চিররঞ্জন সরকার

অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের প্রায় আড়াই মাস হয়ে গেল। কিন্তু নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে আসছে না। কোথাও পণ্যের কমতি নেই, তবু পণ্যের দাম আকাশছোঁয়া। বেশি দামের কারণে নিম্ন আয়ের মানুষ তো বটেই, মধ্যবিত্তরাও এখন দিশেহারা।
কোনো টোটকাতেই বাগে আসছে না নিত্যপণ্যের বল্গাহীন বাজার। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেও বাজার ছিল নিয়ন্ত্রণহীন। নির্দলীয় অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া মানুষের আশা ছিল সিন্ডিকেট বন্ধ হবে, দামের তেজ কমবে। তবে সেই আশাতেও যেন গুড়ে বালি!
গেল এক মাসে, বিশেষ করে সবজির দামে ক্রেতার চোখ কপালে ঠেকেছে! পাশাপাশি ডিম-মুরগিসহ সবকিছুর দামই লাফিয়ে বাড়ছে। ফলে নির্দিষ্ট আয়ের সাধারণ মানুষ জীবন চালাতে খেই হারিয়ে ফেলছেন। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর দফায় দফায় বৈঠক করছে। জেলায় জেলায় হয়েছে বিশেষ টাস্কফোর্স; নিয়মিত তদারকিও হচ্ছে। সিন্ডিকেট ধরতে চলছে অভিযান-জরিমানা। দেশের বাইরে থেকে আসছে পণ্য। স্বয়ং বাণিজ্য উপদেষ্টা নিজেই বাজার তদারকিতে মাঠে নেমেছেন। সরকারের এতসব পদক্ষেপের যোগফল ‘শূন্য’।
ক্রেতাকে ‘স্বস্তি’ দিতে নতুন সরকার নতুন উদ্যোগও নিয়েছে। গেল সপ্তাহ থেকে রাজধানীতে ওপেন মার্কেট সেলের (ওএমএস) আওতায় আলু, ডিম, পেঁয়াজের পাশাপাশি বিভিন্ন সবজি বিক্রি শুরু করেছে। সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে কিনে রাজধানীর নির্দিষ্ট ২০টি স্থানে সুলভ মূল্যে সবজি বিক্রি করছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। কিন্তু তারপরও বাজারে তেমন কোনো ইতিবাচক প্রভাব লক্ষ করা যাচ্ছে না। অবশ্য বিশাল এই রাজধানীতে মাত্র ২০টি স্থানে সুলভ মূল্যে সবজি বিক্রি সিন্ধুতে জলের বিন্দুর মতোই।
বর্ষা-বন্যার কারণে কিছুটা বাড়তি দাম মেনে নেওয়া যায়। কিন্তু বর্তমানে বিভিন্ন পণ্যের দাম যেভাবে বাড়ানো হয়েছে, সেটা রীতিমতো কারসাজি। চাল-ডাল-তেল-মাছ-মাংস-চিনি-ডিমের দাম তো বাড়ছেই, এর সঙ্গে যোগ হয়েছে শাকসবজির ঊর্ধ্বমূল্য। বেশির ভাগ সবজির কেজি ৮০ বা ১০০ টাকার ওপরে। নাগালের মধ্যে নেই আলু, পেঁয়াজ, আদা, রসুন, মরিচের মতো পণ্যও। ডিম, তেল, চিনিসহ সরকার থেকে কয়েকটি পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হলেও তার চেয়ে বেশি দামে পণ্য বিক্রি হচ্ছে।
আওয়ামী লীগ সরকার নেই, নেই পুরোনো সিন্ডিকেট। আকাশছোঁয়া দাম ঠেকাতে সরকারের টাস্কফোর্সও রয়েছে। কিন্তু তারপরেও তরিতরকারিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম এভাবে লাফিয়ে লাফিয়ে কেন বাড়ছে, তার উত্তর মিলছে না। দাম বাড়ার নেপথ্যে যৌক্তিক কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
অনেকের মতে, অসৎ ব্যবসায়ী ও মধ্যস্থতাকারীদের কারসাজির জন্যই মূলত পণ্যমূল্য বাড়ছে। বিশ্ববাজারে বেশ কিছু পণ্যের দাম কমেছে। কিন্তু বাংলাদেশে তার প্রভাব নেই। বরং উল্টো জিনিসের দাম বেড়েছে। সরকার বলছে, বর্তমানে পরিবহনে চাঁদাবাজি কমেছে।
এ ছাড়া ২৯টি পণ্যের আমদানি শুল্ক কমানো হলেও তার প্রভাবও বাজারে দেখা যাচ্ছে না। পুলিশ প্রটেকশন না পাওয়ায় জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরও ঠিকঠাক কাজ করতে পারছে না। এ জন্য আগের মতোই নিয়ন্ত্রণহীন বাজার। ভোক্তাদের জীবন চালানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে। সরকার বদলালেও বাজার বা ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য কমেনি। পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারেরও তেমন কোনো মাথাব্যথা আছে বলে মনে হচ্ছে না। পণ্যের দাম বাড়ার জন্য বেশ কয়েকজন উপদেষ্টা দায়ী করেছেন সিন্ডিকেটকে।
সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, এসব সিন্ডিকেট ভাঙতে সরকারের বাধা কোথায়? আবার অনেকে দাম বাড়ার পেছনে বাজার ব্যবস্থাপনায় সরকারের নিয়ন্ত্রণের অভাব এবং বাজারে চাহিদা ও জোগান সম্পর্কিত তথ্যে স্বচ্ছতার অভাবকে দুষছেন। আসলে বাজারের সংকট অনেক গভীর এবং ছোটখাটো যেসব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তাতে আপাতত কিছুটা লাভ হলেও দীর্ঘ মেয়াদে ফায়দা হবে না। যেসব ব্যবসায়ী কারসাজি করে দাম বাড়ান, তাঁদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
মনে রাখা দরকার যে আমাদের দেশের কিছু কিছু ব্যবসায়ী এতটাই অসৎ যে তাঁরা কোনো নীতিনৈতিকতার ধার ধারেন না। এঁদের বাগে আনতে আইনের প্রয়োগের বিকল্প নেই। আর আইনে শাস্তির বিধান কম হওয়ায় বড় ব্যবসায়ীরা বারবার একই কাজ করছেন। প্রয়োজনে আইন সংশোধন করতে হবে।
যেসব পণ্য আমদানি করা হয়, সেগুলোর দাম বেড়ে যাওয়ার পেছনে তবু কার্যকারণ সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায়, কিন্তু দেশে উৎপাদিত শাকসবজির দাম যখন আকাশছোঁয়া হয়, তখন সত্যিই বিস্মিত হতে হয়। আওয়ামী লীগ সরকারের বিদায়ের পর কয়েক দিন চাঁদাবাজি বন্ধ থাকলেও আবার তা শুরু হয়েছে। এই চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে তেমন কোনো ভূমিকা পালন করতে দেখা যাচ্ছে না।
এদিকে কৃষিপণ্য বাজারজাত করার আগে সংরক্ষণের পরিকাঠামো আমাদের দেশে এখনো প্রায় নেই বললেই চলে। চাষি থেকে খুচরা বিক্রেতা—সবাই দাবি করেন, তরিতরকারির দাম নির্ভর করে জোগান এবং পাইকারি ব্যবসায়ীদের ওপরে। যাঁদের আরেক পরিচয় ফড়িয়া বা ‘ফড়ে’। মাঠ থেকে চাষিরা কোন সবজি কত পরিমাণ আনতে পারছেন, তার ওপরেই পাইকারি বাজারগুলোতে সবজির দাম নির্ধারিত হয়।
খুচরা ব্যবসায়ীরা পাইকারি বাজার থেকে কেনার পরে দর আরও কিছুটা বাড়িয়ে বাজারে তা বিক্রি করছেন। শুধু ফড়েরা নন, অভিযোগ এখানেও রয়েছে। পাইকারি ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বাজারে জোগান কমলে দাম বাড়ে। এই সুযোগে খুচরা ব্যবসায়ীরাও ঝোপ বুঝে কোপ মারতে দাম অনেকটাই বাড়িয়ে সবজি বিক্রি করেন।
ফলন কম হলে এমনিতেই দাম চড়ে। তাই বলে কাঁচা মরিচ ৬০০-৭০০ টাকা ছোঁবে? উৎপাদনকারীরা ৩০-৪০ টাকার বেশি পান না। শহরে সবজি আসে গাঁ-গঞ্জের হাট থেকে। সেখান থেকে একশ্রেণির আড়তদার বা ফড়ে সবজি শহরে পাঠান। সবজির আমদানি বাড়লে ফড়েরা দাম কমিয়ে দেন। চাষিদের কাছ থেকে সবজি নিয়ে আড়তদারেরা পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করেন। তাঁরা কেনা দামের ওপরে ৪-৫ শতাংশ লাভ রাখেন। এর বাইরেও রয়েছে আরও একধরনের কারবারি। তাঁরা স্থানীয় ফড়ে।
স্থানীয় ফড়েরা আবার ছোট চাষিদের কাছ থেকে সবজি কিনে নেন অনেক কম দামে। অন্যদিকে, এই ধরনের অনেক চাষির ফসল একসঙ্গে হাটে আনতে ফড়েদের খরচও কম পড়ে। সে জন্য ছোট চাষিরা মার খাচ্ছেন দীর্ঘদিন ধরে। আর পাইকারি ব্যবসায়ীদের যুক্তি, ঝাড়াই-বাছাই করে সবজি গাড়িতে তোলা, মজুরের খরচ, আনা-নেওয়ার ফলে কিছু সবজি নষ্ট হওয়া, এসব কারণে লাভ পোষাতে দাম বাড়ে। এর বাইরে রাস্তায় অনেককে টাকা দিতে হয়। সেই চাঁদার খরচও চেপে বসে সবজির দামে।
দ্রব্যমূল্য সমস্যার দীর্ঘমেয়াদি সমাধানে অনেক দিন ধরেই একটি ‘প্রাইস কমিশন’ গঠনের পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। এ কমিশনের কাছেই তথ্য থাকবে যে কার কাছে কোন পণ্য কতটা মজুত আছে। এমনকি কে কোন পণ্য আমদানি করল, কতটা বিক্রি করল—এসব তথ্যও তাদের কাছে থাকবে। ফলে কেউ যেমন কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে পারবে না, আবার বাজার সম্পর্কেও একটি পূর্ণ তথ্য-সংবলিত ধারণা সরকারের হাতে থাকবে। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। কিন্তু সরকারের মধ্যে তেমন কিছু করার তাগিদ দেখা যাচ্ছে না।
আড়তদার, ফড়ে, খুচরা ব্যবসায়ী—হাত বদলের সঙ্গে সঙ্গে সবজির দাম বাড়ছে। যে যাঁর ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছেন। বাজারভেদেও জিনিসপত্রের দাম ভিন্ন হচ্ছে। উৎপাদনকারী কৃষকেরা খেতের ফসলের ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না, কিন্তু গাঁট কাটা যাচ্ছে আমজনতার।
এমন প্রস্তাব বহুবার শোনা গেছে যে এমন একটি ব্যবস্থা চালু হবে যেখানে চাষিরা সরাসরি খেতের ফসল আনবেন এবং পাইকারেরা সেখান থেকে ন্যায্যমূল্যে সবজি কিনবেন। মাঝে কেউ থাকবে না। কিন্তু এমন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কোনো ইচ্ছা বা পরিকল্পনাও দেখা যাচ্ছে না।
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়ে যাওয়ার দায় অন্তর্বর্তী সরকারকেই নিতে হবে। বাজার নিয়ন্ত্রণে সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণের বিকল্প নেই। সাধারণ মানুষ কিন্তু সংস্কার, ফ্যাসিবাদী শাসনের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের বিচারের চেয়ে জিনিসপত্র যৌক্তিক দামে কিনতে পারাটাকে অধিক গুরুত্ব প্রদান করেন।
লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি দেশবাসীর কাছে একটা গুরুতর সমস্যা। জীবনযাত্রার ব্যয় ক্রমাগত বেড়ে গেলে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়। মানুষ খেয়ে-পরে বাঁচলেই কেবল সুশাসনের খোঁজ করেন। সীমিত আয়ের মানুষ যদি প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে না পারেন, তাহলে তাঁরা বিদ্রোহ করতে পারেন। আর সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ হলে অন্তর্বর্তী সরকার যে উদ্দেশ্য নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে, তা-ও ভেস্তে যেতে পারে। কাজেই জিনিসপত্রের দাম যেন সহনীয় পর্যায়ে থাকে সে জন্য সরকারকে সর্বোচ্চ উদ্যোগ নিতে হবে। এখানে ব্যর্থ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
লেখক: গবেষক, কলামিস্ট

অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের প্রায় আড়াই মাস হয়ে গেল। কিন্তু নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে আসছে না। কোথাও পণ্যের কমতি নেই, তবু পণ্যের দাম আকাশছোঁয়া। বেশি দামের কারণে নিম্ন আয়ের মানুষ তো বটেই, মধ্যবিত্তরাও এখন দিশেহারা।
কোনো টোটকাতেই বাগে আসছে না নিত্যপণ্যের বল্গাহীন বাজার। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেও বাজার ছিল নিয়ন্ত্রণহীন। নির্দলীয় অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া মানুষের আশা ছিল সিন্ডিকেট বন্ধ হবে, দামের তেজ কমবে। তবে সেই আশাতেও যেন গুড়ে বালি!
গেল এক মাসে, বিশেষ করে সবজির দামে ক্রেতার চোখ কপালে ঠেকেছে! পাশাপাশি ডিম-মুরগিসহ সবকিছুর দামই লাফিয়ে বাড়ছে। ফলে নির্দিষ্ট আয়ের সাধারণ মানুষ জীবন চালাতে খেই হারিয়ে ফেলছেন। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর দফায় দফায় বৈঠক করছে। জেলায় জেলায় হয়েছে বিশেষ টাস্কফোর্স; নিয়মিত তদারকিও হচ্ছে। সিন্ডিকেট ধরতে চলছে অভিযান-জরিমানা। দেশের বাইরে থেকে আসছে পণ্য। স্বয়ং বাণিজ্য উপদেষ্টা নিজেই বাজার তদারকিতে মাঠে নেমেছেন। সরকারের এতসব পদক্ষেপের যোগফল ‘শূন্য’।
ক্রেতাকে ‘স্বস্তি’ দিতে নতুন সরকার নতুন উদ্যোগও নিয়েছে। গেল সপ্তাহ থেকে রাজধানীতে ওপেন মার্কেট সেলের (ওএমএস) আওতায় আলু, ডিম, পেঁয়াজের পাশাপাশি বিভিন্ন সবজি বিক্রি শুরু করেছে। সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে কিনে রাজধানীর নির্দিষ্ট ২০টি স্থানে সুলভ মূল্যে সবজি বিক্রি করছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। কিন্তু তারপরও বাজারে তেমন কোনো ইতিবাচক প্রভাব লক্ষ করা যাচ্ছে না। অবশ্য বিশাল এই রাজধানীতে মাত্র ২০টি স্থানে সুলভ মূল্যে সবজি বিক্রি সিন্ধুতে জলের বিন্দুর মতোই।
বর্ষা-বন্যার কারণে কিছুটা বাড়তি দাম মেনে নেওয়া যায়। কিন্তু বর্তমানে বিভিন্ন পণ্যের দাম যেভাবে বাড়ানো হয়েছে, সেটা রীতিমতো কারসাজি। চাল-ডাল-তেল-মাছ-মাংস-চিনি-ডিমের দাম তো বাড়ছেই, এর সঙ্গে যোগ হয়েছে শাকসবজির ঊর্ধ্বমূল্য। বেশির ভাগ সবজির কেজি ৮০ বা ১০০ টাকার ওপরে। নাগালের মধ্যে নেই আলু, পেঁয়াজ, আদা, রসুন, মরিচের মতো পণ্যও। ডিম, তেল, চিনিসহ সরকার থেকে কয়েকটি পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হলেও তার চেয়ে বেশি দামে পণ্য বিক্রি হচ্ছে।
আওয়ামী লীগ সরকার নেই, নেই পুরোনো সিন্ডিকেট। আকাশছোঁয়া দাম ঠেকাতে সরকারের টাস্কফোর্সও রয়েছে। কিন্তু তারপরেও তরিতরকারিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম এভাবে লাফিয়ে লাফিয়ে কেন বাড়ছে, তার উত্তর মিলছে না। দাম বাড়ার নেপথ্যে যৌক্তিক কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
অনেকের মতে, অসৎ ব্যবসায়ী ও মধ্যস্থতাকারীদের কারসাজির জন্যই মূলত পণ্যমূল্য বাড়ছে। বিশ্ববাজারে বেশ কিছু পণ্যের দাম কমেছে। কিন্তু বাংলাদেশে তার প্রভাব নেই। বরং উল্টো জিনিসের দাম বেড়েছে। সরকার বলছে, বর্তমানে পরিবহনে চাঁদাবাজি কমেছে।
এ ছাড়া ২৯টি পণ্যের আমদানি শুল্ক কমানো হলেও তার প্রভাবও বাজারে দেখা যাচ্ছে না। পুলিশ প্রটেকশন না পাওয়ায় জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরও ঠিকঠাক কাজ করতে পারছে না। এ জন্য আগের মতোই নিয়ন্ত্রণহীন বাজার। ভোক্তাদের জীবন চালানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে। সরকার বদলালেও বাজার বা ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য কমেনি। পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারেরও তেমন কোনো মাথাব্যথা আছে বলে মনে হচ্ছে না। পণ্যের দাম বাড়ার জন্য বেশ কয়েকজন উপদেষ্টা দায়ী করেছেন সিন্ডিকেটকে।
সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, এসব সিন্ডিকেট ভাঙতে সরকারের বাধা কোথায়? আবার অনেকে দাম বাড়ার পেছনে বাজার ব্যবস্থাপনায় সরকারের নিয়ন্ত্রণের অভাব এবং বাজারে চাহিদা ও জোগান সম্পর্কিত তথ্যে স্বচ্ছতার অভাবকে দুষছেন। আসলে বাজারের সংকট অনেক গভীর এবং ছোটখাটো যেসব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তাতে আপাতত কিছুটা লাভ হলেও দীর্ঘ মেয়াদে ফায়দা হবে না। যেসব ব্যবসায়ী কারসাজি করে দাম বাড়ান, তাঁদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
মনে রাখা দরকার যে আমাদের দেশের কিছু কিছু ব্যবসায়ী এতটাই অসৎ যে তাঁরা কোনো নীতিনৈতিকতার ধার ধারেন না। এঁদের বাগে আনতে আইনের প্রয়োগের বিকল্প নেই। আর আইনে শাস্তির বিধান কম হওয়ায় বড় ব্যবসায়ীরা বারবার একই কাজ করছেন। প্রয়োজনে আইন সংশোধন করতে হবে।
যেসব পণ্য আমদানি করা হয়, সেগুলোর দাম বেড়ে যাওয়ার পেছনে তবু কার্যকারণ সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায়, কিন্তু দেশে উৎপাদিত শাকসবজির দাম যখন আকাশছোঁয়া হয়, তখন সত্যিই বিস্মিত হতে হয়। আওয়ামী লীগ সরকারের বিদায়ের পর কয়েক দিন চাঁদাবাজি বন্ধ থাকলেও আবার তা শুরু হয়েছে। এই চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে তেমন কোনো ভূমিকা পালন করতে দেখা যাচ্ছে না।
এদিকে কৃষিপণ্য বাজারজাত করার আগে সংরক্ষণের পরিকাঠামো আমাদের দেশে এখনো প্রায় নেই বললেই চলে। চাষি থেকে খুচরা বিক্রেতা—সবাই দাবি করেন, তরিতরকারির দাম নির্ভর করে জোগান এবং পাইকারি ব্যবসায়ীদের ওপরে। যাঁদের আরেক পরিচয় ফড়িয়া বা ‘ফড়ে’। মাঠ থেকে চাষিরা কোন সবজি কত পরিমাণ আনতে পারছেন, তার ওপরেই পাইকারি বাজারগুলোতে সবজির দাম নির্ধারিত হয়।
খুচরা ব্যবসায়ীরা পাইকারি বাজার থেকে কেনার পরে দর আরও কিছুটা বাড়িয়ে বাজারে তা বিক্রি করছেন। শুধু ফড়েরা নন, অভিযোগ এখানেও রয়েছে। পাইকারি ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বাজারে জোগান কমলে দাম বাড়ে। এই সুযোগে খুচরা ব্যবসায়ীরাও ঝোপ বুঝে কোপ মারতে দাম অনেকটাই বাড়িয়ে সবজি বিক্রি করেন।
ফলন কম হলে এমনিতেই দাম চড়ে। তাই বলে কাঁচা মরিচ ৬০০-৭০০ টাকা ছোঁবে? উৎপাদনকারীরা ৩০-৪০ টাকার বেশি পান না। শহরে সবজি আসে গাঁ-গঞ্জের হাট থেকে। সেখান থেকে একশ্রেণির আড়তদার বা ফড়ে সবজি শহরে পাঠান। সবজির আমদানি বাড়লে ফড়েরা দাম কমিয়ে দেন। চাষিদের কাছ থেকে সবজি নিয়ে আড়তদারেরা পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করেন। তাঁরা কেনা দামের ওপরে ৪-৫ শতাংশ লাভ রাখেন। এর বাইরেও রয়েছে আরও একধরনের কারবারি। তাঁরা স্থানীয় ফড়ে।
স্থানীয় ফড়েরা আবার ছোট চাষিদের কাছ থেকে সবজি কিনে নেন অনেক কম দামে। অন্যদিকে, এই ধরনের অনেক চাষির ফসল একসঙ্গে হাটে আনতে ফড়েদের খরচও কম পড়ে। সে জন্য ছোট চাষিরা মার খাচ্ছেন দীর্ঘদিন ধরে। আর পাইকারি ব্যবসায়ীদের যুক্তি, ঝাড়াই-বাছাই করে সবজি গাড়িতে তোলা, মজুরের খরচ, আনা-নেওয়ার ফলে কিছু সবজি নষ্ট হওয়া, এসব কারণে লাভ পোষাতে দাম বাড়ে। এর বাইরে রাস্তায় অনেককে টাকা দিতে হয়। সেই চাঁদার খরচও চেপে বসে সবজির দামে।
দ্রব্যমূল্য সমস্যার দীর্ঘমেয়াদি সমাধানে অনেক দিন ধরেই একটি ‘প্রাইস কমিশন’ গঠনের পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। এ কমিশনের কাছেই তথ্য থাকবে যে কার কাছে কোন পণ্য কতটা মজুত আছে। এমনকি কে কোন পণ্য আমদানি করল, কতটা বিক্রি করল—এসব তথ্যও তাদের কাছে থাকবে। ফলে কেউ যেমন কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে পারবে না, আবার বাজার সম্পর্কেও একটি পূর্ণ তথ্য-সংবলিত ধারণা সরকারের হাতে থাকবে। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। কিন্তু সরকারের মধ্যে তেমন কিছু করার তাগিদ দেখা যাচ্ছে না।
আড়তদার, ফড়ে, খুচরা ব্যবসায়ী—হাত বদলের সঙ্গে সঙ্গে সবজির দাম বাড়ছে। যে যাঁর ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছেন। বাজারভেদেও জিনিসপত্রের দাম ভিন্ন হচ্ছে। উৎপাদনকারী কৃষকেরা খেতের ফসলের ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না, কিন্তু গাঁট কাটা যাচ্ছে আমজনতার।
এমন প্রস্তাব বহুবার শোনা গেছে যে এমন একটি ব্যবস্থা চালু হবে যেখানে চাষিরা সরাসরি খেতের ফসল আনবেন এবং পাইকারেরা সেখান থেকে ন্যায্যমূল্যে সবজি কিনবেন। মাঝে কেউ থাকবে না। কিন্তু এমন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কোনো ইচ্ছা বা পরিকল্পনাও দেখা যাচ্ছে না।
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়ে যাওয়ার দায় অন্তর্বর্তী সরকারকেই নিতে হবে। বাজার নিয়ন্ত্রণে সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণের বিকল্প নেই। সাধারণ মানুষ কিন্তু সংস্কার, ফ্যাসিবাদী শাসনের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের বিচারের চেয়ে জিনিসপত্র যৌক্তিক দামে কিনতে পারাটাকে অধিক গুরুত্ব প্রদান করেন।
লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি দেশবাসীর কাছে একটা গুরুতর সমস্যা। জীবনযাত্রার ব্যয় ক্রমাগত বেড়ে গেলে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়। মানুষ খেয়ে-পরে বাঁচলেই কেবল সুশাসনের খোঁজ করেন। সীমিত আয়ের মানুষ যদি প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে না পারেন, তাহলে তাঁরা বিদ্রোহ করতে পারেন। আর সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ হলে অন্তর্বর্তী সরকার যে উদ্দেশ্য নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে, তা-ও ভেস্তে যেতে পারে। কাজেই জিনিসপত্রের দাম যেন সহনীয় পর্যায়ে থাকে সে জন্য সরকারকে সর্বোচ্চ উদ্যোগ নিতে হবে। এখানে ব্যর্থ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
লেখক: গবেষক, কলামিস্ট

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের প্রায় আড়াই মাস হয়ে গেল। কিন্তু নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে আসছে না। কোথাও পণ্যের কমতি নেই, তবু পণ্যের দাম আকাশছোঁয়া। বেশি দামের কারণে নিম্ন আয়ের মানুষ তো বটেই, মধ্যবিত্তরাও এখন দিশেহারা।
২২ অক্টোবর ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের প্রায় আড়াই মাস হয়ে গেল। কিন্তু নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে আসছে না। কোথাও পণ্যের কমতি নেই, তবু পণ্যের দাম আকাশছোঁয়া। বেশি দামের কারণে নিম্ন আয়ের মানুষ তো বটেই, মধ্যবিত্তরাও এখন দিশেহারা।
২২ অক্টোবর ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের প্রায় আড়াই মাস হয়ে গেল। কিন্তু নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে আসছে না। কোথাও পণ্যের কমতি নেই, তবু পণ্যের দাম আকাশছোঁয়া। বেশি দামের কারণে নিম্ন আয়ের মানুষ তো বটেই, মধ্যবিত্তরাও এখন দিশেহারা।
২২ অক্টোবর ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের প্রায় আড়াই মাস হয়ে গেল। কিন্তু নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে আসছে না। কোথাও পণ্যের কমতি নেই, তবু পণ্যের দাম আকাশছোঁয়া। বেশি দামের কারণে নিম্ন আয়ের মানুষ তো বটেই, মধ্যবিত্তরাও এখন দিশেহারা।
২২ অক্টোবর ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫