Ajker Patrika

ঘরে তালা, হত্যার হুমকি ভিটেছাড়া এক পরিবার

ঘিওর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
ঘরে তালা, হত্যার হুমকি ভিটেছাড়া এক পরিবার

মানিকগঞ্জের ঘিওরে মারধরের পর হত্যার হুমকি পেয়ে পৈতৃক ভিটা ছেড়ে পরিবার নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন এক ব্যক্তি। দেওয়া হয়েছে ওই ব্যক্তির ঘরে তালাও। পুলিশ জানিয়েছে, বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।

ভুক্তভোগী উপজেলার বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের কাউটিয়া গ্রামের আরশেদ আলীর ছেলে রাসেদ কাজী। তিনি পরিবারের ছয় সদস্যসহ আশ্রয় নিয়েছেন বোনের বাড়ি। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন প্রতিবেশী মো. আতাব আলী ও তাঁর ছেলে মো. আলম।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায় রাসেদের ঘরে তালা ঝুলছে। স্থানীয় বাসিন্দা মো. বজলু জানান, এ জমির মালিক দরিদ্র রাসেদ। একাধিকবার এলাকায় ও থানায় সালিস হয়। কিন্তু অভিযুক্ত ব্যক্তিরা রায় মানেন না।

থানায় দেওয়া অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের আরএস ১৯৬ নম্বর দাগ, খতিয়ান নম্বর ১৭, কাউটিয়া মৌজার সাড়ে ৫ শতাংশ জমিতে ঘর করে দীর্ঘদিন থাকছেন রাসেদ। এ জমির বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেশী আতাব আলী একটি রেকর্ড সংশোধনী মামলা করেন। তিনি ও তাঁর ছেলে আলম দীর্ঘদিন ওই জমি দখলের চেষ্টা করে আসছেন। মামলা চলাকালীন আতাব ওই বাড়ির ঘরে তালা লাগিয়ে দেন। সম্প্রতি রাসেদ ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের মারধর করেন।

ভুক্তভোগী রাসেদ বলেন, ‘এই ভিটা-বাড়িতে আমরা বাপ-দাদার আমল থেকে বসবাস করে আসছি। আমাদের দলিল আছে। খাজনা-খারিজও করেছি। বছরখানেক ধরে প্রতিবেশী আলম আমার জমিজমা ও ঘরবাড়ি কেনার প্রস্তাব দেন। এতে রাজি না হওয়ায় তিনি ক্ষিপ্ত হন। এরপর থেকে তাঁরা এ জমির মালিকানা দাবি করে নানা সময়ে সালিস বৈঠক করেন। আদালতে মামলা করেছেন। আমাকে দুই বার পিটিয়েছেন। আদালতের নির্দেশ অমান্য করে আমার ঘরে তালাও ঝুলিয়ে দেন। তাঁরা খুব প্রভাবশালী। ভয়ে আমি আমার বোনের বাড়ি সাটুরিয়া উপজেলার পশ্চিম চরতিল্লি এলাকায় বসবাস করছি।’

নির্যাতন ও হুমকি পেয়ে রাসেদ থানা-পুলিশের সহায়তা চেয়ে লিখিত আবেদন করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত রোববার উভয় পক্ষ ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে থানায় বসেন পরিদর্শক (তদন্ত) খালিদ মুনছুর। সেখানে সিদ্ধান্ত হয় আদালতের রায় আসা পর্যন্ত রাসেদের ঘরের তালা খুলে দেওয়ার। রাসেদ বলেন, ‘বৈঠক থেকে এসে আলম ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা ঘরের তালা না খুলে উল্টো হুমকি দেন। বলেন, থানায় বিচার দিয়া কী করবি। যদি তোকে মেরে ফেলি, কে বাঁচাবে তোকে। এরপর চড়-থাপ্পড় মারতে থাকেন। প্রাণভয়ে ফের পরিবার নিয়ে বাড়ি ছেড়েছি।’

পুলিশ কর্মকর্তা খালিদ মুনছুর বলেন, রাসেদ অভিযোগ করেছেন আলম ও আতাব সিদ্ধান্ত না মেনে তাঁকে ও পরিবারের সদস্যদের মারধর করেছেন। অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। অভিযুক্ত আলম বলেন, ‘ঘরে তালা দিয়েছি কারণ এ ঘর আমরা মৌখিকভাবে কিনে নিয়েছি। তালা খুলে দেওয়ার থানার সিদ্ধান্ত আমরা মানি নাই।’ 

ঘিওর থানার ওসি আমিনুর রহমান বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। হত্যার হুমকির ফলে ভিটামাটি ছাড়ার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। অন্যায়কারী যেই হোক, ছাড় দেওয়া হবে না। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত