Ajker Patrika

৭ বছরেও হয়নি ছাত্রলীগ কর্মী তাপস হত্যার বিচার

মিনহাজ তুহিন, চবি
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২১, ১৩: ৪০
৭ বছরেও হয়নি ছাত্রলীগ কর্মী তাপস হত্যার বিচার

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ছাত্র তাপস হত্যার ৭ বছর কেটে গেলেও এখনো বিচার হয়নি। সাক্ষীর অভাবে এগোচ্ছে না মামলার বিচার কার্যক্রম। অন্যদিকে মৃত্যুর আগে ছেলে হত্যার বিচার দেখে যাওয়ার অপেক্ষায় আছেন তাপসের অসুস্থ মা।

২০১৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী চত্বরে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহজালাল ও শাহ আমানত হলে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন ছাত্রলীগ কর্মী তাপস সরকার। তিনি চবি শাখা ছাত্রলীগের কর্মী ও সংস্কৃত বিভাগের ছাত্র ছিলেন।

তাপসের ছোট ভাই শ্রাবণ সরকার বলেন, ‘গণমাধ্যমে দেখি, বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডের বিচার দ্রুতগতিতে হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু আমার ভাইয়ের হত্যা মামলা ৭ বছর ধরে ঝুলে আছে। আমরা আদৌ বিচার পাব কি না, তা নিয়ে সন্দিহান।’

শ্রাবণ সরকার বলেন, ‘আমার মা খুবই অসুস্থ। ভাই মারা যাওয়ার পর থেকে ৭ বছর ধরে তিনি প্রতিদিনই কাঁদেন। এখন তাঁর একটাই চাওয়া—যেন ছেলে হত্যার বিচার দেখে মরতে পারেন। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ আশা করছি।’

তাপস হত্যাকাণ্ডের পরদিন রাতে হাটহাজারী থানায় হত্যা মামলা করেন তাপসের সহপাঠী হাফিজুল ইসলাম। এই মামলায় ৩০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১৫ থেকে ২০ জনকে আসামি করা হয়। ওই মামলায় ২০১৬ সালের ২ মে ২৯ জনকে আসামি করে চার্জশিট দেন তদন্ত কর্মকর্তা তৎকালীন পিবিআই পরিদর্শক ও বর্তমান হালিশহর থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, মামলার মূল অভিযুক্ত চবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সংস্কৃতিবিষয়ক উপসম্পাদক আশরাফুজ্জামান আশার গুলিতে নিহত হন তাপস। বাকি ২৮ আসামির মধ্যে ৩ জনের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডে সহযোগিতা এবং ২৫ জনের বিরুদ্ধে বেআইনিভাবে জড়ো হয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও আতঙ্ক ছড়ানোর অভিযোগ আনা হয়। আসামিদের মধ্যে কয়েকজন জামিনে থাকলেও অধিকাংশই পলাতক।

তদন্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমি মামলার তদন্ত শেষ করে চার্জশিট জমা দিয়েছি। এর মধ্যে ১ নম্বর আসামি আত্মসমর্পণ করে হাজতেও ছিল। বর্তমানে মামলাটি আদালতে আছে। আমার কাছে কোনো আপডেট নেই।’

মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে মামলার বাদী হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘চার্জশিট দেওয়ার পর মামলার আর কোনো অগ্রগতি নেই। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়ে যাচ্ছে। আমাদের প্রত্যাশা, তাপস হত্যার বিচারও যেন দ্রুত সময়ের মধ্যে হয়ে যায়।’

এদিকে সাক্ষীর অভাবে মামলার কার্যক্রম থমকে আছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট এ কে এম সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘এই পর্যন্ত কোনো সাক্ষী সাক্ষ্য দিতে আসেননি বলে ওই পর্যন্তই থমকে আছে।’

এদিকে ৭ বছরেও তাপস হত্যার বিচার শেষ না হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন চবি শাখা ছাত্রলীগ। চবি ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল বলেন, ‘যখন দেখা যায় তাপসের খুনিরা ক্যাম্পাসে বীরদর্পে ঘুরে বেড়ায়, তখন ছাত্রসমাজের বুকে রক্তক্ষরণ হয়।’

এদিকে সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তাপস হত্যার বিচার দাবিতে ক্যাম্পাসে মানববন্ধন, শোকসভা ও প্রদীপ প্রজ্বালন কর্মসূচি পালন করবে তাপস স্মৃতি সংসদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সিলেটের ডিসি হলেন ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে শাস্তি পাওয়া সারওয়ার আলম

শেখ মুজিবকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ছাত্রদল নেতার পোস্ট, শোকজ পেয়ে নিলেন অব্যাহতি

অপারেশন সিঁদুরে নিহত প্রায় দেড় শ সেনার তালিকা প্রকাশ করে মুছে ফেলল পাকিস্তানি টিভি

ঢাবিতে পাঁচ প্যানেলে ভোটের যুদ্ধ

মুচলেকা দিয়ে ক্যাম্পাস ছাড়লেন আনন্দ মোহন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত