Ajker Patrika

তাঁরা জানেন-ই না ঋণ নিয়েছেন

নবাবগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৩ জানুয়ারি ২০২২, ১৩: ৫৭
Thumbnail image

সোনালী ব্যাংক ঢাকার নবাবগঞ্জ শাখার বিরুদ্ধে ঋণ জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার নয়নশ্রী ইউনিয়নের সাপলেজা গ্রামের ৮ কৃষকের নামে ৫০ হাজার করে মোট ৪ লাখ টাকা ঋণ উত্তোলন হলেও কৃষকদের দাবি তাঁরা কোনো ঋণই নেননি। হঠাৎ ঋণের কথা শুনে চিন্তায় পড়ে গেছে পরিবারগুলো। ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর অভিযোগ জাতীয় পার্টির নেতা জাহাঙ্গীর চোকদার ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আঁতাত করে তাঁদের নামে ঋণ নিয়েছেন। এ ব্যাপারে সম্প্রতি থানায় অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী পরিবার।

অনুসন্ধানে জানা যায়, সোনালী ব্যাংক নবাবগঞ্জ শাখায় গত ২০২০ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর উপজেলার নয়নশ্রী ইউনিয়নের সাপলেজা গ্রামের সুবল বিশ্বাস, বিরেন চন্দ্র বিশ্বাস, আনন্দ বিশ্বাস ও গোপাল বিশ্বাসের নামে এবং ২২ সেপ্টেম্বর গোপাল বিশ্বাস, জয়দেব বিশ্বাস, মেঘলাল বিশ্বাস ও সোনাতন বিশ্বাসের নামে সেভিং অ্যাকাউন্ট খোলা হয়। ২৩ সেপ্টেম্বর তাঁদের সবাইকে গ্রামীণ ক্ষুদ্র ব্যবসা ঋণ কর্মসূচি প্রকল্পের আওতায় ৫০ হাজার টাকা করে ঋণ দেওয়া হয়। কিন্তু ভুক্তভোগীদের অভিযোগ—তাঁদের শুধু এক দিনই ব্যাংকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং তাঁদের প্রত্যেককে ২ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। ব্যাংকে কোনো অ্যাকাউন্ট খোলেননি বলে জানান তাঁরা।

ভুক্তভোগীদের দাবি—এই জালিয়াতির মূল হোতা জাতীয় পার্টির ঢাকা জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক উপজেলার নতুন বান্দুরানিবাসী জাহাঙ্গীর চোকদার। তিনি সোনালী ব্যাংকের নবাবগঞ্জ শাখা অসাধু কয়েকজন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আঁতাত করে ৮ জন কৃষকের নামে ৪ লাখ টাকা ঋণ উঠিয়ে নিয়েছেন।

ভুক্তভোগী সুবল বিশ্বাস ও মেঘলাল সরকার বলেন, ‘২০২০ সালে বন্যার পর জাহাঙ্গীর নেতা আমার প্রতিবেশী রামার মাধ্যমে জানান, কৃষকদের সার কেনার জন্য ২ হাজার করে টাকা দেওয়া হবে। অনুদানের কথা শুনে আমরা সব কাগজপত্র দিয়ে দিয়েছি। ১৫-১৬ দিন পর আমাদের ৮ জনকে নবাবগঞ্জের সোনালী ব্যাংকে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে বান্দুরা এসে প্রত্যেককে ২ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। কিছুদিন আগে হঠাৎ জানতে পারি আমার নামে সোনালী ব্যাংক থেকে ৫০ হাজার টাকা লোন ওঠানো হয়েছে। ঋণ না নিয়েও ঋণগ্রস্ত হয়ে চিন্তায় পড়ে গেছি। জমি বা গরু বিক্রি করে এখন লোন দিতে হবে।’

বর্তমান ম্যানেজার রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘ভুক্তভোগী পরিবারগুলো লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তদন্ত করছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ ব্যাপারে জাহাঙ্গীর চোকদার বলেন, ‘আমি এর সঙ্গে জড়িত না। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার নষ্ট করার জন্য চক্রান্ত করা হচ্ছে।’

নবাবগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক অজিত কুমার রায় বলেন, ব্যাংকিং বিষয়ে সরাসরি পুলিশের কিছু করার ক্ষমতা থাকে না। সোনালী ব্যাংক এ বিষয়ে নিজস্বভাবে তদন্ত করছে, সেখানে অভিযুক্তর কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত