পাতালরেল: জুনে শুরু হচ্ছে পরিষেবা লাইন সরানোর কাজ

ঢাকায় মেট্রোরেলের ছয়টি লাইনের মধ্যে বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর অংশ (মেট্রোরেল-১) থাকবে মাটির নিচে অর্থাৎ পাতালপথে। এই রুটের নকশা চূড়ান্ত হয়েছে। এই অংশে কোথায় গ্যাস, পানি ও বিদ্যুৎসহ কী ধরনের পরিষেবা ব্যবস্থা বিদ্যমান আছে, তা শনাক্ত করা হয়েছে। নির্মাণের মূল কাজ শুরুর আগে এই পরিষেবা ব্যবস্থা অপসারণ করতে হবে। আগামী জুন মাসেই পাতালপথের বিমানবন্দর স্টেশন, বিমানবন্দরের তিন নম্বর টার্মিনাল ও খিলক্ষেত-এই তিন অংশের পরিষেবা ব্যবস্থা সরানোর কাজ শুরু হবে। এরপর ঠিকাদার পাতালপথের নির্মাণকাজ শুরু করবেন।

এদিকে এই রুটের ডিপো নির্মিত হবে নারায়ণগঞ্জের পিতলগঞ্জে। প্রকল্প কর্তৃপক্ষের পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আগামী জুলাইয়ে এই ডিপো এলাকা থেকে মেট্রোরেলের মূল কাজ শুরুর কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু সেই সময় আবারও পিছিয়েছে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ।

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম এ এন সিদ্দিক আজকের পত্রিকা'কে বলেন, ‘পাতালরেলের ডিপোর কাজ এ বছরের আগামী জুলাই থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রকল্পের মূল নির্মাণকাজ শুরুর জন্য জাইকার অনুমতি চাওয়া হয়েছে। তাদের অনুমতি পাওয়া গেলে কাজ শুরু হবে।

• পাতালরেল প্রকল্প এখনই নিলে ২০৫০ পর্যন্ত যানজটের শঙ্কা বিশেষজ্ঞদের

মেট্রোরেলের মূল নির্মাণকাজ আগস্ট বা সেপ্টেম্বরে শুরু হতে পারে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রকল্পটি ১২টা প্যাকেজে শেষ করা হবে।

এদিকে প্রকল্পের এক কর্মকর্তা জানান, পাতালরেলের স্টেশনগুলোর নকশা চূড়ান্ত হয়েছে। স্টেশনে প্রবেশ ও বেরোনোর ব্যবস্থা তৈরির জন্য ভূমি অধিগ্রহণ করতে জেলা প্রশাসকের দপ্তরকে বলা হয়েছে। আগামী মাসে এসব এলাকায় পরিষেবা ব্যবস্থা সরানোর কাজ শুরু হবে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সেবা খাতগুলোয় চিঠিও দেওয়া হয়েছে। প্রথম দফায় বিমানবন্দর, বিমানবন্দর তিন নম্বর টার্মিনাল এবং খিলক্ষেত স্টেশন এলাকায় কাজ শেষ করা হবে। এরপর পরবর্তী তিনটি স্টেশন এলাকায় পরিষেবা ব্যবস্থা সরানোর কাজ শুরু হবে।

ঢাকা শহরের যানবাহনের বিপুল চাপের জন্য একসঙ্গে পরিষেবা অপসারণের সব কাজ করা যাচ্ছে না বলে কর্মকর্তারা জানান। তাঁরা জানান, ইতিমধ্যে মেট্রোরেল লাইন-১-এর পাঁচটি প্যাকেজের দরপত্র আহ্বান প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জের পিতলগঞ্জ ডিপো নির্মাণের জন্য ঠিকাদার নিয়োগও শেষ হয়েছে। তবে কাজ জুলাইয়ে শুরু করার কথা থাকলেও, তা শুরু হচ্ছে না। কিছু বিষয়ে জাইকার আপত্তির কারণে এক-দেড় মাস দেরিতে আগস্ট বা সেপ্টেম্বরে নির্মাণকাজ শুরু হতে পারে।

• স্বপ্ন দেখাচ্ছে পাতালরেল

এ ছাড়া মেট্রোরেলের-১ নম্বর লাইনটি দুটি অংশে বিভক্ত। পাতাল ও উড়ালপথ মিলে মেট্রোরেল-১-এর মোট দৈর্ঘ্য ৩১ দশমিক ২৪১ কিলোমিটার। বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত পাতালপথ অংশের দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার। আর নতুন বাজার থেকে পূর্বাচল পর্যন্ত উড়ালপথের দৈর্ঘ্য ১১ দশমিক ৩৬ কিলোমিটার। উভয় রুটের নকশা তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। পাতালপথে স্টেশন হবে ১২টি, আর উড়ালপথে সাতটি। এই রুটের পাতাল ও উড়ালপথে মোট ১৯টি স্টেশন থাকবে।

প্রকল্পের কাজ ২০২৬ সালে শেষ করার কথা থাকলেও নির্দিষ্ট সময়ে শেষ করা নিয়ে সংশয় আছে প্রকল্প কর্মকর্তাদের মধ্যে।

মেট্রোরেল নির্মাণে ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা খরচ হবে। এর মধ্যে ৪০ হাজার কোটি টাকা দিচ্ছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। বাকিটা দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।