Ajker Patrika

বাবুগঞ্জে নদীর রুদ্র রূপ

মোহাম্মদ আলী, বাবুগঞ্জ (বরিশাল)
বাবুগঞ্জে নদীর রুদ্র রূপ

বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলায় নদীভাঙনে গ্রাম, পাকা রাস্তা, ব্রিজ-কালভার্টসহ বিলীন হচ্ছে শত শত হেক্টর ফসলি জমি। নদীবেষ্টিত কেদারপুর ইউনিয়নের মানুষই সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত ভাঙনে। তবে গতকাল শনিবার ভাঙনের কবলে পড়ে দেহেরগতি ইউনিয়ন।

১৬৪.৮৮ বর্গকিলোমিটার আয়তনের বাবুগঞ্জ উপজেলার মধ্য দিয়ে সন্ধ্যা, সুগন্ধা এবং আড়িয়াল খাঁ নদী প্রবাহিত হয়েছে। এগুলো কেদারপুর ইউনিয়নের চারপাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। সন্ধা, সুগন্ধা ও আড়িয়াল খাঁর ভাঙনে বিপর্যস্ত কেদারপুর ইউনিয়নের ছানি কেদারপুর, দক্ষিণ ভূতেরদিয়া, কেদারপুর, ভূতেরদিয়া, পূর্ব ভূতেরদিয়া, মোল্লার হাট, এমপির হাট, রহমতপুর ইউনিয়নের ক্ষুদ্রকাঠী, বাবুগঞ্জ বাজার, সিংহের কাঠী, লোহালিয়া গ্রাম, চাঁদপাশা ইউনিয়নের রফিয়াদী গ্রাম ও দেহেরগতি ইউনিয়নের উত্তর দেহেরগতি গ্রামের ঘোষকাঠী এলাকা।

এভাবে ভাঙন অব্যাহত থাকলে একসময় বাবুগঞ্জ উপজেলার অনেক এলাকাই শুধু কাগজে-কলমে থাকবে, কিন্তু বাস্তবে তা নদীগর্ভে হারিয়ে যাবে বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের। গতকাল শনিবার সকালে হঠাৎ করে সন্ধ্যা নদীর ভাঙনে দেহেরগতি ইউনিয়নের উত্তর দেহেরগতি গ্রামের বেশ কয়েকটি ঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।

দেহেরগতি ইউনিয়নের বাসিন্দা ও বাবুগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের সহসাংগঠনিক সম্পাদক মো. মহিবুল ইসলাম সোহাগ বলেন, ‘সন্ধ্যা নদীর ভাঙনে দেহেরগতি ইউনিয়নের উত্তর বাহেরচর ঘোষকাঠী গ্রামের কয়েকজনের ঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আমাদের বাড়ি যেকোনো সময় ভেঙে যেতে পারে।’

কেদারপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ ভূতেরদিয়া গ্রামের বাসিন্দা মাসুদুর রহমান রানা জানান, কেদারপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ ভূতের দিয়া গ্রামটি নদীভাঙনে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জানা যায়, ভাঙনের ফলে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে বসতবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ ও ফসলি জমি। এ ছাড়া নদীভাঙনে কয়েক শ পরিবার ভিটেমাটি হারিয়েছেন।

নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত মুজাফফার প্যাদাসহ বেশ কয়েকজন জানান, ঘরবাড়ি, জায়গাজমি—সব গেছে নদীতে। ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন ও মাটি কাটা বন্ধ না করলে নদীভাঙন রোধ করা যাবে না। যা বাকি আছে সব নদীতে চলে যাবে।

কেদারপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. নূরে আলম ব্যাপারী বলেন, ‘কেদারপুর একটি নদীবেষ্টিত ইউনিয়ন। ইউনিয়নের চারদিকে নদী থাকায় প্রতিবছর বর্ষায় তীব্র ভাঙনে ছোট হয়ে আসছে কেদারপুর ইউনিয়নের মানচিত্র। নদীভাঙন রোধে পরিকল্পিত নদীশাসন ও নদীতীরবর্তী এলাকায় ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ইতিমধ্যে বাবুগঞ্জ-মুলাদীতে আসেন সংসদ সদস্য মো. গোলাম কিবরিয়া টিপু ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানিয়েছি।’

পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী জাবেদ ইকবাল বলেন, বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর ইউনিয়নের বকুলতা এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে নদীভাঙন রোধে ১০০ মিটার জায়গার অনুকূলে ৫০ লাখ টাকা, চাঁদপাশা ইউনিয়নের আরজিকালিকা পুরে ২২০ মিটারের অনুকূলে ৮৪ লাখ টাকা  ও বরিশাল এয়ারপোর্ট রক্ষার্থে ৫০০ মিটারের অনুকূলে সাড়ে ৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এগুলোর কাজ চলমান। যেসব এলাকায় বরাদ্দ হয়নি, তালিকা তৈরি করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত