Ajker Patrika

মহাসড়ক দখল করে ব্যবসা

অরূপ রায়, সাভার থেকে
আপডেট : ২২ জানুয়ারি ২০২২, ১৩: ০৭
মহাসড়ক দখল করে ব্যবসা

হাঁটার জায়গা ও মহাসড়ক দখল করে পণ্যসামগ্রীর পসরা। আর এ ঘিরে হকারদের ব্যস্ততা। ছোট ছোট দোকান, পণ্যসামগ্রী আর হকারদের ঠেলে ভোগান্তি নিয়েই গন্তব্যে পৌঁছতে পথচারীদের ছুটে চলা। রাজধানীর অদূরে সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকার প্রতিদিনের চিত্র এটি।

বাসস্ট্যান্ড এলাকার দুই পাশে বিপণিবিতান। মাঝে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক। মহাসড়ক ও বিপণিবিতানের মাঝে পথচারীদের হাঁটার জায়গা। হাঁটার এই জায়গাসহ মহাসড়কের আংশিক সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হকারদের দখলে থাকে। এ জন্য তাঁদের নির্দিষ্ট হারে চাঁদা দিতে হয়।

সরেজমিন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পশ্চিম পাশে সিটি সেন্টার থেকে মনসুর মার্কেট পর্যন্ত ফুটপাত ও মহাসড়কের আংশিক এলাকাজুড়ে হাজারো ভাসমান দোকান দেখা যায়। মহাসড়ক-সংলগ্ন উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের ভেতরেও দোকান বসেছে।

পূর্ব পাশে নিউমার্কেট থেকে ধসেপড়া রানা প্লাজা পর্যন্ত মহাসড়কের আংশিক ও ফুটপাতজুড়ে বসে কয়েক শ ভাসমান দোকান। এ ছাড়া ভাড়ায় চালিত শতাধিক প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাস দাঁড় করিয়ে রাখা হয় এ এলাকায়। বাসস্ট্যান্ড এলাকার দুটি পদচারী-সেতু হকাররা দখল করে ব্যবসা করছেন।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (সম্প্রসারণ) আবদুল মোত্তালিব বলেন, ভাসমান দোকান আর হকারদের কারণে তাঁদের হাসপাতালে পশুপাখির সেবা নিতে আসা লোকজন চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। প্রতিদিন হাসপাতালের মূল ফটকসহ ফটকের ভেতরে দোকান নিয়ে বসেন হকাররা।

আবদুল মোত্তালিব বলেন, তাঁদের সমস্যার কথা স্থানীয় প্রশাসনকে জানানোর পরেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। প্রতিবাদ করেও সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।

গত বুধবার অসুস্থ কুকুরের চিকিৎসা করাতে ভেটেরিনারি হাসপাতালে এসে হকারদের কারণে ভোগান্তির শিকার হন পৌর এলাকার ইমান্দিপুরের আলতাফ হোসেন। তিনি বলেন, সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকার এই চিত্র দীর্ঘদিনের। তবে পুলিশি তৎপরতার কারণে মাঝে কয়েক বছর ফুটপাত ও মহাসড়ক হকারমুক্ত ছিল। এখন আর হকার উচ্ছেদে পুলিশের তৎপরতা চোখে পড়ে না।

শীতের পোশাক বিক্রেতা আবু তাহের বলেন, পুলিশের বাধার কারণে কয়েক বছর তাঁরা ফুটপাত ও মহাসড়কে দোকান নিয়ে বসতে পারেননি। পুলিশ নীরব থাকায় আবার তাঁরা ফুটপাতে দোকান নিয়ে বসতে পারছেন।

জুতার দোকানি মাহিদুল ইসলাম বলেন, ফুটপাত ও মহাসড়কে দোকান নিয়ে বসলেই দোকান ও অবস্থানভেদে প্রতিদিন তাঁদের ৩০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা দিতে হয়। দোকান বসানোর সুযোগ করে দেওয়ার কথা বলে তাঁদের কাছ থেকে এই চাঁদা আদায় করা হয়। প্রতিদিন সন্ধ্যার পরে কয়েকজন যুবক এসে তাঁদের কাছ থেকে চাঁদা নিয়ে যান। চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তাঁদের নানাভাবে হয়রানি করা হয়।

গত বৃহস্পতিবার ভাসমান দোকান থেকে চাঁদা আদায়ের সময় এক যুবকের কাছে জানতে চাইলে তিনি নিজের পরিচয় না দিয়ে বলেন, ‘নেতাগো কথায় চাঁদা তুলে দিয়ে আমরা পারিশ্রমিক পাই।’ নেতা কারা, জানতে চাইলে তাঁদের বিষয়ে কিছু বলতে চাননি চাঁদা আদায়কারী।

সাভার বাজারের ব্যবসায়ী সুমন ঘোষ বলেন, হকারদের কারণে পথচারীদের চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়। করোনা মহামারির মধ্যেও হকার ঠেলে পথচারীদের গা ঘেঁষে ঘেঁষে চলাচল করতে হয়। এরপরও ভাসমান এসব দোকানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।

ঢাকা সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম আল মামুন বলেন, ‘হকারদের কারণে মানুষ সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকার ফুটপাতের সুফল পাচ্ছে না। ফুটপাত ও মহাসড়ক হকারমুক্ত রাখার দায়িত্ব পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের। সওজের পক্ষে হকারদের পেছনে লেগে থাকা সম্ভব নয়, যা পুলিশের পক্ষে সম্ভব।’

ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার বলেন, ফুটপাত ও মহাসড়ক হকারমুক্ত করার জন্য সওজের পক্ষ থেকে সহায়তা চাওয়া হলে সব ধরনের সহায়তা করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শেখ মুজিবকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ছাত্রদল নেতার পোস্ট, শোকজ পেয়ে নিলেন অব্যাহতি

সিলেটের ডিসি হলেন ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে শাস্তি পাওয়া সারওয়ার আলম

আলাস্কা বৈঠকে পুতিনের দেহরক্ষীর হাতে ‘মলমূত্রবাহী স্যুটকেস’ কেন

অপারেশন সিঁদুরে নিহত প্রায় দেড় শ সেনার তালিকা প্রকাশ করে মুছে ফেলল পাকিস্তানি টিভি

মুচলেকা দিয়ে ক্যাম্পাস ছাড়লেন আনন্দ মোহন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত