Ajker Patrika

মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ চাঁপাই পৌরবাসী

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ২৬ মার্চ ২০২২, ১২: ৫০
মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ চাঁপাই পৌরবাসী

চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরে সন্ধ্যার পর থেকে চলছে মশার উপদ্রব। এতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে জনজীবন। গত দুই সপ্তাহে উপদ্রব আরও বেড়েছে। তবে পৌরসভা ধারাবাহিকভাবে তাদের মশকনিধন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে। তবুও পুরোপুরি সুফল পাচ্ছেন না বাসিন্দারা।

পৌরবাসী বলছেন, পৌরসভা থেকে নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় মশার ওষুধ ছিটানো হয়। তা-ও নিয়মিত নয়। ওষুধের কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে তাঁদের। তবে সংশ্লিষ্টদের দাবি, তাঁরা নিয়মিত মশকনিধন অভিযান চালাচ্ছেন।

শহরের কল্যাণপুর, আলীনগর, আজাইপুর, রামকৃষ্টপুর, পিটিআই, বালুবাগান, দক্ষিণচরাগ্রাম এলাকার বাসিন্দারা বলেন, মশার উপদ্রবে রাতে কাজকর্ম চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। বিকেল থেকে দরজা-জানালা বন্ধ রেখেও নিস্তার মিলছে না। বিশেষ করে শিশুদের নিয়ে বেশি বিপাকে রয়েছেন অভিভাবকেরা।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের মধ্যে অধিকাংশ ড্রেনে পানিপ্রবাহ নেই। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে ময়লা-আবর্জনা জমে ভরাট হয়ে গেছে ড্রেনগুলো। শহরের অধিকাংশ নালা ও ড্রেনের সংস্কারকাজ চলছে। ফলে বেড়েছে নাগরিক ভোগান্তি। অন্যদিকে সময়মতো রাস্তাঘাট ও খোলা জায়গা থেকে ময়লা তুলে না নেওয়ায় বাড়ছে মশার উৎপাত। শহরের অধিকাংশ সড়কের পাশের ড্রেন ও নালার ময়লা তুলে সড়কে রাখায় পুরো শহর উন্মুক্ত ভাগাড়ের শহর মনে হচ্ছে। এসব ড্রেন মশার প্রজননক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ৩ নম্বর ওয়ার্ডের এক বাসিন্দা বলেন, যত্রতত্র ময়লার ভাগাড় তৈরি করে মশার কারখানা বানিয়েছে পৌরসভা। অপরিকল্পিত ড্রেনগুলোতে পানি জমে মশার প্রজনন হচ্ছে, এর দায় পৌরসভার।

পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মশিউর রহমান বলেন, তাঁর এলাকায় ডাস্টবিন নেই। রাস্তার ধারে ফেলতে হয় ময়লা-আবর্জনা। ড্রেনগুলোতে পানির প্রবাহ নেই। দীর্ঘদিন জমে থাকা পানিতে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে, তাতে দুর্গন্ধের সঙ্গে বাড়ছে মশাও। গত এক মাস থেকে মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ এলাকার মানুষ। তিনি পৌরসভার কোনো মশকনিধন কার্যক্রম দেখেননি।

পৌর এলাকার পিটিআই মাস্টারপাড়ার বাসিন্দা ফারিহা খান বলেন, এই এলাকায় মশার উপদ্রব বেশি। এটি একটি অভিজাত এলাকা। সে হিসেবে তিনি আশা করেছিলেন হয়তো মশার উপদ্রব থেকে স্বস্তি পাবেন। কিন্তু তা থেকে স্বস্তি মেলেনি।

নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব মনিরুজ্জামান মনির বলেন, মশার উৎপাত বা ময়লা-আবর্জনার বিষয় নিয়ে আলোচনা হলে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও মশকনিধনে অভিযান পরিচালনা করে পৌরসভা। তবে ঢাকঢোল পিটিয়ে কয়েক দিনের অভিযান পরিচালনা করে খুব বেশি লাভ হয় না। সারা বছরই মশকনিধন ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে হবে। নাগরিকদেরও সচেতন হতে হবে।

১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইফতেখার আহম্মেদ রঞ্জু বলেন, গত রোববার থেকে তাঁর ওয়ার্ডে মশকনিধন অভিযান চালানো হচ্ছে। এখন থেকে নিয়মিত অভিযান চালানো হবে। এতে মশার উপদ্রব কমে আসবে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার প্যানেল মেয়র মো. জিয়াউর রহমান আরমান বলেন, প্রতিটি ওয়ার্ডে মশকনিধন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। মশকনিধনকর্মীরা প্রতিটি ওয়ার্ডে ফগার মেশিন এবং হ্যান্ডস্প্রে দিয়ে ওষুধ ছিটাচ্ছেন। তাঁরা বিভিন্ন এলাকায় বাসাবাড়ির আঙিনাসহ ড্রেন, জলাশয় ও নর্দমায় ওষুধ ছিটাচ্ছেন। এতে মশার প্রকোপ কমে আসার পাশাপাশি বংশবিস্তার রোধ হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত