Ajker Patrika

সব স্বাভাবিক হলেও খেয়া ঘাটে টোল করোনাকালের

কালিয়া (নড়াইল) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৩ এপ্রিল ২০২২, ১৪: ২৪
Thumbnail image

নড়াইলের কালিয়ার নবগঙ্গা নদীর কাঞ্চনপুর, বারইপাড়া ও মহাজন খেয়াঘাটে যাত্রী হয়রানিসহ সরকারি নিয়ম অমান্য করে দুই ধাপে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুরোনো বছরের ইজারা শেষে নতুন বছরের ইজারা শুরু হয়েছে। কিন্তু করোনাকালীন বাড়তি টোল আদায় অব্যাহত রয়েছে।

খেয়াঘাট গুলোতে যাত্রী হয়রানি ও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের প্রতিকারের দাবিতে উপজেলার বেন্দা গ্রামের মো. জাকারিয়া হোসাইন গত ১১ এপ্রিল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। এরপরও ওই সব খেয়া ঘাটে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অব্যাহত আছে বলে যাত্রীদের অভিযোগ।

ইউএনও অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার নবগঙ্গা নদীর বারইপাড়া ও কাঞ্চনপুর নামক স্থানের দুটি খেয়াঘাট সবচেয়ে জনগুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন সেখানে শত শত মানুষ পারাপার হয়ে থাকে। প্রতি বছরের মত এবারও ঘাট দুটি নড়াইল জেলা পরিষদ থেকে ইজারা দেওয়া হয়েছে। বারইপাড়া গ্রামের মো. জামান শেখকে বারইপাড়া খেয়াঘাট ও দেওয়াডাঙ্গ গ্রামের শিমুল মোল্যাকে কাঞ্চনপুর খেয়াঘাট ইজারা দেওয়া হয়।। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী জন প্রতি ২ টাকা ও মোটরসাইকেল পারাপারে ৫ টাকা হারে টোল আদায়ের নিয়ম রয়েছে। একই সঙ্গে ৬৩ প্রকার মালামাল পারাপারের ক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত টোল আদায়ের সিটিজেন চার্ট টাঙানোর বিধান রয়েছে।

যাত্রীদের অভিযোগের বিবরণে জানা যায়, বর্তমানে ইজারাদাররা সরকারের নিয়ম নীতি অমান্য করে জন প্রতি ১০ টাকা ও মোটরসাইকেল পারাপারে ৫০ টাকাসহ সকল প্রকার মালামাল পার করতে ৫ গুন হারে অতিরিক্ত টোল আদায় করছেন। ঘাটে টাঙানো হয়নি কোনো সিটিজেন চার্টা। টোল আদায় নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে ঘাটমাঝিদের বাকবিতন্ডাসহ অপ্রীতিকর ঘটনা লেগেই আছে।

মো. জাকারিয়া হোসাইন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, বারইপাড়া ও কাঞ্চনপুর খেয়াঘাটে যাত্রী সাধারণকে জিম্মী করে ইজারাদাররা ঘাট মাঝিদের মাধ্যমে অতিরিক্ত টোল আদায় করলেও দেখার কেউ নেই। কয়েক দিন আগে তিনি ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার মেলেনি। তিনি খেয়াঘাট গুলোতে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী টোল আদায়ের দাবি জানিয়ে জিম্মিদশা থেকে সাধারণ মানুষকে মুক্ত করতে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।

কাঞ্চনপুর খেয়াঘাটের ইজারাদার মো. শিমুল মোল্যার সঙ্গে কোনো ভাবেই যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে ইজারাদারের প্রতিনিধি ও ঘাট মাঝিদের সরদার রবিউল শেখ জানান, ঘাটটিতে ৩০ জন মাঝি আছেন। তাঁরা ইজারাদারকে দিন হিসাবে টাকা দিয়ে থাকেন। জনপ্রতি ৫ টাকা টোল আদায়ের সময় প্রতিদিন ইজারাদারকে ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকা দিতে হয়েছে। টোল বাড়ানোর পর প্রতিদিন ৬ হাজার ৩০০ টাকা দেওয়া হয়েছে। বর্তমান ৭ হাজার ২০০ টাকা দিতে হচ্ছে। দিনের শেষে তিনি টাকা তুলে মালিক পক্ষের কাছে পৌঁছে দেন। তবে যাত্রীদের ওপর জুলুম চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি।

বারইপাড়া খেয়াঘাটের ইজারাদার মো. জামান শেখর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে তাঁর প্রতিনিধি মজিবর রহমান অতিরিক্ত টোল আদায়ের আংশিক সত্যতা স্বীকার করলেও যাত্রী জুলুমের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

কালিয়ার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। বারইপাড়া খেয়াঘাটের ইজারাদারকে ডেকে সতর্ক করা হয়েছে। কাঞ্চনপুর ঘাটের ইজারাদারকে পাওয়া যায়নি। তবে টোল আদায়ে সরকারি নিয়ম অমান্য করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত