Ajker Patrika

আবদুল মতিন

সম্পাদকীয়
আবদুল মতিন

আবদুল মতিন ছিলেন ভাষাসৈনিক, বামপন্থী রাজনীতিক। তিনি ‘ভাষা মতিন’ নামে পরিচিত ছিলেন।

তাঁর জন্ম ১৯২৬ সালের ৩ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জের চৌহালি উপজেলার ধুবালীয়া গ্রামে। তাঁদের বাড়ি যমুনার গর্ভে বিলীন হলে তাঁর পরিবার দার্জিলিং চলে যায়। সেখানে তিনি মহারাণী বিদ্যালয় থেকে প্রাইমারি শিক্ষা শেষ করে দার্জিলিং গভর্নমেন্ট হাইস্কুল থেকে এন্ট্রান্স পাস করেন। এরপর রাজশাহী কলেজ থেকে আইএ পাস করে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ পাস করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন।

বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে তিনি রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হয়ে পড়েন। সদ্য প্রতিষ্ঠিত পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের কনভেনিং কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। এ সময় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করলে শাস্তিস্বরূপ তাঁকে হল থেকে বহিষ্কার করা হয়। পূর্ব পাকিস্তান যুবলীগ গঠিত হলে তিনি এর অন্যতম যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন।

তাঁর রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে বর্ণাঢ্য অধ্যায় হচ্ছে ভাষা আন্দোলনে বলিষ্ঠ ভূমিকা। তিনি ছিলেন ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’-এর আহ্বায়ক। তাঁর নেতৃত্বে  পূর্ব বাংলায় রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে নতুন গতিবেগ সঞ্চারিত হয়েছিল। ভাষা আন্দোলনে তাঁর ভূমিকার কারণে তিনি এক বছর কারাবন্দী ছিলেন। এরপর তিনি পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের ১৯৫৪-১৯৫৬ সময়ের সভাপতি ছিলেন।

মওলানা ভাসানী আওয়ামী লীগ থেকে বের হয়ে ন্যাপ গঠন করলে তিনি তাতে যোগ দেন। পরবর্তী সময়ে তিনি গোপন কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হয়ে বৃহত্তর পাবনা অঞ্চলে পার্টি গঠনের দায়িত্ব পান। এ সময় তিনি কৃষক আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। পূর্ব পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টির (মার্ক্সিস্ট-লেনিনিস্ট) সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি থেকে বের হয়ে ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সঙ্গে যুক্ত হন।

২০১৪ সালের ৮ অক্টোবর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তিনি মরণোত্তর চক্ষু ও দেহ দান করে যান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত