জাকির হোসেন, সুনামগঞ্জ
হাওরবেষ্টিত সুনামগঞ্জে আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারে কৃষিতে পরিবর্তনের হাওয়া লাগলেও বর্গাচাষিদের দুঃসময় কাটছে না। সরকারের বর্গা আইনের সঠিক প্রয়োগ না থাকায় যুগ যুগ ধরে ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত থাকছেন বর্গাকৃষক। ফলে অনায়াসে জমির মালিক উৎপাদিত ফসলে অর্ধেক ভাগ বসাচ্ছেন।
চলতি বছর উজানের পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে যুদ্ধ করে নানা প্রতিকূলতার মধ্যে কৃষকেরা ধান কাটার কাজ প্রায় শেষের দিকে নিয়ে এসেছেন। কিন্তু সেই কষ্টার্জিত ফসল পুরোপুরি ঘরে তুলতে পারছেন না তাঁরা। ধান শুকানোর পর মাঠ থেকেই মহাজনদের দিয়ে দিতে হচ্ছে তাঁদের বাঁটোয়ারা। এই প্রথা থেকে বেরিয়ে আসতে চান হাওরাঞ্চলের কৃষক।
আইন অনুযায়ী, বর্গাকৃষক ও জমির মালিকের মধ্যে পাঁচ বছর মেয়াদি লিখিত চুক্তির নিয়ম থাকলেও বাস্তবে হাওর এলাকায় এক বছর মেয়াদি মৌখিক চুক্তিই প্রচলিত রয়েছে। লিখিত চুক্তিনামা না থাকায় ব্যাংকের কৃষিঋণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বর্গাচাষিরা। এভাবে বছরের পর বছর বাধ্য হয়ে গ্রাম্য মহাজনের চড়া সুদের ঋণের বেড়াজালে আটকে আছেন হাওরপারের বর্গাকৃষকেরা।
সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলে ৩ লাখ ১৭ হাজার কৃষকের মধ্যে ৬৫ হাজার বর্গাচাষি। জমি চাষাবাদ থেকে শুরু করে বীজ, সার, সেচ, কীটনাশক ও শ্রমিকসহ সবকিছুর ব্যবস্থা করতে হয় বর্গাকৃষকদেরই। অথচ উৎপাদিত ফসলের অর্ধেক দিয়ে দিতে হয় জমির মালিককে। ফলে জমির মালিকসহ উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে বর্গাদারের ভাগে তেমন কিছুই থাকে না। এতে অনেকেই কৃষিবিমুখ হয়ে পড়েছেন।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার বাগগুয়া গ্রামের কৃষক আব্দুর রহিম দীর্ঘদিন ধরেই মহাজনের জমি চাষাবাদ করে আসছেন। মহাজনকে টাকার বদলে টাকা দিতে চাইলে মহাজন নারাজ। তিনি বলেন, ‘বহু কষ্ট কইরা এইবার ধান তুলছি। ধান বিক্রি কইরা যদি মহাজনের টেকা দিতাম, তাইলে কষ্ট কমত। নিজের ঘরে ধান তুলতাম পারতাম।’
মহাজনের ঋণ আর জমির মালিকের অংশ দিয়ে অবশিষ্ট কিছুই থাকছে না বর্গাচাষিদের। সদর উপজেলার কলউড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল বাতেন বলেন, ‘আমরা আইদ্যা (বর্গা) জমি করি সুদে ঋণ আইন্যা। সবার সব দিয়া আমরার আর কিচ্ছু থাকে না।’
বছরের খোরাকি ছাড়া আর কোনো আয় নেই হাওরাঞ্চলের বর্গাচাষিদের। সদর উপজেলার নিয়ামতপুর গ্রামের কৃষক নরিদ্র দাস বলেন, ‘ধান তুইল্লা জমির মালিকরে দিয়া আর সুদের ঋণ দিয়া কিচ্ছু থাকে না। কোনো রকম খাইয়া বাঁইচা থাকি।’
আবার মহাজনী ঋণের টাকার সুদ মিটাতে প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষকের ধান যাচ্ছে ব্যবসায়ীর গুদামে। ধান কাটা-মাড়াইড়ের খরচ জোগাতে অনেকে কম দামে ধান বিক্রি করছেন। আবার অনেকে ধান কাটা-মাড়াইড়ের আগে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নেওয়া টাকা ধান দিয়ে পরিশোধ করছেন।
এতে কৃষকের গোলা ধানশূন্য হয়ে পড়ছে শুরুতেই। খাদ্যগুদামে যখন ধান-চাল সংগ্রহ হবে, তখন প্রান্তিক কিংবা ক্ষুদ্র কৃষকের ঘরে ধান থাকবে না। আর এই সুযোগে খাদ্যগুদামে ধান দেবে ফড়িয়া ব্যবসায়ীরা।
আবার কোনো কোনো কৃষক চাষাবাদ শুরু হওয়ার আগেই ঋণ করে থাকেন। চুক্তি মোতাবেক ফসলের মাঠ থেকেই ধান মেপে দিয়ে দিতে হয় মহাজনের বস্তায়।
জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, এখন ধান কেনা শুরু হয়েছে। এ বছর সুনামগঞ্জ থেকে সরকার ২৭ টাকা কেজি ধরে ২৮ হাজার ৬৬৬ মেট্রিক টন ধান কিনবে।
তিনি আরও বলেন, ‘কৃষকেরা যেন মধ্যস্বত্বভোগীদের কাছে ধান বিক্রি না করে। সরকারি গুদামে ধান দেন, সে জন্য আমরা এবার অন্যান্য বছরের তুলনায় ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা বাড়াতে আবেদন করে বাড়িয়ে এনেছি।’
হাওরবেষ্টিত সুনামগঞ্জে আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারে কৃষিতে পরিবর্তনের হাওয়া লাগলেও বর্গাচাষিদের দুঃসময় কাটছে না। সরকারের বর্গা আইনের সঠিক প্রয়োগ না থাকায় যুগ যুগ ধরে ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত থাকছেন বর্গাকৃষক। ফলে অনায়াসে জমির মালিক উৎপাদিত ফসলে অর্ধেক ভাগ বসাচ্ছেন।
চলতি বছর উজানের পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে যুদ্ধ করে নানা প্রতিকূলতার মধ্যে কৃষকেরা ধান কাটার কাজ প্রায় শেষের দিকে নিয়ে এসেছেন। কিন্তু সেই কষ্টার্জিত ফসল পুরোপুরি ঘরে তুলতে পারছেন না তাঁরা। ধান শুকানোর পর মাঠ থেকেই মহাজনদের দিয়ে দিতে হচ্ছে তাঁদের বাঁটোয়ারা। এই প্রথা থেকে বেরিয়ে আসতে চান হাওরাঞ্চলের কৃষক।
আইন অনুযায়ী, বর্গাকৃষক ও জমির মালিকের মধ্যে পাঁচ বছর মেয়াদি লিখিত চুক্তির নিয়ম থাকলেও বাস্তবে হাওর এলাকায় এক বছর মেয়াদি মৌখিক চুক্তিই প্রচলিত রয়েছে। লিখিত চুক্তিনামা না থাকায় ব্যাংকের কৃষিঋণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বর্গাচাষিরা। এভাবে বছরের পর বছর বাধ্য হয়ে গ্রাম্য মহাজনের চড়া সুদের ঋণের বেড়াজালে আটকে আছেন হাওরপারের বর্গাকৃষকেরা।
সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলে ৩ লাখ ১৭ হাজার কৃষকের মধ্যে ৬৫ হাজার বর্গাচাষি। জমি চাষাবাদ থেকে শুরু করে বীজ, সার, সেচ, কীটনাশক ও শ্রমিকসহ সবকিছুর ব্যবস্থা করতে হয় বর্গাকৃষকদেরই। অথচ উৎপাদিত ফসলের অর্ধেক দিয়ে দিতে হয় জমির মালিককে। ফলে জমির মালিকসহ উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে বর্গাদারের ভাগে তেমন কিছুই থাকে না। এতে অনেকেই কৃষিবিমুখ হয়ে পড়েছেন।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার বাগগুয়া গ্রামের কৃষক আব্দুর রহিম দীর্ঘদিন ধরেই মহাজনের জমি চাষাবাদ করে আসছেন। মহাজনকে টাকার বদলে টাকা দিতে চাইলে মহাজন নারাজ। তিনি বলেন, ‘বহু কষ্ট কইরা এইবার ধান তুলছি। ধান বিক্রি কইরা যদি মহাজনের টেকা দিতাম, তাইলে কষ্ট কমত। নিজের ঘরে ধান তুলতাম পারতাম।’
মহাজনের ঋণ আর জমির মালিকের অংশ দিয়ে অবশিষ্ট কিছুই থাকছে না বর্গাচাষিদের। সদর উপজেলার কলউড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল বাতেন বলেন, ‘আমরা আইদ্যা (বর্গা) জমি করি সুদে ঋণ আইন্যা। সবার সব দিয়া আমরার আর কিচ্ছু থাকে না।’
বছরের খোরাকি ছাড়া আর কোনো আয় নেই হাওরাঞ্চলের বর্গাচাষিদের। সদর উপজেলার নিয়ামতপুর গ্রামের কৃষক নরিদ্র দাস বলেন, ‘ধান তুইল্লা জমির মালিকরে দিয়া আর সুদের ঋণ দিয়া কিচ্ছু থাকে না। কোনো রকম খাইয়া বাঁইচা থাকি।’
আবার মহাজনী ঋণের টাকার সুদ মিটাতে প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষকের ধান যাচ্ছে ব্যবসায়ীর গুদামে। ধান কাটা-মাড়াইড়ের খরচ জোগাতে অনেকে কম দামে ধান বিক্রি করছেন। আবার অনেকে ধান কাটা-মাড়াইড়ের আগে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নেওয়া টাকা ধান দিয়ে পরিশোধ করছেন।
এতে কৃষকের গোলা ধানশূন্য হয়ে পড়ছে শুরুতেই। খাদ্যগুদামে যখন ধান-চাল সংগ্রহ হবে, তখন প্রান্তিক কিংবা ক্ষুদ্র কৃষকের ঘরে ধান থাকবে না। আর এই সুযোগে খাদ্যগুদামে ধান দেবে ফড়িয়া ব্যবসায়ীরা।
আবার কোনো কোনো কৃষক চাষাবাদ শুরু হওয়ার আগেই ঋণ করে থাকেন। চুক্তি মোতাবেক ফসলের মাঠ থেকেই ধান মেপে দিয়ে দিতে হয় মহাজনের বস্তায়।
জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, এখন ধান কেনা শুরু হয়েছে। এ বছর সুনামগঞ্জ থেকে সরকার ২৭ টাকা কেজি ধরে ২৮ হাজার ৬৬৬ মেট্রিক টন ধান কিনবে।
তিনি আরও বলেন, ‘কৃষকেরা যেন মধ্যস্বত্বভোগীদের কাছে ধান বিক্রি না করে। সরকারি গুদামে ধান দেন, সে জন্য আমরা এবার অন্যান্য বছরের তুলনায় ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা বাড়াতে আবেদন করে বাড়িয়ে এনেছি।’
বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ দিন আগেগাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪দেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২০ নভেম্বর ২০২৪