শাহরিয়ার হাসান, ঢাকা

দেশের সাতটি কেন্দ্রীয় কারাগারসহ ১০টিতে দাগি বন্দীদের দাপটে অসহায় সাধারণ বন্দীরা। এমনকি কারারক্ষীদের চেয়েও তাঁদের কর্তৃত্ব বেশি। টাকার বিনিময়ে অবৈধ সুযোগ-সুবিধা, চিকিৎসার ব্যবস্থা—সবকিছুতেই থাকে তাঁদের হাত। সাধারণ বন্দীরা তাঁদের জুলুমের শিকার হচ্ছেন। কারা কর্মকর্তারা এসব জানলেও নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় থাকে। খোদ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে রয়েছে এসব তথ্য।
বিভিন্ন কারাগারের ভেতরে অনিয়ম, বিশৃঙ্খলা, মারধরসহ বিভিন্ন অভিযোগ শোনা যায় মাঝেমধ্যেই। কিছু কিছু ঘটনায় ভুক্তভোগী বন্দী ও স্বজনেরা কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন। কারাগারফেরত কয়েকজন বলেছেন, কিছু দাগি অপরাধীর কর্মকাণ্ডে সংশোধনাগারে স্বস্তি পান না সাধারণ বন্দীরা। ‘রাখিব নিরাপদ দেখাব আলোর পথ’—এই স্লোগান অনেক বন্দীর কাছেই হয়ে ওঠে কথার কথা। কারাগারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, সীমিত জনবল ও অপর্যাপ্ত লজিস্টিক সাপোর্ট নিয়ে এসব বন্ধ করা খুব কঠিন।
জানতে চাইলে কারা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল সুজাউর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রতিটি কারাগারে আমাদের গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের কার্যক্রম চলছে। অনেক সময় আমরা নিজেদের মতো করে ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। আবার অনেক ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীদের কেউ অভিযোগ করলে তাদের অভিযোগও আমলে নিয়ে তদন্ত করি।’
কারা অধিদপ্তর সূত্র জানায়, দেশে ৬৮টি কারাগারের মধ্যে ১৩টি কেন্দ্রীয় কারাগার ও ৫৫টি জেলা কারাগার। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগের অধীন ১৭টি। ধারণক্ষমতার কয়েক গুণ বন্দী, ঝুঁকিপূর্ণ ভবন, চিকিৎসক না থাকা, বিশুদ্ধ পানির সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যা কারাগারগুলোতে কমবেশি রয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, গত মার্চে জেলা প্রশাসক সম্মেলনে কয়েকজন জেলা প্রশাসক কারাগারের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরেন। তাঁদের উত্থাপিত বিষয়গুলো বাস্তবায়নের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ২৯ মার্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগে পাঠানো হয়। অবশ্য এর আগেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কারাগার নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করে। ওই প্রতিবেদনের সূত্র ধরে আজকের পত্রিকার অনুসন্ধানে ২০টি কারাগারের বিভিন্ন সমস্যার চিত্র উঠে এসেছে।
১০ কারাগারে দাগি আসামিদের দাপট
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন বলছে, কেন্দ্রীয় সাতটি কারাগারসহ কয়েকটি কারাগারে বেশ কিছু দাগি বন্দী রয়েছেন। পুরোনো কয়েদি হওয়ায় তাঁরা কারাগারের অন্য বন্দীদের ওপর জুলুম করছেন। এসব ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কারা কর্তৃপক্ষ নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করে। দাগি আসামিদের দাপট থাকা কারাগারগুলো হচ্ছে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার ১-২, হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার, সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার, যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার, বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগার, খুলনা জেলা কারাগার, ফরিদপুর জেলা কারাগার ও গাইবান্ধা জেলা কারাগার।
আজকের পত্রিকার প্রতিনিধিদের মাধ্যমে এসব কারাগার থেকে জামিনে বের হওয়া আসামিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কারাগারগুলোতে দাগি আসামিরা প্রভাব বিস্তার করেন। তাঁদের অভিযোগ, আসামিদের এই চক্র পেছন থেকে নিয়ন্ত্রণ করেন কারারক্ষীরা।
গত মাসে জামিনে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান রাজধানীর খিলগাঁও থানার একটি হত্যা মামলার আসামি সুজন। তিনি বলেন, ‘পুরো কারাগারে দাপট দাগি আসামিদের। নতুন বন্দীদের ঢোকানো আর বের করা ছাড়া কারারক্ষীদের সেভাবে কোনো কাজ থাকে না। ভেতরে যা চলে সব নগদ টাকায়। পান থেকে চুন খসলে সাধারণ বন্দীদের ওপর নেমে আসে অমানুষিক নির্যাতন। কারাগারে যে যত দুর্ধর্ষ আসামি, সে তত প্রভাবশালী।’
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাদেকুল ইসলামকে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় এপ্রিলে কারাগারে পাঠানো হয়। তাঁর ছোট ভাই শাহিন অভিযোগ করেন, গাইবান্ধা জেলখানায় কারারক্ষীদের সেভাবে প্রভাব নেই। সব দাপট দাগি আসামিদের।
জানতে চাইলে গাইবান্ধা কারাগারের জেল সুপার নজরুল ইসলাম বলেন, বন্দীসহ আত্মীয়দের কিছু অভিযোগ রয়েছে। জেলখানায় কোনো অনিয়ম হলে বা কেউ করলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ কারাগার
ওই প্রতিবেদন এবং সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৯৩ সালে ১০ একর জমির ওপর নির্মাণ করা হয় ভোলা জেলা কারাগার। কারা অভ্যন্তরে জমির পরিমাণ ৩ দশমিক ৪০ একর ও বাইরে ৪ দশমিক ৫৭ একর। ওই সময় বন্দীদের জন্য একতলা-দোতলা দুটি ভবনসহ অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণ করা হয়। এরপর আর কোনো স্থাপনা হয়নি, শুধু মেরামত করা হয়েছে।
ভৈরব নদের তীরে ১৯১২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় খুলনা জেলা কারাগার। ২০০৪ সালে ভবনটিকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করে খুলনা সিটি করপোরেশন। এরপর ২৩ বছর ধরে সেই ভবনগুলোতে থাকছেন বন্দীরা, কারাগারের প্রশাসনিক কার্যক্রমও চলছে। রাজশাহী কারাগারের অবস্থা আরও করুণ।
এই কারাগারগুলোতে বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করা কয়েকজন জানান, কারাগারে ধারণক্ষমতার বেশি বন্দী থাকায় ওয়ার্ডে শোয়ার পরিবেশ নেই। ওপর থেকে পলেস্তারা খসে পড়ে। ভারী বৃষ্টি হলে পানি চুইয়ে পড়ে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অবকাঠামোগত এই সমস্যা রয়েছে খাগড়াছড়ি, গাইবান্ধা, বরিশালসহ আরও অন্তত সাতটি কারাগারে। খুলনা কারাগারের জেলার মো. এনামুল কবির বলেন, আপাতত এভাবেই চলতে হচ্ছে। নতুন কারাগার নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভোলা কারাগারের জেলার দেওয়ান মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন দরকার। উপর মহলকে জানানো হয়েছে।
৬৮ কারাগারে চিকিৎসক ৪ জন
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র ও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৫২১ বন্দী থাকা জয়পুরহাট জেলা কারাগারের পরিবেশ, সার্বিক ব্যবস্থাপনা এবং অবকাঠামোগত—সব দিক ভালো হলেও হাসপাতাল নেই। কর্তৃপক্ষ বলছে, জয়পুরহাট কারাগার জেলা আধুনিক হাসপাতাল লাগোয়া। হাসপাতালের একজন সহকারী সার্জন প্রয়োজনে বন্দীদের চিকিৎসা করেন। জয়পুরহাট কারাগারের জেলার মো. কামরুল ইসলাম বলেন, জয়পুরহাট কারাগার ছোট। পাশেই হাসপাতাল। তাই সেভাবে প্রয়োজন হয় না।
সূত্র বলছে, ৬৮ কারাগারের ২৫টিতেই কারা হাসপাতাল নেই। হাসপাতাল না থাকা কারাগারের ভিআইপি ও অবস্থাপন্ন বন্দীরা বাইরের কিছু হাসপাতালে সেবা নিতে পারলেও সাধারণ বন্দীদের বেশির ভাগের চিকিৎসা জোটে না।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, ৬৮ কারাগারের মধ্যে ঢাকার কেরানীগঞ্জ ও কাশিমপুর, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা কারাগারে চারজন চিকিৎসক রয়েছেন। অথচ কারাগারগুলোর জন্য অনুমোদিত চিকিৎসক পদ রয়েছে ১৪১টি। কারা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল সুজাউর রহমান বলেন, কয়েকটি নিয়োগ আটকে আছে। নিয়োগগুলো চূড়ান্ত হলেই সমস্যার সমাধান হবে।
বিশুদ্ধ পানির সংকট চলছেই
চাঁদপুর জেলা কারাগারের কর্মকর্তা, কর্মচারী, বন্দীদের ব্যবহারের জন্য পানিতে অতিরিক্ত আয়রন। ফলে এক দশকেরও বেশি সময় বিশুদ্ধ পানির সংকট সেখানে। অভিযোগ আছে, বিশুদ্ধ পানি ছাড়া টাকার বিনিময়ে সবই মেলে ওই কারাগারে। জানতে চাইলে চাঁদপুর কারাগারের জেলার মুহম্মদ মুনীর হোসাইন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘টাকার বিষয়ে কারও অভিযোগ থাকলে আমাকে বললে আমি ব্যবস্থা নেব। আর বিশুদ্ধ পানির চেষ্টা চলছে।’
চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) এ এস এম মোসা বলেন, ‘আমরা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করে একটি পানির ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট তৈরি করছি। ৯০ ভাগ কাজ শেষ। শিগগির এটি চালু করা যাবে।’ বিশুদ্ধ পানির সমস্যা রয়েছে কক্সবাজার, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনাসহ বেশ কয়েকটি কারাগারে।
কয়েক গুণ বন্দী, খাবারে টান
মাগুরা জেলা কারাগারের কয়েকটি বড় সমস্যার অন্যতম হলো ১৭২ জন ধারণক্ষমতা থাকলেও বন্দী প্রায় পাঁচ গুণ। খুলনা কারাগারের ধারণক্ষমতা ৫৮০ জন, তবে বন্দী রয়েছেন ১ হাজার ২০০। কারা অধিদপ্তর সূত্র জানায়, এই সমস্যা সব কারাগারেই। দেশের সব কারাগার মিলিয়ে ধারণক্ষমতা ৪২ হাজার ৬২৬ জন।তবে গত পাঁচ বছর ধরে কারাগারগুলোতে ৭০ থেকে ৮০ হাজার বন্দী থাকছে। বিভিন্ন সময়ে কারাগারে থাকা কয়েকজন বলেন, প্রতিদিন যে খাবার দেয়, তাতে একজনের অর্ধেক পেটও ভরে না। বন্দী বেশি বলে খাবারের পরিমাণ কম।
দেড় শ বন্দীর জন্য এক টয়লেট
কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে বন্দীদের আবাসনের পাশাপাশি টয়লেট-সংকট প্রকট। অথচ এই কারাগারের অভ্যন্তরীণ আয়তন (মূল কারাগার) ৩ দশমিক ৮৬ একর। নাগেশ্বরী পৌর এলাকার আশিকুর রহমান ১৬ দিন কারাগারে ছিলেন। একই কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন রাজিবপুরের মোজাম্মেল। আবাসন-সংকটের কথা জানিয়ে তাঁরা বলেন, কারাগারের প্রতিটি ওয়ার্ডে এক থেকে দেড় শ বন্দীর জন্য টয়লেট মাত্র একটি। ফলে দীর্ঘ লাইন লেগে থাকে।
কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার আবু ছায়েম বলেন, অবকাঠামোগত উন্নয়নের চেষ্টা চলছে। মানবাধিকারকর্মী নূর খান লিটন বলেন, কারাগার হলো অভিযুক্তকে সংশোধন করে মূল স্রোতোধারায় ফিরিয়ে আনার জায়গা। তাই বন্দীদের বিরুদ্ধে এমন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না, যা নিপীড়নমূলক হয়। একজন কয়েদিকেও কারাবিধিতে উল্লেখিত সেবা পূর্ণ মাত্রায় দিতে হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন আজকের পত্রিকার ভোলা, কুড়িগ্রাম, চাঁদপুর, গাইবান্ধা, মাগুরা, জয়পুরহাট ও খুলনা প্রতিনিধি]

দেশের সাতটি কেন্দ্রীয় কারাগারসহ ১০টিতে দাগি বন্দীদের দাপটে অসহায় সাধারণ বন্দীরা। এমনকি কারারক্ষীদের চেয়েও তাঁদের কর্তৃত্ব বেশি। টাকার বিনিময়ে অবৈধ সুযোগ-সুবিধা, চিকিৎসার ব্যবস্থা—সবকিছুতেই থাকে তাঁদের হাত। সাধারণ বন্দীরা তাঁদের জুলুমের শিকার হচ্ছেন। কারা কর্মকর্তারা এসব জানলেও নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় থাকে। খোদ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে রয়েছে এসব তথ্য।
বিভিন্ন কারাগারের ভেতরে অনিয়ম, বিশৃঙ্খলা, মারধরসহ বিভিন্ন অভিযোগ শোনা যায় মাঝেমধ্যেই। কিছু কিছু ঘটনায় ভুক্তভোগী বন্দী ও স্বজনেরা কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন। কারাগারফেরত কয়েকজন বলেছেন, কিছু দাগি অপরাধীর কর্মকাণ্ডে সংশোধনাগারে স্বস্তি পান না সাধারণ বন্দীরা। ‘রাখিব নিরাপদ দেখাব আলোর পথ’—এই স্লোগান অনেক বন্দীর কাছেই হয়ে ওঠে কথার কথা। কারাগারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, সীমিত জনবল ও অপর্যাপ্ত লজিস্টিক সাপোর্ট নিয়ে এসব বন্ধ করা খুব কঠিন।
জানতে চাইলে কারা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল সুজাউর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রতিটি কারাগারে আমাদের গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের কার্যক্রম চলছে। অনেক সময় আমরা নিজেদের মতো করে ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। আবার অনেক ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীদের কেউ অভিযোগ করলে তাদের অভিযোগও আমলে নিয়ে তদন্ত করি।’
কারা অধিদপ্তর সূত্র জানায়, দেশে ৬৮টি কারাগারের মধ্যে ১৩টি কেন্দ্রীয় কারাগার ও ৫৫টি জেলা কারাগার। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগের অধীন ১৭টি। ধারণক্ষমতার কয়েক গুণ বন্দী, ঝুঁকিপূর্ণ ভবন, চিকিৎসক না থাকা, বিশুদ্ধ পানির সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যা কারাগারগুলোতে কমবেশি রয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, গত মার্চে জেলা প্রশাসক সম্মেলনে কয়েকজন জেলা প্রশাসক কারাগারের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরেন। তাঁদের উত্থাপিত বিষয়গুলো বাস্তবায়নের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ২৯ মার্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগে পাঠানো হয়। অবশ্য এর আগেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কারাগার নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করে। ওই প্রতিবেদনের সূত্র ধরে আজকের পত্রিকার অনুসন্ধানে ২০টি কারাগারের বিভিন্ন সমস্যার চিত্র উঠে এসেছে।
১০ কারাগারে দাগি আসামিদের দাপট
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন বলছে, কেন্দ্রীয় সাতটি কারাগারসহ কয়েকটি কারাগারে বেশ কিছু দাগি বন্দী রয়েছেন। পুরোনো কয়েদি হওয়ায় তাঁরা কারাগারের অন্য বন্দীদের ওপর জুলুম করছেন। এসব ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কারা কর্তৃপক্ষ নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করে। দাগি আসামিদের দাপট থাকা কারাগারগুলো হচ্ছে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার ১-২, হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার, সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার, যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার, বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগার, খুলনা জেলা কারাগার, ফরিদপুর জেলা কারাগার ও গাইবান্ধা জেলা কারাগার।
আজকের পত্রিকার প্রতিনিধিদের মাধ্যমে এসব কারাগার থেকে জামিনে বের হওয়া আসামিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কারাগারগুলোতে দাগি আসামিরা প্রভাব বিস্তার করেন। তাঁদের অভিযোগ, আসামিদের এই চক্র পেছন থেকে নিয়ন্ত্রণ করেন কারারক্ষীরা।
গত মাসে জামিনে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান রাজধানীর খিলগাঁও থানার একটি হত্যা মামলার আসামি সুজন। তিনি বলেন, ‘পুরো কারাগারে দাপট দাগি আসামিদের। নতুন বন্দীদের ঢোকানো আর বের করা ছাড়া কারারক্ষীদের সেভাবে কোনো কাজ থাকে না। ভেতরে যা চলে সব নগদ টাকায়। পান থেকে চুন খসলে সাধারণ বন্দীদের ওপর নেমে আসে অমানুষিক নির্যাতন। কারাগারে যে যত দুর্ধর্ষ আসামি, সে তত প্রভাবশালী।’
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাদেকুল ইসলামকে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় এপ্রিলে কারাগারে পাঠানো হয়। তাঁর ছোট ভাই শাহিন অভিযোগ করেন, গাইবান্ধা জেলখানায় কারারক্ষীদের সেভাবে প্রভাব নেই। সব দাপট দাগি আসামিদের।
জানতে চাইলে গাইবান্ধা কারাগারের জেল সুপার নজরুল ইসলাম বলেন, বন্দীসহ আত্মীয়দের কিছু অভিযোগ রয়েছে। জেলখানায় কোনো অনিয়ম হলে বা কেউ করলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ কারাগার
ওই প্রতিবেদন এবং সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৯৩ সালে ১০ একর জমির ওপর নির্মাণ করা হয় ভোলা জেলা কারাগার। কারা অভ্যন্তরে জমির পরিমাণ ৩ দশমিক ৪০ একর ও বাইরে ৪ দশমিক ৫৭ একর। ওই সময় বন্দীদের জন্য একতলা-দোতলা দুটি ভবনসহ অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণ করা হয়। এরপর আর কোনো স্থাপনা হয়নি, শুধু মেরামত করা হয়েছে।
ভৈরব নদের তীরে ১৯১২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় খুলনা জেলা কারাগার। ২০০৪ সালে ভবনটিকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করে খুলনা সিটি করপোরেশন। এরপর ২৩ বছর ধরে সেই ভবনগুলোতে থাকছেন বন্দীরা, কারাগারের প্রশাসনিক কার্যক্রমও চলছে। রাজশাহী কারাগারের অবস্থা আরও করুণ।
এই কারাগারগুলোতে বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করা কয়েকজন জানান, কারাগারে ধারণক্ষমতার বেশি বন্দী থাকায় ওয়ার্ডে শোয়ার পরিবেশ নেই। ওপর থেকে পলেস্তারা খসে পড়ে। ভারী বৃষ্টি হলে পানি চুইয়ে পড়ে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অবকাঠামোগত এই সমস্যা রয়েছে খাগড়াছড়ি, গাইবান্ধা, বরিশালসহ আরও অন্তত সাতটি কারাগারে। খুলনা কারাগারের জেলার মো. এনামুল কবির বলেন, আপাতত এভাবেই চলতে হচ্ছে। নতুন কারাগার নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভোলা কারাগারের জেলার দেওয়ান মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন দরকার। উপর মহলকে জানানো হয়েছে।
৬৮ কারাগারে চিকিৎসক ৪ জন
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র ও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৫২১ বন্দী থাকা জয়পুরহাট জেলা কারাগারের পরিবেশ, সার্বিক ব্যবস্থাপনা এবং অবকাঠামোগত—সব দিক ভালো হলেও হাসপাতাল নেই। কর্তৃপক্ষ বলছে, জয়পুরহাট কারাগার জেলা আধুনিক হাসপাতাল লাগোয়া। হাসপাতালের একজন সহকারী সার্জন প্রয়োজনে বন্দীদের চিকিৎসা করেন। জয়পুরহাট কারাগারের জেলার মো. কামরুল ইসলাম বলেন, জয়পুরহাট কারাগার ছোট। পাশেই হাসপাতাল। তাই সেভাবে প্রয়োজন হয় না।
সূত্র বলছে, ৬৮ কারাগারের ২৫টিতেই কারা হাসপাতাল নেই। হাসপাতাল না থাকা কারাগারের ভিআইপি ও অবস্থাপন্ন বন্দীরা বাইরের কিছু হাসপাতালে সেবা নিতে পারলেও সাধারণ বন্দীদের বেশির ভাগের চিকিৎসা জোটে না।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, ৬৮ কারাগারের মধ্যে ঢাকার কেরানীগঞ্জ ও কাশিমপুর, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা কারাগারে চারজন চিকিৎসক রয়েছেন। অথচ কারাগারগুলোর জন্য অনুমোদিত চিকিৎসক পদ রয়েছে ১৪১টি। কারা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল সুজাউর রহমান বলেন, কয়েকটি নিয়োগ আটকে আছে। নিয়োগগুলো চূড়ান্ত হলেই সমস্যার সমাধান হবে।
বিশুদ্ধ পানির সংকট চলছেই
চাঁদপুর জেলা কারাগারের কর্মকর্তা, কর্মচারী, বন্দীদের ব্যবহারের জন্য পানিতে অতিরিক্ত আয়রন। ফলে এক দশকেরও বেশি সময় বিশুদ্ধ পানির সংকট সেখানে। অভিযোগ আছে, বিশুদ্ধ পানি ছাড়া টাকার বিনিময়ে সবই মেলে ওই কারাগারে। জানতে চাইলে চাঁদপুর কারাগারের জেলার মুহম্মদ মুনীর হোসাইন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘টাকার বিষয়ে কারও অভিযোগ থাকলে আমাকে বললে আমি ব্যবস্থা নেব। আর বিশুদ্ধ পানির চেষ্টা চলছে।’
চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) এ এস এম মোসা বলেন, ‘আমরা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করে একটি পানির ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট তৈরি করছি। ৯০ ভাগ কাজ শেষ। শিগগির এটি চালু করা যাবে।’ বিশুদ্ধ পানির সমস্যা রয়েছে কক্সবাজার, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনাসহ বেশ কয়েকটি কারাগারে।
কয়েক গুণ বন্দী, খাবারে টান
মাগুরা জেলা কারাগারের কয়েকটি বড় সমস্যার অন্যতম হলো ১৭২ জন ধারণক্ষমতা থাকলেও বন্দী প্রায় পাঁচ গুণ। খুলনা কারাগারের ধারণক্ষমতা ৫৮০ জন, তবে বন্দী রয়েছেন ১ হাজার ২০০। কারা অধিদপ্তর সূত্র জানায়, এই সমস্যা সব কারাগারেই। দেশের সব কারাগার মিলিয়ে ধারণক্ষমতা ৪২ হাজার ৬২৬ জন।তবে গত পাঁচ বছর ধরে কারাগারগুলোতে ৭০ থেকে ৮০ হাজার বন্দী থাকছে। বিভিন্ন সময়ে কারাগারে থাকা কয়েকজন বলেন, প্রতিদিন যে খাবার দেয়, তাতে একজনের অর্ধেক পেটও ভরে না। বন্দী বেশি বলে খাবারের পরিমাণ কম।
দেড় শ বন্দীর জন্য এক টয়লেট
কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে বন্দীদের আবাসনের পাশাপাশি টয়লেট-সংকট প্রকট। অথচ এই কারাগারের অভ্যন্তরীণ আয়তন (মূল কারাগার) ৩ দশমিক ৮৬ একর। নাগেশ্বরী পৌর এলাকার আশিকুর রহমান ১৬ দিন কারাগারে ছিলেন। একই কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন রাজিবপুরের মোজাম্মেল। আবাসন-সংকটের কথা জানিয়ে তাঁরা বলেন, কারাগারের প্রতিটি ওয়ার্ডে এক থেকে দেড় শ বন্দীর জন্য টয়লেট মাত্র একটি। ফলে দীর্ঘ লাইন লেগে থাকে।
কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার আবু ছায়েম বলেন, অবকাঠামোগত উন্নয়নের চেষ্টা চলছে। মানবাধিকারকর্মী নূর খান লিটন বলেন, কারাগার হলো অভিযুক্তকে সংশোধন করে মূল স্রোতোধারায় ফিরিয়ে আনার জায়গা। তাই বন্দীদের বিরুদ্ধে এমন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না, যা নিপীড়নমূলক হয়। একজন কয়েদিকেও কারাবিধিতে উল্লেখিত সেবা পূর্ণ মাত্রায় দিতে হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন আজকের পত্রিকার ভোলা, কুড়িগ্রাম, চাঁদপুর, গাইবান্ধা, মাগুরা, জয়পুরহাট ও খুলনা প্রতিনিধি]
শাহরিয়ার হাসান, ঢাকা

দেশের সাতটি কেন্দ্রীয় কারাগারসহ ১০টিতে দাগি বন্দীদের দাপটে অসহায় সাধারণ বন্দীরা। এমনকি কারারক্ষীদের চেয়েও তাঁদের কর্তৃত্ব বেশি। টাকার বিনিময়ে অবৈধ সুযোগ-সুবিধা, চিকিৎসার ব্যবস্থা—সবকিছুতেই থাকে তাঁদের হাত। সাধারণ বন্দীরা তাঁদের জুলুমের শিকার হচ্ছেন। কারা কর্মকর্তারা এসব জানলেও নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় থাকে। খোদ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে রয়েছে এসব তথ্য।
বিভিন্ন কারাগারের ভেতরে অনিয়ম, বিশৃঙ্খলা, মারধরসহ বিভিন্ন অভিযোগ শোনা যায় মাঝেমধ্যেই। কিছু কিছু ঘটনায় ভুক্তভোগী বন্দী ও স্বজনেরা কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন। কারাগারফেরত কয়েকজন বলেছেন, কিছু দাগি অপরাধীর কর্মকাণ্ডে সংশোধনাগারে স্বস্তি পান না সাধারণ বন্দীরা। ‘রাখিব নিরাপদ দেখাব আলোর পথ’—এই স্লোগান অনেক বন্দীর কাছেই হয়ে ওঠে কথার কথা। কারাগারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, সীমিত জনবল ও অপর্যাপ্ত লজিস্টিক সাপোর্ট নিয়ে এসব বন্ধ করা খুব কঠিন।
জানতে চাইলে কারা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল সুজাউর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রতিটি কারাগারে আমাদের গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের কার্যক্রম চলছে। অনেক সময় আমরা নিজেদের মতো করে ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। আবার অনেক ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীদের কেউ অভিযোগ করলে তাদের অভিযোগও আমলে নিয়ে তদন্ত করি।’
কারা অধিদপ্তর সূত্র জানায়, দেশে ৬৮টি কারাগারের মধ্যে ১৩টি কেন্দ্রীয় কারাগার ও ৫৫টি জেলা কারাগার। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগের অধীন ১৭টি। ধারণক্ষমতার কয়েক গুণ বন্দী, ঝুঁকিপূর্ণ ভবন, চিকিৎসক না থাকা, বিশুদ্ধ পানির সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যা কারাগারগুলোতে কমবেশি রয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, গত মার্চে জেলা প্রশাসক সম্মেলনে কয়েকজন জেলা প্রশাসক কারাগারের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরেন। তাঁদের উত্থাপিত বিষয়গুলো বাস্তবায়নের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ২৯ মার্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগে পাঠানো হয়। অবশ্য এর আগেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কারাগার নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করে। ওই প্রতিবেদনের সূত্র ধরে আজকের পত্রিকার অনুসন্ধানে ২০টি কারাগারের বিভিন্ন সমস্যার চিত্র উঠে এসেছে।
১০ কারাগারে দাগি আসামিদের দাপট
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন বলছে, কেন্দ্রীয় সাতটি কারাগারসহ কয়েকটি কারাগারে বেশ কিছু দাগি বন্দী রয়েছেন। পুরোনো কয়েদি হওয়ায় তাঁরা কারাগারের অন্য বন্দীদের ওপর জুলুম করছেন। এসব ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কারা কর্তৃপক্ষ নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করে। দাগি আসামিদের দাপট থাকা কারাগারগুলো হচ্ছে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার ১-২, হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার, সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার, যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার, বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগার, খুলনা জেলা কারাগার, ফরিদপুর জেলা কারাগার ও গাইবান্ধা জেলা কারাগার।
আজকের পত্রিকার প্রতিনিধিদের মাধ্যমে এসব কারাগার থেকে জামিনে বের হওয়া আসামিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কারাগারগুলোতে দাগি আসামিরা প্রভাব বিস্তার করেন। তাঁদের অভিযোগ, আসামিদের এই চক্র পেছন থেকে নিয়ন্ত্রণ করেন কারারক্ষীরা।
গত মাসে জামিনে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান রাজধানীর খিলগাঁও থানার একটি হত্যা মামলার আসামি সুজন। তিনি বলেন, ‘পুরো কারাগারে দাপট দাগি আসামিদের। নতুন বন্দীদের ঢোকানো আর বের করা ছাড়া কারারক্ষীদের সেভাবে কোনো কাজ থাকে না। ভেতরে যা চলে সব নগদ টাকায়। পান থেকে চুন খসলে সাধারণ বন্দীদের ওপর নেমে আসে অমানুষিক নির্যাতন। কারাগারে যে যত দুর্ধর্ষ আসামি, সে তত প্রভাবশালী।’
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাদেকুল ইসলামকে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় এপ্রিলে কারাগারে পাঠানো হয়। তাঁর ছোট ভাই শাহিন অভিযোগ করেন, গাইবান্ধা জেলখানায় কারারক্ষীদের সেভাবে প্রভাব নেই। সব দাপট দাগি আসামিদের।
জানতে চাইলে গাইবান্ধা কারাগারের জেল সুপার নজরুল ইসলাম বলেন, বন্দীসহ আত্মীয়দের কিছু অভিযোগ রয়েছে। জেলখানায় কোনো অনিয়ম হলে বা কেউ করলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ কারাগার
ওই প্রতিবেদন এবং সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৯৩ সালে ১০ একর জমির ওপর নির্মাণ করা হয় ভোলা জেলা কারাগার। কারা অভ্যন্তরে জমির পরিমাণ ৩ দশমিক ৪০ একর ও বাইরে ৪ দশমিক ৫৭ একর। ওই সময় বন্দীদের জন্য একতলা-দোতলা দুটি ভবনসহ অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণ করা হয়। এরপর আর কোনো স্থাপনা হয়নি, শুধু মেরামত করা হয়েছে।
ভৈরব নদের তীরে ১৯১২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় খুলনা জেলা কারাগার। ২০০৪ সালে ভবনটিকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করে খুলনা সিটি করপোরেশন। এরপর ২৩ বছর ধরে সেই ভবনগুলোতে থাকছেন বন্দীরা, কারাগারের প্রশাসনিক কার্যক্রমও চলছে। রাজশাহী কারাগারের অবস্থা আরও করুণ।
এই কারাগারগুলোতে বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করা কয়েকজন জানান, কারাগারে ধারণক্ষমতার বেশি বন্দী থাকায় ওয়ার্ডে শোয়ার পরিবেশ নেই। ওপর থেকে পলেস্তারা খসে পড়ে। ভারী বৃষ্টি হলে পানি চুইয়ে পড়ে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অবকাঠামোগত এই সমস্যা রয়েছে খাগড়াছড়ি, গাইবান্ধা, বরিশালসহ আরও অন্তত সাতটি কারাগারে। খুলনা কারাগারের জেলার মো. এনামুল কবির বলেন, আপাতত এভাবেই চলতে হচ্ছে। নতুন কারাগার নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভোলা কারাগারের জেলার দেওয়ান মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন দরকার। উপর মহলকে জানানো হয়েছে।
৬৮ কারাগারে চিকিৎসক ৪ জন
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র ও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৫২১ বন্দী থাকা জয়পুরহাট জেলা কারাগারের পরিবেশ, সার্বিক ব্যবস্থাপনা এবং অবকাঠামোগত—সব দিক ভালো হলেও হাসপাতাল নেই। কর্তৃপক্ষ বলছে, জয়পুরহাট কারাগার জেলা আধুনিক হাসপাতাল লাগোয়া। হাসপাতালের একজন সহকারী সার্জন প্রয়োজনে বন্দীদের চিকিৎসা করেন। জয়পুরহাট কারাগারের জেলার মো. কামরুল ইসলাম বলেন, জয়পুরহাট কারাগার ছোট। পাশেই হাসপাতাল। তাই সেভাবে প্রয়োজন হয় না।
সূত্র বলছে, ৬৮ কারাগারের ২৫টিতেই কারা হাসপাতাল নেই। হাসপাতাল না থাকা কারাগারের ভিআইপি ও অবস্থাপন্ন বন্দীরা বাইরের কিছু হাসপাতালে সেবা নিতে পারলেও সাধারণ বন্দীদের বেশির ভাগের চিকিৎসা জোটে না।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, ৬৮ কারাগারের মধ্যে ঢাকার কেরানীগঞ্জ ও কাশিমপুর, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা কারাগারে চারজন চিকিৎসক রয়েছেন। অথচ কারাগারগুলোর জন্য অনুমোদিত চিকিৎসক পদ রয়েছে ১৪১টি। কারা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল সুজাউর রহমান বলেন, কয়েকটি নিয়োগ আটকে আছে। নিয়োগগুলো চূড়ান্ত হলেই সমস্যার সমাধান হবে।
বিশুদ্ধ পানির সংকট চলছেই
চাঁদপুর জেলা কারাগারের কর্মকর্তা, কর্মচারী, বন্দীদের ব্যবহারের জন্য পানিতে অতিরিক্ত আয়রন। ফলে এক দশকেরও বেশি সময় বিশুদ্ধ পানির সংকট সেখানে। অভিযোগ আছে, বিশুদ্ধ পানি ছাড়া টাকার বিনিময়ে সবই মেলে ওই কারাগারে। জানতে চাইলে চাঁদপুর কারাগারের জেলার মুহম্মদ মুনীর হোসাইন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘টাকার বিষয়ে কারও অভিযোগ থাকলে আমাকে বললে আমি ব্যবস্থা নেব। আর বিশুদ্ধ পানির চেষ্টা চলছে।’
চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) এ এস এম মোসা বলেন, ‘আমরা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করে একটি পানির ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট তৈরি করছি। ৯০ ভাগ কাজ শেষ। শিগগির এটি চালু করা যাবে।’ বিশুদ্ধ পানির সমস্যা রয়েছে কক্সবাজার, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনাসহ বেশ কয়েকটি কারাগারে।
কয়েক গুণ বন্দী, খাবারে টান
মাগুরা জেলা কারাগারের কয়েকটি বড় সমস্যার অন্যতম হলো ১৭২ জন ধারণক্ষমতা থাকলেও বন্দী প্রায় পাঁচ গুণ। খুলনা কারাগারের ধারণক্ষমতা ৫৮০ জন, তবে বন্দী রয়েছেন ১ হাজার ২০০। কারা অধিদপ্তর সূত্র জানায়, এই সমস্যা সব কারাগারেই। দেশের সব কারাগার মিলিয়ে ধারণক্ষমতা ৪২ হাজার ৬২৬ জন।তবে গত পাঁচ বছর ধরে কারাগারগুলোতে ৭০ থেকে ৮০ হাজার বন্দী থাকছে। বিভিন্ন সময়ে কারাগারে থাকা কয়েকজন বলেন, প্রতিদিন যে খাবার দেয়, তাতে একজনের অর্ধেক পেটও ভরে না। বন্দী বেশি বলে খাবারের পরিমাণ কম।
দেড় শ বন্দীর জন্য এক টয়লেট
কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে বন্দীদের আবাসনের পাশাপাশি টয়লেট-সংকট প্রকট। অথচ এই কারাগারের অভ্যন্তরীণ আয়তন (মূল কারাগার) ৩ দশমিক ৮৬ একর। নাগেশ্বরী পৌর এলাকার আশিকুর রহমান ১৬ দিন কারাগারে ছিলেন। একই কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন রাজিবপুরের মোজাম্মেল। আবাসন-সংকটের কথা জানিয়ে তাঁরা বলেন, কারাগারের প্রতিটি ওয়ার্ডে এক থেকে দেড় শ বন্দীর জন্য টয়লেট মাত্র একটি। ফলে দীর্ঘ লাইন লেগে থাকে।
কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার আবু ছায়েম বলেন, অবকাঠামোগত উন্নয়নের চেষ্টা চলছে। মানবাধিকারকর্মী নূর খান লিটন বলেন, কারাগার হলো অভিযুক্তকে সংশোধন করে মূল স্রোতোধারায় ফিরিয়ে আনার জায়গা। তাই বন্দীদের বিরুদ্ধে এমন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না, যা নিপীড়নমূলক হয়। একজন কয়েদিকেও কারাবিধিতে উল্লেখিত সেবা পূর্ণ মাত্রায় দিতে হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন আজকের পত্রিকার ভোলা, কুড়িগ্রাম, চাঁদপুর, গাইবান্ধা, মাগুরা, জয়পুরহাট ও খুলনা প্রতিনিধি]

দেশের সাতটি কেন্দ্রীয় কারাগারসহ ১০টিতে দাগি বন্দীদের দাপটে অসহায় সাধারণ বন্দীরা। এমনকি কারারক্ষীদের চেয়েও তাঁদের কর্তৃত্ব বেশি। টাকার বিনিময়ে অবৈধ সুযোগ-সুবিধা, চিকিৎসার ব্যবস্থা—সবকিছুতেই থাকে তাঁদের হাত। সাধারণ বন্দীরা তাঁদের জুলুমের শিকার হচ্ছেন। কারা কর্মকর্তারা এসব জানলেও নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় থাকে। খোদ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে রয়েছে এসব তথ্য।
বিভিন্ন কারাগারের ভেতরে অনিয়ম, বিশৃঙ্খলা, মারধরসহ বিভিন্ন অভিযোগ শোনা যায় মাঝেমধ্যেই। কিছু কিছু ঘটনায় ভুক্তভোগী বন্দী ও স্বজনেরা কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন। কারাগারফেরত কয়েকজন বলেছেন, কিছু দাগি অপরাধীর কর্মকাণ্ডে সংশোধনাগারে স্বস্তি পান না সাধারণ বন্দীরা। ‘রাখিব নিরাপদ দেখাব আলোর পথ’—এই স্লোগান অনেক বন্দীর কাছেই হয়ে ওঠে কথার কথা। কারাগারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, সীমিত জনবল ও অপর্যাপ্ত লজিস্টিক সাপোর্ট নিয়ে এসব বন্ধ করা খুব কঠিন।
জানতে চাইলে কারা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল সুজাউর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রতিটি কারাগারে আমাদের গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের কার্যক্রম চলছে। অনেক সময় আমরা নিজেদের মতো করে ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। আবার অনেক ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীদের কেউ অভিযোগ করলে তাদের অভিযোগও আমলে নিয়ে তদন্ত করি।’
কারা অধিদপ্তর সূত্র জানায়, দেশে ৬৮টি কারাগারের মধ্যে ১৩টি কেন্দ্রীয় কারাগার ও ৫৫টি জেলা কারাগার। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগের অধীন ১৭টি। ধারণক্ষমতার কয়েক গুণ বন্দী, ঝুঁকিপূর্ণ ভবন, চিকিৎসক না থাকা, বিশুদ্ধ পানির সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যা কারাগারগুলোতে কমবেশি রয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, গত মার্চে জেলা প্রশাসক সম্মেলনে কয়েকজন জেলা প্রশাসক কারাগারের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরেন। তাঁদের উত্থাপিত বিষয়গুলো বাস্তবায়নের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ২৯ মার্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগে পাঠানো হয়। অবশ্য এর আগেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কারাগার নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করে। ওই প্রতিবেদনের সূত্র ধরে আজকের পত্রিকার অনুসন্ধানে ২০টি কারাগারের বিভিন্ন সমস্যার চিত্র উঠে এসেছে।
১০ কারাগারে দাগি আসামিদের দাপট
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন বলছে, কেন্দ্রীয় সাতটি কারাগারসহ কয়েকটি কারাগারে বেশ কিছু দাগি বন্দী রয়েছেন। পুরোনো কয়েদি হওয়ায় তাঁরা কারাগারের অন্য বন্দীদের ওপর জুলুম করছেন। এসব ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কারা কর্তৃপক্ষ নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করে। দাগি আসামিদের দাপট থাকা কারাগারগুলো হচ্ছে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার ১-২, হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার, সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার, যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার, বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগার, খুলনা জেলা কারাগার, ফরিদপুর জেলা কারাগার ও গাইবান্ধা জেলা কারাগার।
আজকের পত্রিকার প্রতিনিধিদের মাধ্যমে এসব কারাগার থেকে জামিনে বের হওয়া আসামিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কারাগারগুলোতে দাগি আসামিরা প্রভাব বিস্তার করেন। তাঁদের অভিযোগ, আসামিদের এই চক্র পেছন থেকে নিয়ন্ত্রণ করেন কারারক্ষীরা।
গত মাসে জামিনে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান রাজধানীর খিলগাঁও থানার একটি হত্যা মামলার আসামি সুজন। তিনি বলেন, ‘পুরো কারাগারে দাপট দাগি আসামিদের। নতুন বন্দীদের ঢোকানো আর বের করা ছাড়া কারারক্ষীদের সেভাবে কোনো কাজ থাকে না। ভেতরে যা চলে সব নগদ টাকায়। পান থেকে চুন খসলে সাধারণ বন্দীদের ওপর নেমে আসে অমানুষিক নির্যাতন। কারাগারে যে যত দুর্ধর্ষ আসামি, সে তত প্রভাবশালী।’
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাদেকুল ইসলামকে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় এপ্রিলে কারাগারে পাঠানো হয়। তাঁর ছোট ভাই শাহিন অভিযোগ করেন, গাইবান্ধা জেলখানায় কারারক্ষীদের সেভাবে প্রভাব নেই। সব দাপট দাগি আসামিদের।
জানতে চাইলে গাইবান্ধা কারাগারের জেল সুপার নজরুল ইসলাম বলেন, বন্দীসহ আত্মীয়দের কিছু অভিযোগ রয়েছে। জেলখানায় কোনো অনিয়ম হলে বা কেউ করলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ কারাগার
ওই প্রতিবেদন এবং সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৯৩ সালে ১০ একর জমির ওপর নির্মাণ করা হয় ভোলা জেলা কারাগার। কারা অভ্যন্তরে জমির পরিমাণ ৩ দশমিক ৪০ একর ও বাইরে ৪ দশমিক ৫৭ একর। ওই সময় বন্দীদের জন্য একতলা-দোতলা দুটি ভবনসহ অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণ করা হয়। এরপর আর কোনো স্থাপনা হয়নি, শুধু মেরামত করা হয়েছে।
ভৈরব নদের তীরে ১৯১২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় খুলনা জেলা কারাগার। ২০০৪ সালে ভবনটিকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করে খুলনা সিটি করপোরেশন। এরপর ২৩ বছর ধরে সেই ভবনগুলোতে থাকছেন বন্দীরা, কারাগারের প্রশাসনিক কার্যক্রমও চলছে। রাজশাহী কারাগারের অবস্থা আরও করুণ।
এই কারাগারগুলোতে বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করা কয়েকজন জানান, কারাগারে ধারণক্ষমতার বেশি বন্দী থাকায় ওয়ার্ডে শোয়ার পরিবেশ নেই। ওপর থেকে পলেস্তারা খসে পড়ে। ভারী বৃষ্টি হলে পানি চুইয়ে পড়ে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অবকাঠামোগত এই সমস্যা রয়েছে খাগড়াছড়ি, গাইবান্ধা, বরিশালসহ আরও অন্তত সাতটি কারাগারে। খুলনা কারাগারের জেলার মো. এনামুল কবির বলেন, আপাতত এভাবেই চলতে হচ্ছে। নতুন কারাগার নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভোলা কারাগারের জেলার দেওয়ান মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন দরকার। উপর মহলকে জানানো হয়েছে।
৬৮ কারাগারে চিকিৎসক ৪ জন
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র ও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৫২১ বন্দী থাকা জয়পুরহাট জেলা কারাগারের পরিবেশ, সার্বিক ব্যবস্থাপনা এবং অবকাঠামোগত—সব দিক ভালো হলেও হাসপাতাল নেই। কর্তৃপক্ষ বলছে, জয়পুরহাট কারাগার জেলা আধুনিক হাসপাতাল লাগোয়া। হাসপাতালের একজন সহকারী সার্জন প্রয়োজনে বন্দীদের চিকিৎসা করেন। জয়পুরহাট কারাগারের জেলার মো. কামরুল ইসলাম বলেন, জয়পুরহাট কারাগার ছোট। পাশেই হাসপাতাল। তাই সেভাবে প্রয়োজন হয় না।
সূত্র বলছে, ৬৮ কারাগারের ২৫টিতেই কারা হাসপাতাল নেই। হাসপাতাল না থাকা কারাগারের ভিআইপি ও অবস্থাপন্ন বন্দীরা বাইরের কিছু হাসপাতালে সেবা নিতে পারলেও সাধারণ বন্দীদের বেশির ভাগের চিকিৎসা জোটে না।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, ৬৮ কারাগারের মধ্যে ঢাকার কেরানীগঞ্জ ও কাশিমপুর, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা কারাগারে চারজন চিকিৎসক রয়েছেন। অথচ কারাগারগুলোর জন্য অনুমোদিত চিকিৎসক পদ রয়েছে ১৪১টি। কারা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল সুজাউর রহমান বলেন, কয়েকটি নিয়োগ আটকে আছে। নিয়োগগুলো চূড়ান্ত হলেই সমস্যার সমাধান হবে।
বিশুদ্ধ পানির সংকট চলছেই
চাঁদপুর জেলা কারাগারের কর্মকর্তা, কর্মচারী, বন্দীদের ব্যবহারের জন্য পানিতে অতিরিক্ত আয়রন। ফলে এক দশকেরও বেশি সময় বিশুদ্ধ পানির সংকট সেখানে। অভিযোগ আছে, বিশুদ্ধ পানি ছাড়া টাকার বিনিময়ে সবই মেলে ওই কারাগারে। জানতে চাইলে চাঁদপুর কারাগারের জেলার মুহম্মদ মুনীর হোসাইন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘টাকার বিষয়ে কারও অভিযোগ থাকলে আমাকে বললে আমি ব্যবস্থা নেব। আর বিশুদ্ধ পানির চেষ্টা চলছে।’
চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) এ এস এম মোসা বলেন, ‘আমরা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করে একটি পানির ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট তৈরি করছি। ৯০ ভাগ কাজ শেষ। শিগগির এটি চালু করা যাবে।’ বিশুদ্ধ পানির সমস্যা রয়েছে কক্সবাজার, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনাসহ বেশ কয়েকটি কারাগারে।
কয়েক গুণ বন্দী, খাবারে টান
মাগুরা জেলা কারাগারের কয়েকটি বড় সমস্যার অন্যতম হলো ১৭২ জন ধারণক্ষমতা থাকলেও বন্দী প্রায় পাঁচ গুণ। খুলনা কারাগারের ধারণক্ষমতা ৫৮০ জন, তবে বন্দী রয়েছেন ১ হাজার ২০০। কারা অধিদপ্তর সূত্র জানায়, এই সমস্যা সব কারাগারেই। দেশের সব কারাগার মিলিয়ে ধারণক্ষমতা ৪২ হাজার ৬২৬ জন।তবে গত পাঁচ বছর ধরে কারাগারগুলোতে ৭০ থেকে ৮০ হাজার বন্দী থাকছে। বিভিন্ন সময়ে কারাগারে থাকা কয়েকজন বলেন, প্রতিদিন যে খাবার দেয়, তাতে একজনের অর্ধেক পেটও ভরে না। বন্দী বেশি বলে খাবারের পরিমাণ কম।
দেড় শ বন্দীর জন্য এক টয়লেট
কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে বন্দীদের আবাসনের পাশাপাশি টয়লেট-সংকট প্রকট। অথচ এই কারাগারের অভ্যন্তরীণ আয়তন (মূল কারাগার) ৩ দশমিক ৮৬ একর। নাগেশ্বরী পৌর এলাকার আশিকুর রহমান ১৬ দিন কারাগারে ছিলেন। একই কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন রাজিবপুরের মোজাম্মেল। আবাসন-সংকটের কথা জানিয়ে তাঁরা বলেন, কারাগারের প্রতিটি ওয়ার্ডে এক থেকে দেড় শ বন্দীর জন্য টয়লেট মাত্র একটি। ফলে দীর্ঘ লাইন লেগে থাকে।
কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার আবু ছায়েম বলেন, অবকাঠামোগত উন্নয়নের চেষ্টা চলছে। মানবাধিকারকর্মী নূর খান লিটন বলেন, কারাগার হলো অভিযুক্তকে সংশোধন করে মূল স্রোতোধারায় ফিরিয়ে আনার জায়গা। তাই বন্দীদের বিরুদ্ধে এমন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না, যা নিপীড়নমূলক হয়। একজন কয়েদিকেও কারাবিধিতে উল্লেখিত সেবা পূর্ণ মাত্রায় দিতে হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন আজকের পত্রিকার ভোলা, কুড়িগ্রাম, চাঁদপুর, গাইবান্ধা, মাগুরা, জয়পুরহাট ও খুলনা প্রতিনিধি]

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

দেশের সাতটি কেন্দ্রীয় কারাগারসহ ১০টিতে দাগি বন্দীদের দাপটে অসহায় সাধারণ বন্দীরা। এমনকি কারারক্ষীদের চেয়েও তাঁদের কর্তৃত্ব বেশি। টাকার বিনিময়ে অবৈধ সুযোগ-সুবিধা, চিকিৎসার ব্যবস্থা—সবকিছুতেই থাকে তাঁদের হাত। সাধারণ বন্দীরা তাঁদের জুলুমের শিকার হচ্ছেন। কারা কর্মকর্তারা এসব জানলেও নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় থাকে
৩০ মে ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

দেশের সাতটি কেন্দ্রীয় কারাগারসহ ১০টিতে দাগি বন্দীদের দাপটে অসহায় সাধারণ বন্দীরা। এমনকি কারারক্ষীদের চেয়েও তাঁদের কর্তৃত্ব বেশি। টাকার বিনিময়ে অবৈধ সুযোগ-সুবিধা, চিকিৎসার ব্যবস্থা—সবকিছুতেই থাকে তাঁদের হাত। সাধারণ বন্দীরা তাঁদের জুলুমের শিকার হচ্ছেন। কারা কর্মকর্তারা এসব জানলেও নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় থাকে
৩০ মে ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

দেশের সাতটি কেন্দ্রীয় কারাগারসহ ১০টিতে দাগি বন্দীদের দাপটে অসহায় সাধারণ বন্দীরা। এমনকি কারারক্ষীদের চেয়েও তাঁদের কর্তৃত্ব বেশি। টাকার বিনিময়ে অবৈধ সুযোগ-সুবিধা, চিকিৎসার ব্যবস্থা—সবকিছুতেই থাকে তাঁদের হাত। সাধারণ বন্দীরা তাঁদের জুলুমের শিকার হচ্ছেন। কারা কর্মকর্তারা এসব জানলেও নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় থাকে
৩০ মে ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

দেশের সাতটি কেন্দ্রীয় কারাগারসহ ১০টিতে দাগি বন্দীদের দাপটে অসহায় সাধারণ বন্দীরা। এমনকি কারারক্ষীদের চেয়েও তাঁদের কর্তৃত্ব বেশি। টাকার বিনিময়ে অবৈধ সুযোগ-সুবিধা, চিকিৎসার ব্যবস্থা—সবকিছুতেই থাকে তাঁদের হাত। সাধারণ বন্দীরা তাঁদের জুলুমের শিকার হচ্ছেন। কারা কর্মকর্তারা এসব জানলেও নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় থাকে
৩০ মে ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫