Ajker Patrika

শেরপুরে অন্য রকম এক দিন কাটল ভিক্ষুকদের

জুবাইদুল ইসলাম, শেরপুর
আপডেট : ২৪ মার্চ ২০২২, ১৩: ৫৬
Thumbnail image

জীবিকার প্রয়োজনে প্রতিদিনই ভিক্ষা করে বেড়ান অসহায় কিছু মানুষ। তাঁদের ভাগ্যে ঠিকমতো জুটে না ভালো খাবার। তাঁরা করতে পারেন না একটু আনন্দও। তাই তাঁদের মনের খোরাক মেটাতে শেরপুরে গত মঙ্গলবার দিনব্যাপী অর্ধশতাধিক ভিক্ষুককে নিয়ে স্থানীয় গোল্ডেন ভ্যালী পার্কে এক ব্যতিক্রমী আয়োজন করেন একদল যুবক। একটি দিন ভিক্ষাবৃত্তি বাদ দিয়ে আনন্দে মেতে উঠেছিলেন তাঁরা। সেখানে ছিল গান-বাজনা, বিভিন্ন খেলাধুলা ও উন্নতমানের খাবারের আয়োজন।

আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, রাত পোহালেই ভিক্ষার থলে আর থালা-বাটি নিয়ে ভিক্ষা করতে বের হতে হয় ভিক্ষুকদের। তাঁরা মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়ায়। আর যা পান তা দিয়ে কোনরকমে দিন কাটান। নানা সময় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ আনন্দে-ফূর্তিতে মেতে উঠলেও ভিক্ষুকদের জীবনে সেটা যেন প্রায় অকল্পনীয়। তাই ভিক্ষুকদের নিয়ে একটি দিন আনন্দে কাটাবার পরিকল্পনা করেন শেরপুর সদর উপজেলার বাজিতখিলা এলাকার যুবক রিজভী আহমেদ। তাঁর সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে যোগ দেন অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য সৈয়দ মো. হানিফ, কায়সার মাহমুদ রাজুসহ বেশ কয়েকজন উদ্যমী ব্যক্তি।

গত মঙ্গলবার অর্ধশতাধিক ভিক্ষুককে নিয়ে সদর উপজেলার সুলতানপুর এলাকায় বিলাসবহুল গোল্ডেন ভ্যালী পার্কে আয়োজন করা হয় ‘ভিক্ষা বিলাস’ নামে এক ব্যতিক্রমী বনভোজনের। ‘আমরা কজন’ এর ব্যানারে আয়োজিত এ বনভোজনে ছিল বিভিন্ন খেলাধুলা ও গানবাজনাও। মহিলা ভিক্ষুকদের বালিশ খেলা দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। পরে হাড়ি ভাঙ্গা ও নিজস্ব প্রতিভা প্রকাশে গান গাওয়াসহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। দুপুরে সকল ভিক্ষুকদের নিয়ে একসাথে সবাই বাহারি খাবার পরিবেশন করেন। পরে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী বিজয়ীদেরকে পুরস্কার প্রদান, করোনাকালীন সুরক্ষায় মাস্ক ও যাতায়াত বাবদ নগদ অর্থ দেওয়া হয় তাদেরকে। এসব আয়োজন চলে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।

বনভোজনে আসা ভিক্ষুক মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আমরা তো সারাদিন ভিক্ষা করি। পরে বাড়িত গিয়া কোনরকমে খাওয়াদাওয়া কইরা শুয়ে পড়ি। আমরা এরকম পিকনিক খালি দেখছি। আর আইজকা আমগরে নিয়া পিকনিক করতাছে। আমরা খুব মজা করলাম। আর ভালা ভাল খাবারও খাইলাম। মনে খুব আনন্দ লাগতাছে।’ ভিক্ষুক মোছা. শরিফা বেগম, বলেন, ‘আমরা এত সুন্দর জায়গাত আগে আসি নাই আগে। আজকা এইখানে আইসা খুব ভালা লাগতাছে। একই অনুভূতি ব্যক্ত করেন ভিক্ষুক আব্দুর রহমান, সাফিয়া বেগম, কেনি বেগম, আমেনা বেগমসহ বেশ কয়েকজন।’

বনভোজনের উদ্যোক্তা মো. রিজভী আহমেদ, মো. সৈয়দ হানিফ ও মো. কায়ছার মাহমুদ রাজু বলেন, ‘যারা ভিক্ষা করে জীবনযাপন করেন তারাও তো মানুষ। তাদের একটি দিন আনন্দ দেওয়ার চেষ্টা করেছি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত