Ajker Patrika

ইউএইর যুদ্ধবিমান কেনায় জটিলতা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক
আপডেট : ১৮ নভেম্বর ২০২১, ১১: ৩৯
ইউএইর যুদ্ধবিমান কেনায় জটিলতা

উপসাগরীয় অঞ্চলের তেল-গ্যাসে মৌচাকের মতো যুগে যুগে ভিড় জমিয়েছে বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলো। অর্থনৈতিক গুরুত্বের বাইরে ভূরাজনৈতিক কারণেও ইরাক ছাড়া অঞ্চলটির প্রায় সব দেশের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক চুক্তি রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। সৌদি আরব ও কাতারের পর সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) সঙ্গে পেন্টাগনের সম্পর্ক সবচেয়ে ভালো। দীর্ঘদিন ধরে দেশটির কাছে নিজদের ‘এফ-৩৫’ যুদ্ধবিমান বিক্রির চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র। সম্প্রতি এ চেষ্টার গতি বেড়েছে।

রয়টার্স জানায়, ইউএইর কাছে ৫০টি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান বিক্রির কাজে গতি বাড়িয়েছে ওয়াশিংটন। গত মঙ্গলবার মার্কিন উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী মীরা রেসনিক বলেন, ‘ইউএইর কাছে এফ-৩৫ বিক্রির কাজ এগিয়ে চলছে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির এ যুদ্ধবিমান কেনার ক্ষেত্রে দেশটির কিছু শর্ত রয়েছে। আমরা তা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছি। কারণ, এ বিমানগুলো বিক্রি করার পর সেগুলোর ব্যবহার এবং সংরক্ষণের বিষয়ে আমাদেরও কিছু শর্ত আছে। বোঝাপড়ার মধ্য দিয়ে ব্যাপারটি সমাধানের চেষ্টা চলছে।’

এফ-৩৫ বৈশিষ্ট্য
যুক্তরাষ্ট্রের উড়োজাহাজ, প্রতিরক্ষা সামগ্রী তৈরিকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ‘লকহিড মার্টিন’ ও ‘নর্থরপ গ্রুম্যান করপোরেশন’ ২০০১ সালে প্রথমবারের মতো এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান বাজারে আনে। যুক্তরাষ্ট্র সরকার ও ন্যাটোর অর্থায়নে তৈরি সুপারসনিক ক্ষমতাসম্পন্ন এ যুদ্ধবিমান সফলভাবে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাতে সক্ষম। এটা নিঃশব্দে এত ওপর দিয়ে যায় যে শত্রুর রাডার ফাঁকি দিয়ে যেকোনো অপারেশন করতে পারে, পারে গোপনে তথ্য সংগ্রহ করতে। বিমানটির কয়েকটি ভার্সন রয়েছে।

এফ সিরিজের বিমানগুলোর মধ্যে এটা সবচেয়ে জটিল ও ক্ষমতাসম্পন্ন। তবে এটার এখনো আট শর বেশি ত্রুটি রয়ে গেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে ব্লুমবার্গের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে।

যতই ত্রুটি থাকুক এফ সিরিজের অন্য যুদ্ধবিমানের চেয়ে বেশি দুর্ধর্ষ এ বিমান বিক্রির পরও তার কার্যক্রমের নিয়ন্ত্রণ ছাড়তে রাজি নয় পেন্টাগন।

বর্তমানে একটি ‘এফ-৩৫ এ’ বিমান কিনতে প্রাথমিকভাবে খরচ পড়ে প্রায় ৭ কোটি ৮০ লাখ। তবে এর বাইরে বাড়তি রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় রয়েছে, যা ক্রেতা দেশ বা পক্ষকে লকহিড কোম্পানিকে প্রতিবছর দিতে হয়।

এফ-৩৫-এর ক্রেতা
নিরাপত্তার বিষয়ে স্পর্শকাতর হওয়ায় এ সিরিজের বিমানগুলো কেনায় ক্রেতা-বিক্রেতার বাইরে তৃতীয় পক্ষের চাপ থাকে। তা ছাড়া দীর্ঘমেয়াদি নানা শর্ত থাকায় কোনো দেশ চাইলেই এসব বিমান কিনতে পারে না। তাই এফ সিরিজের অন্য বিমানগুলোর মতো হাতে গোনা কয়েকটি দেশের হাতেই এফ-৩৫ বিমান রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে মাত্র ১২টি দেশে এ বিমান আছে। তবে ইসরায়েল ছাড়া মধ্যপ্রাচ্যের কারও হাতে এ বিমান নেই।

জটিলতা
গালফ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে সৌদি আরবের পর ইউএইর সঙ্গে চীনের অর্থনৈতিক সম্পর্ক সবচেয়ে বড়। ব্যবসার বাইরে দেশটির নৌবাহিনীসহ কয়েকটি সামরিক খাতে বিনিয়োগ রয়েছে চীনের। তা ছাড়া ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ প্রকল্পের ৪০০ কোটি ডলারের পাশাপাশি হুয়াওয়ের ৫জি প্রযুক্তি নিয়ে ইউএইর সঙ্গে বেইজিংয়ের চুক্তি রয়েছে।

এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের এফ-৩৫ কিনতে অনেক শর্ত পূরণ করতে হচ্ছে উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশটিকে। তবে ইরানসহ পার্শ্ববর্তী প্রতিদ্বন্দ্বীদের চাপে রাখতে দেশটির এ ধরনের বিমান দরকারও আছে, যেটা যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থও রক্ষা করে। কিন্তু চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বন্দ্ব থাকায় এবং তেহরানের সঙ্গে বেইজিংয়ের সম্পর্ক ভালো হওয়ায় ইউএই পক্ষে এফ-৩৫ কেনায় বেশ জটিলতা দেখা দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র-ইউএই বিজনেস কাউন্সিলের প্রধান ড্যানি সেবরাইট রয়টার্সকে জানান, এফ-৩৫ বিক্রির আগে আবুধাবির থেকে সুস্পষ্ট বক্তব্য চাইছে ওয়াশিংটন। অন্যদিকে নিজেদের সার্বভৌমত্ব নিয়ে আপস করে এ বিমান কিনতে আপত্তি রয়েছে ইউএইর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গুমে জড়িত ছিল ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা: গুম কমিশনের প্রতিবেদন

ইরানের হামলার তীব্র নিন্দা কাতারের, পাল্টা জবাবের হুঁশিয়ারি

নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা ছাত্রদল কর্মী ইপ্সিতার, ধর্ষণের অভিযোগ আসে ৯৯৯ থেকে

মধ্যপ্রাচ্যের চার দেশে পরবর্তী ঘোষণার আগপর্যন্ত বাংলাদেশি সব ফ্লাইট বাতিল

সিরিয়ায় মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে হামলা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত