রাশেদ রাব্বি, ঢাকা
বৈশ্বিক মহামারি নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের ব্যয় হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার ৫৪৩ কোটি ৭ লাখ ৪ হাজার ২১৮ টাকা। এর মধ্যে শুধু করোনাপ্রতিরোধী টিকা কিনতেই ব্যয় হয়েছে ৪৩ হাজার ৯৪০ কোটি ৮ লাখ ২৫ হাজার টাকা। এমনকি করোনা বিডির দুটি অ্যাপ বানাতে ব্যয় হয়েছে ৫ কোটি ৩৩ লাখ ৪১ হাজার ৬৮০ টাকা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোভিড মহামারি সমাপ্তি ঘোষণার পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ-সংক্রান্ত হিসাব নিরূপণ করেছে। সম্প্রতি সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে এই তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে।
তবে করোনাকালে সরকারের পক্ষ থেকে ব্যবসায়ীদের দেওয়া প্রণোদনার অর্থ এতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের সেই প্যাকেজে ১ লাখ ৮৭ হাজার ৬৭৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সমন্বিত নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের তথ্যমতে, ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। সেই থেকে ২০২৩ সালের ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত ২০ লাখ ৪৬ হাজার ৭ জনের দেহে রোগটি শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৯
হাজার ৪৭৭ জনের। এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীপ্রতি সরকারের ব্যয় হয়েছে ৫৮ হাজার ৯১৬ টাকা।
কোভিড প্রতিরোধে দেশে প্রথম অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কিনতে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছিল। মন্ত্রণালয়ের হিসাবে দেখা গেছে, সেই টিকাসহ সংশ্লিষ্ট সরঞ্জাম কিনতে ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা। টিকা প্রয়োগের সিরিঞ্জ কিনতে লাগে ৩০ কোটি ৮৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা। সিরিঞ্জ জাহাজীকরণে ব্যয় হয়েছে ৯৯ লাখ ৭৮ হাজার ৯৮০ টাকা।
কোভিডপ্রতিরোধী বিভিন্ন সরঞ্জাম আকাশপথে আনতে ১৯ কোটি ৫৭ লাখ ৩ হাজার ৩৫৪ টাকা ব্যয় হয়েছে। শিশুদের টিকাদানের জন্য এডি সিরিঞ্জ কিনতে ব্যয় হয়েছে ১৭৮ কোটি ২ লাখ টাকা।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, কোভিড রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা দিতে ইমার্জেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড প্যানডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস (ইআরপিপি) প্রকল্প থেকে বিভিন্ন সরঞ্জাম কেনা হয়েছে ৪০ হাজার ১২৫ কোটি ৯ লাখ টাকায়। একই জাতীয় সরঞ্জাম কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের (সিএমএসডি) মাধ্যমে কিনতে ব্যয় হয়েছে ১২ হাজার ৯২৮ কোটি ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৮৮৩ টাকা।
রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) সাবেক উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন অবশ্য বলেন, এত বড় মহামারি নিয়ন্ত্রণে অনেক ব্যয় হওয়াটাই স্বাভাবিক।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জনস্বাস্থ্যবিদ বলেন, ‘আমরা মহামারি মোকাবিলায় সক্ষম হয়েছি। তবে বিপুল অর্থ লুটপাট হয়েছে। সরকারি-বেসরকারি চক্র মিলে এই লুটপাট চালিয়েছে। একাধিক কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করায় অনেক টাকা অপচয় হয়েছে।’
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) কোভিড মোকাবিলায় সরকারের টিকা কার্যক্রমে অর্থ ব্যয়ে স্বচ্ছতার ক্ষেত্রে ঘাটতি দেখতে পায়। গত বছরের ১২ এপ্রিল প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে সংস্থাটি জানায়, প্রায় ২৩ হাজার কোটি টাকার হিসাব পাওয়া যায়নি।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান তখন বলেছিলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ, আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও টিকা কার্যক্রম এবং করোনার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে নেওয়া প্রণোদনা কার্যক্রমে অনিয়ম-দুর্নীতিসহ সুশাসনের চ্যালেঞ্জ অব্যাহত আছে। তিনি বলেন, ‘গবেষণায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষকে টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে অবহেলার প্রমাণ পাওয়া গেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী টিকাসংশ্লিষ্টতার যে কথা বলেছেন, বাস্তবে তার অর্ধেক হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে আমরা জানতে পেয়েছি। টিকায় ১৪ হাজার থেকে ১৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। কিন্তু স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলছেন, ৪০ হাজার কোটি টাকার মতো ব্যয় হয়েছে। এখানেও তথ্যের ঘাটতি থাকতে পারে।’
দেশে মহামারির শুরুতে চিকিৎসা ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় ছিল কোয়ারেন্টিন। এই কোয়ারেন্টিন বাবদ সরকারের ব্যয় হয়েছে ২৩ কোটি ৬৮ লাখ ১ হাজার টাকা। কোভিড নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন ধরনের বিশেষ কার্যক্রম পরিচালনা করে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়। এসব কার্যক্রম চালাতে ব্যয় হয়েছে ৭ হাজার ৭৯৮ কোটি ৮ লাখ ৪৬ হাজার টাকা।
২০২০ সালের জুন থেকে ২০২১ সালের অক্টোবর পর্যন্ত কোভিড রোগীদের চিকিৎসা, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা, চিকিৎসা সরঞ্জাম, নিরাপত্তা সরঞ্জাম যন্ত্রপাতিসহ ২৮ ধরনের পণ্য কেনা হয়। এসব চিকিৎসাপণ্য কিনতে খরচ হয় ১২ হাজার ৯২৮ কোটি ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৮৮৩ টাকা। এর মধ্যে ৩৭ লাখ সেট আরটি-পিসিআর কিট (ভিটিএম, সোয়াব স্টিকসহ) কেনা হয় ৬১৩ কোটি ৩১ লাখ টাকায়। এর বাইরে আরও ২০ লাখ ৮০ হাজার বিটিএম ও সোয়াব স্টিক কেনা হয় ৩৭ কোটি ৯৩ লাখ ৬৯ হাজার ৭২০ টাকায়।
কোভিড-১৯ অ্যান্টিজেন পরীক্ষার জন্য ২ লাখ ২০ হাজার ৬২৫টি কিট কেনা হয় ২২ কোটি ৭২ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকায়। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তায় ৩১ লাখ ২৮ হাজার ৪৭০ সেট পিপিই (ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম) কিনতে ব্যয় হয় ১৫৬ কোটি ৮৮ লাখ ৪৯ হাজার ২০০ টাকা। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের জন্য ১ হাজার ১৯৩টি হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলা কিনতে হয় ৪৩ কোটি ৫১ লাখ ৮০ হাজার টাকায়। ১১ হাজার ১৩৬টি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর কেনা হয় ৯৩ লাখ ২০ হাজার টাকায়।
মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, ২৫টি পোর্টেবল এক্স-রে যন্ত্র কিনতে ব্যয় হয় ৭ কোটি ৬২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ৪৩টি অক্সিজেন জেনারেটর প্ল্যান্ট কিনে হাসপাতালে স্থাপন করতে ব্যয় হয় ১৪৬ কোটি ৯০ লাখ ৫৭ হাজার ৯৯৬ টাকা। ২৩২টি ভেন্টিলেটর কেনা হয় ৬২ কোটি ৯৮ লাখ ৫০ হাজার টাকায়। ৪৬৩টি পেশেন্ট মনিটর কিনতে লাগে ১২ কোটি ৫০ লাখ ১০ হাজার টাকা। ১০০টি এবিজি মেশিন কেনা হয় ২৩ কোটি ২৫ লাখ টাকায়। ৮৫৩টি আইসিইউ শয্যা কেনা হয় ২৩ কোটি ৮৩ লাখ ৮৫ হাজার টাকায়। ১৭ হাজার ৬০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনতে লাগে ২৩ কোটি ৪৭ লাখ ২০ হাজার টাকা। হ্যান্ড স্যানিটাইজার কেনা হয় ৮ কোটি ৯৬ লাখ ৩ হাজার ২৯০ টাকার। ৭ লাখ ৬০ হাজার এন-৯৫ মাস্ক কেনা হয় ৩৪ কোটি ৪৬ লাখ টাকায়। ৭ লাখ ৩০ হাজার ৬৬৮ পিস কেএন-৯৫ মাস্ক কেনা হয় ৬ কোটি ২৭ লাখ ৬৮ হাজার ১৬ টাকায়। ৬৯ লাখ ৭৬ হাজার ৭৬৯ পিস সার্জিক্যাল মাস্ক কিনতে লাগে ২ কোটি ৮৯ লাখ ৩৯ হাজার ৫৯৯ টাকা। তিন লাখ পিস গ্লোভস (এক্সামিনেশন) কেনা হয় ৩৬ লাখ টাকায়। ৮ লাখ ৯০ হাজার ৩৫২ জোড়া সার্জিক্যাল গ্লোভস কেনা হয় ২ কোটি ৯৬ লাখ ৮২ হাজার ৩৭০ টাকায়। প্রাথমিক পর্যায়ে তিনটি আরটি-পিসিআর কেনা হয় ৫ কোটি ৭০ লাখ ৫৩ হাজার ৪০০ টাকায়। পরে আরও ১২টি পিসিআর কেনা হয় ২৯ কোটি ৪১ লাখ ৮০ হাজার ৩৮৭ টাকায়। এ ছাড়া ১ লাখ ৪৯ হাজার ৫৯৬ ভায়াল রেমডিসিভির ইনজেকশন কেনা হয় ১৩ কোটি ৮৩ লাখ ৭৬ হাজার ৩০০ টাকায়।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের কোনো কর্মকর্তা মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মুশতাক হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কোভিডকালে আমাদের দেশে প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের প্রতি সরকারি সহায়তা ছিল অপ্রতুল। এ ছাড়া ফিল্ড হাসপাতাল করার নামে বিপুল পরিমাণ টাকা নষ্ট করা হয়েছে। বেসরকারি হাসপাতাল থেকে অতি উচ্চমূল্যে সেবা কেনা হয়েছে।’
জনস্বাস্থ্যবিদ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, করোনা নিয়ন্ত্রণে যে ব্যয় হয়েছে, সেখানে স্বচ্ছতা থাকা জরুরি। দেশের নাগরিকদের যদি সন্দেহ হয় যে এই খাতে ব্যয়ে অনিয়ম হয়েছে, তাহলে তদন্ত করতে হবে। তিনি আরও বলেন, অনেক অপ্রয়োজনীয় ব্যয় হয়েছে, আবার প্রণোদনার মতো অনেক দরকারি ব্যয় করা হয়নি। এ ছাড়া কেনাকাটায় অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ আছে। তাই এ ক্ষেত্রে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিটি করে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা জরুরি।
বৈশ্বিক মহামারি নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের ব্যয় হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার ৫৪৩ কোটি ৭ লাখ ৪ হাজার ২১৮ টাকা। এর মধ্যে শুধু করোনাপ্রতিরোধী টিকা কিনতেই ব্যয় হয়েছে ৪৩ হাজার ৯৪০ কোটি ৮ লাখ ২৫ হাজার টাকা। এমনকি করোনা বিডির দুটি অ্যাপ বানাতে ব্যয় হয়েছে ৫ কোটি ৩৩ লাখ ৪১ হাজার ৬৮০ টাকা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোভিড মহামারি সমাপ্তি ঘোষণার পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ-সংক্রান্ত হিসাব নিরূপণ করেছে। সম্প্রতি সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে এই তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে।
তবে করোনাকালে সরকারের পক্ষ থেকে ব্যবসায়ীদের দেওয়া প্রণোদনার অর্থ এতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের সেই প্যাকেজে ১ লাখ ৮৭ হাজার ৬৭৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সমন্বিত নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের তথ্যমতে, ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। সেই থেকে ২০২৩ সালের ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত ২০ লাখ ৪৬ হাজার ৭ জনের দেহে রোগটি শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৯
হাজার ৪৭৭ জনের। এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীপ্রতি সরকারের ব্যয় হয়েছে ৫৮ হাজার ৯১৬ টাকা।
কোভিড প্রতিরোধে দেশে প্রথম অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কিনতে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছিল। মন্ত্রণালয়ের হিসাবে দেখা গেছে, সেই টিকাসহ সংশ্লিষ্ট সরঞ্জাম কিনতে ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা। টিকা প্রয়োগের সিরিঞ্জ কিনতে লাগে ৩০ কোটি ৮৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা। সিরিঞ্জ জাহাজীকরণে ব্যয় হয়েছে ৯৯ লাখ ৭৮ হাজার ৯৮০ টাকা।
কোভিডপ্রতিরোধী বিভিন্ন সরঞ্জাম আকাশপথে আনতে ১৯ কোটি ৫৭ লাখ ৩ হাজার ৩৫৪ টাকা ব্যয় হয়েছে। শিশুদের টিকাদানের জন্য এডি সিরিঞ্জ কিনতে ব্যয় হয়েছে ১৭৮ কোটি ২ লাখ টাকা।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, কোভিড রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা দিতে ইমার্জেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড প্যানডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস (ইআরপিপি) প্রকল্প থেকে বিভিন্ন সরঞ্জাম কেনা হয়েছে ৪০ হাজার ১২৫ কোটি ৯ লাখ টাকায়। একই জাতীয় সরঞ্জাম কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের (সিএমএসডি) মাধ্যমে কিনতে ব্যয় হয়েছে ১২ হাজার ৯২৮ কোটি ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৮৮৩ টাকা।
রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) সাবেক উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন অবশ্য বলেন, এত বড় মহামারি নিয়ন্ত্রণে অনেক ব্যয় হওয়াটাই স্বাভাবিক।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জনস্বাস্থ্যবিদ বলেন, ‘আমরা মহামারি মোকাবিলায় সক্ষম হয়েছি। তবে বিপুল অর্থ লুটপাট হয়েছে। সরকারি-বেসরকারি চক্র মিলে এই লুটপাট চালিয়েছে। একাধিক কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করায় অনেক টাকা অপচয় হয়েছে।’
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) কোভিড মোকাবিলায় সরকারের টিকা কার্যক্রমে অর্থ ব্যয়ে স্বচ্ছতার ক্ষেত্রে ঘাটতি দেখতে পায়। গত বছরের ১২ এপ্রিল প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে সংস্থাটি জানায়, প্রায় ২৩ হাজার কোটি টাকার হিসাব পাওয়া যায়নি।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান তখন বলেছিলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ, আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও টিকা কার্যক্রম এবং করোনার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে নেওয়া প্রণোদনা কার্যক্রমে অনিয়ম-দুর্নীতিসহ সুশাসনের চ্যালেঞ্জ অব্যাহত আছে। তিনি বলেন, ‘গবেষণায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষকে টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে অবহেলার প্রমাণ পাওয়া গেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী টিকাসংশ্লিষ্টতার যে কথা বলেছেন, বাস্তবে তার অর্ধেক হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে আমরা জানতে পেয়েছি। টিকায় ১৪ হাজার থেকে ১৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। কিন্তু স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলছেন, ৪০ হাজার কোটি টাকার মতো ব্যয় হয়েছে। এখানেও তথ্যের ঘাটতি থাকতে পারে।’
দেশে মহামারির শুরুতে চিকিৎসা ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় ছিল কোয়ারেন্টিন। এই কোয়ারেন্টিন বাবদ সরকারের ব্যয় হয়েছে ২৩ কোটি ৬৮ লাখ ১ হাজার টাকা। কোভিড নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন ধরনের বিশেষ কার্যক্রম পরিচালনা করে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়। এসব কার্যক্রম চালাতে ব্যয় হয়েছে ৭ হাজার ৭৯৮ কোটি ৮ লাখ ৪৬ হাজার টাকা।
২০২০ সালের জুন থেকে ২০২১ সালের অক্টোবর পর্যন্ত কোভিড রোগীদের চিকিৎসা, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা, চিকিৎসা সরঞ্জাম, নিরাপত্তা সরঞ্জাম যন্ত্রপাতিসহ ২৮ ধরনের পণ্য কেনা হয়। এসব চিকিৎসাপণ্য কিনতে খরচ হয় ১২ হাজার ৯২৮ কোটি ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৮৮৩ টাকা। এর মধ্যে ৩৭ লাখ সেট আরটি-পিসিআর কিট (ভিটিএম, সোয়াব স্টিকসহ) কেনা হয় ৬১৩ কোটি ৩১ লাখ টাকায়। এর বাইরে আরও ২০ লাখ ৮০ হাজার বিটিএম ও সোয়াব স্টিক কেনা হয় ৩৭ কোটি ৯৩ লাখ ৬৯ হাজার ৭২০ টাকায়।
কোভিড-১৯ অ্যান্টিজেন পরীক্ষার জন্য ২ লাখ ২০ হাজার ৬২৫টি কিট কেনা হয় ২২ কোটি ৭২ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকায়। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তায় ৩১ লাখ ২৮ হাজার ৪৭০ সেট পিপিই (ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম) কিনতে ব্যয় হয় ১৫৬ কোটি ৮৮ লাখ ৪৯ হাজার ২০০ টাকা। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের জন্য ১ হাজার ১৯৩টি হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলা কিনতে হয় ৪৩ কোটি ৫১ লাখ ৮০ হাজার টাকায়। ১১ হাজার ১৩৬টি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর কেনা হয় ৯৩ লাখ ২০ হাজার টাকায়।
মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, ২৫টি পোর্টেবল এক্স-রে যন্ত্র কিনতে ব্যয় হয় ৭ কোটি ৬২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ৪৩টি অক্সিজেন জেনারেটর প্ল্যান্ট কিনে হাসপাতালে স্থাপন করতে ব্যয় হয় ১৪৬ কোটি ৯০ লাখ ৫৭ হাজার ৯৯৬ টাকা। ২৩২টি ভেন্টিলেটর কেনা হয় ৬২ কোটি ৯৮ লাখ ৫০ হাজার টাকায়। ৪৬৩টি পেশেন্ট মনিটর কিনতে লাগে ১২ কোটি ৫০ লাখ ১০ হাজার টাকা। ১০০টি এবিজি মেশিন কেনা হয় ২৩ কোটি ২৫ লাখ টাকায়। ৮৫৩টি আইসিইউ শয্যা কেনা হয় ২৩ কোটি ৮৩ লাখ ৮৫ হাজার টাকায়। ১৭ হাজার ৬০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনতে লাগে ২৩ কোটি ৪৭ লাখ ২০ হাজার টাকা। হ্যান্ড স্যানিটাইজার কেনা হয় ৮ কোটি ৯৬ লাখ ৩ হাজার ২৯০ টাকার। ৭ লাখ ৬০ হাজার এন-৯৫ মাস্ক কেনা হয় ৩৪ কোটি ৪৬ লাখ টাকায়। ৭ লাখ ৩০ হাজার ৬৬৮ পিস কেএন-৯৫ মাস্ক কেনা হয় ৬ কোটি ২৭ লাখ ৬৮ হাজার ১৬ টাকায়। ৬৯ লাখ ৭৬ হাজার ৭৬৯ পিস সার্জিক্যাল মাস্ক কিনতে লাগে ২ কোটি ৮৯ লাখ ৩৯ হাজার ৫৯৯ টাকা। তিন লাখ পিস গ্লোভস (এক্সামিনেশন) কেনা হয় ৩৬ লাখ টাকায়। ৮ লাখ ৯০ হাজার ৩৫২ জোড়া সার্জিক্যাল গ্লোভস কেনা হয় ২ কোটি ৯৬ লাখ ৮২ হাজার ৩৭০ টাকায়। প্রাথমিক পর্যায়ে তিনটি আরটি-পিসিআর কেনা হয় ৫ কোটি ৭০ লাখ ৫৩ হাজার ৪০০ টাকায়। পরে আরও ১২টি পিসিআর কেনা হয় ২৯ কোটি ৪১ লাখ ৮০ হাজার ৩৮৭ টাকায়। এ ছাড়া ১ লাখ ৪৯ হাজার ৫৯৬ ভায়াল রেমডিসিভির ইনজেকশন কেনা হয় ১৩ কোটি ৮৩ লাখ ৭৬ হাজার ৩০০ টাকায়।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের কোনো কর্মকর্তা মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মুশতাক হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কোভিডকালে আমাদের দেশে প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের প্রতি সরকারি সহায়তা ছিল অপ্রতুল। এ ছাড়া ফিল্ড হাসপাতাল করার নামে বিপুল পরিমাণ টাকা নষ্ট করা হয়েছে। বেসরকারি হাসপাতাল থেকে অতি উচ্চমূল্যে সেবা কেনা হয়েছে।’
জনস্বাস্থ্যবিদ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, করোনা নিয়ন্ত্রণে যে ব্যয় হয়েছে, সেখানে স্বচ্ছতা থাকা জরুরি। দেশের নাগরিকদের যদি সন্দেহ হয় যে এই খাতে ব্যয়ে অনিয়ম হয়েছে, তাহলে তদন্ত করতে হবে। তিনি আরও বলেন, অনেক অপ্রয়োজনীয় ব্যয় হয়েছে, আবার প্রণোদনার মতো অনেক দরকারি ব্যয় করা হয়নি। এ ছাড়া কেনাকাটায় অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ আছে। তাই এ ক্ষেত্রে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিটি করে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা জরুরি।
রাশেদ রাব্বি, ঢাকা
বৈশ্বিক মহামারি নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের ব্যয় হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার ৫৪৩ কোটি ৭ লাখ ৪ হাজার ২১৮ টাকা। এর মধ্যে শুধু করোনাপ্রতিরোধী টিকা কিনতেই ব্যয় হয়েছে ৪৩ হাজার ৯৪০ কোটি ৮ লাখ ২৫ হাজার টাকা। এমনকি করোনা বিডির দুটি অ্যাপ বানাতে ব্যয় হয়েছে ৫ কোটি ৩৩ লাখ ৪১ হাজার ৬৮০ টাকা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোভিড মহামারি সমাপ্তি ঘোষণার পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ-সংক্রান্ত হিসাব নিরূপণ করেছে। সম্প্রতি সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে এই তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে।
তবে করোনাকালে সরকারের পক্ষ থেকে ব্যবসায়ীদের দেওয়া প্রণোদনার অর্থ এতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের সেই প্যাকেজে ১ লাখ ৮৭ হাজার ৬৭৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সমন্বিত নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের তথ্যমতে, ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। সেই থেকে ২০২৩ সালের ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত ২০ লাখ ৪৬ হাজার ৭ জনের দেহে রোগটি শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৯
হাজার ৪৭৭ জনের। এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীপ্রতি সরকারের ব্যয় হয়েছে ৫৮ হাজার ৯১৬ টাকা।
কোভিড প্রতিরোধে দেশে প্রথম অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কিনতে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছিল। মন্ত্রণালয়ের হিসাবে দেখা গেছে, সেই টিকাসহ সংশ্লিষ্ট সরঞ্জাম কিনতে ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা। টিকা প্রয়োগের সিরিঞ্জ কিনতে লাগে ৩০ কোটি ৮৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা। সিরিঞ্জ জাহাজীকরণে ব্যয় হয়েছে ৯৯ লাখ ৭৮ হাজার ৯৮০ টাকা।
কোভিডপ্রতিরোধী বিভিন্ন সরঞ্জাম আকাশপথে আনতে ১৯ কোটি ৫৭ লাখ ৩ হাজার ৩৫৪ টাকা ব্যয় হয়েছে। শিশুদের টিকাদানের জন্য এডি সিরিঞ্জ কিনতে ব্যয় হয়েছে ১৭৮ কোটি ২ লাখ টাকা।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, কোভিড রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা দিতে ইমার্জেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড প্যানডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস (ইআরপিপি) প্রকল্প থেকে বিভিন্ন সরঞ্জাম কেনা হয়েছে ৪০ হাজার ১২৫ কোটি ৯ লাখ টাকায়। একই জাতীয় সরঞ্জাম কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের (সিএমএসডি) মাধ্যমে কিনতে ব্যয় হয়েছে ১২ হাজার ৯২৮ কোটি ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৮৮৩ টাকা।
রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) সাবেক উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন অবশ্য বলেন, এত বড় মহামারি নিয়ন্ত্রণে অনেক ব্যয় হওয়াটাই স্বাভাবিক।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জনস্বাস্থ্যবিদ বলেন, ‘আমরা মহামারি মোকাবিলায় সক্ষম হয়েছি। তবে বিপুল অর্থ লুটপাট হয়েছে। সরকারি-বেসরকারি চক্র মিলে এই লুটপাট চালিয়েছে। একাধিক কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করায় অনেক টাকা অপচয় হয়েছে।’
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) কোভিড মোকাবিলায় সরকারের টিকা কার্যক্রমে অর্থ ব্যয়ে স্বচ্ছতার ক্ষেত্রে ঘাটতি দেখতে পায়। গত বছরের ১২ এপ্রিল প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে সংস্থাটি জানায়, প্রায় ২৩ হাজার কোটি টাকার হিসাব পাওয়া যায়নি।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান তখন বলেছিলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ, আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও টিকা কার্যক্রম এবং করোনার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে নেওয়া প্রণোদনা কার্যক্রমে অনিয়ম-দুর্নীতিসহ সুশাসনের চ্যালেঞ্জ অব্যাহত আছে। তিনি বলেন, ‘গবেষণায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষকে টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে অবহেলার প্রমাণ পাওয়া গেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী টিকাসংশ্লিষ্টতার যে কথা বলেছেন, বাস্তবে তার অর্ধেক হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে আমরা জানতে পেয়েছি। টিকায় ১৪ হাজার থেকে ১৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। কিন্তু স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলছেন, ৪০ হাজার কোটি টাকার মতো ব্যয় হয়েছে। এখানেও তথ্যের ঘাটতি থাকতে পারে।’
দেশে মহামারির শুরুতে চিকিৎসা ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় ছিল কোয়ারেন্টিন। এই কোয়ারেন্টিন বাবদ সরকারের ব্যয় হয়েছে ২৩ কোটি ৬৮ লাখ ১ হাজার টাকা। কোভিড নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন ধরনের বিশেষ কার্যক্রম পরিচালনা করে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়। এসব কার্যক্রম চালাতে ব্যয় হয়েছে ৭ হাজার ৭৯৮ কোটি ৮ লাখ ৪৬ হাজার টাকা।
২০২০ সালের জুন থেকে ২০২১ সালের অক্টোবর পর্যন্ত কোভিড রোগীদের চিকিৎসা, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা, চিকিৎসা সরঞ্জাম, নিরাপত্তা সরঞ্জাম যন্ত্রপাতিসহ ২৮ ধরনের পণ্য কেনা হয়। এসব চিকিৎসাপণ্য কিনতে খরচ হয় ১২ হাজার ৯২৮ কোটি ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৮৮৩ টাকা। এর মধ্যে ৩৭ লাখ সেট আরটি-পিসিআর কিট (ভিটিএম, সোয়াব স্টিকসহ) কেনা হয় ৬১৩ কোটি ৩১ লাখ টাকায়। এর বাইরে আরও ২০ লাখ ৮০ হাজার বিটিএম ও সোয়াব স্টিক কেনা হয় ৩৭ কোটি ৯৩ লাখ ৬৯ হাজার ৭২০ টাকায়।
কোভিড-১৯ অ্যান্টিজেন পরীক্ষার জন্য ২ লাখ ২০ হাজার ৬২৫টি কিট কেনা হয় ২২ কোটি ৭২ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকায়। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তায় ৩১ লাখ ২৮ হাজার ৪৭০ সেট পিপিই (ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম) কিনতে ব্যয় হয় ১৫৬ কোটি ৮৮ লাখ ৪৯ হাজার ২০০ টাকা। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের জন্য ১ হাজার ১৯৩টি হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলা কিনতে হয় ৪৩ কোটি ৫১ লাখ ৮০ হাজার টাকায়। ১১ হাজার ১৩৬টি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর কেনা হয় ৯৩ লাখ ২০ হাজার টাকায়।
মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, ২৫টি পোর্টেবল এক্স-রে যন্ত্র কিনতে ব্যয় হয় ৭ কোটি ৬২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ৪৩টি অক্সিজেন জেনারেটর প্ল্যান্ট কিনে হাসপাতালে স্থাপন করতে ব্যয় হয় ১৪৬ কোটি ৯০ লাখ ৫৭ হাজার ৯৯৬ টাকা। ২৩২টি ভেন্টিলেটর কেনা হয় ৬২ কোটি ৯৮ লাখ ৫০ হাজার টাকায়। ৪৬৩টি পেশেন্ট মনিটর কিনতে লাগে ১২ কোটি ৫০ লাখ ১০ হাজার টাকা। ১০০টি এবিজি মেশিন কেনা হয় ২৩ কোটি ২৫ লাখ টাকায়। ৮৫৩টি আইসিইউ শয্যা কেনা হয় ২৩ কোটি ৮৩ লাখ ৮৫ হাজার টাকায়। ১৭ হাজার ৬০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনতে লাগে ২৩ কোটি ৪৭ লাখ ২০ হাজার টাকা। হ্যান্ড স্যানিটাইজার কেনা হয় ৮ কোটি ৯৬ লাখ ৩ হাজার ২৯০ টাকার। ৭ লাখ ৬০ হাজার এন-৯৫ মাস্ক কেনা হয় ৩৪ কোটি ৪৬ লাখ টাকায়। ৭ লাখ ৩০ হাজার ৬৬৮ পিস কেএন-৯৫ মাস্ক কেনা হয় ৬ কোটি ২৭ লাখ ৬৮ হাজার ১৬ টাকায়। ৬৯ লাখ ৭৬ হাজার ৭৬৯ পিস সার্জিক্যাল মাস্ক কিনতে লাগে ২ কোটি ৮৯ লাখ ৩৯ হাজার ৫৯৯ টাকা। তিন লাখ পিস গ্লোভস (এক্সামিনেশন) কেনা হয় ৩৬ লাখ টাকায়। ৮ লাখ ৯০ হাজার ৩৫২ জোড়া সার্জিক্যাল গ্লোভস কেনা হয় ২ কোটি ৯৬ লাখ ৮২ হাজার ৩৭০ টাকায়। প্রাথমিক পর্যায়ে তিনটি আরটি-পিসিআর কেনা হয় ৫ কোটি ৭০ লাখ ৫৩ হাজার ৪০০ টাকায়। পরে আরও ১২টি পিসিআর কেনা হয় ২৯ কোটি ৪১ লাখ ৮০ হাজার ৩৮৭ টাকায়। এ ছাড়া ১ লাখ ৪৯ হাজার ৫৯৬ ভায়াল রেমডিসিভির ইনজেকশন কেনা হয় ১৩ কোটি ৮৩ লাখ ৭৬ হাজার ৩০০ টাকায়।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের কোনো কর্মকর্তা মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মুশতাক হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কোভিডকালে আমাদের দেশে প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের প্রতি সরকারি সহায়তা ছিল অপ্রতুল। এ ছাড়া ফিল্ড হাসপাতাল করার নামে বিপুল পরিমাণ টাকা নষ্ট করা হয়েছে। বেসরকারি হাসপাতাল থেকে অতি উচ্চমূল্যে সেবা কেনা হয়েছে।’
জনস্বাস্থ্যবিদ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, করোনা নিয়ন্ত্রণে যে ব্যয় হয়েছে, সেখানে স্বচ্ছতা থাকা জরুরি। দেশের নাগরিকদের যদি সন্দেহ হয় যে এই খাতে ব্যয়ে অনিয়ম হয়েছে, তাহলে তদন্ত করতে হবে। তিনি আরও বলেন, অনেক অপ্রয়োজনীয় ব্যয় হয়েছে, আবার প্রণোদনার মতো অনেক দরকারি ব্যয় করা হয়নি। এ ছাড়া কেনাকাটায় অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ আছে। তাই এ ক্ষেত্রে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিটি করে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা জরুরি।
বৈশ্বিক মহামারি নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের ব্যয় হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার ৫৪৩ কোটি ৭ লাখ ৪ হাজার ২১৮ টাকা। এর মধ্যে শুধু করোনাপ্রতিরোধী টিকা কিনতেই ব্যয় হয়েছে ৪৩ হাজার ৯৪০ কোটি ৮ লাখ ২৫ হাজার টাকা। এমনকি করোনা বিডির দুটি অ্যাপ বানাতে ব্যয় হয়েছে ৫ কোটি ৩৩ লাখ ৪১ হাজার ৬৮০ টাকা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোভিড মহামারি সমাপ্তি ঘোষণার পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ-সংক্রান্ত হিসাব নিরূপণ করেছে। সম্প্রতি সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে এই তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে।
তবে করোনাকালে সরকারের পক্ষ থেকে ব্যবসায়ীদের দেওয়া প্রণোদনার অর্থ এতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের সেই প্যাকেজে ১ লাখ ৮৭ হাজার ৬৭৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সমন্বিত নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের তথ্যমতে, ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। সেই থেকে ২০২৩ সালের ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত ২০ লাখ ৪৬ হাজার ৭ জনের দেহে রোগটি শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৯
হাজার ৪৭৭ জনের। এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীপ্রতি সরকারের ব্যয় হয়েছে ৫৮ হাজার ৯১৬ টাকা।
কোভিড প্রতিরোধে দেশে প্রথম অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কিনতে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছিল। মন্ত্রণালয়ের হিসাবে দেখা গেছে, সেই টিকাসহ সংশ্লিষ্ট সরঞ্জাম কিনতে ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা। টিকা প্রয়োগের সিরিঞ্জ কিনতে লাগে ৩০ কোটি ৮৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা। সিরিঞ্জ জাহাজীকরণে ব্যয় হয়েছে ৯৯ লাখ ৭৮ হাজার ৯৮০ টাকা।
কোভিডপ্রতিরোধী বিভিন্ন সরঞ্জাম আকাশপথে আনতে ১৯ কোটি ৫৭ লাখ ৩ হাজার ৩৫৪ টাকা ব্যয় হয়েছে। শিশুদের টিকাদানের জন্য এডি সিরিঞ্জ কিনতে ব্যয় হয়েছে ১৭৮ কোটি ২ লাখ টাকা।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, কোভিড রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা দিতে ইমার্জেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড প্যানডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস (ইআরপিপি) প্রকল্প থেকে বিভিন্ন সরঞ্জাম কেনা হয়েছে ৪০ হাজার ১২৫ কোটি ৯ লাখ টাকায়। একই জাতীয় সরঞ্জাম কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের (সিএমএসডি) মাধ্যমে কিনতে ব্যয় হয়েছে ১২ হাজার ৯২৮ কোটি ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৮৮৩ টাকা।
রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) সাবেক উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন অবশ্য বলেন, এত বড় মহামারি নিয়ন্ত্রণে অনেক ব্যয় হওয়াটাই স্বাভাবিক।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জনস্বাস্থ্যবিদ বলেন, ‘আমরা মহামারি মোকাবিলায় সক্ষম হয়েছি। তবে বিপুল অর্থ লুটপাট হয়েছে। সরকারি-বেসরকারি চক্র মিলে এই লুটপাট চালিয়েছে। একাধিক কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করায় অনেক টাকা অপচয় হয়েছে।’
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) কোভিড মোকাবিলায় সরকারের টিকা কার্যক্রমে অর্থ ব্যয়ে স্বচ্ছতার ক্ষেত্রে ঘাটতি দেখতে পায়। গত বছরের ১২ এপ্রিল প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে সংস্থাটি জানায়, প্রায় ২৩ হাজার কোটি টাকার হিসাব পাওয়া যায়নি।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান তখন বলেছিলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ, আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও টিকা কার্যক্রম এবং করোনার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে নেওয়া প্রণোদনা কার্যক্রমে অনিয়ম-দুর্নীতিসহ সুশাসনের চ্যালেঞ্জ অব্যাহত আছে। তিনি বলেন, ‘গবেষণায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষকে টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে অবহেলার প্রমাণ পাওয়া গেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী টিকাসংশ্লিষ্টতার যে কথা বলেছেন, বাস্তবে তার অর্ধেক হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে আমরা জানতে পেয়েছি। টিকায় ১৪ হাজার থেকে ১৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। কিন্তু স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলছেন, ৪০ হাজার কোটি টাকার মতো ব্যয় হয়েছে। এখানেও তথ্যের ঘাটতি থাকতে পারে।’
দেশে মহামারির শুরুতে চিকিৎসা ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় ছিল কোয়ারেন্টিন। এই কোয়ারেন্টিন বাবদ সরকারের ব্যয় হয়েছে ২৩ কোটি ৬৮ লাখ ১ হাজার টাকা। কোভিড নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন ধরনের বিশেষ কার্যক্রম পরিচালনা করে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়। এসব কার্যক্রম চালাতে ব্যয় হয়েছে ৭ হাজার ৭৯৮ কোটি ৮ লাখ ৪৬ হাজার টাকা।
২০২০ সালের জুন থেকে ২০২১ সালের অক্টোবর পর্যন্ত কোভিড রোগীদের চিকিৎসা, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা, চিকিৎসা সরঞ্জাম, নিরাপত্তা সরঞ্জাম যন্ত্রপাতিসহ ২৮ ধরনের পণ্য কেনা হয়। এসব চিকিৎসাপণ্য কিনতে খরচ হয় ১২ হাজার ৯২৮ কোটি ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৮৮৩ টাকা। এর মধ্যে ৩৭ লাখ সেট আরটি-পিসিআর কিট (ভিটিএম, সোয়াব স্টিকসহ) কেনা হয় ৬১৩ কোটি ৩১ লাখ টাকায়। এর বাইরে আরও ২০ লাখ ৮০ হাজার বিটিএম ও সোয়াব স্টিক কেনা হয় ৩৭ কোটি ৯৩ লাখ ৬৯ হাজার ৭২০ টাকায়।
কোভিড-১৯ অ্যান্টিজেন পরীক্ষার জন্য ২ লাখ ২০ হাজার ৬২৫টি কিট কেনা হয় ২২ কোটি ৭২ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকায়। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তায় ৩১ লাখ ২৮ হাজার ৪৭০ সেট পিপিই (ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম) কিনতে ব্যয় হয় ১৫৬ কোটি ৮৮ লাখ ৪৯ হাজার ২০০ টাকা। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের জন্য ১ হাজার ১৯৩টি হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলা কিনতে হয় ৪৩ কোটি ৫১ লাখ ৮০ হাজার টাকায়। ১১ হাজার ১৩৬টি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর কেনা হয় ৯৩ লাখ ২০ হাজার টাকায়।
মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, ২৫টি পোর্টেবল এক্স-রে যন্ত্র কিনতে ব্যয় হয় ৭ কোটি ৬২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ৪৩টি অক্সিজেন জেনারেটর প্ল্যান্ট কিনে হাসপাতালে স্থাপন করতে ব্যয় হয় ১৪৬ কোটি ৯০ লাখ ৫৭ হাজার ৯৯৬ টাকা। ২৩২টি ভেন্টিলেটর কেনা হয় ৬২ কোটি ৯৮ লাখ ৫০ হাজার টাকায়। ৪৬৩টি পেশেন্ট মনিটর কিনতে লাগে ১২ কোটি ৫০ লাখ ১০ হাজার টাকা। ১০০টি এবিজি মেশিন কেনা হয় ২৩ কোটি ২৫ লাখ টাকায়। ৮৫৩টি আইসিইউ শয্যা কেনা হয় ২৩ কোটি ৮৩ লাখ ৮৫ হাজার টাকায়। ১৭ হাজার ৬০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনতে লাগে ২৩ কোটি ৪৭ লাখ ২০ হাজার টাকা। হ্যান্ড স্যানিটাইজার কেনা হয় ৮ কোটি ৯৬ লাখ ৩ হাজার ২৯০ টাকার। ৭ লাখ ৬০ হাজার এন-৯৫ মাস্ক কেনা হয় ৩৪ কোটি ৪৬ লাখ টাকায়। ৭ লাখ ৩০ হাজার ৬৬৮ পিস কেএন-৯৫ মাস্ক কেনা হয় ৬ কোটি ২৭ লাখ ৬৮ হাজার ১৬ টাকায়। ৬৯ লাখ ৭৬ হাজার ৭৬৯ পিস সার্জিক্যাল মাস্ক কিনতে লাগে ২ কোটি ৮৯ লাখ ৩৯ হাজার ৫৯৯ টাকা। তিন লাখ পিস গ্লোভস (এক্সামিনেশন) কেনা হয় ৩৬ লাখ টাকায়। ৮ লাখ ৯০ হাজার ৩৫২ জোড়া সার্জিক্যাল গ্লোভস কেনা হয় ২ কোটি ৯৬ লাখ ৮২ হাজার ৩৭০ টাকায়। প্রাথমিক পর্যায়ে তিনটি আরটি-পিসিআর কেনা হয় ৫ কোটি ৭০ লাখ ৫৩ হাজার ৪০০ টাকায়। পরে আরও ১২টি পিসিআর কেনা হয় ২৯ কোটি ৪১ লাখ ৮০ হাজার ৩৮৭ টাকায়। এ ছাড়া ১ লাখ ৪৯ হাজার ৫৯৬ ভায়াল রেমডিসিভির ইনজেকশন কেনা হয় ১৩ কোটি ৮৩ লাখ ৭৬ হাজার ৩০০ টাকায়।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের কোনো কর্মকর্তা মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মুশতাক হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কোভিডকালে আমাদের দেশে প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের প্রতি সরকারি সহায়তা ছিল অপ্রতুল। এ ছাড়া ফিল্ড হাসপাতাল করার নামে বিপুল পরিমাণ টাকা নষ্ট করা হয়েছে। বেসরকারি হাসপাতাল থেকে অতি উচ্চমূল্যে সেবা কেনা হয়েছে।’
জনস্বাস্থ্যবিদ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, করোনা নিয়ন্ত্রণে যে ব্যয় হয়েছে, সেখানে স্বচ্ছতা থাকা জরুরি। দেশের নাগরিকদের যদি সন্দেহ হয় যে এই খাতে ব্যয়ে অনিয়ম হয়েছে, তাহলে তদন্ত করতে হবে। তিনি আরও বলেন, অনেক অপ্রয়োজনীয় ব্যয় হয়েছে, আবার প্রণোদনার মতো অনেক দরকারি ব্যয় করা হয়নি। এ ছাড়া কেনাকাটায় অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ আছে। তাই এ ক্ষেত্রে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিটি করে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা জরুরি।
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৬ দিন আগে‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।
বৈশ্বিক মহামারি নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের ব্যয় হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার ৫৪৩ কোটি ৭ লাখ ৪ হাজার ২১৮ টাকা। এর মধ্যে শুধু করোনাপ্রতিরোধী টিকা কিনতেই ব্যয় হয়েছে ৪৩ হাজার ৯৪০ কোটি ৮ লাখ ২৫ হাজার টাকা। এমনকি করোনা বিডির দুটি অ্যাপ বানাতে ব্যয় হয়েছে ৫ কোটি ৩৩ লাখ ৪১ হাজার ৬৮০ টাকা।
২০ নভেম্বর ২০২৩‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]
বৈশ্বিক মহামারি নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের ব্যয় হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার ৫৪৩ কোটি ৭ লাখ ৪ হাজার ২১৮ টাকা। এর মধ্যে শুধু করোনাপ্রতিরোধী টিকা কিনতেই ব্যয় হয়েছে ৪৩ হাজার ৯৪০ কোটি ৮ লাখ ২৫ হাজার টাকা। এমনকি করোনা বিডির দুটি অ্যাপ বানাতে ব্যয় হয়েছে ৫ কোটি ৩৩ লাখ ৪১ হাজার ৬৮০ টাকা।
২০ নভেম্বর ২০২৩গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৬ দিন আগেভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।
বৈশ্বিক মহামারি নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের ব্যয় হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার ৫৪৩ কোটি ৭ লাখ ৪ হাজার ২১৮ টাকা। এর মধ্যে শুধু করোনাপ্রতিরোধী টিকা কিনতেই ব্যয় হয়েছে ৪৩ হাজার ৯৪০ কোটি ৮ লাখ ২৫ হাজার টাকা। এমনকি করোনা বিডির দুটি অ্যাপ বানাতে ব্যয় হয়েছে ৫ কোটি ৩৩ লাখ ৪১ হাজার ৬৮০ টাকা।
২০ নভেম্বর ২০২৩গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৬ দিন আগে‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।
বৈশ্বিক মহামারি নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের ব্যয় হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার ৫৪৩ কোটি ৭ লাখ ৪ হাজার ২১৮ টাকা। এর মধ্যে শুধু করোনাপ্রতিরোধী টিকা কিনতেই ব্যয় হয়েছে ৪৩ হাজার ৯৪০ কোটি ৮ লাখ ২৫ হাজার টাকা। এমনকি করোনা বিডির দুটি অ্যাপ বানাতে ব্যয় হয়েছে ৫ কোটি ৩৩ লাখ ৪১ হাজার ৬৮০ টাকা।
২০ নভেম্বর ২০২৩গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৬ দিন আগে‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫