Ajker Patrika

পোলট্রি খামারিদের মাথায় হাত

সবুজ শর্মা শাকিল, সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম)
আপডেট : ০৯ অক্টোবর ২০২১, ১২: ০০
পোলট্রি খামারিদের   মাথায় হাত

চলতি বছরের জুন মাসের শুরুতে মুরগি খামারের দুটি শেডে প্রায় তিন হাজার বাচ্চা তোলেন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ভায়েরখীল এলাকার মো. সিরাজুদ্দৌলা। মুরগির বাচ্চা, খাবার, ওষুধ ও শ্রমিকদের মজুরি বাবদ তাঁর খরচ হয় ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। কিন্তু মুরগি বিক্রয় উপযোগী হওয়ার পর হঠাৎই দুটি শেডে দেখা দেয় রানীক্ষেত রোগ। আক্রান্ত হওয়ার একদিনের মাথায় মুরগিগুলো মারা যাওয়া শুরু করে। মাত্র চার দিনের মধ্যে সিরাজুদ্দৌলার দুটি শেডের আড়াই হাজারের বেশি মুরগি মারা যায়। এতে পুঁজি হারিয়ে ফেলেন তিনি। বাধ্য হয়ে ব্যবসা বন্ধ করে দেন।

তাঁর মতো পৌর সদরের মহাদেবপুর এলাকার সাব্বির আহাম্মদ, ভায়েরখীল এলাকার নুরুল আলম, জয়নাল আবেদীন, হাতিলোটা এলাকার মহিউদ্দিন, আনোয়ার হোসেন, মুরাদপুর এলাকার দিদারুল আলম, গোলজারসহ দুই শতাধিক ব্যক্তির খামারে দেখা দেয় রানীক্ষেত রোগের প্রকোপ। এতে বিপুল অঙ্কের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েন তাঁরা। ইতিমধ্যে তাঁদের অনেকেই পুঁজি হারিয়ে গুটিয়ে নিয়েছেন ব্যবসা। এর প্রভাব পড়েছে বাজারে। বেড়ে গেছে ব্রয়লার মুরগির দাম।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্যমতে, সীতাকুণ্ডের সিটি গেট থেকে বড়দারোগারহাট পর্যন্ত উপজেলায় মোট ৫ শতাধিক খামার রয়েছে। এর মধ্যে ব্রয়লার মুরগির খামার ৪৯০ টি, লেয়ার মুরগির খামার ৬০ টি, সোনালি মুরগির খামার ৫০ টি, হাঁসের খামার ৭০টি ও ব্রিডার খামার রয়েছে ৭ টি। তবে বর্তমানে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় দুই শতাধিক খামার বন্ধ হয়ে গেছে।

সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের ভায়েরখীল এলাকার খামারি নুরুল আলম বলেন, মুরগির বাচ্চা, খাবার ও ওষুধের উপর্যুপরি দাম বাড়ছে। খরচের সঙ্গে বিক্রির সামঞ্জস্য না থাকায় অনেক খামারি মুরগির বাচ্চা তোলা বন্ধ রেখেছেন। এ ছাড়াও অত্যধিক গরমে বাড়ন্ত মুরগির ওজন কমে যাচ্ছেন। সেই সঙ্গে রানীক্ষেতের প্রকোপে অনেকেই মূলধন হারিয়ে পথে বসেছেন। তাঁর খামারেও এই রোগে আক্রান্ত হয়ে বিক্রি উপযোগী এক হাজার মুরগি মারা গেছে। এতে তাঁর লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়।

এর প্রভাবে বাজারে মুরগির দাম বাড়ছে। শুকলালহাট বাজারের দিদার মুরগি সেইল সেন্টারের মালিক দিদারুল আলম বলেন, ‘আগে খামারিদের কাছ থেকে পর্যাপ্ত মুরগি পেতাম, তখন খুচরা বাজারে দামও ছিল সহনীয়। কিন্তু বর্তমানে খামারিদের কাছ থেকে পর্যাপ্ত মুরগি না পাওয়ায় দাম বেড়েছে। বর্তমানে খুচরা বাজারে বয়লার মুরগি প্রতিকেজি ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’ তবে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় যে হারে সামাজিক অনুষ্ঠান বাড়ছে তাতে সপ্তাহের ব্যবধানে মুরগির দাম আরও বাড়তে পারে বলেও মনে করেন তিনি।

বাংলাদেশ প্রান্তিক পোলট্রি শিল্প সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব মো. সালাউদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, চড়া দামে মুরগির বাচ্চা, খাদ্য ও ওষুধ কিনতে হচ্ছে। এতে যে খরচ পড়ে, তাতে পূর্ণ বয়সে মুরগি বিক্রির পর প্রতি মুরগিতে খামারির ৩০-৩৫ টাকা লোকসান গুনতে হয়।

তিনি আরও বলেন, অব্যাহত লোকসানে পুঁজি হারিয়ে যেসব খামারি তাঁদের খামার বন্ধ রেখেছেন তাঁদের আবার খামার চালুতে উৎসাহী করতে হবে। অভিজ্ঞ এসব খামারি এ শিল্প থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলে পুরো পোলট্রি শিল্প খাতের ওপর এর বিরূপ প্রভাব পড়বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

অরকার আক্রমণে তরুণী প্রশিক্ষকের মৃত্যু, ভাইরাল ভিডিওটি সম্পর্কে যা জানা গেল

জি এম কাদেরের সাংগঠনিক কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা ও মামলা প্রত্যাহার

ভারতকে পাকিস্তানি সেনাপ্রধানের পারমাণবিক যুদ্ধের হুমকি, যা বলল যুক্তরাষ্ট্র

প্লট–ফ্ল্যাট বরাদ্দে সচিব, এমপি, মন্ত্রী, বিচারপতিসহ যাঁদের কোটা বাতিল

জুলাই সনদের বৈধতা নিয়ে আদালতেও প্রশ্ন তোলা যাবে না

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত