Ajker Patrika

‘মা-বাবা নেই, তাই ঈদে কেউ নিতে আসে না’

আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, ঝিনাইদহ
আপডেট : ০৮ জুলাই ২০২২, ১১: ৪৩
‘মা-বাবা নেই, তাই ঈদে কেউ নিতে আসে না’

‘ঈদের ছুটিতে সবাই বাড়ি যায়। অনেকের মা-বাবা এসে নিয়ে যায়। ওরা যখন মায়ের সঙ্গে বাড়ি যায়, তখন আমি কান্না করি। আমার খুব কষ্ট হয়। আমার তো মা-বাবা নেই, তাই ঈদে কেউ নিতে আসে না।’

কথাগুলো বলছিল, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার আমজাদ আলী এতিমখানা ও হাফেজিয়া মাদ্রাসার এতিম শিশু নুর মোহাম্মদ। সে ওই মাদ্রাসার হাফেজ বিভাগের শিক্ষার্থী। বাবা সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন অল্প বয়সে। মায়ের কথা কিছুই বলতে পারেনা সে। মায়ের কথা বললেই শুধু কাঁদে। তাঁর বাড়ি মেহেরপুর। এর বেশি বলতে পারেনি নুর মোহাম্মদ। এতিম শিশু নুর মোহাম্মদের মতো ঝিনাইদহের নিবন্ধিত ২৫টি এতিমখানায় কয়েকশত এতিম শিশু লেখাপড়া করছে। তাঁদেরও ঈদ কাটে নুর মোহাম্মদের মতো বাবা-মা ও পরিবার ছেড়ে।

নুর মোহাম্মদের মতো আরেক শিশু সোহান। সাত বছরের এই ছোট্ট সোহান তিন বছর বয়সে মাকে হারায়। এরপর কিছুদিন যেতে না যেতেই বাবা স্ট্রোক করে মারা যায়। এরপর থেকে তাঁর ঠিকানা হয় ঝিনাইদহ সদর উপজেলার চুয়াডাঙ্গা দারুল কোরআন হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানায়। সোহান বলে, ‘ঈদে যখন মাদ্রাসার অন্য শিশু তাঁদের মা-বাবার সঙ্গে চলে যায়, তখন আমার মা-বাবার কথা মনে পড়ে। কষ্ট লাগে।’

দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদ। আগামী রোববার ঈদুল-উল-আজহা। পবিত্র এই উৎসবে সবাই এক কাতারে মিলে যায়। কিন্তু এতিমখানার শিশুদের ঈদ কাটে কষ্টে। এসব এতিম শিশুরা বেড়ে উঠে পিতা-মাতার আদর, স্নেহ ও ভালোবাসা বঞ্চিত হয়ে।

কালীগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো. কৌশিক খান জানান, কালীগঞ্জ উপজেলায় নিবন্ধিত এতিমখানা রয়েছে ৯ টি। প্রতি মাসে তাঁদের একটি বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে বরাদ্দের টাকা বছরে দুইবার ছাড় করা হয়। এর বাইরে ঈদ বা কোনো উৎসবে বিশেষ কোনো ব্যবস্থা নেই বলে জানান এই কর্মকর্তা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলায় প্রায় শতাধিক এতিমখানা রয়েছে, যার সবগুলোই মাদ্রাসার সঙ্গে সংযুক্ত। এর মধ্যে সমাজসেবা অধিদপ্তর ২৫টি এতিমখানার নিবন্ধন দিয়েছে। নিবন্ধনপ্রাপ্ত এতিমখানার ব্যয়ভার সরকারিভাবে বহন করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় পর্যাপ্ত নয়। এই সব এতিমখানায় ধনী ও দানশীলদের আর্থিক সহযোগিতায় পরিচালিত হয়ে থাকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত