Ajker Patrika

সাহ্‌রির সঙ্গে সামাজিকতা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
সাহ্‌রির সঙ্গে সামাজিকতা

রাত তখন প্রায় দুইটা বাজে। রাজধানীর গুলশান ২ নম্বরের দ্য বুফে স্টোরিজ রেস্তোরাঁ। এই রাতেও রেস্তোরাঁর টেবিলগুলো ফাঁকা নেই। চামচ-প্লেটে টুংটাং শব্দের সঙ্গে মৃদুস্বরে মানুষের কথার গুঞ্জন। পোশাকধারী ওয়েটারদের ছোটাছুটি।

পরিবার ও আত্মীয়দের নিয়ে বনানী থেকে এই রেস্তোরাঁয় এসেছিলেন ষাটোর্ধ্ব ব্যবসায়ী সাজ্জাদ ইমাম। তিনি বললেন, ‘নানা ব্যস্ততায়, ঢাকার জ্যামের কারণে দিনের বেলা আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগটাও রক্ষা কঠিন হয়ে যায়। তবে রাতে রাস্তা ফাঁকা ও নিরিবিলি থাকে। মনে হলো, সবাই মিলে রেস্তোরাঁয় সাহ্‌রি করা যায়। তাই চলে আসলাম।’

রমজানে রাজধানীর অনেক রেস্তোরাঁয় এমন চিত্র বেশ স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে গত কয়েক বছরে। নাগরিক জীবনে যুক্ত হচ্ছে আরও একটি সংস্কৃতি। একসময় ঘরে সাহ্‌রি করে রোজা রাখা মানুষগুলো বন্ধুবান্ধব, পরিবার-পরিজন নিয়ে সাহ্‌রি করছেন রেস্তোরাঁয়। ব্যস্ততম শহরে সামাজিক যোগাযোগসহ গল্প-আড্ডার মধ্যে অনেকে প্রয়োজনীয় আলাপও সারছেন।

দ্য বুফে স্টোরিজে পাওয়া গেল দুটি পরিবারকে, যাঁরা বিয়ের তারিখ নির্ধারণের মতো গুরুত্বপূর্ণ পারিবারিক সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন সাহ্‌রি পার্টিতে বসে। যদিও পারিবারিক এই বিষয়ে তাঁরা বিস্তারিত আলাপ করতে চাইলেন না।

এই রেস্তোরাঁর ব্যবস্থাপক বায়েজিদ হোসেন জানালেন, কয়েক বছর ধরে রমজানে সাহ্‌রির আয়োজন করেন তাঁরা। দুই, তিন রোজা থেকে সাহ্‌রির জন্য মানুষ আসতে থাকে। এটা বহাল থাকে ২৭ রমজান পর্যন্ত। বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার লোকসমাগম বেশি থাকে।

বনানী স্টার হোটেলের ব্যবস্থাপক এমডি মুসলিম উদ্দীন বলেন, ‘সাহ্‌রি খেতে আসা অনেকেই আমাদের নিয়মিত ক্রেতা। আজ শুক্রবার রাত হওয়ায় বেশি ভিড়।’
ধানমন্ডিতে সাতমসজিদ রোড ধরে জিগাতলা হয়ে সিটি কলেজ পর্যন্ত অধিকাংশ রেস্তোরাঁয় দেখা গেছে সাহ্‌রি করতে আসা মানুষের ভিড়।

আর পুরান ঢাকার হোটেল আল রাজ্জাক দীর্ঘদিন ধরে নগরবাসীর কাছে জনপ্রিয় সাহ্‌রির জন্য। সেখানেও উপচে পড়া ভিড়। এখানেই ভাই-ভাবি আর কাজিনদের সঙ্গে এসেছেন মেহেদি হাসান। তিনি বলেন, ‘আমরা কয়েক বছর ধরে বন্ধুবান্ধব বা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বাইরে সাহ্‌রি করি।  বাড্ডা থেকে রাতের ঢাকায় রিকশায় করে পুরাণ ঢাকায় এসে সাহ্‌রি করাটা আনন্দেরই তো।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত