আব্দুস সাত্তার মন্ডল

রাজশাহী গেলে পদ্মার পাড়ে টি-বাঁধে যাওয়াটা যেন নিয়ম হয়ে গেছে। যেমন ঝকঝকে পরিচ্ছন্ন শহরটা, তেমনি ছিমছাম টি-বাঁধ এলাকা। একেবারে সুনসান বাঁধানো ঘাট। সামনে বিস্তীর্ণ পদ্মা। যেন নিটোল শাড়ির ভাঁজে ভাঁজে মুঠো মুঠো ঢেউ। বর্ষায় ভরা যৌবনা। হেমন্তে কিছুটা শীর্ণকায়। তাতে কী? সুন্দরী সব সময়ই সুন্দরী। তার আবার কম-বেশি হয় নাকি? শুধু একেক সময় একেক রূপ।
সকালে আসেন প্রাতর্ভ্রমণকারীরা। বাঁধের ওপর দিয়ে হাঁটা, শরীরচর্চা, গায়ে সুবাতাস মাখানো—সবই চলে। বিকেলে আসে দলে দলে আবালবৃদ্ধবনিতা বিলাসভ্রমণে। উন্মুক্ত নদীর অপরূপ শোভা দেখে সময় কাটাতে। এমন উদোম বাতাস আর কোথায়? ঘাটে সারি সারি নৌকা বাঁধা। কেউ কেউ নৌকায় উঠে চক্কর দিয়ে আসে মাঝনদীতে। পদ্মার জলকেলি কার না ভালো লাগে! বিকেলে ফুচকা, বাদাম, চটপটির অস্থায়ী দোকান বসে। তরুণ-তরুণীদের রসনা বিলাসের উত্তম ব্যবস্থা। নিরাপত্তারক্ষীদের টহলদারি শৃঙ্খলা রক্ষা নিশ্চিত
করে। রাজশাহী শহরবাসী গর্ব করে বলে, ‘এটা মিনি কক্সবাজার।’ হবেই বা না কেন?
শুধু কি বেড়ানো? পদ্মার পাড়ের জীবন-জীবিকায়নও জানা গেল কিছুটা। গবেষণা সহকারী মামুনকে নিয়ে নেমে গেলাম নিচে, জলের কাছাকাছি। চপচপ বালুতীর ঘেঁষে হাঁটতে হাঁটতে দেখা নৌকার মাঝিদের সঙ্গে। প্রতিদিন কতশত মজুরি শ্রমিক নৌকায় করে পাড়ি জমাচ্ছেন দূর গাঁও মাঝচরে। কাজের খোঁজে। স্থানীয় ভাষায় তাঁদের বলে পাইট। বর্ষার পানি নেমে যাওয়ায় এখন পদ্মার চরে কলাই, মসুরি, বাদাম, সবজির আবাদ শুরু হয়েছে। পলি পড়া চরের আগাছা জংলা পরিষ্কার, জমি তৈরি, বীজ ছিটানো—হরেক রকমের কাজ।
দুপুরের খাবার নিয়ে যাচ্ছেন পুঁটলি বেঁধে। নৌকাযোগে আবার ফিরে আসবেন বিকেলে। জনপ্রতি ২০-৩০ টাকা ভাড়া। আসা-যাওয়ায় ৫০-৬০ খরচ। বিকেলে আসেন শৌখিন নৌকাভ্রমণ বিলাসীরা। নৌকা ভাড়ার কামাই রোজগার মোটামুটি খারাপ না। খরচাপাতি বাদে গড়পড়তা দিনে হাজার-বারো শ থাকে। কম কী?
২. সাতসকালে অনেকেই নেমেছেন মাছ ধরতে পদ্মায়। বাঁশের চাঁই জড়ো করে রাখা আছে নদীর তীরে। কিছু চাঁই পাতা আছে জলে। একজনকে দেখা গেল চাঁই থেকে কিছু ছোট মাছ বের করে খলুইয়ে রাখতে। আরেকজনকে দেখলাম শক্ত হাতে খ্যাপলা জাল ঝাঁকি মেরে জলে ফেলতে। সামান্য কিছু গাং চেলা, ফ্যাসা মাছ উঠেছে। মহানন্দে সেগুলো জাল থেকে ছাড়িয়ে নিচ্ছে দুজন। শৌখিন মাছ ধরার একটা আধা অর্থনৈতিক ব্যাখ্যাও পাওয়া গেল তাদের কাছ থেকে। প্রথমত, নদীতীরে প্রাতর্ভ্রমণের অপার আনন্দ। এটা অর্থনীতির পরিভাষায় ইন্ট্যাঞ্জিবল বেনিফিট। দ্বিতীয়ত, ঝাঁকি জাল জোরে ফিকে মেরে এবং পরে আবার জল থেকে টেনে তোলার শারীরিক ব্যায়াম।
এটা কিছুটা ট্যাঞ্জিবল ও কিছুটা ইন্ট্যাঞ্জিবল বেনিফিট। তৃতীয়ত, কুড়িয়ে টুকিয়ে যা কিছু মলা-চেলা মাছ পাওয়া যায়, ওইটাই লাভ। এর সবটাই ট্যাঞ্জিবল বেনিফিট। সব বেনিফিট কি টাকার হিসাবে হয়?
৩. অনেকেই সাতসকালে ঘাটে এসেছেন থালাবাটি ধুতে। কেউ আবার কাপড়চোপড় ধুয়ে, গোসল সেরে, বালতি ভরে রান্নার জল নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। শহরের বাসায় এসব করতে যে পানির বিল গুনতে হয়, সেটা এখানে বেঁচে যাচ্ছে। ওই যে অর্থনীতির প্রথম পাঠ, নদীতীরে জলের উপযোগিতা আছে, কিন্তু দুষ্প্রাপ্যতা নেই। কাজেই এখানে ওটার কোনো দাম দিতে হয় না। এই সহজ হিসাবটা কে না বোঝে!
৪. সবচেয়ে মজার দৃশ্য, শৌখিন একজন নারী একটি টিয়া পাখিকে বেড়াতে নিয়ে এসেছেন খাঁচায় করে নদীর ঘাটে। পরম আনন্দে পাখির খাবারের বাসনকোসন ধুইয়ে মুছে নিলেন। খাঁচাটাকে ঘষে-মেজে পরিষ্কার করলেন। তারপর টিয়াকে পদ্মার ভাসান জলে ডুবিয়ে গোসল দিয়ে বাড়ি ফিরলেন। মালিকের দারুণ সখ্য জমে গেছে টিয়া বন্ধুর সঙ্গে। মানুষের কত-কী বিচিত্র শখ!
৫. প্রাতর্ভ্রমণ শেষে মামুনকে নিয়ে চলে আসছিলাম টি-বাঁধ থেকে। রাস্তায় দেখলাম অনেক শ্রমিক লাইন ধরে যাচ্ছেন। গ্রাম থেকে এসেছেন। সবার গায়ে চলনসই জামাকাপড়। পায়ে সবার মোটামুটি স্যান্ডেল-জুতা আছে। প্রত্যেকের বাহন সাইকেল। পেছনের সিটের সঙ্গে সুকৌশলে বাঁধা বাঁশের ঝুড়ি ও ঊর্ধ্বমুখী কোদালের হ্যান্ডেল। বোঝা গেল কোনো নির্মাণকাজে ছুটছেন তাঁরা। দিনমজুরি ছয় থেকে সাত শ টাকা। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে কিছুটা চাপে পড়েছেন। তবে বাড়িতে সামান্য কিছু আবাদ আছে। কিছু হাঁস-মুরগি ও দু-একটি গরু-ছাগল পালন করে মেয়েছেলে মিলে। তাতে খেয়ে-পরে মোটামুটি চলে যায়। তবে তাঁদের মাঝে শহুরে মধ্যবিত্তের মতো হা-হুতাশ নেই।
৬. পথেই পড়ল সিমলা পার্ক। সার্কিট হাউস রোডের ঠিক উল্টো দিকে। চোখে পড়ল এক নারীর কলাইরুটির দোকান। মধ্যবয়সী মিনা বেগম। জীবনসংগ্রামের প্রত্যয় চোখেমুখে। রাস্তার ধারে খোলামেলা পরিবেশে ঝুপড়ি দোকান। বাসনকোসনে সাজানো রুটির সব আয়োজন। আটা ডলে মণ্ড করে রাখা আছে। কার না লোভ হয়? রাজশাহীতে এসে কলাইরুটি খাওয়া আমার আরেক নেশা। ওই নারী সাদরে আমন্ত্রণ জানালেন। বসে পড়লাম কাঠের বেঞ্চে। লাকড়ির চুলোয় গরম-গরম কলাইরুটি। সঙ্গে সরষে তেলে পোড়া বেগুনভর্তা।দারুণ মজা। তা-ও আবার সকালবেলা পার্কের খোলা বাতাসে বসে পদ্মার পাড়ে।
৭. রুটি খাওয়ার ফাঁকে ফাঁকে কলাইরুটির একটু ইতিহাস জানার আগ্রহ হলো। আরেকজন খদ্দেরও রুটি খাচ্ছিলেন। তিনি বলছিলেন, কলাইরুটি চাঁপাইনবাবগঞ্জের জনপ্রিয় নাশতা। মিনা বেগম যোগ করলেন, এটা এসেছে ইন্ডিয়া থেকে। ঠিকই তো। চাঁপাইনবাবগঞ্জ ইন্ডিয়ার গা ঘেঁষা অঞ্চল। চাঁপাই ও রাজশাহীর আশপাশে পদ্মার যেসব চর রয়েছে, সেগুলোতে বর্ষায় প্রচুর পলি পড়ে। পানি নেমে গেলে ওই সব উর্বর মাটিতে প্রচুর মাষকলাই হয়। আর এটাই হচ্ছে কলাইরুটির প্রধান উপকরণ। সঙ্গে অবশ্য কিছু চাল ও আটার গুঁড়িও দিতে হয়। কেউ কেউ ডালের আটাও মেশান।
৮. মিনার কলাইরুটির দাম সাধারণত ২৫-৩০ টাকা পিস। তবে কম-বেশিও নেয়। কোনো জোরাজুরি নেই। দেখলাম একজন পাগল কিসিমের লোক এলেন। তাঁকেও মিনা বেগম একটি রুটি দিলেন খেতে, বিনা পয়সায়। গরিব গরিবকে চেনে। সাধারণ শ্রমিক, রিকশাওয়ালা সবাই আসেন এখানে। সস্তায় রুটি-ভর্তা খান। একজন শ্রমিক জানালেন, কলাইরুটি বেশ সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। পেটে থাকে অনেকক্ষণ। দুই-তিন দিন রাখা যায়, নষ্ট হয় না। তাই তো যাঁরা ওপারে কাজে যান সারা দিনের জন্য, অনেকেই কলাইরুটি নিয়ে যান।
৯. কলাইরুটি এতটাই জনপ্রিয় যে আমেরিকান রাষ্ট্রদূত রবার্ট মিলারও নাকি রাজশাহীর কলাইরুটি পছন্দ করেছেন। মিনা বেগম জানালেন, তাঁর রুটি খেতে এখানে ঢাকার বড় বড় নেতাও আসেন। কয়েকজন শীর্ষ স্থানীয় কেন্দ্রীয় নেতার নামও বলে দিলেন গড়গড় করে। স্থানীয় বড় বড় সাহেব নাকি লোক পাঠিয়ে তাঁর দোকান থেকে কলাইরুটি নিয়ে যান। বোঝা গেল, ব্যবসার জন্য মিনা প্রচার ও মার্কেটিং কৌশলটাও বেশ রপ্ত করে ফেলেছেন।
মিনার স্বামী মারা গেছেন কিছুদিন হলো। চার ছেলে বিয়ে থা করে আলাদা থাকেন। একটি মাত্র মেয়ে। টাকার অভাবে বিয়ে দিতে পারছেন না। কন্যাদায়গ্রস্ত একজন মায়ের স্বাভাবিক আকুতি। সাধ্যমতো সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়ে বিদায় হলাম। রাজশাহী উপশহরে কত কলাইরুটির দোকান আছে! দু-একটায় আগেও খেয়েছি। রুটির সঙ্গে হাঁসের মাংস, ভর্তা-ভাজি, কত-কী! মিনা বেগমের কলাইরুটির সঙ্গে হাঁসের মাংস ছিল না। ছিল না কোনো বাহারি নাম বা বিজ্ঞাপন। কিন্তু ছিল অফুরন্ত তৃপ্তির স্বাদ ও পথের পাশে প্রান্তজনের অকৃত্রিম আতিথেয়তা।
লেখক: ইমেরিটাস অধ্যাপক, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

রাজশাহী গেলে পদ্মার পাড়ে টি-বাঁধে যাওয়াটা যেন নিয়ম হয়ে গেছে। যেমন ঝকঝকে পরিচ্ছন্ন শহরটা, তেমনি ছিমছাম টি-বাঁধ এলাকা। একেবারে সুনসান বাঁধানো ঘাট। সামনে বিস্তীর্ণ পদ্মা। যেন নিটোল শাড়ির ভাঁজে ভাঁজে মুঠো মুঠো ঢেউ। বর্ষায় ভরা যৌবনা। হেমন্তে কিছুটা শীর্ণকায়। তাতে কী? সুন্দরী সব সময়ই সুন্দরী। তার আবার কম-বেশি হয় নাকি? শুধু একেক সময় একেক রূপ।
সকালে আসেন প্রাতর্ভ্রমণকারীরা। বাঁধের ওপর দিয়ে হাঁটা, শরীরচর্চা, গায়ে সুবাতাস মাখানো—সবই চলে। বিকেলে আসে দলে দলে আবালবৃদ্ধবনিতা বিলাসভ্রমণে। উন্মুক্ত নদীর অপরূপ শোভা দেখে সময় কাটাতে। এমন উদোম বাতাস আর কোথায়? ঘাটে সারি সারি নৌকা বাঁধা। কেউ কেউ নৌকায় উঠে চক্কর দিয়ে আসে মাঝনদীতে। পদ্মার জলকেলি কার না ভালো লাগে! বিকেলে ফুচকা, বাদাম, চটপটির অস্থায়ী দোকান বসে। তরুণ-তরুণীদের রসনা বিলাসের উত্তম ব্যবস্থা। নিরাপত্তারক্ষীদের টহলদারি শৃঙ্খলা রক্ষা নিশ্চিত
করে। রাজশাহী শহরবাসী গর্ব করে বলে, ‘এটা মিনি কক্সবাজার।’ হবেই বা না কেন?
শুধু কি বেড়ানো? পদ্মার পাড়ের জীবন-জীবিকায়নও জানা গেল কিছুটা। গবেষণা সহকারী মামুনকে নিয়ে নেমে গেলাম নিচে, জলের কাছাকাছি। চপচপ বালুতীর ঘেঁষে হাঁটতে হাঁটতে দেখা নৌকার মাঝিদের সঙ্গে। প্রতিদিন কতশত মজুরি শ্রমিক নৌকায় করে পাড়ি জমাচ্ছেন দূর গাঁও মাঝচরে। কাজের খোঁজে। স্থানীয় ভাষায় তাঁদের বলে পাইট। বর্ষার পানি নেমে যাওয়ায় এখন পদ্মার চরে কলাই, মসুরি, বাদাম, সবজির আবাদ শুরু হয়েছে। পলি পড়া চরের আগাছা জংলা পরিষ্কার, জমি তৈরি, বীজ ছিটানো—হরেক রকমের কাজ।
দুপুরের খাবার নিয়ে যাচ্ছেন পুঁটলি বেঁধে। নৌকাযোগে আবার ফিরে আসবেন বিকেলে। জনপ্রতি ২০-৩০ টাকা ভাড়া। আসা-যাওয়ায় ৫০-৬০ খরচ। বিকেলে আসেন শৌখিন নৌকাভ্রমণ বিলাসীরা। নৌকা ভাড়ার কামাই রোজগার মোটামুটি খারাপ না। খরচাপাতি বাদে গড়পড়তা দিনে হাজার-বারো শ থাকে। কম কী?
২. সাতসকালে অনেকেই নেমেছেন মাছ ধরতে পদ্মায়। বাঁশের চাঁই জড়ো করে রাখা আছে নদীর তীরে। কিছু চাঁই পাতা আছে জলে। একজনকে দেখা গেল চাঁই থেকে কিছু ছোট মাছ বের করে খলুইয়ে রাখতে। আরেকজনকে দেখলাম শক্ত হাতে খ্যাপলা জাল ঝাঁকি মেরে জলে ফেলতে। সামান্য কিছু গাং চেলা, ফ্যাসা মাছ উঠেছে। মহানন্দে সেগুলো জাল থেকে ছাড়িয়ে নিচ্ছে দুজন। শৌখিন মাছ ধরার একটা আধা অর্থনৈতিক ব্যাখ্যাও পাওয়া গেল তাদের কাছ থেকে। প্রথমত, নদীতীরে প্রাতর্ভ্রমণের অপার আনন্দ। এটা অর্থনীতির পরিভাষায় ইন্ট্যাঞ্জিবল বেনিফিট। দ্বিতীয়ত, ঝাঁকি জাল জোরে ফিকে মেরে এবং পরে আবার জল থেকে টেনে তোলার শারীরিক ব্যায়াম।
এটা কিছুটা ট্যাঞ্জিবল ও কিছুটা ইন্ট্যাঞ্জিবল বেনিফিট। তৃতীয়ত, কুড়িয়ে টুকিয়ে যা কিছু মলা-চেলা মাছ পাওয়া যায়, ওইটাই লাভ। এর সবটাই ট্যাঞ্জিবল বেনিফিট। সব বেনিফিট কি টাকার হিসাবে হয়?
৩. অনেকেই সাতসকালে ঘাটে এসেছেন থালাবাটি ধুতে। কেউ আবার কাপড়চোপড় ধুয়ে, গোসল সেরে, বালতি ভরে রান্নার জল নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। শহরের বাসায় এসব করতে যে পানির বিল গুনতে হয়, সেটা এখানে বেঁচে যাচ্ছে। ওই যে অর্থনীতির প্রথম পাঠ, নদীতীরে জলের উপযোগিতা আছে, কিন্তু দুষ্প্রাপ্যতা নেই। কাজেই এখানে ওটার কোনো দাম দিতে হয় না। এই সহজ হিসাবটা কে না বোঝে!
৪. সবচেয়ে মজার দৃশ্য, শৌখিন একজন নারী একটি টিয়া পাখিকে বেড়াতে নিয়ে এসেছেন খাঁচায় করে নদীর ঘাটে। পরম আনন্দে পাখির খাবারের বাসনকোসন ধুইয়ে মুছে নিলেন। খাঁচাটাকে ঘষে-মেজে পরিষ্কার করলেন। তারপর টিয়াকে পদ্মার ভাসান জলে ডুবিয়ে গোসল দিয়ে বাড়ি ফিরলেন। মালিকের দারুণ সখ্য জমে গেছে টিয়া বন্ধুর সঙ্গে। মানুষের কত-কী বিচিত্র শখ!
৫. প্রাতর্ভ্রমণ শেষে মামুনকে নিয়ে চলে আসছিলাম টি-বাঁধ থেকে। রাস্তায় দেখলাম অনেক শ্রমিক লাইন ধরে যাচ্ছেন। গ্রাম থেকে এসেছেন। সবার গায়ে চলনসই জামাকাপড়। পায়ে সবার মোটামুটি স্যান্ডেল-জুতা আছে। প্রত্যেকের বাহন সাইকেল। পেছনের সিটের সঙ্গে সুকৌশলে বাঁধা বাঁশের ঝুড়ি ও ঊর্ধ্বমুখী কোদালের হ্যান্ডেল। বোঝা গেল কোনো নির্মাণকাজে ছুটছেন তাঁরা। দিনমজুরি ছয় থেকে সাত শ টাকা। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে কিছুটা চাপে পড়েছেন। তবে বাড়িতে সামান্য কিছু আবাদ আছে। কিছু হাঁস-মুরগি ও দু-একটি গরু-ছাগল পালন করে মেয়েছেলে মিলে। তাতে খেয়ে-পরে মোটামুটি চলে যায়। তবে তাঁদের মাঝে শহুরে মধ্যবিত্তের মতো হা-হুতাশ নেই।
৬. পথেই পড়ল সিমলা পার্ক। সার্কিট হাউস রোডের ঠিক উল্টো দিকে। চোখে পড়ল এক নারীর কলাইরুটির দোকান। মধ্যবয়সী মিনা বেগম। জীবনসংগ্রামের প্রত্যয় চোখেমুখে। রাস্তার ধারে খোলামেলা পরিবেশে ঝুপড়ি দোকান। বাসনকোসনে সাজানো রুটির সব আয়োজন। আটা ডলে মণ্ড করে রাখা আছে। কার না লোভ হয়? রাজশাহীতে এসে কলাইরুটি খাওয়া আমার আরেক নেশা। ওই নারী সাদরে আমন্ত্রণ জানালেন। বসে পড়লাম কাঠের বেঞ্চে। লাকড়ির চুলোয় গরম-গরম কলাইরুটি। সঙ্গে সরষে তেলে পোড়া বেগুনভর্তা।দারুণ মজা। তা-ও আবার সকালবেলা পার্কের খোলা বাতাসে বসে পদ্মার পাড়ে।
৭. রুটি খাওয়ার ফাঁকে ফাঁকে কলাইরুটির একটু ইতিহাস জানার আগ্রহ হলো। আরেকজন খদ্দেরও রুটি খাচ্ছিলেন। তিনি বলছিলেন, কলাইরুটি চাঁপাইনবাবগঞ্জের জনপ্রিয় নাশতা। মিনা বেগম যোগ করলেন, এটা এসেছে ইন্ডিয়া থেকে। ঠিকই তো। চাঁপাইনবাবগঞ্জ ইন্ডিয়ার গা ঘেঁষা অঞ্চল। চাঁপাই ও রাজশাহীর আশপাশে পদ্মার যেসব চর রয়েছে, সেগুলোতে বর্ষায় প্রচুর পলি পড়ে। পানি নেমে গেলে ওই সব উর্বর মাটিতে প্রচুর মাষকলাই হয়। আর এটাই হচ্ছে কলাইরুটির প্রধান উপকরণ। সঙ্গে অবশ্য কিছু চাল ও আটার গুঁড়িও দিতে হয়। কেউ কেউ ডালের আটাও মেশান।
৮. মিনার কলাইরুটির দাম সাধারণত ২৫-৩০ টাকা পিস। তবে কম-বেশিও নেয়। কোনো জোরাজুরি নেই। দেখলাম একজন পাগল কিসিমের লোক এলেন। তাঁকেও মিনা বেগম একটি রুটি দিলেন খেতে, বিনা পয়সায়। গরিব গরিবকে চেনে। সাধারণ শ্রমিক, রিকশাওয়ালা সবাই আসেন এখানে। সস্তায় রুটি-ভর্তা খান। একজন শ্রমিক জানালেন, কলাইরুটি বেশ সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। পেটে থাকে অনেকক্ষণ। দুই-তিন দিন রাখা যায়, নষ্ট হয় না। তাই তো যাঁরা ওপারে কাজে যান সারা দিনের জন্য, অনেকেই কলাইরুটি নিয়ে যান।
৯. কলাইরুটি এতটাই জনপ্রিয় যে আমেরিকান রাষ্ট্রদূত রবার্ট মিলারও নাকি রাজশাহীর কলাইরুটি পছন্দ করেছেন। মিনা বেগম জানালেন, তাঁর রুটি খেতে এখানে ঢাকার বড় বড় নেতাও আসেন। কয়েকজন শীর্ষ স্থানীয় কেন্দ্রীয় নেতার নামও বলে দিলেন গড়গড় করে। স্থানীয় বড় বড় সাহেব নাকি লোক পাঠিয়ে তাঁর দোকান থেকে কলাইরুটি নিয়ে যান। বোঝা গেল, ব্যবসার জন্য মিনা প্রচার ও মার্কেটিং কৌশলটাও বেশ রপ্ত করে ফেলেছেন।
মিনার স্বামী মারা গেছেন কিছুদিন হলো। চার ছেলে বিয়ে থা করে আলাদা থাকেন। একটি মাত্র মেয়ে। টাকার অভাবে বিয়ে দিতে পারছেন না। কন্যাদায়গ্রস্ত একজন মায়ের স্বাভাবিক আকুতি। সাধ্যমতো সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়ে বিদায় হলাম। রাজশাহী উপশহরে কত কলাইরুটির দোকান আছে! দু-একটায় আগেও খেয়েছি। রুটির সঙ্গে হাঁসের মাংস, ভর্তা-ভাজি, কত-কী! মিনা বেগমের কলাইরুটির সঙ্গে হাঁসের মাংস ছিল না। ছিল না কোনো বাহারি নাম বা বিজ্ঞাপন। কিন্তু ছিল অফুরন্ত তৃপ্তির স্বাদ ও পথের পাশে প্রান্তজনের অকৃত্রিম আতিথেয়তা।
লেখক: ইমেরিটাস অধ্যাপক, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
আব্দুস সাত্তার মন্ডল

রাজশাহী গেলে পদ্মার পাড়ে টি-বাঁধে যাওয়াটা যেন নিয়ম হয়ে গেছে। যেমন ঝকঝকে পরিচ্ছন্ন শহরটা, তেমনি ছিমছাম টি-বাঁধ এলাকা। একেবারে সুনসান বাঁধানো ঘাট। সামনে বিস্তীর্ণ পদ্মা। যেন নিটোল শাড়ির ভাঁজে ভাঁজে মুঠো মুঠো ঢেউ। বর্ষায় ভরা যৌবনা। হেমন্তে কিছুটা শীর্ণকায়। তাতে কী? সুন্দরী সব সময়ই সুন্দরী। তার আবার কম-বেশি হয় নাকি? শুধু একেক সময় একেক রূপ।
সকালে আসেন প্রাতর্ভ্রমণকারীরা। বাঁধের ওপর দিয়ে হাঁটা, শরীরচর্চা, গায়ে সুবাতাস মাখানো—সবই চলে। বিকেলে আসে দলে দলে আবালবৃদ্ধবনিতা বিলাসভ্রমণে। উন্মুক্ত নদীর অপরূপ শোভা দেখে সময় কাটাতে। এমন উদোম বাতাস আর কোথায়? ঘাটে সারি সারি নৌকা বাঁধা। কেউ কেউ নৌকায় উঠে চক্কর দিয়ে আসে মাঝনদীতে। পদ্মার জলকেলি কার না ভালো লাগে! বিকেলে ফুচকা, বাদাম, চটপটির অস্থায়ী দোকান বসে। তরুণ-তরুণীদের রসনা বিলাসের উত্তম ব্যবস্থা। নিরাপত্তারক্ষীদের টহলদারি শৃঙ্খলা রক্ষা নিশ্চিত
করে। রাজশাহী শহরবাসী গর্ব করে বলে, ‘এটা মিনি কক্সবাজার।’ হবেই বা না কেন?
শুধু কি বেড়ানো? পদ্মার পাড়ের জীবন-জীবিকায়নও জানা গেল কিছুটা। গবেষণা সহকারী মামুনকে নিয়ে নেমে গেলাম নিচে, জলের কাছাকাছি। চপচপ বালুতীর ঘেঁষে হাঁটতে হাঁটতে দেখা নৌকার মাঝিদের সঙ্গে। প্রতিদিন কতশত মজুরি শ্রমিক নৌকায় করে পাড়ি জমাচ্ছেন দূর গাঁও মাঝচরে। কাজের খোঁজে। স্থানীয় ভাষায় তাঁদের বলে পাইট। বর্ষার পানি নেমে যাওয়ায় এখন পদ্মার চরে কলাই, মসুরি, বাদাম, সবজির আবাদ শুরু হয়েছে। পলি পড়া চরের আগাছা জংলা পরিষ্কার, জমি তৈরি, বীজ ছিটানো—হরেক রকমের কাজ।
দুপুরের খাবার নিয়ে যাচ্ছেন পুঁটলি বেঁধে। নৌকাযোগে আবার ফিরে আসবেন বিকেলে। জনপ্রতি ২০-৩০ টাকা ভাড়া। আসা-যাওয়ায় ৫০-৬০ খরচ। বিকেলে আসেন শৌখিন নৌকাভ্রমণ বিলাসীরা। নৌকা ভাড়ার কামাই রোজগার মোটামুটি খারাপ না। খরচাপাতি বাদে গড়পড়তা দিনে হাজার-বারো শ থাকে। কম কী?
২. সাতসকালে অনেকেই নেমেছেন মাছ ধরতে পদ্মায়। বাঁশের চাঁই জড়ো করে রাখা আছে নদীর তীরে। কিছু চাঁই পাতা আছে জলে। একজনকে দেখা গেল চাঁই থেকে কিছু ছোট মাছ বের করে খলুইয়ে রাখতে। আরেকজনকে দেখলাম শক্ত হাতে খ্যাপলা জাল ঝাঁকি মেরে জলে ফেলতে। সামান্য কিছু গাং চেলা, ফ্যাসা মাছ উঠেছে। মহানন্দে সেগুলো জাল থেকে ছাড়িয়ে নিচ্ছে দুজন। শৌখিন মাছ ধরার একটা আধা অর্থনৈতিক ব্যাখ্যাও পাওয়া গেল তাদের কাছ থেকে। প্রথমত, নদীতীরে প্রাতর্ভ্রমণের অপার আনন্দ। এটা অর্থনীতির পরিভাষায় ইন্ট্যাঞ্জিবল বেনিফিট। দ্বিতীয়ত, ঝাঁকি জাল জোরে ফিকে মেরে এবং পরে আবার জল থেকে টেনে তোলার শারীরিক ব্যায়াম।
এটা কিছুটা ট্যাঞ্জিবল ও কিছুটা ইন্ট্যাঞ্জিবল বেনিফিট। তৃতীয়ত, কুড়িয়ে টুকিয়ে যা কিছু মলা-চেলা মাছ পাওয়া যায়, ওইটাই লাভ। এর সবটাই ট্যাঞ্জিবল বেনিফিট। সব বেনিফিট কি টাকার হিসাবে হয়?
৩. অনেকেই সাতসকালে ঘাটে এসেছেন থালাবাটি ধুতে। কেউ আবার কাপড়চোপড় ধুয়ে, গোসল সেরে, বালতি ভরে রান্নার জল নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। শহরের বাসায় এসব করতে যে পানির বিল গুনতে হয়, সেটা এখানে বেঁচে যাচ্ছে। ওই যে অর্থনীতির প্রথম পাঠ, নদীতীরে জলের উপযোগিতা আছে, কিন্তু দুষ্প্রাপ্যতা নেই। কাজেই এখানে ওটার কোনো দাম দিতে হয় না। এই সহজ হিসাবটা কে না বোঝে!
৪. সবচেয়ে মজার দৃশ্য, শৌখিন একজন নারী একটি টিয়া পাখিকে বেড়াতে নিয়ে এসেছেন খাঁচায় করে নদীর ঘাটে। পরম আনন্দে পাখির খাবারের বাসনকোসন ধুইয়ে মুছে নিলেন। খাঁচাটাকে ঘষে-মেজে পরিষ্কার করলেন। তারপর টিয়াকে পদ্মার ভাসান জলে ডুবিয়ে গোসল দিয়ে বাড়ি ফিরলেন। মালিকের দারুণ সখ্য জমে গেছে টিয়া বন্ধুর সঙ্গে। মানুষের কত-কী বিচিত্র শখ!
৫. প্রাতর্ভ্রমণ শেষে মামুনকে নিয়ে চলে আসছিলাম টি-বাঁধ থেকে। রাস্তায় দেখলাম অনেক শ্রমিক লাইন ধরে যাচ্ছেন। গ্রাম থেকে এসেছেন। সবার গায়ে চলনসই জামাকাপড়। পায়ে সবার মোটামুটি স্যান্ডেল-জুতা আছে। প্রত্যেকের বাহন সাইকেল। পেছনের সিটের সঙ্গে সুকৌশলে বাঁধা বাঁশের ঝুড়ি ও ঊর্ধ্বমুখী কোদালের হ্যান্ডেল। বোঝা গেল কোনো নির্মাণকাজে ছুটছেন তাঁরা। দিনমজুরি ছয় থেকে সাত শ টাকা। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে কিছুটা চাপে পড়েছেন। তবে বাড়িতে সামান্য কিছু আবাদ আছে। কিছু হাঁস-মুরগি ও দু-একটি গরু-ছাগল পালন করে মেয়েছেলে মিলে। তাতে খেয়ে-পরে মোটামুটি চলে যায়। তবে তাঁদের মাঝে শহুরে মধ্যবিত্তের মতো হা-হুতাশ নেই।
৬. পথেই পড়ল সিমলা পার্ক। সার্কিট হাউস রোডের ঠিক উল্টো দিকে। চোখে পড়ল এক নারীর কলাইরুটির দোকান। মধ্যবয়সী মিনা বেগম। জীবনসংগ্রামের প্রত্যয় চোখেমুখে। রাস্তার ধারে খোলামেলা পরিবেশে ঝুপড়ি দোকান। বাসনকোসনে সাজানো রুটির সব আয়োজন। আটা ডলে মণ্ড করে রাখা আছে। কার না লোভ হয়? রাজশাহীতে এসে কলাইরুটি খাওয়া আমার আরেক নেশা। ওই নারী সাদরে আমন্ত্রণ জানালেন। বসে পড়লাম কাঠের বেঞ্চে। লাকড়ির চুলোয় গরম-গরম কলাইরুটি। সঙ্গে সরষে তেলে পোড়া বেগুনভর্তা।দারুণ মজা। তা-ও আবার সকালবেলা পার্কের খোলা বাতাসে বসে পদ্মার পাড়ে।
৭. রুটি খাওয়ার ফাঁকে ফাঁকে কলাইরুটির একটু ইতিহাস জানার আগ্রহ হলো। আরেকজন খদ্দেরও রুটি খাচ্ছিলেন। তিনি বলছিলেন, কলাইরুটি চাঁপাইনবাবগঞ্জের জনপ্রিয় নাশতা। মিনা বেগম যোগ করলেন, এটা এসেছে ইন্ডিয়া থেকে। ঠিকই তো। চাঁপাইনবাবগঞ্জ ইন্ডিয়ার গা ঘেঁষা অঞ্চল। চাঁপাই ও রাজশাহীর আশপাশে পদ্মার যেসব চর রয়েছে, সেগুলোতে বর্ষায় প্রচুর পলি পড়ে। পানি নেমে গেলে ওই সব উর্বর মাটিতে প্রচুর মাষকলাই হয়। আর এটাই হচ্ছে কলাইরুটির প্রধান উপকরণ। সঙ্গে অবশ্য কিছু চাল ও আটার গুঁড়িও দিতে হয়। কেউ কেউ ডালের আটাও মেশান।
৮. মিনার কলাইরুটির দাম সাধারণত ২৫-৩০ টাকা পিস। তবে কম-বেশিও নেয়। কোনো জোরাজুরি নেই। দেখলাম একজন পাগল কিসিমের লোক এলেন। তাঁকেও মিনা বেগম একটি রুটি দিলেন খেতে, বিনা পয়সায়। গরিব গরিবকে চেনে। সাধারণ শ্রমিক, রিকশাওয়ালা সবাই আসেন এখানে। সস্তায় রুটি-ভর্তা খান। একজন শ্রমিক জানালেন, কলাইরুটি বেশ সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। পেটে থাকে অনেকক্ষণ। দুই-তিন দিন রাখা যায়, নষ্ট হয় না। তাই তো যাঁরা ওপারে কাজে যান সারা দিনের জন্য, অনেকেই কলাইরুটি নিয়ে যান।
৯. কলাইরুটি এতটাই জনপ্রিয় যে আমেরিকান রাষ্ট্রদূত রবার্ট মিলারও নাকি রাজশাহীর কলাইরুটি পছন্দ করেছেন। মিনা বেগম জানালেন, তাঁর রুটি খেতে এখানে ঢাকার বড় বড় নেতাও আসেন। কয়েকজন শীর্ষ স্থানীয় কেন্দ্রীয় নেতার নামও বলে দিলেন গড়গড় করে। স্থানীয় বড় বড় সাহেব নাকি লোক পাঠিয়ে তাঁর দোকান থেকে কলাইরুটি নিয়ে যান। বোঝা গেল, ব্যবসার জন্য মিনা প্রচার ও মার্কেটিং কৌশলটাও বেশ রপ্ত করে ফেলেছেন।
মিনার স্বামী মারা গেছেন কিছুদিন হলো। চার ছেলে বিয়ে থা করে আলাদা থাকেন। একটি মাত্র মেয়ে। টাকার অভাবে বিয়ে দিতে পারছেন না। কন্যাদায়গ্রস্ত একজন মায়ের স্বাভাবিক আকুতি। সাধ্যমতো সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়ে বিদায় হলাম। রাজশাহী উপশহরে কত কলাইরুটির দোকান আছে! দু-একটায় আগেও খেয়েছি। রুটির সঙ্গে হাঁসের মাংস, ভর্তা-ভাজি, কত-কী! মিনা বেগমের কলাইরুটির সঙ্গে হাঁসের মাংস ছিল না। ছিল না কোনো বাহারি নাম বা বিজ্ঞাপন। কিন্তু ছিল অফুরন্ত তৃপ্তির স্বাদ ও পথের পাশে প্রান্তজনের অকৃত্রিম আতিথেয়তা।
লেখক: ইমেরিটাস অধ্যাপক, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

রাজশাহী গেলে পদ্মার পাড়ে টি-বাঁধে যাওয়াটা যেন নিয়ম হয়ে গেছে। যেমন ঝকঝকে পরিচ্ছন্ন শহরটা, তেমনি ছিমছাম টি-বাঁধ এলাকা। একেবারে সুনসান বাঁধানো ঘাট। সামনে বিস্তীর্ণ পদ্মা। যেন নিটোল শাড়ির ভাঁজে ভাঁজে মুঠো মুঠো ঢেউ। বর্ষায় ভরা যৌবনা। হেমন্তে কিছুটা শীর্ণকায়। তাতে কী? সুন্দরী সব সময়ই সুন্দরী। তার আবার কম-বেশি হয় নাকি? শুধু একেক সময় একেক রূপ।
সকালে আসেন প্রাতর্ভ্রমণকারীরা। বাঁধের ওপর দিয়ে হাঁটা, শরীরচর্চা, গায়ে সুবাতাস মাখানো—সবই চলে। বিকেলে আসে দলে দলে আবালবৃদ্ধবনিতা বিলাসভ্রমণে। উন্মুক্ত নদীর অপরূপ শোভা দেখে সময় কাটাতে। এমন উদোম বাতাস আর কোথায়? ঘাটে সারি সারি নৌকা বাঁধা। কেউ কেউ নৌকায় উঠে চক্কর দিয়ে আসে মাঝনদীতে। পদ্মার জলকেলি কার না ভালো লাগে! বিকেলে ফুচকা, বাদাম, চটপটির অস্থায়ী দোকান বসে। তরুণ-তরুণীদের রসনা বিলাসের উত্তম ব্যবস্থা। নিরাপত্তারক্ষীদের টহলদারি শৃঙ্খলা রক্ষা নিশ্চিত
করে। রাজশাহী শহরবাসী গর্ব করে বলে, ‘এটা মিনি কক্সবাজার।’ হবেই বা না কেন?
শুধু কি বেড়ানো? পদ্মার পাড়ের জীবন-জীবিকায়নও জানা গেল কিছুটা। গবেষণা সহকারী মামুনকে নিয়ে নেমে গেলাম নিচে, জলের কাছাকাছি। চপচপ বালুতীর ঘেঁষে হাঁটতে হাঁটতে দেখা নৌকার মাঝিদের সঙ্গে। প্রতিদিন কতশত মজুরি শ্রমিক নৌকায় করে পাড়ি জমাচ্ছেন দূর গাঁও মাঝচরে। কাজের খোঁজে। স্থানীয় ভাষায় তাঁদের বলে পাইট। বর্ষার পানি নেমে যাওয়ায় এখন পদ্মার চরে কলাই, মসুরি, বাদাম, সবজির আবাদ শুরু হয়েছে। পলি পড়া চরের আগাছা জংলা পরিষ্কার, জমি তৈরি, বীজ ছিটানো—হরেক রকমের কাজ।
দুপুরের খাবার নিয়ে যাচ্ছেন পুঁটলি বেঁধে। নৌকাযোগে আবার ফিরে আসবেন বিকেলে। জনপ্রতি ২০-৩০ টাকা ভাড়া। আসা-যাওয়ায় ৫০-৬০ খরচ। বিকেলে আসেন শৌখিন নৌকাভ্রমণ বিলাসীরা। নৌকা ভাড়ার কামাই রোজগার মোটামুটি খারাপ না। খরচাপাতি বাদে গড়পড়তা দিনে হাজার-বারো শ থাকে। কম কী?
২. সাতসকালে অনেকেই নেমেছেন মাছ ধরতে পদ্মায়। বাঁশের চাঁই জড়ো করে রাখা আছে নদীর তীরে। কিছু চাঁই পাতা আছে জলে। একজনকে দেখা গেল চাঁই থেকে কিছু ছোট মাছ বের করে খলুইয়ে রাখতে। আরেকজনকে দেখলাম শক্ত হাতে খ্যাপলা জাল ঝাঁকি মেরে জলে ফেলতে। সামান্য কিছু গাং চেলা, ফ্যাসা মাছ উঠেছে। মহানন্দে সেগুলো জাল থেকে ছাড়িয়ে নিচ্ছে দুজন। শৌখিন মাছ ধরার একটা আধা অর্থনৈতিক ব্যাখ্যাও পাওয়া গেল তাদের কাছ থেকে। প্রথমত, নদীতীরে প্রাতর্ভ্রমণের অপার আনন্দ। এটা অর্থনীতির পরিভাষায় ইন্ট্যাঞ্জিবল বেনিফিট। দ্বিতীয়ত, ঝাঁকি জাল জোরে ফিকে মেরে এবং পরে আবার জল থেকে টেনে তোলার শারীরিক ব্যায়াম।
এটা কিছুটা ট্যাঞ্জিবল ও কিছুটা ইন্ট্যাঞ্জিবল বেনিফিট। তৃতীয়ত, কুড়িয়ে টুকিয়ে যা কিছু মলা-চেলা মাছ পাওয়া যায়, ওইটাই লাভ। এর সবটাই ট্যাঞ্জিবল বেনিফিট। সব বেনিফিট কি টাকার হিসাবে হয়?
৩. অনেকেই সাতসকালে ঘাটে এসেছেন থালাবাটি ধুতে। কেউ আবার কাপড়চোপড় ধুয়ে, গোসল সেরে, বালতি ভরে রান্নার জল নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। শহরের বাসায় এসব করতে যে পানির বিল গুনতে হয়, সেটা এখানে বেঁচে যাচ্ছে। ওই যে অর্থনীতির প্রথম পাঠ, নদীতীরে জলের উপযোগিতা আছে, কিন্তু দুষ্প্রাপ্যতা নেই। কাজেই এখানে ওটার কোনো দাম দিতে হয় না। এই সহজ হিসাবটা কে না বোঝে!
৪. সবচেয়ে মজার দৃশ্য, শৌখিন একজন নারী একটি টিয়া পাখিকে বেড়াতে নিয়ে এসেছেন খাঁচায় করে নদীর ঘাটে। পরম আনন্দে পাখির খাবারের বাসনকোসন ধুইয়ে মুছে নিলেন। খাঁচাটাকে ঘষে-মেজে পরিষ্কার করলেন। তারপর টিয়াকে পদ্মার ভাসান জলে ডুবিয়ে গোসল দিয়ে বাড়ি ফিরলেন। মালিকের দারুণ সখ্য জমে গেছে টিয়া বন্ধুর সঙ্গে। মানুষের কত-কী বিচিত্র শখ!
৫. প্রাতর্ভ্রমণ শেষে মামুনকে নিয়ে চলে আসছিলাম টি-বাঁধ থেকে। রাস্তায় দেখলাম অনেক শ্রমিক লাইন ধরে যাচ্ছেন। গ্রাম থেকে এসেছেন। সবার গায়ে চলনসই জামাকাপড়। পায়ে সবার মোটামুটি স্যান্ডেল-জুতা আছে। প্রত্যেকের বাহন সাইকেল। পেছনের সিটের সঙ্গে সুকৌশলে বাঁধা বাঁশের ঝুড়ি ও ঊর্ধ্বমুখী কোদালের হ্যান্ডেল। বোঝা গেল কোনো নির্মাণকাজে ছুটছেন তাঁরা। দিনমজুরি ছয় থেকে সাত শ টাকা। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে কিছুটা চাপে পড়েছেন। তবে বাড়িতে সামান্য কিছু আবাদ আছে। কিছু হাঁস-মুরগি ও দু-একটি গরু-ছাগল পালন করে মেয়েছেলে মিলে। তাতে খেয়ে-পরে মোটামুটি চলে যায়। তবে তাঁদের মাঝে শহুরে মধ্যবিত্তের মতো হা-হুতাশ নেই।
৬. পথেই পড়ল সিমলা পার্ক। সার্কিট হাউস রোডের ঠিক উল্টো দিকে। চোখে পড়ল এক নারীর কলাইরুটির দোকান। মধ্যবয়সী মিনা বেগম। জীবনসংগ্রামের প্রত্যয় চোখেমুখে। রাস্তার ধারে খোলামেলা পরিবেশে ঝুপড়ি দোকান। বাসনকোসনে সাজানো রুটির সব আয়োজন। আটা ডলে মণ্ড করে রাখা আছে। কার না লোভ হয়? রাজশাহীতে এসে কলাইরুটি খাওয়া আমার আরেক নেশা। ওই নারী সাদরে আমন্ত্রণ জানালেন। বসে পড়লাম কাঠের বেঞ্চে। লাকড়ির চুলোয় গরম-গরম কলাইরুটি। সঙ্গে সরষে তেলে পোড়া বেগুনভর্তা।দারুণ মজা। তা-ও আবার সকালবেলা পার্কের খোলা বাতাসে বসে পদ্মার পাড়ে।
৭. রুটি খাওয়ার ফাঁকে ফাঁকে কলাইরুটির একটু ইতিহাস জানার আগ্রহ হলো। আরেকজন খদ্দেরও রুটি খাচ্ছিলেন। তিনি বলছিলেন, কলাইরুটি চাঁপাইনবাবগঞ্জের জনপ্রিয় নাশতা। মিনা বেগম যোগ করলেন, এটা এসেছে ইন্ডিয়া থেকে। ঠিকই তো। চাঁপাইনবাবগঞ্জ ইন্ডিয়ার গা ঘেঁষা অঞ্চল। চাঁপাই ও রাজশাহীর আশপাশে পদ্মার যেসব চর রয়েছে, সেগুলোতে বর্ষায় প্রচুর পলি পড়ে। পানি নেমে গেলে ওই সব উর্বর মাটিতে প্রচুর মাষকলাই হয়। আর এটাই হচ্ছে কলাইরুটির প্রধান উপকরণ। সঙ্গে অবশ্য কিছু চাল ও আটার গুঁড়িও দিতে হয়। কেউ কেউ ডালের আটাও মেশান।
৮. মিনার কলাইরুটির দাম সাধারণত ২৫-৩০ টাকা পিস। তবে কম-বেশিও নেয়। কোনো জোরাজুরি নেই। দেখলাম একজন পাগল কিসিমের লোক এলেন। তাঁকেও মিনা বেগম একটি রুটি দিলেন খেতে, বিনা পয়সায়। গরিব গরিবকে চেনে। সাধারণ শ্রমিক, রিকশাওয়ালা সবাই আসেন এখানে। সস্তায় রুটি-ভর্তা খান। একজন শ্রমিক জানালেন, কলাইরুটি বেশ সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। পেটে থাকে অনেকক্ষণ। দুই-তিন দিন রাখা যায়, নষ্ট হয় না। তাই তো যাঁরা ওপারে কাজে যান সারা দিনের জন্য, অনেকেই কলাইরুটি নিয়ে যান।
৯. কলাইরুটি এতটাই জনপ্রিয় যে আমেরিকান রাষ্ট্রদূত রবার্ট মিলারও নাকি রাজশাহীর কলাইরুটি পছন্দ করেছেন। মিনা বেগম জানালেন, তাঁর রুটি খেতে এখানে ঢাকার বড় বড় নেতাও আসেন। কয়েকজন শীর্ষ স্থানীয় কেন্দ্রীয় নেতার নামও বলে দিলেন গড়গড় করে। স্থানীয় বড় বড় সাহেব নাকি লোক পাঠিয়ে তাঁর দোকান থেকে কলাইরুটি নিয়ে যান। বোঝা গেল, ব্যবসার জন্য মিনা প্রচার ও মার্কেটিং কৌশলটাও বেশ রপ্ত করে ফেলেছেন।
মিনার স্বামী মারা গেছেন কিছুদিন হলো। চার ছেলে বিয়ে থা করে আলাদা থাকেন। একটি মাত্র মেয়ে। টাকার অভাবে বিয়ে দিতে পারছেন না। কন্যাদায়গ্রস্ত একজন মায়ের স্বাভাবিক আকুতি। সাধ্যমতো সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়ে বিদায় হলাম। রাজশাহী উপশহরে কত কলাইরুটির দোকান আছে! দু-একটায় আগেও খেয়েছি। রুটির সঙ্গে হাঁসের মাংস, ভর্তা-ভাজি, কত-কী! মিনা বেগমের কলাইরুটির সঙ্গে হাঁসের মাংস ছিল না। ছিল না কোনো বাহারি নাম বা বিজ্ঞাপন। কিন্তু ছিল অফুরন্ত তৃপ্তির স্বাদ ও পথের পাশে প্রান্তজনের অকৃত্রিম আতিথেয়তা।
লেখক: ইমেরিটাস অধ্যাপক, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৩ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

রাজশাহী গেলে পদ্মার পাড়ে টি-বাঁধে যাওয়াটা যেন নিয়ম হয়ে গেছে। যেমন ঝকঝকে পরিচ্ছন্ন শহরটা, তেমনি ছিমছাম টি-বাঁধ এলাকা। একেবারে সুনসান বাঁধানো ঘাট। সামনে বিস্তীর্ণ পদ্মা। যেন নিটোল শাড়ির ভাঁজে ভাঁজে মুঠো মুঠো ঢেউ। বর্ষায় ভরা যৌবনা।
১২ নভেম্বর ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

রাজশাহী গেলে পদ্মার পাড়ে টি-বাঁধে যাওয়াটা যেন নিয়ম হয়ে গেছে। যেমন ঝকঝকে পরিচ্ছন্ন শহরটা, তেমনি ছিমছাম টি-বাঁধ এলাকা। একেবারে সুনসান বাঁধানো ঘাট। সামনে বিস্তীর্ণ পদ্মা। যেন নিটোল শাড়ির ভাঁজে ভাঁজে মুঠো মুঠো ঢেউ। বর্ষায় ভরা যৌবনা।
১২ নভেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৩ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

রাজশাহী গেলে পদ্মার পাড়ে টি-বাঁধে যাওয়াটা যেন নিয়ম হয়ে গেছে। যেমন ঝকঝকে পরিচ্ছন্ন শহরটা, তেমনি ছিমছাম টি-বাঁধ এলাকা। একেবারে সুনসান বাঁধানো ঘাট। সামনে বিস্তীর্ণ পদ্মা। যেন নিটোল শাড়ির ভাঁজে ভাঁজে মুঠো মুঠো ঢেউ। বর্ষায় ভরা যৌবনা।
১২ নভেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৩ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

রাজশাহী গেলে পদ্মার পাড়ে টি-বাঁধে যাওয়াটা যেন নিয়ম হয়ে গেছে। যেমন ঝকঝকে পরিচ্ছন্ন শহরটা, তেমনি ছিমছাম টি-বাঁধ এলাকা। একেবারে সুনসান বাঁধানো ঘাট। সামনে বিস্তীর্ণ পদ্মা। যেন নিটোল শাড়ির ভাঁজে ভাঁজে মুঠো মুঠো ঢেউ। বর্ষায় ভরা যৌবনা।
১২ নভেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৩ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫