Ajker Patrika

চাহিদার চেয়ে ১৭ হাজারের বেশি পশু প্রস্তুত কালাইয়ে

রাব্বিউল হাসান, কালাই (জয়পুরহাট)
আপডেট : ১৩ জুন ২০২২, ১৬: ০৫
Thumbnail image

এক মাস পরই কোরবানির ঈদ। সে জন্য জয়পুরহাটের কালাইয়ে গবাদিপশু লালনপালনে ব্যস্ত সময় পার করছেন খামারি ও কৃষকেরা। উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের হিসাবে, চাহিদার চেয়ে ১৬ হাজার বেশি পশু আছে উপজেলায়। জুনের শেষভাগে সব পশুরহাটে বেচাকেনা জমে উঠবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ায় এবার ধানের খড় নষ্ট হয়েছে। যা গবাদিপশুর প্রধান খাদ্য হিসেবে পরিচিত। এদিকে গো-খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন উপজেলার হাজারো খামারি ও কৃষক।

প্রাণিসম্পদ বিভাগের আশা, এবার করোনা মহামারি না থাকার কারণে হাট জমবে। ভালো দামও পাবেন খামারিরা। আবার গো-খাদ্যের দাম বাড়ায় কিছুটা প্রভাব পড়বে কোরবানির হাটে।
সাধারণ খামারিরা পশুর ভালো দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তাঁরা বলছেন, চড়া দামে খাবার কিনে পশুকে খাওয়ানো হয়েছে। কিন্তু দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের হাতে এখন টাকা নেই। তাই ন্যায্য দাম নিয়ে শঙ্কা তাঁদের।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, কোরবানিযোগ্য গবাদিপশু মধ্যে ষাঁড় ৫ হাজার ১৭৮টি, বলদ ১ হাজার ৪০৭টি, গাভি ২ হাজার ১৮৬টি, মহিষ ২১টি, ছাগল ২২ হাজার ৪৭টি, ভেড়া ৮ হাজার ১৫৪টি। মোট ৩৮ হাজার ৯৯৩ গবাদিপশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে। উপজেলায় পশুর চাহিদা ২২ হাজার ২৪০  হলেও, এর চেয়ে বেশি রয়েছে ১৬ হাজার ৭৫৩ পশু। যা উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় কোরবানির পশুর চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখবে।

সরেজমিন হাট-বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ভুসি প্রতি কেজি ৫০ টাকা, খৈল ৪৮ টাকা, ক্যাটল ফিড ৩৫ টাকা ও চালের কুড়া ৩৫ টাকায়, ধানের গুঁড়া প্রতি মণ ৪০০-৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
উপজেলার পাঁচগ্রাম মৃধাপাড়ার নাসির হোসেন। পেশায় বর্গাচাষি। জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদের পাশাপাশি গবাদিপশু লালনপালন করেন তিনি। এবার কোরবানির জন্য দুটি গরু লালনপালন করছেন। নাসির হোসেন বলেন, ‘বাজারে গাভির দুধ বিক্রি করতে গেলে পানির দামে দুধ বিক্রি করতে হয়। প্রতি সের দুধ ৪০-৪২ টাকায় বিক্রি করতে হয় অথচ গো-খাদ্যের সব জিনিসের দাম বেশি। এভাবে চলতে থাকলে গরু বিক্রি করে খরচ চালাতে হবে।’

উপজেলার পুনট তিশরাপাড়ার আব্দুল হাকিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কোরবানির জন্য তিনটি গরু লালনপালন করছি। আগে প্রতি মাসে ৩ হাজার টাকা খরচ করলেই একটা গরু পোষা যেত। এখন গো-খাদ্যের এত দাম বেড়েছে যে মাসে খরচ ৬-৭ হাজার টাকা পড়ে যাচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের হাতেও টাকা কম। তাই পশুর দাম কেমন উঠবে, তা নিয়ে একটা শঙ্কায় আছি।’

উপজেলার জিন্দারপুরের বাখড়া গ্রামের এরশাদ ডেইরি ফার্মের স্বত্বাধিকারী এরশাদ হোসেন বলেন, ‘লাগামহীন বেড়েই চলছে নিত্যপণ্যের দাম। এতে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। আবার সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে গো-খাদ্যের দাম। এতে গবাদিপশু নিয়ে খুব শঙ্কায় আছি।’

কালাই উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন মো. নুরুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, গো-খাদ্যের দাম বাড়ায় অনেক উদ্যোক্তা এই পেশায় বিনিয়োগ করতে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। এ ছাড়া গো-খাদ্যের দাম বাড়ায় খামারিদের উন্নত জাতের ঘাস চাষ ও ঘাস খাওয়ানোর বিষয়ে প্রশিক্ষণসহ ঘাস চাষে উৎসাহিত করা হচ্ছে। উপজেলায় কোরবানি জন্য মোট ৩৮ হাজার ৯৯৩ গবাদিপশু প্রস্তুত রয়েছে। যা উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে অন্য জেলাতেও পাঠানো যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত