Ajker Patrika

কোটালীপাড়া মুক্ত দিবস আজ

কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৩ ডিসেম্বর ২০২১, ১৮: ৩৫
কোটালীপাড়া মুক্ত দিবস আজ

আজ ৩ ডিসেম্বর কোটালীপাড়া মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া হানাদার মুক্ত হয়েছিল। কোটালীপাড়া উপজেলায় বয়ে গিয়েছিল আনন্দের বন্যা। অনেক দুঃখ বেদনার পরও সেদিন এলাকার মানুষের মধ্যে ছিল আনন্দ-উল্লাস। কোটালীপাড়াবাসী পেয়েছিল মুক্তির স্বাদ।

৩ ডিসেম্বর সকাল ১০টার দিকে উপজেলার পিঞ্জুরী ইউনিয়নের কাকডাঙ্গা রাজাকার ক্যাম্পে মুক্তিযোদ্ধারা হামলা চালিয়ে ক্যাম্পটি দখল করে নেন। রাজাকার ক্যাম্পের সদস্যরা মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। এরই মধ্য দিয়ে কোটালীপাড়া উপজেলা হানাদার মুক্ত হয়।

জানা গেছে, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে এ অঞ্চলে পাকবাহিনী ও তাদের দোসররা খুবই শক্ত অবস্থানে ছিল। আর সে কারণে যুদ্ধ শুরু হলে কোটালীপাড়ার সন্তান পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সৈনিক হেমায়েত উদ্দিন দেশে পালিয়ে আসেন। গড়ে তোলেন নিজস্ব বাহিনী।

কোটালীপাড়ায় তিনি একটি ট্রেনিং ক্যাম্প গড়ে তোলেন। যেখানে পুরুষের পাশাপাশি নারীদেরও যুদ্ধের ট্রেনিং দেওয়া হতো। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বেশ কয়েকটি সম্মুখ যুদ্ধে অবতীর্ণ হয় হেমায়েত বাহিনী। উল্লেখযোগ্য যুদ্ধ হয় হরিনাহাটি, মাটিভাঙ্গা, বাশবাড়িয়া, ঝনঝনিয়া, রামশীল, জহরের কান্দি, কোটালীপাড়া সদর প্রভৃতি স্থানে।

এ ছাড়াও ছোট ছোট যুদ্ধ হয়েছে বেশ কয়েকটি স্থানে। আর এসব যুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছেন হেমায়েত বাহিনী প্রধান হেমায়েত উদ্দিন বীর বিক্রম।

যুদ্ধকালীন ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈয়াবুর রহমান সরদার বলেন, ‘৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে শুধু যৌথবাহিনীই মুক্তিযুদ্ধ করেনি। পাক হানাদার বাহিনীকে এ দেশ থেকে বিতাড়িত করতে তৎকালীন সময়ে এ দেশে কয়েকটি অঞ্চলে গঠিত হয়েছিল কয়েকটি বাহিনী। ফরিদপুর ও বরিশাল অঞ্চল নিয়ে গঠিত হয়েছিল “হেমায়েত বাহিনী”। আমরা এই হেমায়েত বাহিনীর অধীনে মুক্তিযুদ্ধ করেছি।’

কোটালীপাড়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার শেখ লুৎফর রহমান বলেন, ৭২টি গ্রুপের সমন্বয়ে গঠিত এই হেমায়েত বাহিনী যুদ্ধ করেছিল মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনে। এই বাহিনীর সদস্য সংখ্যা ছিল প্রায় সাত হাজার। তার মধ্য থেকে হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে ২৪ জন আহত ও ১৮ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।

শহীদ মুক্তিযোদ্ধারা হলেন, উপজেলার গোলাম আলী, বেলায়েত, আবু তালেব, আবুল খায়ের, মোক্তার হোসেন, রতন কুমার, মোয়াজ্জেম হোসেন, টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বেলায়েত হোসেন, মুকসুদপুর উপজেলার আবুল বাশার, বরিশালের গৌরনদী উপজেলার ছাত্তার মৃধা, সেকেন্দার, নুরু ব্যাপারী, পরিমল শীল, আগৈলঝাড়া উপজেলার তৈয়াবালী, নলছিটি উপজেলার ওসমান, মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলার মকবুল হোসেন, আ. ছাত্তার ও ঢাকার ইব্রাহিম।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আবুল কালাম দাড়িয়া বলেন, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে হেমায়েত বাহিনীর সদস্যরা ১৩৪টি অপারেশন পরিচালনা করেন। এর মধ্যে রামশীলের যুদ্ধ অন্যতম। এই যুদ্ধটি অত্র অঞ্চলে ঐতিহাসিক রামশীলের যুদ্ধ বলে পরিচিত। হেমায়েত বাহিনীর প্রধান হেমায়েত উদ্দিন ঐতিহাসিক রামশীলের যুদ্ধে মারাত্মকভাবে আহত হন। মুক্তিযুদ্ধে অসাধারণ অবদানের কারণে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর হেমায়েত উদ্দিনকে “বীর বিক্রম” খেতাবে ভূষিত করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চার মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠানের সেবা ডিজিটাইজ করার নির্দেশ দিল সরকার

গত দশ বছর ভিসা না পাওয়ার কারণে বাংলাদেশে আসতে পারিনি: মাইলাম

মাগুরার শিশুটি এখনো অচেতন, চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন তারেক রহমান

ঈদে পুলিশের সহযোগী ফোর্স হবে বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মী, পাবে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা

তিন নারী আমার জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ: তারেক রহমান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত