Ajker Patrika

ভাসমান দোকানে জীবিকা

মো. ফরিদ রায়হান, অষ্টগ্রাম
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২১, ১২: ১৮
ভাসমান দোকানে জীবিকা

বুধবার বেলা ৩টা। কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলার সদর ইউনিয়নের প্রধান সড়ক। কানে ভাসছে মাইকের শব্দ। ‘যাঁরা চেইন, চিরুনি, ফিতা, চালনি, মসলার বাটি, শরীর ঘষানি, কাটার, পিঁপড়ার বিষ, পাতিলের মাজন, দাঁতের মাজন ও চকোলেট-চুইংগাম কিনতে চান; প্রচার মাইকের শব্দ শুনে চলে আসেন। কম দামে পাবেন ভালা জিনিস।’

এগোতেই দেখা গেল ভ্যানগাড়িতে কাঠ-বাঁশের খাঁচার মধ্যে ৭০-৮০ প্রকার নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পসরা সাজানো। ভ্যানের ওপরে বাঁধা ছোট মাইক। মালামাল বিক্রির জন্য রেকর্ড করা শব্দ মাইকে প্রচার করে ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন সিরাজ মিয়া (৪১)। এই ভাসমান দোকানে চলছে তাঁর জীবন-জীবিকা।

উপজেলার কাস্তুল ইউনিয়নের মসজিদ জাম এলাকার মৃত শেখ ধনু মিয়ার ছেলে সিরাজ। স্ত্রী ও দুই ছেলে-মেয়ে নিয়ে সিরাজের ছোট্ট সংসার। সারা দিন বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে পণ্য বিক্রি করেন তিনি। এই দোকানের আয় দিয়ে চলে তাঁর সংসার।

সিরাজ মিয়া বলেন, ‘আগে রিকশা চালিয়ে সংসার চালাতাম। তিন বছর আগে এক দুর্ঘটনায় ওই পেশা ছেড়ে দিই। পরে সঞ্চিত কিছু টাকা ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে শুরু করি এই ব্যবসা। এই পেশা বিপদমুক্ত। আয়ও বেশ ভালো। ফলে আড়াই বছর ধরে এই ভাসমান দোকানের ব্যবসা ছেড়ে যাইনি।’

প্রাথমিকভাবে ভ্যানগাড়ি ও মালামালসহ সিরাজ মিয়া বিনিয়োগ করেন ৯০ হাজার টাকা। সারা দিনে বিক্রি হয় ৩-৪ হাজার টাকার পণ্য। লাভ হয় ৪০০-৫০০ টাকা। সদ্য এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া মেয়ে ও সপ্তম শ্রেণিপড়ুয়া ছেলের লেখাপড়া ও সংসারের খরচ চলে এই ব্যবসার আয় থেকে।

ক্রেতা আমেনা খাতুন (৩৭) বলেন, ‘এই দোকানের মালামাল বাজারের চেয়ে সস্তা। তাই ভ্যানগাড়ি থেকে প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে অপেক্ষায় থাকি।’

সিরাজ মিয়া বলেন, ‘বেশি বেচা-বিক্রির জন্য কম লাভে পণ্য বিক্রি করতে হয়। ভাড়া লাগে না, ফলে কম লাভেও পুষিয়ে যায়। তবে কম সুদে ঋণ পেলে আরও ভালো থাকতে পারতাম।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত