার মুখে ঢুকলে বের করতে পারে না। এতে হরিণ খাবার সময় শিং আটকে শিকারের সঙ্গে সঙ্গে অজগরের মৃত্যুর রেকর্ডও আছে।
পাকিস্তান আমলে গোটা পাকিস্তানের বন বিভাগের বড় কর্তা বা ইন্সপেক্টর জেনারেল অব ফরেস্ট ছিলেন ইউসুফ এস আহমদ। তিনি তাঁর উইথ দ্য ওয়াইল্ডস অ্যানিমেলস অব বেঙ্গল বইয়ে বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে পড়া বক্সার রাজাভাতখাওয়া জঙ্গলে একটি বিশালকায় অজগরের বড়সড় একটি মায়া হরিণ খাওয়ার দৃশ্যের বর্ণনা করেছিলেন। তেমনি ভারতের কুচবিহারের জঙ্গলে একটি হরিণ খাওয়ার অপেক্ষায় থাকা পাঁচটি অজগরকে দেখেছিলেন একসঙ্গে। এতগুলো অজগর একত্রে থাকার ঘটনা খুব বিরল। এগুলোও অবশ্য অন্তত ৭০-৮০ বছর আগের ঘটনা।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অজগর পোষা প্রাণী হিসেবেও জনপ্রিয়; বিশেষ করে বল পাইথন ও কার্পেট পাইথন। মাঝখানে অস্ট্রেলিয়ার এক ব্যক্তি কার্পেট অজগরসহ সার্ফিং করায় স্থানীয় বন্য প্রাণী সংরক্ষণের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা তাঁকে জরিমানা করেন। কেনেথ অ্যান্ডারসনও অজগর পুষতেন।
অজগর নিয়ে বাংলাদেশে চমৎকার গবেষণা করেছে শাহরিয়ার সিজার রহমান এবং তাঁর সংগঠন ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্স। লাউয়াছড়ার বনে অজগরের শরীরে রেডিও ট্রান্সমিটার বসিয়ে প্রকৃতিতে ছেড়ে দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করেন তাঁরা সরীসৃপটি সম্পর্কে।
অজগরের এমনিতে মানুষকে আক্রমণের খুব বেশি রেকর্ড নেই। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ইন্দোনেশিয়ায় অল্প কয়েক দিনের ব্যবধানে অজগরের পেটে যান দুই নারী। অজগর দুটিকেও অবশ্য পরে মেরে ফেলা হয়। বাংলাদেশে ২০০৩ সালে রাঙামাটির সাজেক ইউনিয়নেও এ ধরনের একটি ঘটনা ঘটে। বাসন্তী ত্রিপুরা নামের এক নারী স্বামীর সঙ্গে জুমে কাজ করছিলেন।
এ সময় একটি অজগর তাঁকে গিলে ফেলে। পরে স্বামী পাড়ার মানুষদের ডেকে সবাই মিলে সাপটিকে মেরে মৃত অবস্থায় ওই নারীকে বের করে আনেন। তবে এটি ব্যতিক্রম। এমন আর কোনো নজির দেশের বনাঞ্চলে নেই। আপাতদৃষ্টিতে মানুষের জন্য নিরীহ বলা চলে অজগরকে।
বর্তমানে বাংলাদেশে অজগরেরা আছে বড় বিপদে। খাবারের খোঁজে লোকালয়ে এসে এমনিতেই এরা মানুষের হাতে মারা পড়ছিল। এরপর আবার চন্দ্রবোড়ার সঙ্গে গায়ের রঙে কিছু মিল থাকায় ইদানীং প্রচুর হারে মারা পড়েছে নির্বিষ এ সাপটি।
বিশ্ব সাপ দিবসে একটাই চাওয়া, অজগরেরা নিজেদের মতো বিচরণ করুক বাংলাদেশের পাহাড়-অরণ্যে এবং গ্রামীণ বনে। খুব বিপদে না পড়লে আমরা অজগরসহ অন্য সাপদেরও না মারার চেষ্টা করি। কারণ প্রকৃতি থেকে সাপ হারিয়ে গেলে এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে আমাদের ওপরও।
লেখক: সাংবাদিক ও প্রকৃতিপ্রেমী
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৬ দিন আগে‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।
আমাদের সৌভাগ্য, অজগরের মতো এত সুন্দর প্রজাতির সাপ এখনো বাংলাদেশে আছে। তাও একটি নয়, এর দুটি প্রজাতি দেশের বনাঞ্চলে দেখা যায়। আমাদের নিজেদেরও সরীসৃপকুলে সবচেয়ে পছন্দ অজগরই। তাই ১৬ জুলাই বিশ্ব সাপ দিবসে অজগর নিয়েই লেখা।
১৬ জুলাই ২০২৪‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]
আমাদের সৌভাগ্য, অজগরের মতো এত সুন্দর প্রজাতির সাপ এখনো বাংলাদেশে আছে। তাও একটি নয়, এর দুটি প্রজাতি দেশের বনাঞ্চলে দেখা যায়। আমাদের নিজেদেরও সরীসৃপকুলে সবচেয়ে পছন্দ অজগরই। তাই ১৬ জুলাই বিশ্ব সাপ দিবসে অজগর নিয়েই লেখা।
১৬ জুলাই ২০২৪গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৬ দিন আগেভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।
আমাদের সৌভাগ্য, অজগরের মতো এত সুন্দর প্রজাতির সাপ এখনো বাংলাদেশে আছে। তাও একটি নয়, এর দুটি প্রজাতি দেশের বনাঞ্চলে দেখা যায়। আমাদের নিজেদেরও সরীসৃপকুলে সবচেয়ে পছন্দ অজগরই। তাই ১৬ জুলাই বিশ্ব সাপ দিবসে অজগর নিয়েই লেখা।
১৬ জুলাই ২০২৪গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৬ দিন আগে‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।
আমাদের সৌভাগ্য, অজগরের মতো এত সুন্দর প্রজাতির সাপ এখনো বাংলাদেশে আছে। তাও একটি নয়, এর দুটি প্রজাতি দেশের বনাঞ্চলে দেখা যায়। আমাদের নিজেদেরও সরীসৃপকুলে সবচেয়ে পছন্দ অজগরই। তাই ১৬ জুলাই বিশ্ব সাপ দিবসে অজগর নিয়েই লেখা।
১৬ জুলাই ২০২৪গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৬ দিন আগে‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫