Ajker Patrika

তাঁতে বোনা চাদর হারানোর পথে

এম শহিদুল ইসলাম, বাসাইল
আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর ২০২১, ১৬: ৩৮
তাঁতে বোনা চাদর হারানোর পথে

সংকটে পড়েছে বাসাইলের বাথুলী সাদীর ঐতিহ্যবাহী তাঁতে বোনা চাঁদর শিল্প। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাব, কাঁচামাল ও উপকরণের দাম বৃদ্ধি, বাজার সংকট, আধুনিক প্রযুক্তির প্রভাব, দেশ-বিদেশে বিপণন ব্যর্থতা, চোরাই পথে আসা ভারতীয় ও চায়না চাঁদর, চাদর তৈরির কারিগরদের যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের অভাব ও অর্থ সংকটের কারণে বিলুপ্তির পথে সম্ভাবনাময় এই শিল্প।

সরেজমিনে দেখা গেছে, গত কয়েক বছর আগেই এলাকায় তাঁতকল ছিল প্রায় সাড়ে ৫ হাজার। আর এ শিল্প কর্মের সঙ্গে সংযুক্ত ছিল প্রায় ১১ হাজার কারিগর। কয়েক বছরের ব্যবধানে তাঁতের সংখ্যা নেমে এসেছে প্রায় অর্ধেকে। বর্তমানে এ এলাকায় দুই হাজারের মতো তাঁতকল রয়েছে। আর এ শিল্পের সঙ্গের যুক্ত রয়েছেন প্রায় চার হাজার শ্রমিক।

পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও রয়েছেন। তাঁদের নিপুণ হস্ত শৈলীতে প্রস্তুত চাঁদরের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে দেশজুড়ে। এই চাঁদর দেশের সীমানা পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও হতে পারে রপ্তানি যোগ্য একটি পণ্য। আর এ জন্য প্রয়োজন কারিগরদের যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ। আন্তর্জাতিক বাজার বিপণনে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা।

উপজেলার বাথুলীসাদীর তাঁতে উৎপাদিত শাল বা চাঁদর গুণগত মানেও অতুলনীয়। দেশের বিভিন্ন এলাকার শ্রমিকেরা এ পল্লির কারখানা গুলোতে মনিপুরি, পাট্টা, হাই চয়েজ, নয়ন তারা, ফ্লক প্রিন্টসহ বাহারি নাম ও ডিজাইনের প্রায় ২৫ ধরনের চাঁদর তৈরি করেন। এক সময় দম ফেলার ফুরসত ছিল না বাথুলীর তাঁত পল্লির তাঁতিদের। দিন-রাত তাঁতের খটখট শব্দে মুখর ছিল পুরো গ্রাম। এখন অনেকটাই হারিয়ে ফেলেছে সে জৌলুশ। পুঁজির অভাব ও লোকসানের কারণে একে একে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে কারখানাগুলো। যে সব কারখানা এখনো টিকে রয়েছে, সঠিক পৃষ্ঠপোষকতা আর আর্থিক অনটনে সেগুলোও এখন চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। প্রতি বছর লোকসানের মুখে পড়ছেন। ফলে বেকার হয়ে পড়েছে প্রায় পাঁচ শতাধিক শ্রমিক ও মালিক।

চাঁদর কারিগর মো. আল-আমীন বলেন, ‘গতানুগতিক শীতের চাঁদর (শাল) বানালে এ শিল্প টেকানো যাবে না। শীত, গ্রীষ্মে ব্যবহার করা যায় এমন ফ্যাশন ডিজাইনের চাঁদর তৈরি করতে হবে। আর এর জন্য প্রয়োজন যুগোপযোগী আধুনিক প্রশিক্ষণের।’

সমিতির সভাপতি মো. লাল মিয়া বলেন, ‘ঐতিহ্যবাহী এ শিল্পের প্রতি সরকার ও সংশ্লিষ্ট মহলের উদাসীনতার কারণে এই শিল্প টিকিয়ে রাখা খুবই কষ্টকর হয়ে পড়েছে।’

বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের টাঙ্গাইল বেসিক সেন্টারের লিয়াজোঁ কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ৫ শতাংশ হারে সুদে সর্বোচ্চ দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দিতে পারি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত