জুয়ার আসরের নেতৃত্বে চার ইউপি সদস্য

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চারজন ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে মদ ও জুয়ার আসর বসানো হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব আসরে প্রতিনিয়ত ময়মনসিংহসহ আশপাশের জেলাগুলো থেকে জুয়াড়িরা আসছেন। জুয়ার আসরে নারীদের দিয়ে মনোরঞ্জনের ব্যবস্থাও রাখেন স্থানীয় আয়োজকেরা।

 অভিযুক্তরা হলেন মোহনগঞ্জ উপজেলার সমাজ-সহিলদেও ইউপির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. শফিকুল ইসলাম হাবিব, বড়কাশিয়া-বিরামপুর ইউপির ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোহাম্মদ আলী, বড়তলী-বানিয়াহারী ইউপি ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হাবিব মিয়া এবং একই ইউপির ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য বাবু মিয়া।

 ওই সব ইউপি সদস্যদের জুয়ার আসরে খেলারত অবস্থার ভিডিও আজকের পত্রিকার প্রতিবেদকের কাছে আছে। অনেকে এসব ভিডিও ফেসবুকেও আপলোড করেছেন।

মোহনগঞ্জ থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘জুয়ার আসরের বিষয়টি লোকমুখে শুনেছি। কোথায় কখন খেলে, এমন সুর্নিদিষ্ট তথ্য আমাদের কাছে নেই। দু-একজন মেম্বার এতে জড়িত বলে জেনেছি। তবে তাঁদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করছি। কৌশল নিয়ে দ্রুত তাঁদের হাতেনাতে গ্রেপ্তারে অভিযান চালাব।’

সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় প্রতিনিয়ত জুয়ার আসর বসান ওই সব ইউপি সদস্য। সেখানে মাদক সেবন ও নারীদের দিয়ে অনৈতিক কাজ চলছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ইউপি সদস্যদের সঙ্গে এলাকার কিছু লোকও জড়িত। তবে এ বিষয়ে স্থানীয় কেউ মুখ খুলতে রাজি নন বিপদ হওয়ার আশঙ্কায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সমাজ-সহিলদেও ইউপির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. শফিকুল ইসলাম হাবিব বলেন, ‘আমার সঙ্গে আটপাড়ার উপজেলার ও স্থানীয় কয়েকজনও খেলে।’

বড়তলী-বানিয়াহারী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হাবিব মিয়া বলেন, ‘আমাদের ঝিমটি এলাকায় যে জুয়ার আসর বসে, সেটি পরিচালনা করেন ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী। লাভ-লোকসানও তাঁর।’ বড়তলী-বানিয়াহারী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য বাবু মিয়া বলেন, ‘আমি জুয়ার সঙ্গে জড়িত নই।’

বড়কাশিয়া-বিরামপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোহাম্মদ আলী জুয়ার আসর পরিচালনার দায় অস্বীকার করে বলেন, ‘যেসব ওয়ার্ডে খেলা হয়, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মেম্বাররাই এসব বিষয়ে বলতে পারবেন।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বড়কাশিয়া-বিরামপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোতাহার হোসেন বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মাহাম্মদ আলী হলো এই উপজেলার জুয়ার বোর্ডের ফাউন্ডার। তাঁর নেতৃত্বেই সব জুয়া খেলা হয়। ওই সব আসরে শুধু জুয়া-মদ নয়, নারীদের দিয়ে অনৈতিক কাজও করানো হয়।